Select Page

এইচ আই ভি এইডস প্রতিরোধ নীতিমালা

নীতিমালা প্রনয়নের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:

এইচ আই ভি এইডস প্রতিরোধ নীতিমালা বিস্তারিত বর্ণনা – এইডস (এইচ আই ভি পজিটিভ ) একটি মরন ব্যাধি। এই ভাইরাস মানব শরীরে প্রবেশ করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায় এবং আক্রান্ত ব্যাক্তি নিশ্চিত মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। তাই অত্র কোম্পানীতে কর্মরত শ্রমিক/কর্মচারীদের এইচ আই ভি/এইডস সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে এই নীতিমালা প্রনয়ন করা হল।  Check Also English Version

ঐওঠ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানুষের  AIDS  রোগ হয়। AIDS  একটি রক্তবাহী রোগ। AIDS  রোগে আক্রান্ত হলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। AIDS  হলে মৃত্যু অনিবার্য। AIDS  এর প্রতিরোধ ব্যবস্থা এখনো আবিষ্কার হয়নি। এই ভয়ংকর রোগের লক্ষন, কিভাবে ছড়ায়, কিভাবে ছড়ায় না এবং এর প্রতিরোধের ব্যবস্থা সম্মন্ধে নিম্নে আলোচনা করা হইলঃ …

AIDS  রোগের লক্ষন সমূহ ঃ

  • শরীরের ওজন ধীরে ধীরে কমে যাওয়া
  • এক মাসের বেশী ডায়রিয়া হওয়া
  • এক মাসের বেশী কাশী থাকা
  • এক মাসের বেশী জ্বর থাকা
  • সমস্ত শরীরে চর্ম রোগ দেখা দেয়া
  • মুখ অথবা গলায় সাদা আবরন যুক্ত ক্ষত চিহ্ন দেখা দেয়া

নীতিমালা প্রণোয়ণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি:

যেকোন রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধেই উত্তম। আর এইডস রোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায় হলো সচেতনতা। এ লক্ষ্যে অত্র কোম্পানীতে কর্মরত সকল মহিলা ও পুরুষ শ্রমিককে এইডস রোগ প্রতিরোগ এর উপায় সম্পর্কে জানিয়ে বিভিন্ন মিটিং করানো হয়। পুরুষ শ্রমিকদের কে পুরুষ অত্র কোম্পানীর মেডিকেল বিভাগ এ সম্পর্কে খুবই তৎপর ভূমিকা পালন করে। মেডিকেল বিভাগের নার্স, ডাক্তার ও মেডিকেল সহকারীগন সর্বদাই শ্রমিকদেও স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে সচেতন করে থাকে। এইডস প্রতিরোধ প্রসঙ্গে  শ্রমিকদের যে সকল বিষয়ে অবগত করা হয়:

 যে সকল ঝুকি পূর্ণ আচরনের জন্য এইডস হতে পারে ঃ

  • এইচ আই ভি /এইডস আক্রান্ত ব্যাক্তির সাথে যৌন মিলনের মাধ্যমে।
  • একাধিক যৌন সঙ্গী থাকা।
  • এইচ আই ভি /এইডস আক্রান্ত ব্যাক্তির রক্ত বা অন্য কোন অঙ্গ- প্র তঙ্গ শরীরে গ্রহন করলে ।
  • এইচ আই ভি এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত ইনজেকশনের সিরিঞ্জ, সূচ এবং অপারেশন এর যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে।
  • শিরার মাধম্যে নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহন করলে ।
  • আক্রান্ত মায়ের সন্তান গর্ভবস্থায় /প্রসবকালীন সময় বা বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়ও এইডস হতে পারে।

যে সকল কারনে এইডস ছড়ায় না ঃ

  • এইডস রোগীর সাথে স্বাভাবিক মেলামেশা ,চলাফেরা ও কাজ কর্মের মাধ্যমে।
  • আক্রান্ত ব্যাক্তির কাপড়, বিছানাপত্র, থালা বাসন ব্যবহার করলে।
  • বাতাস, পানি, খাদ্য, হাচি, কাশি, থু-থু বা শ্বাস- প্রশ্বাসের মাধ্যমে।
  • একই টয়লেট বা বাথরূম ব্যবহার করলে।
  • মশা বা অন্যকোন পোকা মাকড় কামড়ালে ।
  • একই পুকুরে সাতার কাটলে ।

এইডস  প্রতিরোধের  উপায় ঃ

  • ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা
  • শরীরে রক্ত গ্রহনের পূর্বে ঐ রক্তে এইচ আই ভি ভাইরাস আছে কিনা তা পরীক্ষা করা
  • অন্যের ব্যবহৃত সুচ, ক্ষুর, কাটার সিজার ইত্যাদি ব্যবহার না করা
  • সল্য চিকিৎসার যন্ত্রপাতি দুষনমূক্ত করে ব্যবহার করতে হবে
  • সামাজিক সচেতনতা
  • নারী পুরুষের যৌন মিলনে সাবধানতা অবলম্বন করা।
  • ধর্মীয় অনুশাসন মেনে একাধিক যৌন সঙ্গীর পরিবর্তে কেবল স্বামী/স্ত্রীর সাথে যৌন মিলন ।
  • যদি স্বামী/স্ত্রী কারো শরীরে এইচ আই ভি থাকে তবে প্রতিবার যৌন মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করতে হবে।
  • শরীরে অঙ্গ-প্রতঙ্গ গ্রহনের পূর্বে দাতার রক্তে এইচ আই ভি আছে কিনা তা পরীক্ষা করে নিতে হবে ।
  • একবার মাত্র ব্যবহার করা যায় এমন সূঁচ সিরিঞ্জ দিয়ে ইনজেকশন নিতে হবে ।
  • অন্যের ব্যবহৃত ইনজেকশনের সূঁচ, সিরিঞ্জ, ব্লেড, কাঁচি, ক্ষুর ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না ।
  • শল্য চিকিৎসার যন্ত্রপাতি দূষন মুক্ত, পরিষ্কার ও যথাযথ ভাবে জীবানুমুক্ত করে ব্যবহার করতে হবে।
  • আক্রান্ত মা সন্তান নিতে চাইলে বা শিশুকে বুকের বুকের দুধ খাওয়াতে চাইলে স্বাস্থ্য কর্মীর পরামর্শ ।

এইডস একটি ঘাতক ব্যাধি তবে ছোঁয়াচে নয় । শুধু আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যে কোন ধরনের যৌন মিলন এবং রক্তের মাধ্যমে এইডস হতে পারে । কোন ব্যাক্তির এইডস হয়ে থাকলে তাকে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে হবে এবং তার সাথে স্বাভাবিক আচরন করতে হবে। এইডস ভাইরাস যাতে সংক্রমিত হতে না পারে সে জন্য সকলের সচেতন হওয়া পয়োজন এবং এ বিষয়ে সকলকে সচেতন করা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব  ও কর্তব্য ।

উল্লেখ্য যে, কোন এইডস আক্রান্ত রোগীকে অটো  গ্রুপে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন বিধি-নিষেধ নেই। বরং এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কাজে নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে কোন ধরনের বৈষম্যমূলক আচরন করা যাবে না।

কার্যকরী প্রক্রিয়া ও অনুমোদনঃ

উল্লেখিত নীতিমালা নিয়মতান্ত্রিকভাবে কার্যকরী রাখার ক্ষমতা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে উল্লেখিত পর্ষদ এই নীতিমালা প্রয়োগ ও চলমান রাখতে নীতিগতভাবে দায়বদ্ধ।

নীতিমালা সম্পর্কে অবহিত করন/ যোগাযোগ ঃ

এই পলিসি যাতে কারখানার সব জায়গায় ও সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীকে কারখানার সাউন্ড সিস্টেম, মেডিকেল অফিসার, নার্স, মেডিকেল এসিসট্যান্ট, প্রাথমিক চিকিৎসক, শ্রমিক প্রতিনিধি, নোটিশ বোর্ড, মিটিং, ট্রেনিং এর মাধ্যমে অবহিত করা হয়।

AIDS  কিভাবে ছড়ায় ঃ

  • AIDS  আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যৌন মিলনের মাধ্যমে
  • AIDS  আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, ইনজাকশনের সূঁচ এবং অপারেশনের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে
  • যে সমস্ত গর্ভবতী মায়েদের শরীরে AIDS   আছে সেই সব মায়েদের কাছ থেকে – ক) গর্ভাবস্থায় খ) প্রসবের সময় গ) দুধ পান করালে শিশুর শরীরে এ রোগ ছড়াতে পারে।

AIDS  কিভাবে ছড়ায় না ঃ

  • এক সাথে এক ঘরে বসবাস করলে
  • এক সাথে খাওয়া দাওয়া করলে
  • এক সাথে খেলাধুলা করলে
  • একই বিছানায় ঘুমালে
  • একই স্কুলে পড়াশোনা করলে
  • মশা বা পোকামাকড় কামড়ালে
  • শারীরিক স্পর্শ, যেমন – হাত মেলানো, কোলাকুলি বা সামাজিক চুম্বন করলে ( তবে একজনের মুখের থুথু বা লালা অন্যের মুখে / শরীরে না লাগাই ভাল।)
  • হাঁচি, কাশি, থুথু বা শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে
  • একই টয়লেট বা পায়খানা বা বাথরুম ব্যবহার করলে।
  • একই সাথে একই পুকুরে গোছল করলে AIDS  ছড়ায় না।

ফিডব্যাক ও কন্ট্রোল ঃ

সচেতন করার লক্ষ্যে পলিসি বাস্তবাযণের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি সদা তৎপর ও বদ্ধ পরিকর। এরপরও যদি পলিসি বাস্তবায়ন না হয় বা বাস্তবায়নের পথে কোন বাধাঁর সস্মুখীন হয়, তবে সদা নিয়ন্ত্রন করার জন্য গঠিত কমিটি সার্বিক পদক্ষেপ গ্রহন করে থাকেন।

পরিশিস্টঃ

এইডসএকটি ঘাতক ব্যাধি যা নির্মূল করতে আমাদের সকলের সচেতনতাই যথেষ্ট। পরিশেষে বলা যায় এইডস যেহেতু মরন ব্যধি তাই সকলকে সচেতন থাকতে হবে যেন এই মরন ব্যধি কাউকে ছোবল মারতে না পারে।