সার্ভিস বেনিফিট
সজ্ঞা
সার্ভিস বেনিফিট বলতে বুুঝায় একজন শ্রমিক/কর্মচারী/ তার চাকুরীর অবসানের পরবর্তি যে সকল আর্থিক সুবিধা কোম্পানী কর্তৃক প্রদত্ব হয়।
বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬, সংশেধিত আইন-২০১৩ অনুযায়ী চাকুরীর অবসান নীতিমালায় (ধারা-২৬ ও ২৭,) আওতায় একজন শ্রমিক/কর্মচারী স্বেচ্ছায় চাকুরী হইতে অবসর গ্রহণ কারুক বা মালিক কর্তৃক চাকুরীর অবসান হউক নিম্ন বর্ণিত হারে সার্ভিস বেনিফিট প্রদত্ব হইবে।
১. ধারা-২৬ এর উপধারা (৪) অনুযায়ী মালিক কর্তৃক কোন স্থায়ী শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করা হয় সেক্ষেত্রে, মালিক শ্রমিককে তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বৎসরের চাকুরীর জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে সার্ভিস বেনিফিট প্রদান করবে, ত্রিশ (৩০) দিনের মজুরী, অথবা গ্রাচুইটি (অথার্ৎ কোন শ্র্রমিকের প্রতি পূর্ণ বৎসর চাকুরী অথবা ছয় মাসের অতিরিক্ত সময়ের চাকুরীর জন্য তাহার সর্বশেষ প্রাপ্ত মজুরী হারে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কোন প্রতিষ্ঠানে কিংবা একই মালিকের যে কোন প্রতিষ্ঠানে অনধিক ০৮ বৎসরের চাকুরীর ক্ষেত্রে তাহার সর্বশেষ প্রাপ্ত মজুরী হারে ৩০ দিনের মজুরী অথবা ৮ বৎসরের অধিককাল চাকুরীর ক্ষেত্রে তাহার সর্বশেষ প্রাপ্ত মজুরী হারে ৪৫ দিনের মজুরী যাহা উক্ত শ্রমিককে তাহার চাকুরীর অবসানে প্রদেয়, ইহা এই আইনের অধীনে শ্রমিকের বিভিন্ন ভাবে চাকুরীর অবসানজনিত কারনে মালিক কর্তৃক প্রদেয় ক্ষতিপূরন বা নোটিশের পরিবর্তে প্রদেয় মজুরী বা ভাতার অতিরিক্ত হইবে) যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে. প্রদান করিবেন এবং এই ক্ষতিপূরণ এই আইনের অধীন শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হইবে।
২. ধারা-২৭ অনুযায়ী শ্রমিক কর্তৃক ঃ কোন স্থায়ী শ্রমিক মালিককে ষাট দিনের লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া তাহার চাকুরী হইতে ইস্তফা দিতে পারিবেন। সেক্ষেত্রে, মালিক উক্ত শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ হিসাবে তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বৎসরের চাকুরীর জন্য
ক) যদি চাকুরীর মেয়াদ পাচঁ (০৫) বৎসর বা তার অধিক কিন্তু দশ (১০) বৎসের কম মেয়াদে অবিছিন্ন ভাবে মালিকের অধিনে চাকুরী করিয়া থাকেন তাহা হইলে চৌদ্দ (১৪) দিনের মজুরী ; এবং
খ) যদি চাকুরীর মেয়াদ দশ (১০) বৎসর বা তা অধিক সময় হয় তাহা হইলে ত্রিশ (৩০) দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি (অথার্ৎ কোন শ্র্রমিকের প্রতি পূর্ণ বৎসর চাকুরী অথবা ছয় মাসের অতিরিক্ত সময়ের চাকুরীর জন্য তাহার সর্বশেষ প্রাপ্ত মজুরী হারে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কোন প্রতিষ্ঠানে কিংবা একই মালিকের যে কোন প্রতিষ্ঠানে অনধিক ০৮ বৎসরের চাকুরীর ক্ষেত্রে তাহার সর্বশেষ প্রাপ্ত মজুরী হারে ৩০ দিনের মজুরী অথবা ৮ বৎসরের অধিককাল চাকুরীর ক্ষেত্রে তাহার সর্বশেষ প্রাপ্ত মজুরী হারে ৪৫ দিনের মজুরী যাহা উক্ত শ্রমিককে তাহার চাকুরীর অবসানে প্রদেয়, ইহা এই আইনের অধীনে শ্রমিকের বিভিন্ন ভাবে চাকুরীর অবসানজনিত কারনে মালিক কর্তৃক প্রদেয় ক্ষতিপূরন বা নোটিশের পরিবর্তে প্রদেয় মজুরী বা ভাতার অতিরিক্ত হইবে) যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে প্রদান করবেন।
মৃত্যু জনিত ক্ষতিপূরণ
বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬, সংশেধিত আইন-২০১৩ এর ধারা-১৯ অনুযায়ী যদি কোন শ্রমিক কোন মালিকের অধীন অবিছিন্নভাবে অন্ততঃ ০২(দুই) বৎসরের অধিককাল চাকুরীরত থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরন করেন, তাহা হইলে মালিক মৃত শ্রমিকের কোন মনোনিত ব্যক্তি বা মনোনিত ব্যক্তির অবর্তমানে তাহার কোন পোষ্যকে তাহার প্রত্যেক পূর্ণ বৎসর বা উহার ০৬ (ছয়) মাসের অধিক সময় চাকুরীর জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০ (ত্রিশ) দিনের এবং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবস্থায় অথবা কর্মকালীন দুর্ঘটনার কারনে পরবর্তীতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৪৫(পয়তাল্লিশ) দিনের মজুরী প্রদান করিবেন, এবং এই অর্থ মৃত শ্রমিক চাকুরী হইতে অবসর গ্রহন করিলে যে অবসর জনিত সুবিধা প্রাপ্ত হইতেন, তাহার অতিরিক্ত হিসেবে প্রদেয় হইবে।
বরখাস্ত বা ছাটই ব্যতীত অন্যভাবে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকুরীর অবসান
সজ্ঞা ঃ যখন কোন শ্রমিককে ছাটাই, বরখাস্ত, অপসারন ইত্যাদি অপরাধ ছাড়া চাকুরী সমাপ্তি ঘটানো হয় তখন তাকে অব্যাহতি বা টার্মিনেশন বলা হয়।
বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা-২৬ অনুযায়ী মালিক যথাক্রমে ঃ ১২০ দিনের নোটিশ প্রদান বা নোটিশ এর পরিবর্তে নোটিশ মেয়াদের জন্য মজুরী প্রদান করিয়া, বিনা নোটিশে কোন শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করিতে পারেন।
সেক্ষেত্রে, মালিক শ্রমিককে তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বৎসরের চাকুরীর জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে, ত্রিশ (৩০) দিনের মজুরী, অথবা গ্রাচুইটি (অথার্ৎ কোন শ্র্রমিকের প্রতি পূর্ণ বৎসর চাকুরী অথবা ছয় মাসের অতিরিক্ত সময়ের চাকুরীর জন্য তাহার সর্বশেষ প্রাপ্ত মজুরী হারে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কোন প্রতিষ্ঠানে কিংবা একই মালিকের যে কোন প্রতিষ্ঠানে অনধিক ০৮ বৎসরের চাকুরীর ক্ষেত্রে তাহার সর্বশেষ প্রাপ্ত মজুরী হারে ৩০ দিনের মজুরী অথবা ৮ বৎসরের অধিককাল চাকুরীর ক্ষেত্রে তাহার সর্বশেষ প্রাপ্ত মজুরী হারে ৪৫ দিনের মজুরী যাহা উক্ত শ্রমিককে তাহার চাকুরীর অবসানে প্রদেয়, ইহা এই আইনের অধীনে শ্রমিকের বিভিন্ন ভাবে চাকুরীর অবসানজনিত কারনে মালিক কর্তৃক প্রদেয় ক্ষতিপূরন বা নোটিশের পরিবর্তে প্রদেয় মজুরী বা ভাতার অতিরিক্ত হইবে) যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে. প্রদান করিবেন এবং এই ক্ষতিপূরণ এই আইনের অধীন শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হইবে।
অর্জিত ছুটির হিসাব
সজ্ঞা ঃ এক বৎসর অবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করার পর একজন শ্রমিক/কর্মচারী যে ছুটি পায় তাকে অর্জিত ছুটি বলে।
বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা-১১৭ অনুযায়ী কোন প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে এক বৎসর চাকুরী পূর্ন করিয়াছে এমন প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিককে পরবর্তী বারো মাস সময়ে তাহার পূর্ববর্তী বারো মাসের কাজের জন্য মজুরীসহ নিম্ন বর্ণিত হারে গননার ভিত্তিতে মজুরীসহ বাৎসরিক ছুটি মঞ্জুর করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) একজন শ্রমিক/কর্মচারী তাহার চাকুরীর বয়স অবিচ্ছিন্নভাবে এক বৎসর পূর্ন করিলে, উক্ত এক বৎসরের মধ্যে প্রতি আঠার (১৮) দিন কাজের জন্য এক (১) দিন ছুটি পাওয়ার অধিকারী হবেন।
অর্থাৎ ঃ মোট কর্মদিবস ১৮ = যত দিন হয় (অর্জিত ছুটি)।
বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা-১১৯ অনুযায়ী ছুটি অথবা বন্ধের সময়ের মজুরী হিসাব ও প্রদান ঃ
কোন শ্রমিক/কর্মচারী ছুটির অব্যবহিত পূর্ববর্তী মাসে যে দিন গুলিতে কাজ করিয়াছেন সেই দিন গুলির জন্য প্রদত্ত, অধিকাল ভাতা ও বোনাস ব্যতিত, তাহার পূর্ন সময়ের মজুরী এবং মআর্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তবর্তী মজুরী , যদি থাকে, এর দৈনিক গড়ের সমান ।
অর্থাৎ ঃ শেষ মাসে প্রদত্ব মোট মজুরী শেষ মাসে যতদিন কাজ করেছেন = এক দিনের টাকার হিসাব (পরিমাণ)।
অতএব, অর্জিত ছুটির টাকার হিসাব= (এক দিনের টাকার পরিমাণ যত দিন অর্জিত ছুটি বের হয়েছে) টাকা।
সার্ভিস বেনিফিট কি কর্মকর্তারা পাবে ? আমি বুজাতে চেয়েছি ম্যানেজার কিংবা অফিসার পাবে কি?