Select Page
এইচ.আই.ভি কি?এইচআইভি এইডস নির্দেশিকা সহ বর্ণনা এবং এইচ আই ভি থেকে বাচিবার উপায়।

এইচ.আই.ভি কি?এইচআইভি এইডস নির্দেশিকা সহ বর্ণনা এবং এইচ আই ভি থেকে বাচিবার উপায়।

এইচআইভি এইডস নির্দেশিকা

এইডস কী ? বাঁচতে হলে জানতে হবে।

বর্তমান বিশ্বে এইচআইভি/ এইডস ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়িছে। নিশ্চিতভাবেই এর প্রভাব নতুন প্রজন্ম অর্থাৎ যুবসমাজের উন্নয়নের ধারাকে ব্যাহত করছে। আগামীতে এটি সর্বগ্রাসী রূপ ধারন করবে যদি না এখনই এইডস সম্পর্কে সচেতন হওয়া যায়। ডিসেম্বর ২০০৬- এ ইউএনএইডস-এর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বে প্রায় চার কোটি মানুষ এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছে এবং ৩০ লক্ষ মানুষ এইডস-এ মারা গেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতিদিন বিশ্বে প্রায় ১৪০০০ নারী ও পুরুষ এইচআইভি’ তে আক্রান্ত হচ্ছে।এদের মধ্যে অর্ধেকই হলো যুবসমাজ যাদের বয়স ১৫ থেকে ২৪। যুব সমাজের মধ্যে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এশিয়া মহাদেশেও এ রোগটি মহামারী আকার ধারন করেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে যে কোন দেশের যুবসমাজ তথা আপামর জনসাধারন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই তরুন প্রজন্ম এইচআইভি/এইডস সংক্রন্ত তথ্য, সেবা ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান আর্থ-সামাজিক বৈষম্য যুবসমাজের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

সার্বিকভাবে বাংলাশে এইচআভি সংক্রমনের হার কম। কিন্তু আমাদের আতœতুষ্টির কোন অবকাশ নেই কেননা সংক্রামনের সকল ঝুঁকিপূর্ন আচরন ও পরিবেশ বিদ্যমান থাকায় এদেশে মহামারী আকারে এইচআইভি/এইডস ছড়িয়ে পড়ার আশংকা খুবই প্রবল। ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য গ্রহন, অনিরাপদ রক্ত সন্বালন, বানিজ্যিক ও ভাসমান যৌন ব্যবসা, ঝুঁকিপূর্ন জনগোষ্ঠী ও সাধারন মানুষের আন্ত ঃসম্পর্ক, অনিরাপদ যৌনমিলন, কনডম ব্যবহারে অনীহা, নারী-পুরুষ বৈষম্য, দারিদ্র, শিক্ষার অভাব, যুব সমাজের মধ্যে নেশার আধিক্য, অপ্রতুল স্বাস্থ্যসেবা, এইচআইভি/এইডস সম্পর্কে সচেতনতা ও তথ্যের অভাব, ব্যাপকভাবে এইচআইভি আক্রান্ত বিভিন্ন দেশের সাথে নিবিড় ভৌগোলিক অবস্থান, দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা, শ্রমিক অভিবাসন, মানব প্রাচার ইত্যাদি বাংলাদেশে এইচআইভি সংক্রামনের উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি। এ প্রেক্ষাপটে আমাদের যুবসমাজ অর্থাৎ দেশের এক তৃতীয়াংশ মানুষ হতে পারে এইডস ভয়াবহতার শিকার।এইডস সম্পর্কে আমাদের যুব সমাজের অধিকাংশেরই সঠিক ধারনা নাই। পাশাপাশি, প্রয়োজনীয় যুববান্ধব স্বাস্থসেবার অপ্রতুলতা এবং স্বাস্থসেবা সম্পর্কিত তথ্যের অভাবে তারা সেবা গ্রহনে র সুযোগ থেকেও বঞ্চিত। যুবসমাজের বিরাট অংশ গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিধায়  গার্মেন্টেস শ্রমিকদের এইচআইভি/ এইডস বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভিয়েলাটেক্্র নিজেদের বিভিন্ন ইউনিটগুলিতে নিজস্ব ডাক্তার দ্বারা এই গনসচেতনতামূলক জনকল্যানমূখী কার্য়ক্রম পরিচালনা করে আসছে।

এইচ.আই.ভি কি?

এইচ.আই.ভি হচ্ছে একটি ভাইরাসের নাম।‘এইচ.আই.ভি ’এর পূর্ণ রূপ ‘হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস’। এর অর্থ হচ্ছে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা লোপকারী ভাইরাস, অথ্যাৎ এই ভাইরাসের সংক্রামনের কারণে মানুষের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা হ্রাস পায়, ফলে মানব দেহ বিভিন্ন রোগ জীবানুর সংক্রামন প্রতিরোধ ব্যর্থ হয় এবং রোগাক্রান্ত হয়।

এইডস, কি ?

‘এইডস’এর পূণরুপ হচ্ছে, ‘অ্যাকোয়ার্ড ইমিউনো ডেফিসিয়েন্স সিনড্রোম’। এটা হচ্ছে এইচ.আই.ভি সংক্রামনের চুড়ান্ত পর্যায় এবং এ অবস্থায়, আক্রান্ত ব্যক্তির দেহ বিভিন্ন-সুযোগ সন্ধানী রোগ জীবানুর সংক্রমন (যেমন:নিউমোনিয়া,যক্ষা, ক্যাপোসিস  মারকোমা, ক্যানড্ডিা ইত্যাদি)প্রতিরোধ করতে পারেনা এবং বিভিন্ন রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে, ধীরে ধীরে আক্রান্ত ব্যাক্তি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

এইচ.আই.ভি কি’/‘এইডস’ বিস্তারের উপায় সমূহ:

  • যৌন মিলনের মাধ্যমে
  • রক্ত,রক্তজাত সামগ্রী ও সংক্রমিত যন্ত্রপাতির মাধ্যমে
  • মা থেকে শিশুতে সংক্রমন

যৌন মিলনের মাধ্যমে সংক্রামন:-

  • সুরক্ষা পদ্বতি গ্রহন না করে সংক্রমিত যে কারো সাথেযে কোন ধরেনের যৌন মিলন (যৌনীপথে, পায়ুপথে.মুখে) এইচ.আই.ভি সংক্রামনের এবং ব্যাপক হারে বিস্তরের সবচেয়ে বড় কারণ  শতকরা ৯০% এইচ.আই.ভি ছড়ায় এই অরক্ষিত যৌন মিলনের মাধ্যমে।
  • যৌন মিলনের মাধ্যমে সংক্রামনের ঝুকি কয়েক গুন বেড়ে যায় যদি যৌন সঙ্গীর কোন প্রজননতন্ত্রেরে ও যৌনবাহিত সংক্রামক রোগ থাকে।
  • যৌন মিলনের মাধ্যমে মহিলাদের এইচ.আই.ভি সংক্রামনের হওয়ার ঝুকি তুলনামূলক ভাবে বেশী, কারণ:
  • মহিলাদের যৌনঙ্গের দেওয়াল পাতলা এবং তা পুরুষদের যৌনাঙ্গের তুলনায় বেশী এলাকা জুড়ে থাকে তাই পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের এইচ.আই.ভি সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা ২থেকে ৯ গুন বেশী ।
  • মহিলারা সাধারনত যৌন বাহিত সংক্রামক রোগের চিকিৎসার জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদানকারীর কাছে যাওয়ার সুযোগ কম পেয়ে থাকেন এবং অর্ধেকের বেশী মহিলারা রোগের তেমন কোন লক্ষণ থাকেনা বলে তারা চিকিৎসা সেবাও গ্রহন করেন না ।
  • দীর্ঘ সময় ব্যাপী কিংবা জবরদস্তিমূলক যৌন মিলনে পুরুষেদের তুলনায় মহিলাদের যৌনঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশী থাকে ,ফলে বীর্যের মাধ্যমে সংক্রমনের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  • মহিলারা তাদের স্বামীদের বিবাহবহির্ভূত যৌন কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রন করতে না পারার কারনে তাদের ঝুকি বেশী থাকে

রক্ত, রক্তজাত সামগ্রী এবং সংক্রমিত যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সংক্রমন:

  • সংক্রমিত ব্যক্তির রক্ত বা রক্তজাত সামগ্রী (যেমন:প্লাজমা,রক্তজমাট বাঁধার উপাদান,প্যাকসেল ইত্যাদি) কোন সুস্থ্য ব্যক্তি শরীরে গ্রহন করলে,তা গ্রহনকারীর শরীরে এইচ.আই.ভি এর সংক্রামন নিশ্চিত করে।
  • সংক্রমিত সূঁচ বা অন্যান্য ডাক্তারী যন্ত্রপাতির জীবানুমুক্ত না করে ব্যবহার করা অত্যন্ত বিপজ্জনক এতে এইচ.আই.ভি সংক্রামনের ঝুকি থাকে অত্যন্ত বেশী।
  • জীবানুমুক্ত না করে একই সূঁচ ও সিরিঞ্জ একাধিক ব্যক্তি ব্যবহার করার ফলে শিরার মাধ্যমে মাদক দ্রব্য সেবন কারীদের মধ্যে এইচ.আই.ভি সংক্রামনের ঝুকিও থাকে অত্যন্ত বেশী থাকে যেহেতু শিরায় মাদক দ্রব্য প্রবেশ করানোর আগে সাধারনত কিছু রক্ত সিরিঞ্জ টেনে আনা হয়।

মা থেকে শিশুতে সংক্রমন:

  • এইচ.আই.ভি’ ভাইরাস গর্ভাবস্থায়, প্রসবের সময় কিংবা প্রসব পরবর্তীকালে মায়ের কাছে থেকে তার গর্ভের ভ্রƒণে কিংবা শিশুর দেহে সংক্রমিত হতে পারে।
  • সংক্রমিত মা থেকে গর্ভাবস্থায় ও প্রসবের পর তার সন্তানের সক্রমিত হওয়ার আশংকা ২০%-৪০%।
  • সংক্রমিত মায়ের বুকের দুধের মাধ্যমেও এইচ.আই.ভি’-এর সংক্রমন হতে পারে।

মনে রাখা প্রয়োজন:

  • শরীরের অধিকাংশ তরল পদার্থের মধ্যে এইচ.আই.ভি’ ভাইরাস পাওয়া গেলেও সেগুলি কতটা সংক্রামন তা নির্ভর করে উক্ত তরলে ভাইরাসের পরিমানের ও পর।
  • চোখের পানি, লালা বা প্রস্রাবের মাধ্যমে এইচ.আই.ভি ছড়ানোর কোন নজির নেই।

সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরের যেসব তরল পদার্থ ছোয়াচে, সেগুলো হচ্ছে:

  • রক্ত
  • বীর্য এবং বীর্যপাতের পূর্বে নির্গত পিচ্ছিল রস
  • যৌনা নিঃসৃত তরল পদার্থ
  • মায়ের বুকের দুধ

এইচ.আই.ভি যে ভাবে ছড়ায় নাঃ

  • সংক্রমিত লোকের ব্যবহ্নত গ্লাসে পানি বা অন্য কিছু পান করলে।
  • সংক্রমিত লোকের ব্যবহ্নত পুকুর,সুইমিংপুল বা টয়লেট ব্যবহার  করলে।
  • সংক্রমিত ব্যক্তিদের সাথে সামাজিক মেলামেশা বা সাময়িক ভাবে অবস্থান করলে, করমর্দন, আলিঙ্গন বা সাধারন চুম্বন করলে।
  • হাচি বা কাশির মাধ্যমে।
  • মশা বা অন্যান্য রক্তচোষা পোকামাকড় সংক্রমিত ব্যাক্তি রক্তচুষে তারপর সুস্থ কাউকে কামড়ালে।

এইডস এর লক্ষণ সমূহঃ

এইচ.আই.ভি’ ভাইরাস শরীরে প্রবেশের সাথে সাথেই কোন লক্ষন দেখা  দেয়না।ভাইরাস শরীরে ঢোকার পর তা ‘এইডস’ এ রুপ নিতে গড়ে ০৮-১০ বছর সময় লাগে। তবে এটা নির্ভর করে ব্যক্তি বিশেষের শারিরীক ও মানসিক সুস্থ্যতা ও রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতার ওপর।‘এইডস’ হলে যে সমস্ত লক্ষণ প্রকাশ পায় তা নিুরুপ:

প্রধান লক্ষণ সমূহঃ

  • গত ছয় মাসের মধ্যে শরীরের ওজন শতকরা ১০ ভাগের বেশী কমে যাওয়া।
  • একমাসের বেশী সময় ধরে থেমে থেমে বা সার্বক্ষণিক জ্বর।
  • একমাসের বেশী সময় ধরে ডায়রিয়া

সাধারন লক্ষণ সমূহঃ

  • একমাসের বেশী সময় ধরে  ক্রমাগত কাশি।
  • সারা শরীরে  চুলকানিসহ ত্বকে সংক্রমন।
  • বার বার ‘হারপিস জস্টারের’(ঠোটের একধরনের ভাইরাস জনিত ঘা )সংক্রমন
  • বার বার মুখে –-গলায় ছত্রাকের সংক্রমন।
  • র্দীঘ সময় ধরে  এবং ধীরে ধীরে ‘হারপিস সিমপ্লেকক্স’ (বসন্ত) সংক্রমন ছড়িয়ে পড়া।
  • সারা শরীরের লসিকা গ্রন্থিফুলে যাওয়া

এইডস-এর চিকিৎসাঃ

  • এখন পর্যন্ত‘এইডস’  কোন নিরাময় যোগ্য রোগ নয়। এইচ.আই.ভি এইডস এর ক্ষেত্রে বর্তমানে যেসব ওষধ ব্যবহ্নত হয়, সেগুলি অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং রোগ নিরাময় করতে পারেনা।
  • এইচ.আই.ভি –এর বিরুদ্ধে কোন কার্যকর টিকাও এখন পর্যন্ত আবিস্কৃত হয়নি।

এইচ.আই.ভি/এইডস থেকে বাঁচার উপায়ঃ

  • ধমীয় অনুশাসন মেনে চলা এবং বিবাহ পূবে ও বিবাহ বহি:র্ভূত যৌন সর্ম্পক না করা।
  • স্বমী,  স্ত্রীর প্রতি এবং স্ত্রী, স্বামীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকা।
  • একাধিক যৌন সঙ্গী পরিত্যাগ করা এবং সম্ভাব না হলে অবশ্যই সঠিক নিয়মে কনডম ব্যবহার করা।
  • যৌন রোগে সমূহের দ্রুত চিকিৎসা করানো।
  • ডিসপোজ্যাবল সিরিঞ্জ ব্যবহার করা।
  • ডাক্তারী যন্ত্রপাতি সঠিক ভাবে জীবানুমুক্ত করে ব্যবহার করা।
  • রক্ত বা রক্তজাত দ্রব্য শরীরে নেওয়ার পূর্বে অব্যশই পরীক্ষা করে নেওয়্
  • সংক্রমতি মহিলারা গর্ভধারণ ও শিশুকে স্তন দানের ব্যপারে  বিশেষজ্ঞ ডাক্তরের পরামর্শ নেওয়া
এইচ.আই.ভি কি?এইচআইভি এইডস নির্দেশিকা সহ বর্ণনা এবং এইচ আই ভি থেকে বাচিবার উপায়।

এইচ আই ভি এইডস প্রতিরোধ নীতিমালা বিস্তারিত বর্ণনা

এইচ আই ভি এইডস প্রতিরোধ নীতিমালা

নীতিমালা প্রনয়নের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:

এইচ আই ভি এইডস প্রতিরোধ নীতিমালা বিস্তারিত বর্ণনা – এইডস (এইচ আই ভি পজিটিভ ) একটি মরন ব্যাধি। এই ভাইরাস মানব শরীরে প্রবেশ করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায় এবং আক্রান্ত ব্যাক্তি নিশ্চিত মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। তাই অত্র কোম্পানীতে কর্মরত শ্রমিক/কর্মচারীদের এইচ আই ভি/এইডস সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে এই নীতিমালা প্রনয়ন করা হল।  Check Also English Version

ঐওঠ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানুষের  AIDS  রোগ হয়। AIDS  একটি রক্তবাহী রোগ। AIDS  রোগে আক্রান্ত হলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। AIDS  হলে মৃত্যু অনিবার্য। AIDS  এর প্রতিরোধ ব্যবস্থা এখনো আবিষ্কার হয়নি। এই ভয়ংকর রোগের লক্ষন, কিভাবে ছড়ায়, কিভাবে ছড়ায় না এবং এর প্রতিরোধের ব্যবস্থা সম্মন্ধে নিম্নে আলোচনা করা হইলঃ …

AIDS  রোগের লক্ষন সমূহ ঃ

  • শরীরের ওজন ধীরে ধীরে কমে যাওয়া
  • এক মাসের বেশী ডায়রিয়া হওয়া
  • এক মাসের বেশী কাশী থাকা
  • এক মাসের বেশী জ্বর থাকা
  • সমস্ত শরীরে চর্ম রোগ দেখা দেয়া
  • মুখ অথবা গলায় সাদা আবরন যুক্ত ক্ষত চিহ্ন দেখা দেয়া

নীতিমালা প্রণোয়ণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি:

যেকোন রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধেই উত্তম। আর এইডস রোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায় হলো সচেতনতা। এ লক্ষ্যে অত্র কোম্পানীতে কর্মরত সকল মহিলা ও পুরুষ শ্রমিককে এইডস রোগ প্রতিরোগ এর উপায় সম্পর্কে জানিয়ে বিভিন্ন মিটিং করানো হয়। পুরুষ শ্রমিকদের কে পুরুষ অত্র কোম্পানীর মেডিকেল বিভাগ এ সম্পর্কে খুবই তৎপর ভূমিকা পালন করে। মেডিকেল বিভাগের নার্স, ডাক্তার ও মেডিকেল সহকারীগন সর্বদাই শ্রমিকদেও স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে সচেতন করে থাকে। এইডস প্রতিরোধ প্রসঙ্গে  শ্রমিকদের যে সকল বিষয়ে অবগত করা হয়:

 যে সকল ঝুকি পূর্ণ আচরনের জন্য এইডস হতে পারে ঃ

  • এইচ আই ভি /এইডস আক্রান্ত ব্যাক্তির সাথে যৌন মিলনের মাধ্যমে।
  • একাধিক যৌন সঙ্গী থাকা।
  • এইচ আই ভি /এইডস আক্রান্ত ব্যাক্তির রক্ত বা অন্য কোন অঙ্গ- প্র তঙ্গ শরীরে গ্রহন করলে ।
  • এইচ আই ভি এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত ইনজেকশনের সিরিঞ্জ, সূচ এবং অপারেশন এর যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে।
  • শিরার মাধম্যে নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহন করলে ।
  • আক্রান্ত মায়ের সন্তান গর্ভবস্থায় /প্রসবকালীন সময় বা বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়ও এইডস হতে পারে।

যে সকল কারনে এইডস ছড়ায় না ঃ

  • এইডস রোগীর সাথে স্বাভাবিক মেলামেশা ,চলাফেরা ও কাজ কর্মের মাধ্যমে।
  • আক্রান্ত ব্যাক্তির কাপড়, বিছানাপত্র, থালা বাসন ব্যবহার করলে।
  • বাতাস, পানি, খাদ্য, হাচি, কাশি, থু-থু বা শ্বাস- প্রশ্বাসের মাধ্যমে।
  • একই টয়লেট বা বাথরূম ব্যবহার করলে।
  • মশা বা অন্যকোন পোকা মাকড় কামড়ালে ।
  • একই পুকুরে সাতার কাটলে ।

এইডস  প্রতিরোধের  উপায় ঃ

  • ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা
  • শরীরে রক্ত গ্রহনের পূর্বে ঐ রক্তে এইচ আই ভি ভাইরাস আছে কিনা তা পরীক্ষা করা
  • অন্যের ব্যবহৃত সুচ, ক্ষুর, কাটার সিজার ইত্যাদি ব্যবহার না করা
  • সল্য চিকিৎসার যন্ত্রপাতি দুষনমূক্ত করে ব্যবহার করতে হবে
  • সামাজিক সচেতনতা
  • নারী পুরুষের যৌন মিলনে সাবধানতা অবলম্বন করা।
  • ধর্মীয় অনুশাসন মেনে একাধিক যৌন সঙ্গীর পরিবর্তে কেবল স্বামী/স্ত্রীর সাথে যৌন মিলন ।
  • যদি স্বামী/স্ত্রী কারো শরীরে এইচ আই ভি থাকে তবে প্রতিবার যৌন মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করতে হবে।
  • শরীরে অঙ্গ-প্রতঙ্গ গ্রহনের পূর্বে দাতার রক্তে এইচ আই ভি আছে কিনা তা পরীক্ষা করে নিতে হবে ।
  • একবার মাত্র ব্যবহার করা যায় এমন সূঁচ সিরিঞ্জ দিয়ে ইনজেকশন নিতে হবে ।
  • অন্যের ব্যবহৃত ইনজেকশনের সূঁচ, সিরিঞ্জ, ব্লেড, কাঁচি, ক্ষুর ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না ।
  • শল্য চিকিৎসার যন্ত্রপাতি দূষন মুক্ত, পরিষ্কার ও যথাযথ ভাবে জীবানুমুক্ত করে ব্যবহার করতে হবে।
  • আক্রান্ত মা সন্তান নিতে চাইলে বা শিশুকে বুকের বুকের দুধ খাওয়াতে চাইলে স্বাস্থ্য কর্মীর পরামর্শ ।

এইডস একটি ঘাতক ব্যাধি তবে ছোঁয়াচে নয় । শুধু আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যে কোন ধরনের যৌন মিলন এবং রক্তের মাধ্যমে এইডস হতে পারে । কোন ব্যাক্তির এইডস হয়ে থাকলে তাকে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে হবে এবং তার সাথে স্বাভাবিক আচরন করতে হবে। এইডস ভাইরাস যাতে সংক্রমিত হতে না পারে সে জন্য সকলের সচেতন হওয়া পয়োজন এবং এ বিষয়ে সকলকে সচেতন করা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব  ও কর্তব্য ।

উল্লেখ্য যে, কোন এইডস আক্রান্ত রোগীকে অটো  গ্রুপে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন বিধি-নিষেধ নেই। বরং এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কাজে নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে কোন ধরনের বৈষম্যমূলক আচরন করা যাবে না।

কার্যকরী প্রক্রিয়া ও অনুমোদনঃ

উল্লেখিত নীতিমালা নিয়মতান্ত্রিকভাবে কার্যকরী রাখার ক্ষমতা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে উল্লেখিত পর্ষদ এই নীতিমালা প্রয়োগ ও চলমান রাখতে নীতিগতভাবে দায়বদ্ধ।

নীতিমালা সম্পর্কে অবহিত করন/ যোগাযোগ ঃ

এই পলিসি যাতে কারখানার সব জায়গায় ও সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীকে কারখানার সাউন্ড সিস্টেম, মেডিকেল অফিসার, নার্স, মেডিকেল এসিসট্যান্ট, প্রাথমিক চিকিৎসক, শ্রমিক প্রতিনিধি, নোটিশ বোর্ড, মিটিং, ট্রেনিং এর মাধ্যমে অবহিত করা হয়।

AIDS  কিভাবে ছড়ায় ঃ

  • AIDS  আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যৌন মিলনের মাধ্যমে
  • AIDS  আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, ইনজাকশনের সূঁচ এবং অপারেশনের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে
  • যে সমস্ত গর্ভবতী মায়েদের শরীরে AIDS   আছে সেই সব মায়েদের কাছ থেকে – ক) গর্ভাবস্থায় খ) প্রসবের সময় গ) দুধ পান করালে শিশুর শরীরে এ রোগ ছড়াতে পারে।

AIDS  কিভাবে ছড়ায় না ঃ

  • এক সাথে এক ঘরে বসবাস করলে
  • এক সাথে খাওয়া দাওয়া করলে
  • এক সাথে খেলাধুলা করলে
  • একই বিছানায় ঘুমালে
  • একই স্কুলে পড়াশোনা করলে
  • মশা বা পোকামাকড় কামড়ালে
  • শারীরিক স্পর্শ, যেমন – হাত মেলানো, কোলাকুলি বা সামাজিক চুম্বন করলে ( তবে একজনের মুখের থুথু বা লালা অন্যের মুখে / শরীরে না লাগাই ভাল।)
  • হাঁচি, কাশি, থুথু বা শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে
  • একই টয়লেট বা পায়খানা বা বাথরুম ব্যবহার করলে।
  • একই সাথে একই পুকুরে গোছল করলে AIDS  ছড়ায় না।

ফিডব্যাক ও কন্ট্রোল ঃ

সচেতন করার লক্ষ্যে পলিসি বাস্তবাযণের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি সদা তৎপর ও বদ্ধ পরিকর। এরপরও যদি পলিসি বাস্তবায়ন না হয় বা বাস্তবায়নের পথে কোন বাধাঁর সস্মুখীন হয়, তবে সদা নিয়ন্ত্রন করার জন্য গঠিত কমিটি সার্বিক পদক্ষেপ গ্রহন করে থাকেন।

পরিশিস্টঃ

এইডসএকটি ঘাতক ব্যাধি যা নির্মূল করতে আমাদের সকলের সচেতনতাই যথেষ্ট। পরিশেষে বলা যায় এইডস যেহেতু মরন ব্যধি তাই সকলকে সচেতন থাকতে হবে যেন এই মরন ব্যধি কাউকে ছোবল মারতে না পারে।