যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা
আগুন থেকে যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা রাখার নিয়ম। উল্লেখিত বিষয়াদী নিশ্চিত করবেন এবং কারখানায় কর্মরত সকল শ্রমিক/কর্মচারীর অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করনের লক্ষে অগ্নি প্রতিরোধক দলকে সার্বিক নির্দেশনা প্রদান করে নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করনে আন্তরিক থাকবেন। যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য কারখানা নিম্নোলিখিত পদক্ষেপ গ্রহন করবে ঃ …
সেলাই মেশিন ঃ
অগ্নিকান্ডের ইতিহাস পর্যালোচনা করে সংঘটিত ভয়াবহতম কিছু অগ্নিকান্ডে জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির কারনে আল মুসলিম গ্রপ কর্তৃপক্ষ অগ্নি দুর্ষটনা প্রতিরোধ এবং সম্পদ ও জীবন রক্ষার জন্য হাতে নিয়েছেন বিশেষ ব্যবস্থা । জরুরী সময়ে বিদ্যূৎ সরবরাহ যেন বন্ধ করা যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। মেইন পাওয়ার সুইচ সহজে নাগাল পাওয়া যায় এমন স্থান ও স্পষ্ট চিহ্ন দিয়ে রাখতে হবে। অন্য সব সুইচের কোনটা কি নিয়ন্ত্রন করে তার লেবেল লাগাতে হবে।
- সকল সেলাই মেশিনে নিম্নলিখিত জিনিসগুলো থাকবে ঃ
- পুলি কভার
- বেল্ট কভার
- নিডল গার্ড
- আই গার্ড
- কারখানা এটা নিশ্চিত করবে যে, উপযুক্ত নিরাপত্তামূলক জিনিস ছাড়া ফ্লোরে/ লাইনে কোন মেশিন থাকবে না।
- কারখানায় সকল নিরাপত্তামূলক জিনিসের মজুদ থাকব
- কারখানা নিশ্চিত করবে যে, মেশিন বেডে কোন ভাঙ্গা নিডল থাকবে না।
নিডল ঃ
অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য দায়িত্বশীল ব্যাক্তিদের সনাক্ত করতে ‘ইউনিফর্ম ’ দিতে হবে। প্রতিমাসে অগ্নি মহড়ার পর সাব-কমিটির সদস্যরা একবার মিলিত হবে এবং রেকর্ড সংরক্ষন করবে।
১৬.ফায়ার চীফঃ প্রতি মাস অন্তর অ
- কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক কারখানা ভাঙ্গা নিডলের রেজিষ্টার রাখবে।
- ভাঙ্গা নিডলের সকল অংশ জমা দেবার পূর্ব পর্যন্ত কারখানা নতুন নিডল ইস্যূ করবে না।
- পূর্বের ইস্যুকৃত সকল নিডলের হিসাব না পাবার পূর্ব পর্যন্ত স্টোর নতুুন নিডল ইস্যু করবে না।
- পি.এম. স্বাক্ষরিত এস. আর. এর মাধ্যমে সকল নতুন নিডল ইস্যু করা হবে।
- ভাঙ্গা নিডলের রেজিষ্টার প্রতিদিন পি. এম. স্বাক্ষর করবে।
- ভাঙ্গা নিডলের সকল অংশ সংগ্রহের জন্য কারখানা একটি হস্তচালিত নিডল ডিডেক্টর দিবে।
কাটিং মেশিন ঃ
কাটার সময় নিরাপদভাবে মেশিন ঘুরাবার জন্য কাটিং টেবিলের উপরের স্থায়ীতারের সাথে কাটিং মেশিন সংযুক্ত করতে হবে।
কাটার সময় মেশ্/ ধাতব মোজার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
ছুরি ইস্যু ও ব্যবহার শেষে স্টোরে ফেরত দেয়া নিশ্চিত করার জন্য রেকর্ড সংরক্ষন করতে হব্
বয়লার রুম/ স্টিম লাইন ঃ
- মেরামত ও সংরক্ষনের জন্য পর্যাপ্ত স্থানসহ একটা সংরক্ষিত এলাকায় বয়লার স্থাপন করতে হবে।
- ৬০ কেজি/ ২২.৭ লিটারের বেশী ধারন ক্ষমতাসম্পন্ন বয়লারের ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সার্টিফিকেট নিতে হবে এবং নবায়ন করতে হবে।
- পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, বাষ্পীয় চাপ, বৈদ্যুতিক সংযোগ, গ্যাসের ছিদ্র, পানি সরবরাহ রেকর্ড করার জন্য কারখানা দৈনিক বয়লার সংরক্ষন কার্ড প্রবর্তন করবে।
- মেকানিকদের ব্যবহারের জন্য কারখানা হাত মোজা ও এয়ার মাফলার দিবে।
- যেকোন ধরনের ছিদ্র পরীক্ষার জন্য কারখানা বাষ্প লাইনে সাপ্তাহিক পরীক্ষা নিশ্চিত করবে।
- বয়লার, ভ্যাকুয়াম টেবিল, বাষ্পীয় ইস্ত্রি সকল সার্কিট/ সুইচ
- কারখানা নিশ্চিত করবে যে, বয়লার রুমে কোন ধরনের গুদাম করা হয় না।
- কারখানা ”বিপদজনক” চিহ্ন দিবে এবং ”প্রবেশ সংরক্ষিত” লিখবে।
মুল্যায়ন ও নিয়ন্ত্রন ঃ এইচ. আর বিভাগের সদস্যগন এই নীতিমালার মুল্যায়ন ও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহন ও নিয়ন্ত্রনের জন্য দায়বদ্ধ।
১. আবর্জনা ও অন্যান্য দাহ্য বস্তুঃ আবর্জনা ও অন্যান্য দাহ্য বস্তু অপসারণ করে ধাতব পাত্রে ভরে ওয়ার্ক ষ্টেশনের বাইরে রাখা নিশ্চিত করতে হবে।
২. বিদ্যূৎঃ বৈদ্যূতিক সার্কিটসমূহ পরিবেষ্টিত, অপরিবাহী বস্তুদ্বারা বিচ্ছিন্ন এবং ফিউজ লাগানো থাকবে। বৈদ্যূতিক সার্কিটের চাপ সর্বদা পরীক্ষা করতে হবে। মেশিনের বৈদ্যূতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রতি বছর পরীক্ষা করতে হবে। মেশিনের ইনসুলেশন ঠিকমত আছে কিনা, তা পরীক্ষা করতে হবে। কাটিং মেশিনের ন্যায় বহনযোগ্য সরঞ্জামের ডাবল-ইনসুলেশন ও আর্থিং করাতে হবে।
৩. বহির্গমন সিড়িঃ অগ্নিকান্ডের সময় প্রত্যেক তলায় সকলেই যেন নিরাপদে নামতে পারে সেজন্য সকল সিড়ি ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে ফ্লোরে এবং দেয়ালে অঙ্কিত তীর চিহ্ন অনুসরণ করতে হবে।
৪.বর্হিগমন দরজাঃ জরুরী প্রয়োজনে ব্যবহার করার জন্য বর্হিগমন দরজা প্রস্থ্যে কমপক্ষে ৮৪” এবং উচ্চতায় ৮৪” হবে। প্রতিটি দরজা এমনভাবে তৈরী যে বাইরে ও ভিতর থেকে খোলা যায়। প্রতিটি দরজায় লাল এবং স্থানীয় ভাষায় লাল অক্ষরে “বহির্গমন” কথাটি লেখা আছে। ফ্যাক্টরী চলা কলে কাজ করার সময় কারখানার সকল ফ্লোরের দরজা/বর্হিগমন পথ খোলা থাকবে। লাল ও হলুদ রং দ্বারা প্রত্যেকটি দরজা/বর্হিগমন পথ জেব্রা ক্রসিং দেয়া থাকবে।
৫. জরুরী নির্গমন বাতিঃ সকল দরজা/বহির্গমন পথে, ফ্লোর ও সিঁড়িতে ব্যাটারী চালিত জরুরী বাতি থাকবে, যাতে বহির্গমন নির্দেশিত লাল রং এর তীর চিহ্ন দেয়া থাকবে। চলাচলের সকল পথ সর্বদা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে। ও কোন বাধা থাকবেনা । প্রতিটি সিঁড়ির সাথে হ্যান্ডরেইল থাকবে, যাতে কেউ পড়ে না যায়।
৬.হুশিয়ারী সংকেত/ গংবেল/পিএ সিস্টেমঃ আগুন লাগলে শ্রমিকদের সতর্ক করার জন্য ফ্লোরে ব্যাটারী চালিত হুশিয়ারী সংকেত ও হস্তচালিত গং বেল থাকবে। হুশিয়ারী সংকেত ও গং বেল কথাটি শ্রমিকদের বোধগম্য ভাষায় লাল কালিতে লেখা থাকবে। জরুরী প্রয়োজনের মূহুর্তে সকলকে নির্দেশ দেয়ার জন্য প্রত্যেক ফ্লোরে ব্যাটারী চালিত পি,এ সিস্টেম থাকবে। প্রতি ৫৫০ বর্গফুট মেঝে এলাকার জন্য লাল রং করা পানি ভর্তি ২টি করে বালতি থাকবে।
৭.অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রঃ প্রতি ৫৫০ বর্গফুটের জন্য ১টি করে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র থাকবে। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রসমূহ প্রতিটি ৫-৬ কেজি ওজন সম্পন্ন কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং এ,বি,সি পাউডারের হতে হবে।
৮.নির্গমন নক্সাঃ প্রত্যেক ফ্লোরে স্থানীয় ভাষায় লিখিত প্রতিটা আইটেম নির্দেশ করে নির্গমন নক্সা থাকবে, যাতে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র, ফায়ার হোস, প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্স, পানির ট্যাংক, বাকেট থাকবে এবং ‘ আমি এখানে’ শব্দসমূহ দ্বারা নিজের অবস্থান নির্দেশ করা থাকবে
৯.অগ্নি মহড়াঃ অগ্নি দুর্ঘটনার সময় নিরাপদ নির্গমনের ব্যাপারে শ্রমিকদের প্রশিক্ষিত করে তুলতে প্রতিমাসে কমপক্ষে একবার অগ্নি মহড়া দিতে হবে। অগ্নিমহড়া ইউনিট ভিত্তিক ও যৌথ উভয়ভাবেই দিতে হবে। মহড়া, মহড়ার সময় এবং যদি কোন দূর্ঘটনা ঘটে তার রেকর্ড রাখতে হবে। মহড়াটি এমন হবে যাতে এটা দ্বারা প্রকৃত অবস্থা বুঝা যায়।
১০.ফায়ার এসেম্বলী পয়েন্টঃ অগ্নি দূর্ঘটনা বা অগ্নি মহড়ার সময় নির্দিষ্ট ফায়ার এসেম্বলী পয়েন্টে সকলেই সমবেত হবে।
১১.ফায়ার হোজঃ প্রত্যেক ফ্লোরে সংরক্ষিত জলাধারের সাথে ফায়ার হোজ থাকবে এবং পাইপটির দৈর্ঘ্য ফ্লোরের ১০০% এলাকা জুড়ে থাকবে। মাসে কমপক্ষে একবার হোজ পাইপের কার্যকারীতা পরীক্ষা করতে হবে।
১২.অগ্নি নিরোধক যন্ত্রপাতিঃ কারখানার প্রত্যেক ফ্লোরে নিম্ন লিখিত সরঞ্জামাদি থাকবে ঃ
১৩.(ক) হুক ( ধাতব) খ) বিটার (ধাতব) গ) ষ্ট্রেচার ঘ) ব্লাংকেট ঙ) গ্যাস মাস্ক চ) লক কাটার।
১৪.প্রশিক্ষণ/পরিচিতিঃ ৬০% কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নিয়ে কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিবে। সকল শ্রমিকদের জন্য সাধারণভাবে প্রশিক্ষনের উপাদান হিসেবে দেয়ালে লিফলেট/পোষ্টার রাগাতে হবে। অগ্নি নিরাপত্তার প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত সকল রেকর্ড সংরক্ষন করতে হবে।
১৫.ফায়ার সেফটি কমিটিঃ অগ্নি প্রতিরোধ, প্রতিকার ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সকল বিভাগ থেকে সদস্য নিয়ে একটি ফায়ার সেফটি কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটির সকল সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্দেশ করতে হবে। গ্নি মহড়ার কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন এবং কারখানার অগ্নি প্রতিরোধ কমিটির যথাযথ প্রশিক্ষন নিশ্চিত করবেন। সাধারন শ্রমিকদের বেসিক প্রশিক্ষন দিবেন এবং
বিশেষ ফায়ার কমান্ডো টীম গঠন ঃ এরই ধারাবাহিকতায় অত্র কারখানায় গঠন করা হয়েছে অগ্নি নিরাপত্তা বিভাগ।এ বিভাগে রয়েছে ২৫ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য ও একজন ফায়ার সেফটি অফিসার। এ সকল সদস্য অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং অগ্নি দর্ঘটনায় করনীয় কি সে সম্পর্কে কর্মরত সকলকে প্রক্ষণের মাধ্যমে সচেতন করে তুলছে।