রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের নীতিমালা
রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের নীতিমালা সমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ
উদ্দেশ্য ঃ- শ্রমিকের স্বাস্থ্য রক্ষা, দূর্ঘটনা এড়িয়ে চলা এবং রাসায়নিক দ্রব্যের সঠিক ব্যবহার সহ সর্বোচ্চ লক্ষমাত্রা অর্জন করা। আইনের দ্বাদশ অধ্যায়ে বর্ণিত দূর্ঘটনার কারণে চিকিৎসা পাইবার ও ক্ষতিপূরন আদায়ের বিষয়ে সমাধানের জন্য মালিক বা কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আকারে সুপারিশ পেশ করিতে পারিবেন। …
পরিধি ঃ-কারখানা বা শিল্প-প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকসহ সকল কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য সেফটি কমিটি নিরাপওা ঝূঁকি সর্ম্পকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করিবে।
সকল ওয়াশ, ডাইং, প্রিন্টিং সেকশন এবং ক্যামিকেল ষ্টোরে ইহার ব্যবহার করা হয়।
সরবরাহ ঃ-প্রশিক্ষণে কারখানা বা শিল্প-প্রতিষ্ঠানের সকল বিভাগ, কর্মকর্তা ও শ্রমিকের অংশগ্রহন নিশ্চিত করিতে মালিক পক্ষ প্রয়োজীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে। যে সকল উৎপাদনকারী/সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত/সরবরাহকৃত ক্যামিকেল সমূহের সাথে নির্দিষ্ট দিতে পারে, আমাদের কোম্পানী সেই সকল উৎপাদনকারী/সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে গুনগত মানের ক্যামিকেল ক্রয় করিতে আগ্রহী।
সংরক্ষণ ঃ- সব প্রশিক্ষণ ও রিফ্রেসার্স প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হইবে এবং অফিসের কর্মসময়ের মধ্যে আয়োজন করিতে হইবে। উৎপাদনকারী/সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত/সরবরাহকৃত ক্যামিকেল সংরক্ষণের নিয়মানুসারে নির্দিষ্ট স্থানে ঠান্ডা জায়গায় ক্রয়কৃত ক্যামিকেল সমূহ সংরক্ষণ করা এবং যাহা একজন অভিজ্ঞ কর্মী দ্বারা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়।
প্রশিক্ষণ ঃ- যে সকল সেকশনে (ওয়াশ, ড্রাইং, প্রিন্টিং এবং ক্যামিকেল স্টোর ইত্যাদি) ক্যামিকেলর ব্যবহার করা হয় সেই সকল সেকশনের প্রত্যেক কর্মীকে এর সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যাহার মাধ্যমে কর্মীরা ক্যামিকেলের কার্যকারীতা, গুণাগুন, সতর্কতা ও ব্যবহার বিধি সম্বন্ধে ধারণা লাভ করতে পারে।
ব্যবহার ঃ- সেফটি কমিটি দেশের সেফটি বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহের সহিত দ্রুততম সময়ে যোগাযোগের সুবিধার্থে ফোন, ই-মেইল, ফ্যাক্স, বিস্তারিত ঠিকানা সম্বলিত তথ্য বা ডাটাবেজ সংরক্ষণ করিবে।ক্যামিকেলের এর নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট কাজের জন্য নির্দিষ্ট ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয়।
নিরাপত্তা ঃ- কোম্পানীতে ব্যবহৃত প্রতিটি ক্যামিকেল অতি নিরাপত্তার সাথে সংরক্ষণের, সরবরাহ ও ব্যবহার করা হয়, যাহাতে কোন প্রকার অপচয় না হয় এবং স্বাস্থ্যের কোন প্রকার ক্ষতি না হয় সেদিক লক্ষ্য রাখা হয়।
বাস্তবায়ন ঃ- পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপওা, বিল্ডিং কোড, বিদ্যুৎ, অগ্নিনির্বাপণ, পরিবেশ আইনসহ, সেফটি সংশ্লিষ্ট বতীয় আইন-কানুন ও বিধি-বিধান হালনাগাদ অবস্থায় সংরক্ষণ করিবে। এইচ, আর বিভাগের তত্ত্বাবধানে বিভাগের সদস্যগন প্রডাকশন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সমন্বয়, প্রশিক্ষণ প্রদান, ব্যবস্থা গ্রহন ও তদারকির মাধ্যমে এই নীতিমালার বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করে থাকে।
মূল্যায়ন ও নিয়ন্ত্রন ঃ- এইচ, আর বিভাগের সদস্যগন এই নীতিমালার মূল্যায়ন ও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহন ও নিয়ন্ত্রনের জন্য কাজ করে থাকেন।
দূর্ঘটনা বিষয়ক ব্যবস্থাপনা:
- সামগ্রিক পরিবেশ ও প্রক্রিয়ার সদস্য আপদকালীন অবস্থা পর্যালোচনা।
- ব্যক্তি পর্যায়ের দূর্ঘটনার সম্ভাবনা যাচাই বা বিবেচনা ।
- ব্যাপকহারে সম্ভাব্য দূর্ঘটনার ক্ষেত্রে উদ্ধার তৎপরতার কর্মপরিকল্পনা।
- দায়িত্ব বন্টন ।
- উদ্ধার কাজে প্রয়োজনীয় উপকরণ বা সরঞ্জামাদি সংরক্ষণ এবং তাৎক্ষণিকভাবে সংগ্রহের উপায় নিরুপন ।
- বিভিন্ন সংস্থার সহিত যোগাযোগ ও সমন্বয় পরিকল্পনা ।
- সংঘটিত দূর্ঘটনার তদন্ত পরিচালনা ও কারণ নির্ণয় ।
- দায়-দায়িত্ব নিরুপন ।
- পূনঃদূর্ঘটনারোধে প্রদেয় সুপারিশ ও নির্দেশনা এবং
- র্ঘটনা কবলিত শ্রমিকদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপুরন প্রদান।
বিপজ্জনক চালনা, পেশাগত ব্যধি ও বিষক্রিয়াজনিত অসুস্থতার ব্যবস্থাপনা
- প্রতিষ্ঠানে বিধি ৬৮ এর অধীন তালিকাভুক্ত বিপজ্জনক চালনাযুক্ত পেশাসমূহ নির্ধারণ।
- প্রতিষ্ঠানে ব্যবহুত তফসিলভুক্ত ও তালিকাভুক্ত রাসায়নিক পদার্থের তালিকা প্রণয়ন
- বিপজ্জনক পেশা ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে কর্মরত শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত পরীক্ষার বাধ্যবাধ্যকতা নিশ্চিতকরন।
- সংশিষ্টø পেশায় নিয়োজিত শ্রমিকদের নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত শারীরিক অসুস্থতার বিষয়ে চিকিৎসকদের সহিত মতবিনিময়।
- সংশ্লিষ্ট পেশাসমূহে কর্মরত শ্রমিকদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরন ব্যবস্থাপনার ল্যায়ন এবং
- স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সুপারিশ ও নির্দেশনা প্রদান।
রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার নীতিমালা
রাসায়নিক দ্রব্য আমাদের জীবনমানকে উন্নত করেছে ঠিকই তবে এর অপব্যবহারে বা অসাবধানতার সাথে ব্যবহারের কারনে আমাদের জীবনের ওপর মারাত্বক ক্ষতি বা মৃত্যু উভয়ই হতে পারে। ওয়াশিং প্লান্টে গার্মেন্টসকে বিভিন্ন প্রকারের ধোয়ার জন্য নানা রকম কেমিক্যাল ব্যবহৃত হয়ে থাকে যেগুলোর বিষয়ে সর্তকতা অবলম্বন করা একান্ত প্রয়োজন।
- রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারে যে সকল ক্ষতি হতে পারে ঃ রাসায়নিক দ্রব্যের অপব্যবহারে অগ্নিকান্ড, বিষ্ফোরন, পরিবেশ বিষয়ক ইত্যাদির মত ব্যাপক ঘটনা সংঘটিত হতে পারে যার প্রেক্ষিতে প্রধানত ব্যক্তি ও বস্তুর ক্ষতি সাধিত হয়। ওয়াশিং প্লান্টে ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্যের মাধ্যমে নিুলিখিত ক্ষতির কারণ হতে পারে ঃ
- নির্দিষ্ট মাত্রার অধিক রাসায়নিক দ্রব্য শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করতে পারে যার প্রেক্ষিতে শরীরের অভ্যন্তরে অসহনীয় অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
- খাদ্য বা পানীয়র সাথে মিশে শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে শরীরের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।
- সংবেদনশীল স্থান যেমন চোখ, মুখ, নাক ইত্যাদির সংস্পর্শে এসে মারাত্বক জখম, যন্ত্রনা, সৃষ্টি, এমনকি চিরতরে পঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ওয়াশিং প্লান্টে ব্যবহৃত কেমিক্যালের অধিকাংশ অম্ল অথবা ক্ষার জাতীয় দ্রব্য হওয়ায় মানব শরীরের ত্বকে ফুসকুরি ওঠা অথবা পুড়ে যাওয়া সহ ব্যাপক ক্ষতি সাধন হতে পারে।
- ব্যবহারে পর্যাপ্ত সাবধানতা অবলম্বন না করলে মারাত্বক দূর্ঘটনার মাধ্যমে বাষ্প / গ্যাস ইত্যাদি সৃষ্টি হয়ে শ্বাস- প্রশ্বাসে বিঘœ ঘটিয়ে মৃত্যুর কারন হতে পারে।
- নিরাপদ গুদামজাত ঃ রাসায়নিক দ্রব্য গুদামজাত করনের ক্ষেত্রে নিুোক্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে ঃ
- অনুপযোগী বস্তু একত্রে গুদামজাত করা যাবে না।
- অনুপযোগী রসায়নশালা প্রক্রিয়া এড়িয়ে চলা।
- অবশ্যই কেমিক্যালের কন্টেনার ফুটা, মরিচা এবং ক্ষতিযুক্ত হবে না। ইহা অবশ্যই সচল হবে।
- পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে যাহা ঝুকির কারন নির্মূল করতে পারে।
- ঠান্ডা এবং পর্যাপ্ত আলো বাতাসযুক্ত জায়গায় রাসায়ন বস্তু রাখতে হবে।
- পানীয় পানির উৎস, প্লান্ট এবং বসবাসের জায়গা হতে রসায়নশালা পৃথক রাখতে হবে।
- অগ্নি নিবারন গাড়ী প্রবেশের পথে থাকতে হবে।
- দৈব দূর্ঘটনা থেকে বৈদ্যুতিক সার্কিট, সুইচ বক্স এবং ফিকচার রক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
- অগ্নি শিখা, ঝালাই, ধোঁয়া এবং তাপ বিকিরন নিষিদ্ধ করা উচিত।
- শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কাজকর্ম গুদামে ও প্লান্টে করা উচিৎ।