Select Page

শৃংঙ্খলা মূলক ব্যবস্থার নীতিমালা

উদ্দেশ্য

শৃংঙ্খলা মূলক ব্যবস্থা র নীতিমালা – অটো ফ্যাশন লিঃ এর কর্তৃপক্ষ কারখানার শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ রক্ষা, একতা, বিশ্বস্ততা, উৎপাদনশীল মানসিকতা এবং প্রত্যেক শ্রমিকের ভুল সংশোধনের উদ্দেশ্যে কারখানার নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য একটি শৃঙ্খলা মূলক ব্যবস্থা নীতিমালা প্রনয়ন করেছে।শৃংঙ্খলা মূলক ব্যবস্থা র নীতিমালা নিম্নলিখিত নিয়মানুযায়ী পরিচালিত হবে। কোন অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলে তা বিভাগীয় প্রধান লিখিতভাবে মানব সম্পদ বিভাগে পাঠাবেন, এবং এর একটি কপি ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর কাছে পৌঁছাবেন। যদি প্রয়োজন মনে করেন তাহলে একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে তদন্ত করে লিখিত রিপোর্ট পেশ করার জন্য নিযুক্ত করা যেতে পারে।

প্রথম স্তর ঃ কার্যসম্পাদনের ভিত্তিতে।

লঘু অপরাধ ঃ কার্যক্ষেত্রে শ্রমিকদের মধ্যে যদি কোন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে তবে ঐ শ্রমিক ও তার একধাপ উপরের কর্মকর্তার সাথে মুখোমুখি আলোচনায় বসে বিষয়টি যথাশীঘ্র সম্ভব মিমাংসার চেষ্টা করবে এওবং সাস্তি দিবে।  যদি উভয়ের আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংসা করা না যায়, তবে উক্ত কর্মকর্তা তার বিভাগীয় প্রধানকে বিষয়টি অবহিত করবেন। বিভাগীয় প্রধান সাধারন শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারনে উক্ত শ্রমিককে তার কার্যদক্ষতা ও আচরন সংশোধনের জন্য উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে তাকে উপদেশ পত্র দিবেন।

লঘু অপরাধে শাস্তির পদ্ধতি ঃ  কোন শ্রমিক অসদাচরনের জন্য দোষী প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে  নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গুলো নেয়া হবে।

  • যদি কোন শ্রমিক প্রথম বারের মত কোন অভিযোগে অভিযুক্ত হন তাহলে ঐ শ্রমিককে তার কার্যদক্ষতা ও আচরন সংশোধনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ পূর্বক প্রাথমিক ভাবে সতর্কীকরন নোটিশ দিতে হবে।
  • আচরন বা কার্যদ্ক্ষতা সংশোধনের জন্য দেয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শ্রমিক যদি পুনরায় একই ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত হন তাহলে উক্ত শ্রমিককে চুড়ান্ত সতর্কীকরন নোটিশ প্রদান করা হবে।
  • তৃতীয় বারের মত একই অভিযোগে অভিযুক্ত হলে উক্ত শ্রমিককে কর্মচ্যুত বা বরখাস্ত করা হবে।
  • সাধারনত বিভাগীয় প্রধানগন সর্তকীকরন নোটিশ প্রদান করে থাকে, তবে প্রয়োজন বোধে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ শ্রমিকের অপরাধের প্রমান উল্লেখপূর্বক লিখিত নোটিশ প্রদান করতে পারেন।
  • কোন শ্রমিককে কর্মচ্যুতি বা বরখাস্ত করার পূর্বে তাকে ব্যক্তিগত শুনানির জন্য ৩ দিন সময় দেয়া হবে এবং শ্রমিক তার যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কৈফিয়ত দিতে পারবে।

দ্বিতীয় স্তর ঃ অসদাচরনের ভিত্তিতে ।

অসদাচরণ সমুহ ঃ শ্রমিক কর্তৃক নিম্নবর্নিত কাজ ও ক্রটি সমুহ অসদাচরন রূপে বিবেচিত হবে।

  • স্বেচছায় কাজে অনুপস্থিত থাকা কিংবা একাকী বা সংঘবদ্ধভাবে কোন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার আইনানুগ বা যুক্তিসঙ্গত আদেশ ইচছাকৃত ভাবে পালন না করা, স্বেচছাকৃত অবাধ্যতা বা বেয়াদবী ।
  • মালিকের, প্রতিষ্ঠানের কিংবা ব্যবসার স¤পদ চুরি, মিথ্যাচার, প্রতারণা বা অসাধুতা ।
  • মালিকের অধীনে নিজেকে বা অন্য কোন শ্রমিকদের চাকুরীর ব্যপারে ঘুষ বা বেআইনীভাবে অন্য কোনরুপ উৎকোচ নেয়া বা দেয়ার কারণে।
  • ছুটি ব্যতিরেকে অভ্যাসগত ভাবে কাজে অনুপস্থিতি বা ছুটি ব্যতিরেকে ১০ (দশ) দিনের বেশী অনুপস্থিতি ।
  • অভ্যাসগতভাবে বিলম্বে কাজে উপস্থিতি ।
  • কারখানার মধ্যে দাঙ্গা-হাঙ্গামামূলক বা গোলযোগপূর্ণ আচরণ করা অথবা নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী যে কোন কাজ করা।
  • শিল্প প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য যে কোন আইন বা নিয়ম বা বিধান অভ্যাসগত ভাবে ভঙ্গ করার অভ্যাস ।
  • অভ্যাসগত ভাবে কাজে অবহেলা ও উপেক্ষা বা ফাঁকি দেওয়া, কোন কাজ না করার অভ্যাস ।
  • কোন কাজ বা ক্রটি যার জন্য জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে সে কাজে অন্যদেরকে উস্কানি দেয়া, বার বার তা করা বা সে কাজে অবহেলা করা ।
  • বেআইনী ধর্মঘট বা ধীরে কাজ করা অথবা অবৈধ ধর্মঘট বা ধীরে কাজ করার জন্য অন্যদেরকে উস্কানী দেওয়া
  • মালিকের অফিসের দলিলপত্র নষ্ট করা, বিকৃত করা, বা মিথ্যা প্রতিপন্ন করা বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিসাধন করা।

তৃতীয় স্তর ঃ অসদাচরনের শাস্তি প্রদানের পদ্ধতি।

১)    একজন শ্রমিককে কর্মচ্যুতি বা বরখাস্তের কোন আদেশ দেয়া যাবে না যদি না  –

  • তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সমূহ লিখিতভাবে করা হয়;
  • তাকে এর একটি অনুলিপি এবং কৈফিয়তের জন্য অন্যুন তিন দিনের সময় দেয়া হয়;
  • তাকে ব্যক্তিগত শুনানি দেয়া হয় ( প্রয়োজন হলে); এবং
  • মালিক এবং ব্যবস্থাপক এরূপ আদেশ অনুমোদন করেন।

শ্রমিকের অপরিনামদর্শিতা বা অসদাচরনের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে মানব সম্পদ বিভাগ এর প্রধান নিম্নোক্তভাবে সতর্কীকরন বা শাস্তি প্রদান করবেন।

১ ) মৌখিকভাবে বুঝানো।

২)    মৌখিকভাবে সতর্ক করা।

৩)    কারনদর্শানো নোটিশ।

৪)    লিখিত সতর্কবানী।

৫)    অসদাচরনের দায়ে অভিযুক্ত একজন শ্রমিককে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে তদন্ত সাপেক্ষে জীবিকা ভাতা ছাড়া অনধিক ৭ দিনের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা যেতে পারে।

৬)    বরখাস্ত ।

চতুর্থ স্তর ঃ তদন্ত ।

কারন দর্শানো / বা ব্যাখ্যা ঃ কোম্পানীর প্রত্যেক শ্রমিকের মূল দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে কোম্পানীর নিয়মনীতি মেনে চলা এবং তার কার্যদক্ষতার দ্বারা কর্তৃপক্ষকে সন্তুষ্ট করা। তথাপি যদি কোন শ্রমিক কোম্পানীর নীতি অনুসারে অসদাচরনের দায়ে অভিযুক্ত হন তবে অটো ফ্যামন্স এর কর্তৃপক্ষ তা সুবিবেচনার জন্য সাক্ষ্য প্রমান সহ মানব সম্পদ বিভাগের প্রধান তাকে কারন দর্শানো নোটিশ প্রেরন করবেন।

কারন দর্শানো নোটিশে তার অপরাধের বিস্তারিত বিবরন দিয়ে কেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না তার জবাব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাকে নির্দেশ দেয়া হবে। অভিযুক্ত শ্রমিক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কারন দর্শানোর জবাব লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরন করবেন।

সাময়িক বরখাস্ত কালীন সময়ের তদন্ত ঃ

  • অসদাচরনের দায়ে অভিযুক্ত একজন শ্রমিককে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্তকালীন সময়ে সাময়িক বরখাস্তকালীন সময় ষাট দিনের বেশী হবে না।
  • সাময়িক বরখাস্ত কালীন সময়ে শ্রমিক তার গড় মজুরীর অর্ধেক জীবিকা ভাতা হিসেবে পাবে।
  • সাময়িক বরখাস্তের আদেশ লিখিতভাবে দিতে হবে এবং শ্রমিককে এটি অর্পন করার সাথে সাথে তা কার্যকর হতে হবে।
  • যদি তদন্তের মাধ্যমে শ্রমিকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য বলে প্রমানিত হয় তাহলে সাময়িক বরখাস্ত কালীন সময়ে উক্ত শ্রমিক কোন ভাতা বা মজুরী পাওয়ার অধিকারী হবেন না। কিন্তু জীবিকা ভাতা পাওয়ার অধিকারী হবে।
  • যদি তদন্তের মাধ্যমে শ্রমিক দোষী সাব্য¯ত না হয় তবে তদন্তকালীন সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন সময়ে তাকে কর্তব্যরত বলে গন্য করা হবে এবং সে বরখাস্ত কালীন সময়ে ভাতা বা মজুরী পাওয়ার অধিকারী হবে। কিন্তু জীবিকা ভাতা হিসাবে তাকে যা দেয়া হয়েছিল তা তার প্রাপ্য বেতন থেকে বাদ যাবে।
  • যদি কোন শ্রমিককে শাস্তি দেয়া হয় তবে আরোপকৃত শাস্তির এক কপি সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে সরবরাহ করতে হবে।
  • শ্রমিকের প্রতি আরোপকৃত শাস্তির একটি কপি তার সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপককে সরবরাহ করতে হবে।
  • যদি কোন শ্রমিক তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পত্র, নোটিশ, চিঠি বা অন্য কোন দলিল গ্রহন করতে অস্বীকার করেন তবে তা তাকে প্রেরন করা হয়েছে বলে তার  প্রমান স্বরূপ তার একটি অনুলিপি নোটিশ বোর্ডে প্রদর্শন করা হবে, এবং শ্রমিকের সর্বশেষ জ্ঞাত ঠিকানায় রেজিষ্ট্রিকৃত ডাকযোগে প্রেরন করা হবে।

পঞ্চম স্তরঃ আপীল ।

কোম্পানীর অভিযোগ ও পরামর্শ নীতি অনুযায়ী শ্রমিক তার প্রতি আনীত অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিকট আবেদন করতে পারবে।

সকল ধরনের আপীল কর্পোরেট অফিসের মাধ্যমে দাখিল করতে হবে।

মালিক যদি সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হন অথবা শ্রমিক মালিকের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হন তবে মালিক কর্র্তৃক সিদ্ধান্ত দেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে শ্রমিক এখতিয়ার সম্পন্ন শ্রম আদালতে অভিযোগ দায়ের করতে পারবে।

কোম্পানীর স্বার্থে এই নীতির সাথে সংগতি রেখে সংশ্লিষ্ট সকলকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করলে যে কোন সময় এই নীতি পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা সংশোধন করতে পারবেন।