শ্রমিক কর্তৃক চাকুরীর অবসান এবং চাকুরী হতে ডিসচার্জ পদ্ধতি

শ্রমিক কর্তৃক চাকুরীর অবসান এবং চাকুরী হতে ডিসচার্জ পদ্ধতি

শ্রমিক কর্তৃক চাকুরীর অবসান

১। শ্রমিক কর্তৃক চাকুরীর অবসান ঃ স্থায়ী শ্রমিক ষাট দিনের লিখিত নোটিশ প্রদান করে চাকুরী হতে ইস্তফা দিতে পারবেন এবং কোন মাসিক মজুরীর ভিত্তিতে নিয়োজিত অস্থায়ী শ্রমিক ত্রিশ দিনের ও অন্য শ্রমিকগণ চৌদ্দ দিনের নোটিশ প্রদান করে চাকুরী হতে ইস্তফা দিতে পারবেন। বিনা নোটিশে চাকুরী হতে ইস্তফা দিতে চাইলে প্রদেয় নোটিশের পরিবর্তে নোটিশ মেয়াদের জন্য মজুরীর সমপরিমান অর্থ কর্তৃপক্ষকে প্রদান করে তা করতে পারবেন।

২। শ্রমিক কর্তৃক অবসর গ্রহণ ঃ কারখানায় নিয়োজিত শ্রমিকের বয়স ৬০ (ষাট) বৎসর পূর্ণ হলে স্বাভাবিকভাবে অবসর গ্রহণ করবেন। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের সার্ভিস বইয়ে লিপিবদ্ধ জন্ম তারিখ উপযুক্ত প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে এবং আইনানুযায়ী সকল পাওনাদি পরিশোধ করা হবে।

৩। চাকুরী হতে ডিসচার্জ ঃ কারখানার রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক প্রত্যায়িত, শারীরিক বা মানসিক অক্ষমতা বা অব্যাহত ভগ্ন স¦াস্থ্যের কারনে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকুরীর অবসান হবে। এ ক্ষেত্রে ডিসচার্জকৃত শ্রমিককে আইনানুযায়ী সকল পাওনাদি পরিশোধ করা হবে।

৪। ছাঁটাই ঃ কোন প্রতিষ্ঠানে সার্বিক অথবা বিশেষ শ্রেণীতে প্রয়োজনীয় সংখ্যার চেয়ে শ্রমিক বেশী হয়ে গেলে (কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে না হয়ে তথা অপ্রয়োজনীয়তার কারনে) মালিক তার প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রমিক কাজে রেখে প্রয়োজনের অতিরিক্ত শ্রমিককে ছাঁটাই করতে পারবেন। ছাঁটাই-এর ক্ষেত্রে মালিক আইনানুযায়ী সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

৫। চাকুরী হতে বরখাস্ত ঃ অসদাচরনের কারনে মালিক কর্তৃক কোন শ্রমিকের চাকুরীর অবসান হবে। কোন শ্রমিককে বিনা নোটিশে বা নোটিশের পরিবর্তে বিনা মজুরীতে চাকুরী হতে বরখাস্ত করা যাবে, যদি তিনি-
ক) কোন ফৌজদারী অপরাধের জন্য দন্ডপ্রাপ্ত হন; অথবা
খ) অসদাচরণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন।
নি¤œলিখিত কাজগুলো অসদাচরণ বলে গণ্য হবে ঃ-
ক) উপরস্থের কোন আইনসংগত বা যুক্তিসঙ্গত আদেশ মানার ক্ষেত্রে এককভাবে বা অন্যের সঙ্গে সংঘবদ্ধ হয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্যতা;
খ) মালিকের ব্যবসা বা সম্পত্তি সম্পর্কে চুরি, আত্মসাৎ, প্রতারণা বা অসাধুতা;
গ) মালিকের অধীনে তার বা অন্য কোন শ্রমিকের চাকুরী সংক্রান্ত ব্যাপারে ঘুষ গ্রহন বা প্রদান;
ঘ) বিনা ছুটিতে অভ্যাসগত অনুপস্থিতি অথবা ছুটি না নিয়ে এক সঙ্গে দশ দিনের অধিক সময় অনুপস্থিতি;
ঙ) অভ্যাসগত বিলম্বে উপস্থিতি;
চ) প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য কোন আইন, বিধি বা প্রবিধানের অভ্যাসগত লংঘন;
ছ) প্রতিষ্ঠানে উচ্ছৃংখলতা, দাংগা-হাংগামা, অগ্নিসংযোগ, বা ভাংচুর
জ) কাজে কর্মে অভ্যাসগত গাফিলতি;
ঝ) প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত চাকুরী সংক্রান্ত, শৃঙ্খলা বা অসদাচরণসহ, যে কোন বিধির অভ্যাসগত লংঘন।
ঞ) মালিকের অফিসিয়াল রেকর্ডের রদবদল, জালকরণ, অন্যায় পরিবর্তন, উহার ক্ষতিকরণ বা উহা হারিয়ে ফেলা।

৬। বরখাস্ত, ইত্যাদি ব্যাতীত অন্যভাবে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকুরীর অবসান ঃ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ অনুযায়ী মাসিক মজুরীর ভিত্তিতে নিয়োজিত স্থায়ী শ্রমিকের ক্ষেত্রে ১২০ (একশত বিশ) দিনের এবং অস্থায়ী শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৩০ (ত্রিশ) দিনের লিখিত নোটিশ প্রদান করে চাকুরীর অবসান করতে পারবেন। আইনানুযায়ী সকল পাওনাদি পরিশোধ করা হবে।


Posted

in

by

Comments

3 responses to “শ্রমিক কর্তৃক চাকুরীর অবসান এবং চাকুরী হতে ডিসচার্জ পদ্ধতি”

Leave a Reply