কর্ম দক্ষতা মূল্যায়ন নীতিমালা
কর্তৃপক্ষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, সকল কর্মীদের যেন সঠিক মূল্যায়ন হয় এবং তাদের নিজ নিজ কর্মদক্ষতা অনুযায়ী পুরস্কৃত করা হয়। মূল্যায়ন পদ্ধতি বর্ণ, গোত্র, ধর্ম, লিঙ্গ, পদবী অথবা স্থান নির্বিশেষে সকলের জন্য অবশ্যই এক হতে হবে। কর্মদক্ষতা অনুযায়ী মূল্যায়ন হলো ব্যক্তিগত দক্ষতা মূল্যায়নের সর্বোৎকৃষ্ট পদ্ধতি। কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র অসাধারন পারফরমারদেরকেই মূল্যায়নে বিশ্বাস করেন না, তদসঙ্গে খারাপ পারফরমারদেরকেও শিক্ষা এবং প্রশিক্ষনের মাধ্যমে একটি দক্ষ জনবল তৈরী করতে পদক্ষেপ নেয়। প্রতি বছর সঠিক মূল্যায়নের জন্য একটি সহজ কিন্তু নিয়মতান্ত্রিক এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। কর্তৃপক্ষ মনে করে একজন কর্মীর বার্ষিক মূল্যায়ন কখনই মূল্যায়নের সময় বিস্ময়কর বা চমকপ্রদ হওয়া উচিত নয়। যে কাজ একজন কর্মীকে করতে হবে তা তার কাছে পরিস্কার থাকা উচিত। মাঝে মাঝে কর্মীকে তার কর্মদক্ষতা সম্পর্কে অবগত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত কর্মীকে তার ভালো বা খারাপ কাজের জন্য পরামর্শ ও উপদেশ দেয়া উচিত। প্রতিটি কর্মীর উল্লেখযোগ্য কর্মদক্ষতা নোট করে সংরক্ষণ করা উচিত এবং চুড়ান্ত মূল্যায়নের সময় সারা বছরের মূল্যায়নের রেকর্ড দেখা উচিত। কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন পদ্ধতিতে যেসব বিষয়ের উপর জোর দেয়া হয় যেগুলো সম্পর্কে প্রতিটি কর্মীর সুস্পষ্ট ধারণা থাকা উচিত।
কাজের মূল্যায়ন পদ্ধতির স্বচ্ছতা। কাজের মূল্যায়ন পদ্ধতিকে ফলপ্রসু করতে হলে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, এই পদ্ধতির স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে। স্বচ্ছতা বজায় রাখার একমাত্র উপায় হচ্ছে এই পদ্ধতির খুটিনাটি মূল্যায়নকারী ও যাকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে তাকে বুঝাতে হবে এবং তাদের সকল সন্দেহ দুর করতে হবে। কর্তৃপক্ষ স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অনুসরন করেনঃ
- সকল সুপারভাইজার, লাইন চীফ, ম্যানেজমেন্ট স্টাফ এবং সকল শ্রমিককে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে বর্তমান কর্ম মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত করেন।
- সকল সুপারভাইজার, লাইন চীফ এবং অন্যান্য মূল্যায়নকারীদের এই মর্মে নির্দেশ দেয়া হয়, যেন তারা কর্ম মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কোনরূপ পার্থক্য না করেন।
- কাজের মূল্যায়নকারী এবং যার মূল্যায়ন করা হচ্ছে এ দুজনের আলোচনা সাপেক্ষে প্রত্যেকের মূল্যায়ন হতে হবে।
- যার মূল্যায়ন করা হচ্ছে তার যদি কোন ভূল বা দুর্বলতা থাকে তবে তা শুধুমাত্র বার্ষিক মূল্যায়নের সময় না জানিয়ে তাকে নিয়মিতভাবে সারা বছর ধরে জানাতে হবে।
- চুড়ান্ত মূল্যায়নের সময় এই রেকর্ড ব্যবহার করা হবে।
- যাদের মূল্যায়ন করা হয় তাদেরকে নিয়মিতভাবে অগ্রগতির জন্য পরামর্শ দিতে হবে।
নিম্নে একটি বিশদ মূল্যায়ন নির্দেশনা দেয়া হলো যা মূল্যায়নকারী ও যাকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে উভয়কেই মূল্যায়ন পদ্ধতি ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করবে।
বিষয় — মূল্যায়নের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় — তথ্যের উৎস — মোট নম্বর
প্রতি ঘন্টায় উৎপাদন — উৎপাদন ক্ষমতার ভিত্তিতে কাজের মূল্যায়ন।—দৈনিক ফ্যাক্টরী প্রোডাকশন রিপোর্টে লিপিবদ্ধ থাকে। — ২০
উৎপাদন কোয়ালিটি—– কাজের ভূল, ভূল করার জন্য দেয়া ওয়ার্নিং এর সংখ্যা, কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ী প্রোডাকশন এর মান বজায় না রাখা, বাতিল এর পরিমান ইত্যাদি। —- এরিয়া রেকর্ড, নিজস্ব রেকর্ড, ইন্সপেকশন কিউ.সি রেকর্ড। — ২০
নিরাপত্তা —-=নিরাপত্তা জ্ঞান, ঘটনার সংখ্যা, সদস্যদের জ্ঞান দান ইত্যাদি। —- পরিদর্শন এবং বিভিন্ন ঘটনার সংরক্ষিত রিপোর্ট। — ২০
নিয়মানুবর্তিতা — দেরীতে আসা, আগে-যাওয়া, শিফট্ চলাকালে অনুমতি ব্যতিত প্রস্থান, কোম্পানি কর্তৃক অনুমোদিত ছুটির চেয়ে বেশী ছুটি নেয়া, আগে থেকে না জানিয়ে ছুটি নেয়া কোম্পানীর সকল নিয়ম-কানুন মেনে না চলা, সহকর্মী বা অন্যান্যদের সাথে ঝগড়া বিবাদ ইত্যাদি। — উপস্থিতি এবং ছুটির রেকর্ড এবং পর্যবেক্ষন। ১৫
ব্যবহার—-দায়িত্বশীল, নিজ থেকে এগিয়ে আসা, সহযোগিতা করা সাধারণ আচার-আচরণ ইত্যাদি। — পর্যবেক্ষণ এবং অন্যান্যদের মতামত। —১৫
পরিচর্যা —কার্যক্ষেত্রে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, দৈনিক পরিস্কার কার্যাবলী, ওয়ানিং এর সংখ্যা ইত্যাদি। — পরিদর্শন এবং দৈনিক যোগাযোগ। — ১০
মোট = ১০০
এটা উল্লেখ করা নি¯প্রয়োজন যে, প্রশিক্ষণ কর্মচারীর দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং তার পূর্বের অভিজ্ঞতার সাথে আরো বেশি অভিজ্ঞতা যোগ হয় যা তার বর্তমান জীবিকাকে সুসজ্জিত করে এবং আরো উন্নত মানের জীবিকা ও অধিক দায়িত্ব নিতে সাহায্য করে। গ্র“প কর্তৃপক্ষ এই জনউন্নয়ন নীতিমালা মূল্যায়নে ব্যতিক্রম নয়। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। ফ্যাক্টরীর মানব সম্পদ বিভাগে রয়েছে সুগঠিত ও উচ্চমান সম্পন্ন প্রশিক্ষণ শাখা, যারা বিভিন্ন কার্যক্রমের উপর নীতিমালা এবং ট্রেনিং মেটেরিয়াল তৈরী করে থাকে। ট্রেনিং শাখা কারখানা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বিভিন্ন শাখার শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের ট্রেনিং এর প্রয়োজনীয়তা নির্ধারন করে এবং অভ্যন্তরীন ও বাহ্যিক সম্পদের সাহায্যে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করে। ট্রেনিং শাখার কার্যক্রম শুধুমাত্র কারিগরী বিষয়ে ট্রেনিং এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, উপরন্ত কমপ্লায়েন্স এবং হিউম্যান রাইটস, আচরন বিধি, স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতা, পরিবেশ দুষণ এবং অন্যান্য সামাজিক সচেতনতা যেমন পরিবার পরিকল্পনা, এইডস, আর্সেনিক দূষণ, ডেঙ্গুজ্বর, ডাইরিয়া, শিশু পরিচর্যা এবং অন্যান্য ছোঁয়াচে রোগের উপর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করে।