Select Page

শ্রমিক নিয়োগ পদ্ধতি

উদ্দেশ্যঃ শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে অপক্ষপাতিত্বমূলক বা বৈষম্যহীন নিয়োগ পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধানত রাষ্ট্রীয় আইন মেনে চলে, তবে অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতাদের আচরণ বিধি নিয়ম মানা হয়ে থাকে । শ্রমিক নিয়োগের ব্যাপারে কারখানার এডমিন ম্যানেজার, সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধান, রিক্রুটিং অফিসার ও মেডিকেল অফিসারের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটির মাধ্যমে শ্রমিক নিয়োগ করা হয়।

আমাদের শ্রমিক নিয়োগ পদ্ধতি নিম্নরূপ ঃ

  • আবেদনকারী আমাদের প্রাথমিক সাক্ষাৎকারে উত্তীর্ন হলে আমরা তাকে আমাদের কোম্পানীর নিয়োগকৃত ডাক্তার দ্বারা তার বয়স ও সক্ষমতা পরীক্ষা করে থাকি এবং আমরা কোন মহিলা প্রার্থীকে কোন প্রকার গর্ভাবস্থার বিষয়ে পরীক্ষা বা প্রশ্ন করি না।
  • বয়স যাচাই হলে প্রশাসন বিভাগ থেকে তার প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র পূরন করে ঐ দিন থেকে তার নিয়োগ দেওয়া হয়।
  • নিয়োগ নিশ্চিত হবার পর আমরা অবশ্যই প্রত্যেক শ্রমিককে নিয়োগ পত্র, শ্রমিক সহয়িকা এবং সার্ভিস বুক প্রদান করে থাকি। এ সমস্ত শ্রমিকগন স্থায়ী শ্রমিক হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে থাকে।
    আমরা কোন শ্রমিককে জোর পূর্বক কাজে বাধ্য করি না।
  • নিয়োগ দানের পর নির্বাচিত কর্মীদের নিম্নলিখিত বিষয়গুলির উপর প্রশিক্ষন দান করা হয় ক) তাকে কোম্পানীর নিয়মনীতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। খ) স্বাস্থ্য বিধি এবং নিরাপত্তা বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ দান করা হয়। গ) শ্রমিকদের অধিকার, শ্রমআইন, ছুটির পদ্ধতি, মজুরীর হিসাব আত্বরক্ষামূলক পদ্ধতি ইত্যাদি সরঞ্জামাদি ব্যবহার পদ্ধতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
  • চাকুরীতে যোগদান ঃ চাকুরীতে যোগদানের ৭ (সাত) দিনের মধ্যে নিুোক্ত কাগজপত্রসহ নির্ধারিত ফরম পূরণ করে কারখানা
    অফিসে জমা দিতে হবে। ক) ২ (দুই) কপি ছবি (সত্যায়িত)। খ) চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিকতা সনদ। গ) শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ বা স্কুল পাশের সার্টিফিকেট। ঘ) মেডিকেল চেকআপ রিপোর্ট
  • কর্তৃপক্ষ সকল প্রকার জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বিশ্বাস, গোত্র, লিঙ্গ নির্বিশেষে শ্রমিক নিয়োগ করে থাকে। নতুন কর্মী বাছাই ও নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ নিুলিখিত পদ্ধতি সমুহ অনুসরণ করে থাকে।
  • শূন্য পদে নিয়োগের জন্য নোটিশ বোর্ড বা পোস্টারের মাধ্যমে এবং কখনও কখনও পত্রিকার মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হয়।
  • আমরা কোন শিশু শ্রমিক বা ১৮ বছরের কম বয়সের কোন শ্রমিক নিয়োগ করি না।
    শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা স্থানীয় পত্রিকা, পোষ্টার, ব্যানার বা অন্য কোন উপায়ে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকি।
  • নতুন শ্রমিক বাছাই করার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ নিয়োগ কমিটি গঠন করা হয়।
  • নতুন শ্রমিক বাছাই বা নিয়োগের ক্ষেত্রে অত্র কোম্পানীতে কর্মরত কোন লোক বা বাছাই কমিটির লোকজন বা বাইরের কোন লোক যাতে কোন চাকুরীপ্রার্থীর কাছ থেকে কোন প্রকার টাকা-পয়সা বা চাঁদা না নিতে পারে কর্তৃপক্ষ তা নিশ্চিত করে থাকেন।
  • শ্রমিকদেরকে সাধারনতঃ তিনটি শ্রেনীতে ভাগ করে নিয়োগ করা হয়। ক) দক্ষ শ্রমিক খ) অর্ধদক্ষ শ্রমিক গ) অদক্ষ শ্রমিক।
  • দক্ষ ও অর্ধদক্ষ শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষা, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে কোম্পানী কর্তৃক ছাপানো আবেদনপত্রে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী পূরণ স্বাপেক্ষেই কেবল আবেদনপত্র বাছাই করা হয়।
  • বাছাইকৃত শ্রমিকদেরকে সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠিয়ে বাস্তব কাজের পরীক্ষার মাধ্যমে তার দক্ষতার মূল্যায়ন করা হয় এবং মূল্যায়ন ফরম পূরন করে তা সংগ্রহ করা হয়।
  • দক্ষতা এবং ইন্টারভিউ পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে যোগ্য ব্যক্তি নির্বাচন করা হয়।
  • শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে শারীরিক যোগ্যতা ও বয়স যাচাইয়ের জন্য দেশের প্রচলিত শ্রম আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত শ্রমিকদেরকে কারখানায় ডাক্তারের নিকট মেডিক্যাল চেক আপ এবং বয়স নির্ণয়ের জন্য পাঠানো হয়।
  • চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদেরকে বেতন ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধাদির
  • বিস্তারিত বিবরনসহ নিয়োগপ্রত্র প্রদান করা হয়।
  • অদক্ষ শ্রমিকদেরকে শিক্ষাগত যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে আবেদনপত্র বাছাই করা হয়।
  • বাছাইকৃত প্রার্থীদের ওহঃবৎারবি ও ওছ টেস্টের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়।
  • শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে শারীরিক যোগ্যতা ও বয়স যাচাইয়ের জন্য দেশের প্রচলিত শ্রম আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত শ্রমিকদেরকে কারখানায় ডাক্তারের নিকট গবফরপধষ ঈযবপশ ঁঢ় এবং বয়স নির্ণয়ের জন্য পাঠানো হয়।
  • নির্বাচিত প্রার্থীদেরকে বেতন ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাদির বিস্তারিত বিবরণসহ নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়।
  • নিয়োগপত্র প্রদানের পর দক্ষ অদক্ষ সকল শ্রমিকের জন্যই একটি ঙৎরবহঃধঃরড়হ বা পরিচিতিমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
  • যেখানে ন্যায্য শ্রমনীতি, ক্রেতার আচরন বিধি, কোম্পানীর নিয়ম কানুন বিশদভাবে আলোচনা করা হয় এবং ডড়ৎশবৎং ঐধহফনড়ড়শ এর একটি কপি প্রদান করা হয়।
  • আবেদনকারীদের সমান সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়, আমরা কখনও জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ বৈবাহিক বা গর্ভাবস্থা অথবা রাজনৈতিক মতাদর্শ বা বয়সের কারণে পক্ষপাতমূলক আচরন করি না। আবেদনকারীদের মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দান করা হয়।

চাকুরী হতে অব্যহতি দেওয়ার নিয়ম ঃ

ক) চাকুরী ছাড়তে হলে চাকুরী ছাড়ার ১৪ দিন আগে কর্তৃপক্ষকে লিখিত নোটিশ প্রদান করতে হবে। নোটিশ প্রদান না করলে ১৪ দিনের মজুরী/বেতন কাটা যাবে।
খ) অসুস্থতার কারণে চাকুরী ছেড়ে দিতে হলে মেডিকেল সার্টিফিকেট দাখিল করতে হবে। সে ক্ষেত্রে নোটিশ প্রযোজ্য নয়।
গ) চাকুরী ছাড়ার পর কো¤পানীর প্রদত্ত্ব মালামাল অর্থাৎ ড্রেস, কাটার, টেপ, ববিন ইত্যাদি দায়িত্ব প্রাপ্ত লোকের নিকট জমা দিয়ে কারখানা থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হবে।

নিয়োগপত্র প্রদান

নির্বাচিত প্রার্থীদেরকে নিয়োগপত্র প্রদানের আগে মেডিকেল টেস্টের সম্মুখীন হতে হয়।

নিয়োগের জন্য মনোনীত প্রত্যেককেই নিয়োগ পত্র প্রদান করা হয়। নিয়োগ পত্রে নিু লিখিত উল্লেখ থাকেঃ

১। পদ

২। যোগদানের তারিখ সময়, তারিখ ও স্থান।

৩। বেতন

৪। অবেক্ষকাল

চাকুরী অবসানের ক্ষেত্রে (কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিক) উভয়পক্ষের শর্তাবলী।

নিয়োগ চুক্তি গ্রহনের পর একজন শ্রমিক কোম্পানীর অন্তভূক্ত হন এবং এই ম্যানুয়ালের নিয়ম-কানুন  মেনে নিতে দায়বদ্ধ হন।

কো¤পানী প্রদত্ত্ব সুবিধাদি ঃ

ক) একটানা ৭ (সাত) বছর বা তদুর্ধে চাকুরী করলে প্রতি বছরের জন্য এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমান অর্থ গ্রাচ্যুইটি হিসাবে
প্রদান করা হয়।
খ) প্রত্যেক শ্রমিক ও কর্মচারী কর্মরত অবস্থায় যদি কোন প্রকার দুর্ঘটনায় কবলিত হয় তবে তাকে সব ধরনের সুবিধাদি প্রদান করা
হয়।
গ) বছরে দুইটি উৎসব বোনাস প্রদান করা হয় (প্রতি বোনাস একমাসের মূলবেতনের সমপরিমান)।
ঘ) প্রত্যেক শ্রমিক কর্মচারী কর্মরত অবস্থায় যদি মৃত্যু বা অংগহানী ঘটে তাহলে গ্র“প নিু হারে ক্ষতিপরণ প্রদান করিবে।

পরিচিতি পর্ব

  • নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যাক্তি প্রশাসনিক শাখায় একটি যোগদান পত্র প্রদান করেন এবং তা প্রশাসনিক ব্যাবস্থাপকের দ্বারা যোগদান পত্রটি গৃহীত হওয়ার পর তিনি কাজে যোগদান করেন। যোগদান পত্রটি তার ব্যাক্তিগত ফাইলে রাখা হয়।
  • নতুন শ্রমিক কর্মস্থলে যোগদানের প্রথম দিনে কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি, সহকর্মীগন, কাজের পরিবেশ, তার নিকট কর্তপক্ষের প্রত্যাশার ব্যাপারে অবহিত বা পরিচিত করা হয়। পরিচিতি পর্যায়টি সাধারনত নূতন শ্রমিকের সুপারভাইজার দ¡ারা সম্পন্ন করা হয়।
  • অবেক্ষকাল ও চাকুরী স্থায়ীকরন নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শ্রমিক ৩ মাস অবেক্ষমান থাকেন এবং শ্রমিকের কর্মদক্ষতার উপর ভিত্তি করে চাকুরী স্থায়ীকরন করা হয়। কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় অবেক্ষকাল ক্ষেত্রবিশেষে অধিকন্তুু ৩ মাস পর্যন্ত বর্ধিত করা যেতে পারে। অবেক্ষকালীন অবস্থায় একজন শ্রমিক নৈমিত্তিক বা অসুস্থ্যতার ছুটি ভোগ করতে পারেন, কিন্তু একবছর পূুর্ণ হবার আগে অর্জিত ছুটি ভোগ করতে পারবেন না।

প্রশিক্ষন ও উন্নয়নঃ

  • প্রশিক্ষন কর্মচারীর কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং তার পূর্বের অভিজ্ঞতার সাথে আরও বেশি অভিজ্ঞতা যোগ হয় যা তার বর্তমান জীবিকাকে সুসজ্জিত করে এবং ভবিষ্যতে আরও উন্নতমানের জীবিকা ও অধিক দায়িত্ব নিতে সাহায্য করে।
  • কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক প্রশিক্ষন দিয়ে থাকে। কোম্পানীর মানব সম্পদ বিভাগে রয়েছে সুসংগঠিত ও উচ্চমান সম্পন্ন প্রশিক্ষন শাখা, যারা বিভিন্ন কার্যক্রমের উপর নীতিমালা এবং ট্রেনিং মেটেরিয়াল তৈরী করে থাকে।
  • ট্রেনিং শাখার কার্যক্রম শুধুমাত্র কারিগরী বিষয়ে ট্রেনিং এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় উপরন্তুু ঈড়সঢ়ষরধহপব ও ব্যক্তিগত আচরণ বিধি, স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতা, পরিবেশ দূষণ এবং অন্যান্য সামাজিক সচেতনতা যেমন পরিবার পরিকল্পনা, এইডস, আর্সেনিক দূষণ, ডেঙ্গুজর, ডাইরিয়া, শিশু পরিচর্যা এবং অন্যান্য ছোঁয়াচে রোগের উপর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করে।
  • কর্তৃপক্ষ যদি বিবেচনা করেন যে কোন শ্রমিকের কর্মদক্ষতা অথবা নূতন কোন যন্ত্র বা কর্মপদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে এবং প্রয়োজনে কোম্পানীর ব্যয়ে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়।

বেতন ভাতা ও সুযোগ সুবিধার বিবরনঃ

কর্তৃপক্ষ যে কোন শ্রমীকের ক্ষেত্রে তার পদমর্যাদা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে প্রত্যেকের বেতন ভাতা ও সুযোগ সুবিধা নির্ধারন করে থাকেন।

সর্বমোট বেতন (এৎড়ংং)=মূল বেতন+বাড়ীভাড়া (যা মূল বেতনের ৩০%)+চিকিৎসা ভাতা ১৫০/= (নির্ধারিত)।

অর্থাৎ মুল বেতন = সর্বমোট বেতন (এৎড়ংং) – ১৫০ টাকা (চিকিৎসা ভাতা)

ওভারটাইম হিসাবঃ                    মূলবেতন  ০২  মোট ওভারটাইম ঘন্টা

শ্রমিকদের প্রত্যেক মাসের বেতন এবং অতিরিক্ত কাজের মজুরী একই সাথে পরবর্তী মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে প্রদান করা হয়।

বেতন-ভাতাদি প্রদানের পূর্বে প্রত্যেক শ্রমিককে বিস্তারিত ‘বেতনের হিসাব’ লিপিবদ্ধ করে ‘পে স্লিপ’ প্রদান করা হয়।

বেতন প্রদানের সময় প্রত্যেক শ্রমিকের পরিচয় পত্র দেখে তাকে বেতন প্রদান করা হয়।