ধুমপান নিষিদ্ধকরন নীতিমালা
ভূমিকা ঃ ধুমপান মানুষের মৃত্যূ ঘটায়। তাছাড়া পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানে ধুমপান থেকে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের সৃষ্টি হতে পারে। আর অগ্নিকান্ডের ফলে কোম্পানীর সম্পদের পাশাপাশি মূল্যবান জীবনের মৃত্যূর ঝুকি রয়েছে। গার্মেন্টস শিল্পে অগ্নি-দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকার কারণে এর প্রতিবিধান অপরিহার্য। এই লক্ষ্যে এই নীতিমালা প্রনয়ন করা হল। …
উদ্দেশ্যঃ ধুমপান নিষিদ্ধকরন নীতিমালা– কারখানায় কর্মরত সকলের জীবন রক্ষা ও কারখানার মালামাল সুরক্ষায় ধুমপান হতে বিরত থাকার প্রয়াসে । গ্রƒপ শতভাগ রপ্তানীমূখী তৈরী পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান। এখানে সকল শ্রমিক/কর্মচারী এবং সম্পদের নিরাপত্তার জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। এই নিরাপত্তা আরও জোরদার করা এবং শ্রমিক কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করবার জন্য ধুমপান বিরোধী নীতিমালা প্রনীত। ফ্যাক্টরীর কোন অংশে আগুনের সুত্রপাত হলে তা বাড়তে না দিয়ে যথাশীঘ্র সম্ভব আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করার সাথে সাথে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো তথা জানমাল রক্ষার স¦ার্থে একটি পদ্ধতি গত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অত্যন্ত সুশৃংখল ভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য অগ্নি-নির্বাপন কাজ সুচারু ভাবে সম্পন্ন করার নিমিত্তে
পরিধি ঃ ফায়ার সার্ভিসের অতিরিক্ত পা¤েপ সংযোগ দেওয়ার জন্য দুইটি পয়েন্ট করা আছে। এই পয়েন্ট সমুহের সংযোগ নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নি-নির্বাপনে সহায়তা করতে পারবে। অত্র কারখানায় কর্মরত সকল শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তা ও সকলের জন্য প্রযোজ্য ।
বিস্তারিত ঃঅগ্নি-কান্ডের সুত্রপাত কারো চোখে ধরা পরার সাথে সাথে বা কন্ট্রোল প্যানেলে ধরা পরার সাথে সাথে তা কর্তব্যরত গার্ড কমান্ডারকে জানাতে হবে। গার্ড কমান্ডার তৎক্ষনাত নিকটবর্তী ফায়ার সার্ভিসকে টেলিফোনের মাধ্যমে জানাবে। কারখানার জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন), জেনারেল ম্যানেজার (প্রডাকশন) এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পরিস্থিতি স¤পর্কে অবহিত করবেন। একই সাথে গার্ড কমান্ডার কমপ্লেক্সে উপস্থিত নিরাপত্তা প্রহরীদেরকে দিয়ে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করবেন। প্রয়োজনে তিনি লক কার্টার দিয়ে গেটের লক কেটে ভিতরে প্রবেশ করে তড়িৎ আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করবেন। আমারা জানি ধুমপান এমনিই একটি কাজ যার কোন উপকার দিক নেই । ধুমপান কেবলই মানুষের অনিষ্ঠ করে এবং একপর্যায়ে মৃত্যুর কোলে নিয়ে যায় । ধুমপানের কারনে মানব জীবনে বিভিন্ন মরণব্যাধি যেমনঃ হৃদরোগের ঝুঁকি, ক্যান্সার, আলসার, কিডনি ও লিভার নষ্ট, সন্তান জন্ম দানে প্রতিবন্ধকতা, খাবারের রুচি নষ্ট ও মানুষিক অসুস্থ্যতা রোগ সহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেয় যার একমাত্র পরিনতি মৃত্যু । এছাড়াও বিভিন্ন কলকারখানায় বিভিন্ন সময়ে ঘটিত অগ্নিকান্ডের অধিকাংশই সংঘটিত হয়েছে জ্বলন্ত সিগারেটের আগুন থেকে । উপরোক্ত বিষয়গুলির আলোকে কর্তৃপক্ষ ধুমপান নিষিদ্ধকরণ প্রসঙ্গে একটি পলিসি নির্ধারন করেছেন । যদিও আমরা জানি ধুমপান অত্যান্ত ক্ষতিকর, তথাপি আমাদের অনেকেই ধুমপানে আসক্ত । বিধায় কর্তৃপক্ষ যেসব ব্যাক্তি ধুমপানে আসক্ত এবং ধুমপান করার জন্য কারখানার বাহিরে যেতে চান তাদেরকে সংক্ষিপ্ত সময়ের ছুটি প্রদানের মাধ্যমে বাহিরে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করেছেন । কেননা কারখানার অভ্যন্তরে বিভিন্ন জায়গায় (টয়লেট, ষ্টোর, সিঁড়ি কোঠা, কার্টুন এরিয়া, ছাদ ইত্যাদি) গোপনে ধুমপান করা অত্যান্ত বিপদজনক যা ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের কারণ হতে পারে । অগ্নিকান্ডের এই সমূহ বিপদ থেকে যান-মালের নিরাপত্তা লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ ধুমপান বিরোধী নীতি নির্ধারণ করেছেন ।
এছাড়াও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কম্প্লায়েন্স ও সি.এস.আর বিভাগ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেন। যেখানে ধুমপানের কূফল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। ধুমপান বিরোধী সতর্কীকরণ চিহৃ কারখানার বিভিন্ন স্থানে পর্দশিত রয়েছে যা দেখে ধুমপানের কূফল সম্পর্কে সহজেই সচেতন হওয়া যায়।
এই নীতিমালা বাস্তবায়নে কিছু কর্মসূচী পালন করা হয়। যেমন,
- কারখানার অভ্যন্তরে ধুমপান করা সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ।
- যদি কারো ধুমপান করার অভ্যাস থাকে তাহলে তাকে কারখানা শুরুর পূর্বেই কারখানার বাইরে ধুমপান সম্পন্ন করতে হবে।
- কারখানায় প্রবেশের সময় কেউ বিড়ি/সিগারেট, দিয়াশলায় নিয়ে কারখানার ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে না।
- কারখানার টয়লেটের মধ্যেও ধুমপান করা যাবে না।
- সাময়িক প্রবেশের অনুমতি নিয়ে যারা কারখানাতে প্রবেশ করবে তারাও কারখানার ভিতরে ধুমপান করতে পারবে না।
- কোন সাপ্লায়ার বা অতিথি যে – ই হোক না কেন কেউই কারখানার ভিতরে ধুমপান করতে পারবে না।
নীতিমালা সম্পর্কে অবহিত করন ঃ ধুমপান বিরোধী নীতিমালা কারখানায় কর্মরত সকলকে অবহিত করনের জন্য কারখানার বিভিন্ন নোটিশ বোর্ডে এই নীতিমালা টানানো আছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার মাটিভেশনাল ট্রেনিং, মিটিং ও সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে অবহিত করা হয়।
ফিডব্যাক ও নিয়ন্ত্রনঃ অত্র কারখানায় কর্মরত সকলের প্রতি কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। তাইএই পলিসি কারখানায় বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ সর্বদা সচেতন এবং সার্বিক ব্যাবস্থা গ্রহন করে। এর পরও যদি পলিসি বাস্তবায়ন না হয় বা বাস্তবায়নের পথে কোন বাধাঁর সস্মুখীন হয়, তবে সদা নিয়ন্ত্রন করার জন্য কার্যকরী পরিষদ ও নির্বাহী পরিচালক ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন। এমনকি মাননীয় ব্যাবস্থাপনা পরিচালকের হস্তক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
পরিশিষ্ঠঃ এই পরিকল্পনা প্রয়োজনের সময় সঠিক ভাবে বাস্তবায়নের নিমিত্তে মাসে কমপক্ষে একবার করে ড্রিল/মহড়া করতে হবে। ফায়ার সেফটি অফিসারকে মহড়া পরিচালনার সার্বিক দ্বায়িত্বে নিয়োজিত করা হলো। তিনি পার্সোনেল বিভাগ ও প্রোডাকশন বিভাগের সহায়তায় অগ্নি-নির্বাপনের বিভিন্ন দল গঠন ও ব্যক্তি নির্বাচন করে তার তালিকা সরবরাহ করবেন। সর্বোপরি অগ্নি-নির্বাপন মহড়া তথা প্রয়োজনে সঠিক ভাবে অগ্নি-নির্বাপন কার্য সম্পাদনের জন্য সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করা যাচেছ। পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে সকলের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আল মুসলিম গ্র“প বদ্ধ পরিকর।