লে-অফকৃত শ্রমিকগণের ক্ষতিপূরণ

লে অফ কি? লে অফ এর নিয়ম। শ্রমিকগণের ক্ষতিপূরণ কিভাবে দিতে হয়?

লে অফ কি?

লে অফ কি? কর্তৃপক্ষ এই মর্মে ঘোষনা করছে যে, অত্র প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত কাজের সময়সীমা ও অতিরিক্ত কাজের ঘন্টা নির্ধারন করে অতিরিক্ত কাজের জন্য মজুরী দেওয়া হয় এবং ইহা সর্বনিন্ম শিল্প মান ও বৈধ। নির্ধারিত এবং অনুমোদিত মজুরী থেকে জীবন যাত্রার ব্যয় সংকুলান করা না গেলে সে ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী অতিরিক্ত কিছু হস্তান্তর যোগ্য আয়ের ব্যবস্থা করা হয় এবং এক্ষেত্রে আই এল ও কনভেনশনের ২৬ ও ১৩১ ধারা অনুযায়ী শ্রমিকদের জীবন যাত্রার ব্যয় নির্বাহ করার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষতি পূরণের ব্যবস্থা করা হয়। অত্র কোম্পানীতে প্রত্যেকটা ফ্লোরের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রাথমিক চিকিৎসা বক্স রয়েছে। প্রতিটি বক্সের জন্য ০২ (দুই) জন করে প্রশিক্ষিত প্রাথমিক চিকিৎসক আছে। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধ চিকিৎসা বক্সে রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা বক্সের চাবি প্রাথমিক চিকিৎসক সংরক্ষন করে।

১. যে ক্ষেত্রে বদলী বা সাময়িক শ্রমিক নহেন এরূপ কোন শ্রমিককে, যাহার নাম কোন প্রতিষ্ঠানের মাস্টার রোলে অন্তভুক্ত আছে এবং যিনি মালিকের অধীন অন্ততঃ এক বৎসর চাকুরী সম্পূর্ণ করিয়াছেন, লে অফ করা হয়, তাহা হইলে মালিক তাহাকে, সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যতীত তাহার লে-অফের সকল দিনের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করিবেন।
২. উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হইবে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মোট মূল মজুরী এবং মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তবর্তী মজুরী, যদি থাকে, এর অর্ধেক এবং তাহাকে লে অফ করা না হইলে তিনি যে আবাসিক ভাতা পাইতেন, তাহার সম্পূর্ণ সমান।
৩. যে বদলী শ্রমিকের নাম কোন প্রতিষ্ঠানের মাস্টার-রোলের অন্তর্ভুক্ত আছে, তিনি এই ধারার প্রয়োজনে বদলী বলিয়া গণ্য হইবেন না যদি তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে এক বছর চাকুরী সম্পূর্ণ করিয়া থাকেন।
৪. মালিক এবং শ্রমিকের মধ্যে ভিন্নরূপ কোন চুক্তি না থাকিলে, কোন শ্রমিক এই ধারার অধীন কোন পঞ্জিকা বৎসরে পঁয়তাল্লিশ দিনের অধিক সময়ের জন্য ক্ষতিপূরণ পাইবেন না ।
৫. উপ-ধারা (৪) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি কোন পঞ্জিকা বৎসরে কোন শ্রমিককে অবিচ্ছিন্নভাবে বা বিচ্ছিন্নভাবে পঁয়তাল্লিশ দিনের অধিক সময়ের জন্য লে অফ করা হয়, এবং উক্ত পঁয়তাল্লিশ দিনের পর লে অফের সময় যদি আরোও পনের দিন বা তদূর্ধ্ব হয়, তাহা হইলে উক্ত শ্রমিককে, শ্রমিক এবং মালিকের মধ্যে ভিন্নরূপে কোন চুক্তি না থাকিলে, পরবর্তী প্রত্যেক পনের বা তদূর্ধ্ব দিনসমূহের লে-অফের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে।
৬. উপ-ধারা (৫) এ উল্লিখিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হইবে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মোট মূল মজুরী এবং মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তবর্তী মজুরী, যদি থাকে, এর এক-চতুর্থাংশ এবং যদি আবাসিক ভাতা থাকে, তাহার সম্পূর্ণ সমান।
৭. কোন ক্ষেত্রে যদি কোন শ্রমিককে কোন পঞ্জিকা বৎসরে উপরে উল্লিখিত প্রথম পঁয়তাল্লিশ দিন লে-অফের পর কোন অবিচ্ছিন্ন পনের দিন বা তদূর্ধ্ব সময়ের জন্য লে-অফ করিতে হয়, তাহা হইলে মালিক উক্ত শ্রমিককে লে-অফের পরিবর্তে ধারা ২০ এর অধীন ছাঁটাই করিতে পারিবেন।

মেডিকেল সুবিধা ঃ

অত্র কোম্পানীতে একটি মেডিকেল সেন্টার রয়েছে, যেখানে সকল শ্রমিকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। এখানে একজন রেজিষ্টার্ডকৃত মেডিকেল অফিসার, একজন মেডিকেল সহকারী ও কয়েকজন প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত নার্স রয়েছে।

গ্র“প বীমা ঃ

অত্র কোম্পানীতে নিয়োগকৃত প্রত্যেক শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা ডেল্টা লাইফ ইন্সূরেন্স কোম্পানী লিঃ এ গ্র“প বীমার আওতায় চলে আসে। চাকুরীরত অবস্থায় সকলেই আংশিক অক্ষমতায় এ সুবিধা পেয়ে থাকেন। এমনকি মৃত্যূ পরবর্তি তার নমিনিকে এই সুবিধা দেয়া হয়।

লে অফ এর নিয়ম – সংবাদ

লে অফ এর নিয়ম – করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি চলাকালে একের পর এক কারখানা লে অফ ঘোষণা এবং শ্রমিকদের যথেচ্ছ ছাঁটাই ও টার্মিনেট করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। শ্রম আইনের ধারা প্রয়োগ করে শিল্প মালিকরা অবৈধভাবে এমন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তাঁদের এই একতরফা পদক্ষেপ বন্ধে শ্রম আইনের লে-অফ (১২ ও ১৪ ধারা), ছাঁটাই (২০ ধারা) ও টার্মিনেশন (২৬ ধারা) সংক্রান্ত ধারা প্রয়োগের ক্ষমতা সাময়িক স্থগিত করার দাবি উঠেছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়েও বিষয়টি নিয়ে ভাবা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভারত, ইথিওপিয়া কভিড-১৯ সংক্রমণের এই সময়ে কারখানা লে-অফ ও জনবল ছাঁটাই করা সংক্রান্ত শ্রম আইনের ধারাগুলো সাময়িক স্থগিত করেছে। ওই সব দেশে মালিকপক্ষের বেআইনি পদক্ষেপ বন্ধ ও শ্রমিকদের রক্ষা করতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশেও সরকারের পক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্রম আইনের ৩২৪ ধারার ক্ষমতা প্রয়োগ করে এমন আদেশ দিতে পারেন। রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য সরকার এরই মধ্যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে মালিকপক্ষকে করোনাভাইরাস বিস্তারের এই সময়ে শ্রমিক ছাঁটাই বা কারখানা লে-অফ না করারও আহ্বান জানিয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও শ্রম মন্ত্রণালয়। এর পরও রাষ্ট্রীয় এই নির্দেশনা অমান্য করে মালিকরা কারখানা লে-অফ ঘোষণা করার মতো পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

বিজিএমইএর তথ্য মতে, এরই মধ্যে দেশের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কারখানা লে-অফ করা হয়েছে। সংগঠনটির সভাপতি ড. রুবানা হক কালের কণ্ঠকে বলেন, অধিকাংশ কারখানায় কাজ নেই। কাজ না থাকলে উদ্যোক্তারা কারখানা লে-অফ করবেন এটাই স্বাভাবিক। এই মুহূর্তে তাঁদের সদস্য এমন ৭০ শতাংশ কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়টায় শ্রমিকরা মোট মজুরির ৬০ শতাংশ পাবেন। তবে কর্মী ছাঁটাইয়ের হালনাগাদ পরিসংখ্যান তাঁদের হাতে নেই।

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, ‘পোশাক খাতের মালিকরা একটি কারখানা থেকে ২০টি কারখানা করেছেন। বিদেশে বাড়ি-করেছেন। দেশে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, অন্যান্য খাতের শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়েছেন। অথচ এই দুর্যোগের সময়ে তাঁরা ঢালাও শ্রমিক ছাঁটাই এবং কারখানা লে-অফ ঘোষণা করছেন। এমনকি সরকার ঘোষিত ছুটির সময়ে শ্রমিকদের মজুরিও কর্তন করা হচ্ছে। এটা অন্যায়, ও গর্হিত কাজ। এসব বন্ধে এখনই সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। নইলে বড় ধরনের সামাজিক সংকট তৈরি হবে।’

বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার বলেন, ‘সরকারের নির্বাহী আদেশ অমান্য করা এবং শ্রমিকদের অসহায় অবস্থায় ফেলে কারখানা মালিকরা যে সুযোগ নিচ্ছেন তা শোভনীয় নয়। মালিকদের এমন চাতুরী আর স্বেচ্ছাচারিতা তৈরি পোশাক শিল্প খাতে বড় ধরনের সংকট তৈরি করবে। আমরা মনে করিম সরকার, শ্রমিক সংগঠন ও মালিকপক্ষ ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে করে এসব বন্ধ করা উচিত।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তৈরি পোশাক খাতের মালিকদের এমন আচরণে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ও বিরক্ত। সরকারের নীতিনির্ধারক মহল মনে করছে, বিপুলসংখ্যক শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ফলে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হবে।

কলকারখানা প্রতিষ্ঠান ও পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায় বলেন, শ্রমিক ছাঁটাই ও ল -অফ করার মতো বিষয়গুলো সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। সম্প্রতি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় শ্রম অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সরকারকে তিনটি বিষয় বিবেচনায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তা হলো লে-অফ, ছাঁটাই ও টার্মিনেশনের ধারা সাময়িক অকার্যকর করা, বিধি-বিধান না মানা কারখানাগুলো বেআইনি ঘোষণা করা এবং সমস্যা সমাধানে স্বল্প পরিসরে সরকার, শ্রমিক—ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করে সমস্যার সমাধান করা।

সারাংসঃ

লে অফ কি? লে অফ এর নিয়ম শেষ


Posted

in

by

Comments

One response to “লে অফ কি? লে অফ এর নিয়ম। শ্রমিকগণের ক্ষতিপূরণ কিভাবে দিতে হয়?”

Leave a Reply