ছুটি সংক্রান্ত নিয়মাবলী
১। সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সকল শিল্প কারখানায় যেরুপ ছুটি প্রদানের বিধান/নিয়ম রয়েছে গ্র“পের আওতাধীন সকল কারখানায়ও সেই রূপ ছুটি প্রদানের নিয়ম-নীতি প্রচলিত আছে। শ্রমিকগণ যেসব ধরণের ছুটি/সুবিধা ভোগ করতে পারবে তা নিুরূপ ঃ
ক) মজুরী সহ বার্ষিক ছুটি
খ) পর্ব ছুুটি
গ) নৈমিত্তিক ছুটি
ঘ) অসুস্থতা জনিত ছুটি
ঙ) মাতৃকালীন ছুটি
চ) স্বল্পকালীন ছুটি
ছ) ক্ষতিপূরণ মূলক সাপ্তাহিক ছুটি।
২। মজুরীসহ বার্ষিক ছুটি ঃ যে সকল শ্রমিক কারখানায় একটানা ০১ বছর চাকুরীর মেয়াদ পূর্ণ করে তারা পরবর্তী ১২ (বার) মাসের মধ্যে নিুোক্ত হারে মজুরী সহ বার্ষিক ছূটি ভোগ করতে পারবে ঃ
ক) প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিক হলে পূর্ববর্তী ১২ (বার) মাসের মধ্যে প্রতি ১৮ কর্ম দিবসের জন্য ১ দিন।
খ) কিশোর শ্রমিক হলে পূর্ববর্তী ১২ (বার) মাসের মধ্যে প্রতি ১৫ কর্ম দিবসের জন্য একদিন। অনুরূপ মেয়াদের মধ্যে যে অবকাশ বা ছুটি থাকবে তা আলোচ্য ছুটির অন্তর্ভুক্ত হবে। তবে যদি কোন শ্রমিক এ ছুটি আংশিক বা সম্পুর্ণ ভোগ না করে তবে তাহা পরবর্তী বৎসরের পাওনা ছুটির সঙ্গে যোগ হবে। শর্ত হচ্ছে যে, প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ৪০ দিন এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৬০ দিন পর্যন্ত ছুটি জমা থাকতে পারে। উলে¬খিত পরিমান ছুটির পর যদি সংশি¬ষ্ট শ্রমিক আরও ছুটি পাওনা থাকে তাহলে তার মওজুদ ছুটির সাথে যুক্ত হবে না।
৩। পর্ব ছুটি ঃ
ক) প্রত্যেক শ্রমিককে বছরে ১১ (এগার) দিন পর্ব উপলক্ষে মজুরী সহ ছুটির দিন মঞ্জুর করতে হবে। অনুরূপ পর্বের দিন ও তারিখ কারখানা মালিক নির্ধারণ করবে।
খ) পর্ব উপলক্ষে যে কোন ছুটির দিনে শ্রমিককে দিয়ে কাজ করানো যেতে পারে তবে এর বিনিময়ে ১০৩ ধারা অনুসারে তাকে ক্ষতিপূরণ মূলক ২ (দুই) দিনের মজুরী এবং একটি বিকল্প ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
৪। নৈমিত্তিক ছুটি ঃ কোন শ্রমিকের হঠাৎ ছুটির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে এ ধরনের ছুটি মঞ্জুর করা হয়ে থাকে। এ ধরনের ছুটির পরিমান পূর্ণ পঞ্জিকা বর্ষে ১০ দিন। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে এর অধিক ছুটি শ্রমিককে মঞ্জুর করে থাকে। নৈমিত্তিক ছুটির জন্য শ্রমিকরা পূর্ণহারে বেতন পেয়ে থাকে। এখানে উলে¬খ্য যে, বার্ষিক ছুটি বা অর্জিত ছুটির ন্যায় নৈমিত্তিক ছুটি বছর শেষে শ্রমিকের হিসাবে জমা থাকবে না। বছর শেষে অভোগকৃত ছুটি (যদি থাকে) আপনা-আপনি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
৫। অসুস্থ্যতা জনিত ছুটি ঃ কোন শ্রমিক অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ডাক্তারের পরামর্শ মতো যে ছুটি মঞ্জুর করা হয়ে থাকে তা অসুস্থ্যতা জনিত ছুটি হিসেবে গণ্য হয়। এ ছুটির পরিমাণ বৎসরে পূর্ণ মজুরীতে ১৪ দিন। অসুস্থ্যতা জনিত ছুটি বছর শেষে অভোগকৃত অবস্থায় থাকলে তা আপনা আপনি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
৬। মাতৃত্বকালীন ছুটি নীতিমালাঃ কোন মহিলা শ্রমিক গর্ভবতী হলে তার সন্তান প্রসবের জন্য মোট ১৬ (ষোল) সপ্তাহ প্রসূতি কালীন ছুটি বা মাতৃত্ব কালীন ছুটি প্রাপ্য হবে। ছুটি মঞ্জুরীর ক্ষেত্রে সন্তান প্রসবের পূর্বে ৮ (আট) সপ্তাহ এবং প্রসবের পরে ৮ (আট) সপ্তাহ মোট ১৬ (ষোল) সপ্তাহ ছুটি মঞ্জুর করতে হবে। তবে প্রথম আট সপ্তাহের ছুটি ভোগের পূর্বে তাকে অগ্রীম বেতন প্রদান করা হয়। কারখানার ডাক্তারের প্রত্যয়নপত্র সাপেক্ষে পরবর্তী আট সপ্তাহ বেতন প্রদান করা হয়। মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাওয়ার শর্ত হচ্ছে যে, মহিলা শ্রমিক প্রসবের দিনের আগে অন্তঃত ৬ (ছয়) মাস সংশি¬ষ্ট কারখানায় একটানা চাকুরী করতে হবে। যে সকল মহিলা শ্রমিকের চাকুরী মেয়াদ ৬ (ছয়) মাসের চেয়ে কম তারা মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করতে পারে কিন্তু এ জন্য কোন বেতন বা ভাতা পায় না। মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে সংশি¬ষ্ট শ্রমিক ছুটিতে গমনের পূর্বে যে পদে বা মজুরীতে কাজ করতেন সে পদে বা মজুরীতে কাজে যোগদান করতে পারবেন। উক্ত মহিলা শ্রমিকের ২টি সন্তান জীবিত থাকলে তিনি কোন ভাতা পাবেন না। এক্ষেত্রে তিনি কোন ছুটি পাওয়ার অধিকারী হলে তা পাবেন।
৭। ক্ষতিপূরণ মূলক সাপ্তাহিক ছুটি ঃ সাধারণ কর্ম সময় হচ্ছে দৈনিক ৮ ঘন্টা। প্রতি সাপ্তাহে ৬ দিন কাজ করার পর প্রতিটি শ্রমিক একদিন সাপ্তাহিক ছুটি বা বিশ্রাম পায়। কোন ছুটি বা বিশ্রামের দিনে কোন বিশেষ কারণে যদি কোন শ্রমিককে দিয়ে কাজ করানো হয় তবে বিষয়টি পূর্বেই অবহিত করা হয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কোন শ্রমিককে দিয়ে কাজ করানো হলে যথা শ্রীঘ্র সম্ভব তাদেরকে ক্ষতিপূরণ মূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করা হয়ে থাকে।
৮। স্বল্পকালীন ছুটি ঃ কোন শ্রমিক কারখানায় কর্মরত অবস্থায় ব্যক্তিগত কোন বিশেষ প্রয়োজনে বাহিরে যাবার দরকার হলে তাকে স্বল্পকালীন ছুটি মঞ্জুর করা হয়ে থাকে। এ ধরণের ছুটি জন্য সংশি¬ষ্ট শ্রমিক তার সুপারভাইজারকে প্রয়োজনীয়তার কথা জানাবার পর সুপারভাইজার শ্রমিকের বাইরে যাবার অনুমতিপত্র তেরি ও তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষরের ব্যবস্থা করবে। এ জন্য সর্বমোট ৫-৭ মিনিট সময়ের বেশী যাতে ব্যয় না হয় সে জন্য সুপারভাইজারদেরকে অবহিত করা আছে। এই ছুটি সর্বোচ্চ ২ ঘন্টা। কোন শ্রমিককে স্বল্পকালীন ছুটি প্রদানের জন্য তার বেতন/জমাকৃত ছুটি বা অন্য কোন ছুটি কর্তন করা হয় না।