Select Page

অপচয় রোধ নীতিমালা

সূচনা  ঃ

জন্ম লগ্ন থেকেই অটো   গ্র“প কারখানার কর্মরত সকল শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ কর্ম পরিবেশ উপহার দেয়ার ব্যাপারে বদ্ধ পরিকর। অফিসে ব্যবহার্য্য যে কোন কাচাঁমাল, অন্যান্য বস্ত বা শক্তির অপচয় রোধের জন্য নিম্নে বর্ণিত নীতিমালা মেনে চলবে এ জন্য একটি সুষ্ঠু সুন্দর ও পরিপূর্ণ ‘বর্জ্য পরিত্যাজ্য নীতিমালা ও পদ্ধতি’ প্রণোয়ন এবং তা সঠিক ভাবে কার্যে পরিনত করতে  কর্তৃপক্ষ অঙ্গীকারাবদ্ধ। Read More in English  …

নীতিমালা প্রনয়নের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঃ

কাজের প্রয়োজনে এখানে প্রতিনিয়ত যে সকল বর্জ্য উৎপন্ন হয় তা স্বাস্থ্য সম্মতভাবে নিষ্কাশন করার বাস্তব সম্মত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতিকে সামনে রেখে নিম্নবর্নিত বিষয়গুলির আলোকে ব প্রনয়ন ও তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সমস্ত সামগ্রী ও বস্তুর অপচয় রোধ কল্পে নিু লিখিত নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে. নীতিমালা প্রয়োগ ও মূল্যায়ন পদ্ধতি/ প্রক্রিয়া: নিম্নে বর্জ্য অপসারনের নিয়মাবলীগুলো দেয়া হলো:

খালি কেমিক্যালের ড্রাম:

অটো  গ্র“পে কাজের প্রয়োজনে বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। এই কেমিক্যালগুলো যে ড্রামে রাখা হয় তা ব্যবহারের পর খালি হয়ে গেলে খালি কেমিক্যালের এর ড্রাম ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ভালভাবে ধৌত করা হয়। ধৌত করার পর অবশিষ্ট কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি  ইটিপির পানিতে ফেলে পরিশোধনের মাধ্যমে সুয়ারেজ লাইনের মধ্য দিয়ে নিরাপদ স্থানে ফেলা হয়। পরিষ্কার শেষে কেমিক্যাল ড্রামগুলো একটি নির্দিষ্ট স্থানে (ঢাকনা যুক্ত) রাখা হয়। পরবর্তীতে তা সঠিক উপায়ে ডিসপোস করার জন্য সাপ্লায়ার এর সাথে অটো  এর লিখিত চুক্তিনামা রয়েছে যারা মাসান্তে অন্তত একবার এসে খালি কেমিক্যাল এর ড্রামগুলে নিয়ে যায়।

মেডিকেল বর্জ্য :

আল মসলিম গ্র“পেধারালো বর্জ্য যেমন সিরিজ্ঞ, নিডের, কাচের বোতল ইত্যাদি ডিসপোস করার জন্য কর্তৃপক্ষের অপসো স্যালাইন কোং লি: এর সাথে চুক্তি রয়েছে, যার ভিত্তিতে তারা প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর তারা এসব বর্জ্য সরবরাহ করে ডিসপোস করে থাকে। এছাড়াও গজ, ব্যান্ডেজ ও অন্যান্য বর্জ্য ডিসপোস করার জন্য ল্যাব জোন প্রা: লি: ক্লিনিকের সাথে কর্তৃপক্ষের চুক্তি আকার কারনে তারা সেগুলো সংগ্রহ কওে ডিসপোস করার ব্যবস্থা কওে থাকে।

খালি ডিজেলের ড্রাম:

ডিজেল ব্যবহারের পর খালি ড্রামগুলো একই নিয়মে পরিশোধনের মাধ্যমে  নির্দিস্ট স্থানে রাখা হয় যা একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সাপ্লায়ারের প্রতিনিধি এসে নিয়ে যায়।

ময়লা আবর্জনা পরিত্যাজ্য পদ্ধতিঃ

ফ্লোরের সকল ময়লা আবর্জনা ক্লিনারদের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পরিস্কার করা হয়। জমাকৃত ময়লা আবর্জনা ডাক্টের সাহায্যে নীচে ঝুটঘরে ফেলা হয়। ঝুটঘর থেকে প্রত্যেক সপ্তাহে  অপসারনের ব্যবস্থা করা হয়।

পানীয়/তরল বর্জ্য পরিত্যাজ্য পদ্ধতিঃ

পয়ঃনিষ্কাশনের পানি, ব্যবহারের পানি, স্বাভাবিক নিষ্কাশনের পানি, স্যানিটেশনের পানি সহ সকল ময়লা পানি সুয়ারেজ লাইনের মাধ্যমে প্রবাহিত করা হয়।

ডাস্ট/পরিত্যাক্ত খাবার/ আবর্জনা/পরিত্যাক্ত কাগজঃ এগুলো ফ্লোরে রক্ষিত ডাস্টবিনে জমা করা হয় এবং দিন শেষে এগুলো কারখানার বাহিরে নিদির্ষ্ট গর্তে ফেলে দেওয়া হয়।

প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য পরিত্যাজ্য পদ্ধতিঃ

খালি বোতল/কন্টেইনার/পরিত্যাক্ত প্লাস্টিক এগুলো নির্দিষ্ট জায়গায় জমা করা হয়। অতপর ঐ সকল লুজ কন্টেইনার ছিদ্র করার পর অপসারনের ব্যবস্থা করা হয়।

কাঠ জাতীয় বর্জ্য পরিত্যাজ্য পদ্ধতিঃ

কাঠের ভাঙ্গা চেয়ার টেবিল, বিভিন্ন আসবাবপত্র প্রথমতঃ মেরামত করা হয়, যে গুলো মেরামত করা সম্ভব নয় সেগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে অপসারনের ব্যবস্থা করা হয়।

মেটাল জাতীয় পরিত্যাজ্য পদ্ধতিঃ

ভাঙ্গা আয়রন, রড, অব্যবহৃত যন্ত্রপতি, কাটার, সিজার ইত্যাদি মেটাল জাতীয় পদার্থ সাময়িকভাবে  ধাতব নিরাপত্তা বাক্সে  জমা করা হয় এবং পরবর্তীতে এগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে অপসারনের ব্যবস্থা করা হয়।

ফেব্রিক্স ও এ্যাকসেসরিজ ওয়েষ্টেজ পরিত্যাজ্য পদ্ধতিঃ কার্টুন,বাটন,হ্যাঙ্গার,ফেব্রিক্স,পলি,জিপার ইত্যাদি এ্যাকসেসরিজ আইটেমের ওয়েষ্টেজ মালামাল কেন্দ্রিয় ওয়েষ্টেজ স্টোরে জমা করা হয় এবং পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ভাবে অপসারনের ব্যবস্থা করা হয়।

অন্যান্য বর্জ্য পরিত্যাজ্য পদ্ধতিঃ

ফিউজ, টিউব, ভাঙ্গা গ্লাস ইত্যাদির বর্জ্য সাময়িকভাবে ওয়েষ্টেজ স্টোরে জমা করা হয় এবং পরবর্তীতে কেন্দ্রীয়ভাবে অপসারনের ব্যবস্থা করা হয়।

নীতিমালা সম্পর্কে অবহিত করন/ যোগাযোগঃ এই পলিসি সকলের অবগতির জন্য অত্র কারখানায় রয়েছে মিটিং ও বিভিন্ন প্রকার  মোটিভেশনাল ট্রেনিং এর ব্যবস্থা । এছারাও এই পলিসি যাতে কারখানার সব জায়গায়, সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী, বিশেষত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সকলেই যাতে অবগত হতে পারেন তার জন্য সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে ঘোষনা, কারখনার নোটিশ বোর্ডে  পলিসি প্রদর্শন , ব্যানার, প্রশিক্ষণ ইত্যাদির মাধ্যমে অবহিত করা হয়।

পানি  ঃ-

  • বিশুদ্ধ পানি শুধুমাত্র পান করার জন্য এবং পানি যেখানে সেখানে ফেলবেনা। হাত-মুখ ধোয়ার জন্য ওয়াশ রুমের বেসিন ট্যাপের পানি ব্যবহার করবে। গ্লাস ধোয়ার জন্য অতিরিক্ত পানি নষ্ট করবেনা। পানির ট্যাপ অবশ্যই ওয়াশ শেষে বন্ধ করবে।
  • বিশুদ্ধ পানি পান করবে এবং পানি যেখানে সেখানে ফেলবে না। গ্লাস ধোয়ার জন্য অতিরিক্ত পানি নষ্ট করবে না। পানির টেপ অবশ্যই ব্যবহারের পরে বন্ধ করে রাখবে।
  • বাথরুমের পানির কলগুলি ব্যবহারের পর অবশ্যই বন্ধ করে দিবে এবং কোথাও পানির পাইপে লিক দেখলে এইচ,আর বিভাগে জানাবে।
  • হাত ধোয়ার বেসিনে এবং ডাইনিং হলে ব্যবহারের পর পানির টেপ অবশ্যই বন্ধ করে দিবে।

বিদ্যুৎ  ঃ-

  • যেখানে যতটুকু বিদ্যুতের প্রয়োজন ততটুকু বিদ্যুৎই ব্যবহার করবে। অপ্রয়োজনে বাতি, ফ্যান, এ.সি. চালু/খোলা রাখবে না।
  • মেশিনের সুইচ অন রেখে মেশিন থেকে উঠবেনা, মেশিন ছাড়ার সময় অবশ্যই সুইচ অফ করবে। কখনো মেশিনের সুইচ অন করে মেশিন ত্যাগ করবে না। মেশিন হতে উঠে গেলে অবশ্যই মেশিনের বিদুৎ কানেকশন অফ করে দিবে।
  • ছুটির পরে বা লাঞ্চে ব্রেকের সময় অবশ্যই বাতি, ফ্যান অফ করে দিবে যাতে অযথা বিদ্যুঃ ব্যয় না হয়।
  • সাধারণ বৈদ্যুতিক বাল্বের বদলে সম্ভব হলে এনার্জি সেভার বাল্ব ব্যবহার করতে হবে।

কাপড়  ঃ-

  • ওকোটেক্স সার্টিফাইড ফ্যাক্টরী থেকে সুতা নিতে হবে। বিশেষ ক্ষেত্রে ওকোটেক্স সার্টিফিকেট না থাকলে অতঙ ঋৎবব ল্যাব থেকে সুতা টেষ্ট করিয়ে নিতে হবে।
  • কাপড় কাটার পূর্বে মার্কিং ঠিক মত কাপড়ের সাথে বসেছে কিনা তা নিশ্চিত কর যাতে অযথা কাপড় নষ্ট না হয়।
  • সুতার কাউন্ট ঠিক আছে কিনা যাচাই করে নিতে হবে। কাপড় কাটার সময় ধীরে কাপড় কাটবে যাতে কাপড় নষ্ট না হয়।
  • কাপড় লে করার সময় সঠিক মাপ দিয়ে লে করবে যেন অযথা কাপড় অপচয় না হয়।
  • সুতার শেড ঠিক আছে কিনা যাচাই করে নিতে হবে।

একসেসরিজ  ঃ-

  • কাপড়ে একসেসরিজ লাগানোর পূর্বেই এর সঠিট রং, সাইজ ও অন্যান্য জিনিস নির্ধারিত করে একসেসরিজ লাগাবে যাতে ভুল না হয় এবং বেশি না লাগে বা না বদলাতে হয়।
  • এক্সেসরিজ ব্যবহারের পূর্বেই এর সঠিক রং, সাইজ ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে ব্যবহার করতে হবে যাতে ভূল না হয় এবং এক্সেসরিজ বেশী না লাগে বা বদলাতে না হয়।
  • অতিরিক্ত একসেসরিজ গুলি যাতে এখানে সেখানে না পড়ে থাকে এবং এগুলি নির্দিষ্ট একটি পাত্রে রেখে পূণঃ ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে।

বস্তুর পুনঃ ব্যবহার ঃ-

  • ফ্যাক্টরীর অনেক জিনিস বা বস্তু আছে যা পূনঃ ব্যবহার করা যায়। সুতরাং ঐ গুলি যাতে পুনঃ পুনঃ ব্যবহার করা যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। যেমন-সূতা, গামটেপ, পলিথিন ইত্যাদি।
  • সুতা, গামটেপ, পলিথিন ইত্যাদি ব্যবহারের পর পুনরায় ব্যবহারের সুযোগ থাকে, তাই এগুলো পূন:ব্যবহার করার ব্যবস্থা করতে হবে।
  • কাগজ অবশ্যই উভয় পৃষ্টা ব্যবহার করবে (যখন সম্ভভ)।
  • সম্ভব ক্ষেত্রে কাগজের উভয় পৃষ্ঠা ব্যবহার করতে হবে।

ফিডব্যাক ও কন্ট্রোল ঃ

নীতিমালা তৈরীর মূল লক্ষ্যই হচ্ছে নীতিমালার সুষ্ঠু প্রয়োগ। আর অটো  গ্র“প নীতিমালা তৈরী ও তার সঠিক প্রয়োগ উভয় বিষয়েই সজাগ ভূমিকা পালন করে। তাই এই পলিসি বাস্তবায়নের পথে যদি কোন বাধা উপস্থিত হয় সেক্ষেত্রে কার্যকরী পরিষদের সদস্যবৃন্দ এমনকি প্রয়োজনে মাননীয় ব্যবস্থাপকের ও হস্তক্ষেপ অর্ন্তভূক্ত করা যেতে পারে।

পরিশিষ্ট:

গোটা বিশ্ব যেখানে পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলনের মিছিলে সামিল, পরিবেশকে বাঁচাতে মরিয়া সেখানে আল মুসলেম গ্র“প বসে থাকবে কেন? তাই অটো  গ্র“প  নিজ অবস্থানে থেকে শুধুমাত্র কোম্পানীর অভ্যন্তরীন পরিবেশ নয়, সামগ্রিক পরিবেশের কথা বিবেচনা করে এই পলিসি প্রনোয়ন ও তার বাস্তবায়নে সদা সচেতন।