Select Page

সন্ত্রাসবাদ

‘সন্ত্রাসবাদ’ শব্দটির সাথে পরিচিত হবার পূর্বে নিরাপত্তা কর্মীদের সর্বপ্রথম বুঝতে হবে সন্ত্রাসবাদ বলতে কি বুঝায়, ইহার উৎপত্তি কোথায়, বর্তমান বিশ্বেই বা এর প্রভাব কি, ইহার বিস্তৃতি কোথায়, কে বা কারা এর জন্য দায়ী এবং তারা কারা। সর্বপ্রথম নিরাপত্তা কর্মীদের এটা উপলব্ধি করতে হবে এবং চিহ্নিত করতে হবে। ‘সন্ত্রাসবাদ’ শব্দটির উৎপত্তি ঘটেছে ‘সন্ত্রাস’ শব্দটি থেকে যার অর্থ হচ্ছে ভয়ভীতি এবং আতংক সৃষ্টির মাধ্যমে শান্তি ও উন্নয়ন বা উৎপাদনের পথে বাধা প্রদান করা। অপর দিকে ‘সন্ত্রাসবাদ’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে নাশকতা মূলক কর্মকান্ড। আধূনিক বিশ্বে বসবাস করে কেহ সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কথা অস্বীকার করতে পারে না। সত্যিকার অর্থে ‘সন্ত্রাসবাদ’ হচ্ছে মুস্টিমেয় কিছু দুষ্ট বা অসৎ চরিত্রের লোকদের দ্বারা সংঘটিত কিছু সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। এক কথায় আমরা বলতে পারি সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকেই ‘সন্ত্রাসবাদ’ বলা হয়।’সন্ত্রাসবাদ’ বিভিন্ন উপায়ে সংঘটিত হতে পারে যার মধ্যে বোমা হামলা, বোমাতংক,্অপহরন,হত্যা,হুমকি প্রদান এবং অস্ত্র প্রদশর্নের মাধ্যমে ভয়ভীতি সৃষ্টি উলে­খযোগ্য । শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ‘সন্ত্রাসবাদ’ বলতে বুঝায় যে কোন ধরনের ধবংসাত্মক মনোভাব যা প্রতিষ্ঠানের অর্থ সম্পদ ক্ষতি সাধন সহ উৎপাদন বা রপ্তানীর পাথে বাধা প্রদান এবং যার ফলশ্র“তিতে একদিকে যেমন শিল্প প্রতিষ্ঠানের অন্যদিকে তেমনি দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন ।

‘সন্ত্রাসবাদ’ হচ্ছে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শান্তির বিপর্যয় এবং বর্তমান অধুনিক বিশ্বের সর্বত্রই সামাজিক বিশৃংখলার প্রতিষ্ঠা। এর প্রভাব সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিল্প প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক এবং জাতীয়ক্ষেত্রে সর্বত্রই পরিলক্ষিত হয়। অধুুনিক সভ্যতার অগ্রযাত্রা সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দ্বারা বাধাগ্রস্থ । অপশক্তি সর্বত্রই তাদের প্রভাব বৃদ্ধির মাধ্যমে এই ‘সন্ত্রাসবাদ’ এর স¤প্রসারন ঘটাতে চায়।

‘সন্ত্রাসবাদ’এর ফলে সাধারন মানুষের জীবন যাত্রা, আভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক ব্যবসা বানিজ্য, শিল্প প্রতিষ্ঠান, দারিদ্র বিমোচন সবকিছুর উন্নয়ন থমকে দাঁড়ায় । সর্বত্রই থাকে বিশৃংখলা ও উৎকণ্ঠার ছাপ । মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারে না এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থায় যে কোন সময় ধ্বস নেমে আসতে পারে। ইহা সামাজিক জীবন বিপন্ন শিল্প উন্নয়নে বাধা সহ রপ্তানী যোগ্য তৈরী পোশাক শিল্পের এবং উৎপন্ন দ্রব্যের যথেষ্ট ক্ষতি সাধন করতে পারে। এর ফলে বিদেশী ক্রেতারা হবে বিমুখ । তৈরী পোশাকের সাথে সম্পৃক্ত ২০ লাখেরও অধিক শ্রমিক তাদের চাকুরী হারাতে পারে।’সন্ত্রাসবাদ’এর বিস্তৃতি ঘটলে জাতি এক মূহুর্তের জন্যও স্থির থাকতে পারে না । অতএব শুধু নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মীরাই নয় বরং সকলের উচিত এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। নিরাপত্তা কর্মীদের দায়িত্ব হচ্ছে ব্যবস্থাপনার সাহায্যে প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা।

সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বিভিন্নভাবে ঘটতে পারেঃ

ক. সন্ত্রাসীরা কারখানায় একজন কর্মী হিসাবে প্রবেশ করতে পারে এবং এর ‘পাওয়ার সাপ্লাই’ সমূহে আঘাত হানতে পারে।

খ. সন্ত্রাসীরা রপ্তানী কার্টুনে রাসায়নিক জীবানু অস্ত্র লুকিয়ে রাখতে পারে। এ সমস্ত বিস্ফোরক দ্রব্য তারা তাদের ব্যবহৃত টিফিন বক্সে অথবা তাদের ব্যাগ সমুহে বহন করতে পারে।

গ. উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরক দ্রব্য সমূহ তারা রপ্তানী যোগ্য তৈরী পোশাকের প্যাকিং সেকশনে প্যাকেটজাত করতে পারে।

ঘ. কার্গো সমূহে বিস্ফোরক দ্রব্য লুকানো থাকতে পারে।

ঙ. একজন সন্ত্রাসী বিদেশী ক্রেতা অথবা প্রতিষ্ঠান সমূহের সম্পদের যথেষ্ট ক্ষতি সাধন করতে পারে।

চ. সর্বোপরি একজন সন্ত্রাসী যন্ত্রপাতির ক্ষতি সাধনের মাধ্যমে ‘সাবোটাজ’ ঘটাতে পারে।

জ. একদল সন্ত্রাসী বহিঃ আক্রমনের মাধ্যমে একদিকে যেমন প্রতিষ্ঠানের সম্পদ তেমনি অন্যদিকে ক্রেতার ক্ষতি সাধন করতে পারে।
ঝ. কোম্পানীর সুনাম নষ্টের অথবা সম্পত্তির ক্ষতি সাধনের জন্য একজন বা একদল শ্রমিক ইন্ধন যোগাতে পারে। এতে প্রতিষ্ঠানে বিশৃংখলা সৃষ্টির মাধ্যমে বিদেশী ক্রেতাদের নিকট সুনাম নষ্ট হতে পারে। এবং সম্পত্তি ধ্বংসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান অর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।