Select Page

কর্মীদের প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা

নীটওয়্যার লিঃ তার ফ্যাক্টরীতে কর্মরত সকলের স্বাস্থ্য বিষয়ক ব্যাপারে যথেষ্ঠ সচেতন। যদি কর্মরত অবস্থায় কেউ আহত বা অসুস্থ হয় তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকে। একটি ১০০% রপ্তানী মূখী তৈরী পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান তার কর্মক্ষেত্রের সকল পর্যায়ে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে কাজ করার চেষ্টা করে। পরিবেশগত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য গার্মেন্টস সর্বদা স্থানীয়  আইন অনুযায়ী কর্মীদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে থাকে। পদক্ষেপগুলো নি¤েœ তুলে ধরা হল ঃ-

১. আঘাত জনিত ঃ-

ক) গুরুত্ব অনুধাবন করে ক্ষত স্থানে চেপে ধরে বা বরফ দ্বারা রক্ত পড়া বন্ধ করতে হবে।

খ) যদি ক্ষত বড় হয় তাহলে নিকটস্থ হাসপাতালে অতি দ্রুত নিয়ে যেতে হবে।

গ) টিটেনাস ইনজেকশন নিতে হবে অবস্থা বুঝে।

২. পুড়ে গেলে ঃ-

ক) তৎক্ষনাৎ পোড়া স্থানে ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে এবং তা অনেক সময় ধরে চলতে থাকবে।

খ) তারপর ক্ষত স্থানে স্যাভলন ক্রিম লাগিয়ে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে।

৩.ডায়রিয়া / খুব বেশী বমি হলে ঃ-

ক) অল্প অল্প করে খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।

খ) তবে যদি পানি শূন্যতার  কারণে রোগী বেশী অসুস্থ/অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে।

৪. হিট ষ্ট্রোক/গরমের কারণে অজ্ঞানঃ-

ক) প্রথমেই রোগীকে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল হচ্ছে  এমন স্থানে নিতে হবে।

খ) পাখার নিচে রেখে আস্তে আস্তে খাবার স্যালাইন খেতে  দিতে হবে।

গ) শরীরের ঘামে ভেজা  কাপড় যথাসম্ভব ঢিলে করে দিতে হবে।

ঘ) বেশী দূর্বল হলে চিকিৎসকের কছে নিতে হবে।

৫. জ্বর হলে ঃ-

ক) প্রথমেই জ্বরের পরিমাপ করতে হবে থার্মোমিটার দ¦ারা।

খ)  ১০১ ডিগ্রী ফারেনহাইটের বেশী জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অষুধ খাওয়াতে হবে।

গ) জ্বর বেশী হলে এবং সাথে খুব বমি, বেশী মাথা ব্যথা, শরীরে দানা এবং চোখে রক্ত দেখা গেলে সরাসরি ডাক্তার বা নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে।

৬. বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনা ঃ-

ক) বিদ্যুৎ স্পৃষ্ঠকে সারা শরীর ভালভাবে ম্যাসেজ করতে হবে।

খ)  দ্রুত হাসপাতালে প্রেরন করতে হবে।

জরুরী স্বাস্থ্যগত বিষয় এবং করনীয় ঃ

মাথায় আঘাত    

  • প্রাথমিক চিকিৎসকগণ মূলত কোন অনুমোদিত চিকিৎসক নন।তারা শুধুমাত্র প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়া থাকেন। তাই আইনগত ভাবে তারা কোন রোগীকে কোন প্রকার ওষুধ (খাবার/ইনজেকশন্) দিতে পারেন না।মাথায় আঘাত পাওয়া রোগীদের বিশেষ নজর দিতে হবে। আঘাতে মাথার কোন অংশ কেটে গেলো কিনা রোগী অজ্ঞান কিনা, বমি হচ্ছে কিনা, চোখে দেখতে অসুবিধা কিনা, খিচুনি হচ্ছে কিনা এইগুলি ভালোভাবে লক্ষ্য করতে হবে।
  • কেটে গেলে কাটার স্থানের চার পার্শ্বে সেভ করে উক্ত স্থান ড্রেসিং করে ডাক্তারের কাছে পাঠাতে হবে।
  • প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রাথমিক চিকিৎসকগণ শুধুমাত্র ডাক্তার আসার পূর্ব পর্যন্ত  আহত ব্যাক্তির সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করেন। বমি হলে জরুরী ভিত্তিতে ডাক্তারে তত্ত্বাবধায়নে রাখতে হবে।
  • অজ্ঞান হলে জরুরী ভিত্তিতে রোগীর প্রতি নিম্ন লিখিত কাজ গুলো করতে হবে । যেমন :
  • অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাবার ওষুধ আমাদের ৫ম তলার ডক্টরস্ রুমে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে যা শুধুমাত্র কর্তব্যরত ডাক্তার দ্বারা অনুমোদিত হলে প্রয়োগ করা হয়। রোগীকে মাথা নিচু করে লম্বা করে শুয়ে দিতে হবে।
  • শরীরের পরিহিত কাপড় গুলি ঢিলা ঢালা করে দিতে হবে।
  • মাথা এক দিকে ঘুরিয়ে দিতে হবে।
  • এই নীতিমালা অনুযায়ী, কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্সে কোন প্রকার ওষুধ রাখার ব্যবস্থা করেনা। মুখে এবং ঘাড়ে পানির ঝাপটা দিতে হবে।
  • শরীরের তাপমাত্রা কমে গেলে রোগীকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

অবিরাম পাতলা পায়খানা      দিনে তিন বারের বেশী পাতলা পায়খানা হলে তাকে আমরা সাধারনত পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া বলি। বিভিন্ন কারনে ডায়রিয়া হতে পারে। যেমন –  কাচাঁ পানি খাওয়া, বাসি খাবার খাওয়া, অপরিষ্কার হাতে খাবার খাওয়া  ইত্যাদির মাধ্যমে ডায়রিয়া হতে পারে। কিছু ব্যাকটিরিয়া ও ভাইরাস জনিত কারনে এটি হয়। তাছাড়া কিছু  ঔষধ যেমন – এন্টাসিড এবং বিভিন্ন এন্টিবায়েটিক ঔষধ দ্বারা এই রোগ হতে পারে। ডায়রিয়া হলে কিছুক্ষন পর পর স্যালাইন খাওয়াতে হবে। পরবর্তীতে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

অতিরিক্ত রক্তক্ষরন ও হাত পা ভেংগে যাওয়া রক্ত ক্ষরন থামাতে হলে ক্ষত স্থানে তুলা বা গজ দিয়ে শক্ত করে বাধঁতে হবে এবং মাটি থেকে একটু উচু করে রাখতে হবে। হাত বা পা ভেংগে গেলে উক্ত স্থানে ট্রাইগুলোর ক্লথ বা উডেন স্পিন্ট দ্বারা নিয়ম মাফিক বেঁেধ ডাক্তারের কাছে পাঠাতে হবে।

পুড়ে যাওয়া       রোগীর কোন স্থান পুড়ে গেলে উক্ত স্থান প্রথমে ঠান্ডা পানির অথবা বরফের সংস্পর্শে বেশ কিছু সময় রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে পোড়াঁ ঘাঁ খুব মারাত্বক। তাই যত তাড়াতাড়ি স্বম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

রোগীর বিভিন্ন সমস্যা এবং করনীয় ঃ

জ্বর     জ্বও মূলতঃ কোন রোগ নয়। রোগের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। জ্বর  হলে   শরীরের তাপমাত্রা ৯৮.৪ ডিগ্রী ফাঃ থেকে উপরের দিকে উঠতে পারে। ঠান্ডা, কাশি হলেও জ্বর হতে পারে আবার যক্ষা, ক্যানসার ইত্যাদি হলেও জ্বর  হতে পারে। জ্বর  হলে রোগীকে সাধারন খাবার দিতে হবে। অতিরিক্ত জ্বর  হলে ঠান্ডা পানি দিয়ে শরীর বার বার মুছে দিতে হবে। এবং ডাক্তারের পরার্মশ নিতে হবে। বিভিন্ন ধরনের বিশেষায়িত জ্বর আছে যেমন- টাইফয়েড, ডেঙ্গু , ম্যালেরিয়া, কালাজ্বও ইত্যাদি। এ সকল ক্ষেত্রে অতি দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

চোখে কিছু গিয়ে প্রদাহ করলে   কাজ করার সময় চোখে বিভিন্ন কেমিক্যাল যেতে পাওে, অথবা অন্য কোন বস্তুুর আঘাত লাগতে পারে। সে ক্ষেত্রে চোখে যথেষ্ঠ পরিমান পানি দিয়ে চোখ ধুতে হবে এবং অতি দ্রুত  ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

সূচের আঘাত  অনেক সময় মেশিনে সেলাই করতে গিয়ে সূচের আঘাত লাগতে পারে। এক্ষেত্রে সূচের  ভাংঁগা অংশ হাতের ভিতরে রয়ে গেলো কিনা  তা  খেয়াল করতে হবে। যদি থাকে তবে তা  বের করার চেষ্টা করতে হবে এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের সহায়তা নিতে হবে।

বমি করা কোন কারনে পেটের মাংশ পেশীর সংকোচনের ফলে পাকস্থলী থেকে খাবার  বের হয়ে আসাটাকে বমি বলে। বিভিন্ন কারনে বমি হতে পারে। যেমন – ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং, গ্যাসট্রিক, মাথা ব্যাথা, পেট ব্যাথা ইত্যাদি। বমি হলে রোগীকে মুখে কোন খাবার না দেওয়াই ভাল। প্রয়োজনে স্যালাইান মুখে বা শিরা পথে দিতে হবে। প্রয়োজনে শুকনো খাবার বা ঠান্ডা পানি খাওয়া যেতে পারে। পরবর্তীতে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

ডায়রিয়া ও আমাশয় সাধারনত তিন বা ততোধিক পাতলা পায়খানা (পানির মত) হলে তাকে ডায়রিয়া বলে। এইগুলো সাধারনত ব্যাকটিরিয়া বা ভাইরাস জনিত রোগ। এই রোগের চিকিৎসার জন্য স্যালাইন খেতে দিতে হবে এবং শীঘ্রই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

দূর্ঘটনা বশতঃ কোন জায়গা কেটে গেলে    দূর্ঘটনা বশতঃ শরীরের কোন জায়গা কেটে গেলে  উক্ত স্থান পরিষ্কার (ড্রেসিং) করে ডাক্তারের কাছে পাঠাতে হবে। প্রয়োজনে টিটেনাস ইঞ্জেকশন নিতে হবে।

আমাশয়  সাধারনত তিন বা ততোধিক আমযুক্ত পায়খানা হলে তাকে আমাশয় বলে। এইগুলো সাধারনত ব্যাকটিরিয়া বা ভাইরাস জনিত রোগ। এই রোগের চিকিৎসার জন্য শীঘ্রই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।ফফফ