Select Page

অগ্নিানর্বাপন যন্ত্রের প্রকারভেদ

অগ্নিানর্বাপন যন্ত্রের প্রকারভেদ। মানাসিক ঝুকিঁ সৃষ্টিকারী উপাদান কি কি? কার্টিজ টাইপ এক্সটিংগুইসারে সিলিন্ডারের ভিতরে নির্দিষ্ট লেভেল পর্যন্ত বিশুদ্ধ পানি থাকে। এ ধরণের এক্সটিংগুইসারের সিলিন্ডারের ভিতরের পানিকে বের করার জন্য কার্টিজে কার্বন-ডাই-অক্সাইড (ঈড়২) গ্যাস ভরা থাকে। ব্যবহারের সময় অপারেটিং লিভারে চাপ দিলে কার্টিজ এর মুখ ছিদ্র হয়ে ইনলেট টিউব দ্বারা গ্যাস সিলিন্ডারের ভিতর ঢুকে প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে। এই চাপের ফলে ভিতরের পানি ডিসচার্জ টিউব দিয়ে নজেল হয়ে ডিসচার্জ পাইপ হয়ে নজলের মাধ্যমে দূরে নিক্ষিপ্ত হয়। সহজে বহনযোগ্য অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র সাধারনত ০৫ প্রকার হয়ে থাকে। …
• ওয়াটার টাইপ
• ফোম টাইপ
• ডিসিপি টাইপ
• সিওটু টাইপ
• হ্যালোন টাইপ

ফায়ার এক্সটিংগুইসার আগুনের প্রাথমিক অবস্থায় ব্যবহার করা হয়। এক্সটিংগুইসার ব্যবহারের সময় একই সংগে অনেকগুলি ব্যবহার করা যাবেনা। আগুনের অবস্থা বুঝে পর্যায়ক্রমে একটি একটি করে ব্যবহার করতে হবে। এবং পাউডার ও সিওটু যাতে নাকে ও মুখে প্রবেশ না করে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। Click Here for English Version

ওয়াটার টাইপ অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র

আলোচ্য বিষয়

এ অধ্যয় সম্পন্ন হলে আপনি জানতে সমর্থ হবেন ঃ-

সংজ্ঞা

প্রণালী

প্রকারভেদ

বর্ণনা

কারিগরি তথ্য

ব্যবহার বিধি (অপারেশন কার্যক্রম)

*          রিফিলিং পদ্ধতি

*          যতœ ও রক্ষণাবেক্ষণ

সংজ্ঞা (ওয়াটার টাইপ)

যে বহনযোগ্য অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের সাহায্যে পানি নিক্ষেপ করে সুচনালগ্নেই অগ্নি নির্বাপন করা হয় তাকে বহনযোগ্য ওয়াটার টাইপ অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র বলা হয়।

গঠন প্রণালী  (ওয়াটার টাইপ)

১. ১০ লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন হালকা ষ্টিলের তৈরি গোলাকার একটি সিলিন্ডার। যার এক মুখ খোলা।

২. খোলা মুখটি ডেড ক্যাপ দ্বারা শক্তভাবে আটকিয়ে দেয়া হয়।

৩. ভিতরে ইনলেট টিউব,

৪.ডিসচার্জ টিউব,

৫.গ্যাস কার্টিজ (কার্বনডাই অক্সাাইড),

৬. কন্ট্রোল বাল – প্রেসার টাইপ

৬.মনো মিটার- প্রেসার টাইপ

৭.গ্যাস (নাট্রোজেন),

৮.ক্যারিং হ্যান্ডেল,

৯.সেফটি পিন,

১০.অপারেটিং লিভার ইত্যাদি।

ওয়াটার টাইপ এক্সটিংগুইসার অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র অগ্নি নির্বাপণ কাজে ব্যবহারের সময় নজেলটি আগুনের দিকে তাক করে সেফটি পিন খুলে বাতাসের অনুকূলে থেকে অপারেটিং লিভারে চাপ দিলে পানি নজেলের মাধ্যমে বের হয়ে নির্দিষ্ট, লক্ষ্য বস্তুর উপর পরে  কুলিং পদ্ধতিতে আগ্নি নির্বাপণ করে।

সতর্কতা ঃ-

প্রেসার টাইপ এক্সটিংগুইসারে সিলিন্ডারের ভিতরে নির্দিষ্ট লেভেল পর্যন্ত বিশুদ্ধ  পানি থাকে। এ ধরণের এক্সটিংগুইসারের সিলিন্ডারের ভিতরের পানিকে বের করার জন্য সিলিন্ডারের ভিতরে নাইট্রোজেন (ঘ২) গ্যাস ভরা থাকে। গ্যাসকে ভিতরে ধরে রাখার জন্য সিলিন্ডারের মুখে কন্ট্রোল বাল্ব থাকে। গ্যাসের চাপ দেখার জন্য মনো মিটার সংযুক্ত থাকে। ব্যবহারের সময় অপারেটিং লিভারে চাপ দিলে গ্যাসের চাপে পানি ডিসচার্জ টিউব দিয়ে  ডিসচার্জ পাইপ হয়ে নজেলের  মাধ্যমে দূরে নিক্ষিপ্ত হয়। এ ধরণের এক্সটিংগুইসার বার বার ব্যবহার করা যায়। সম্ভাব্য অগ্নিকান্ডের স্থলে মেশিনম্যান, লাইনম্যানগন এবং সুপারভাইজারগন অথবা ট্রেনিংপ্রাপ্ত ফায়ার ফাইটিং সদস্যগন প্রাথমিক অবস্থায় এক্সটিংগুইসার ব্যবহারের মাধ্যমে আগুন নিভানোর কাজে ব্যস্ত থাকবে। যদি আগুন বড় হয় তখন অন্যান্য সাহায্যকারীগন হোজ লাইন খুলবে এবং প্রয়োজনে তা ব্যবহার করবে। অন্যান্যরা নিকটতম জ্বালানী দ্রব্য বা তুলা সরিয়ে নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে। এছাড়া উক্ত স্থানে উপরস্থ কর্মকর্তা যিনি হাজির থাকবেন তিনি অগ্নি নির্বাপন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন। এমন ভাবে একে অপরের সাহায্যেও মাধ্যমে অগ্নি দূর্ঘটনা মোকাবিলা করতে হবে।

পরিবেশগত ঝুকিঁ ঃ কর্মস্থলে বিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে, যেগুলো শ্রমিকের স্বাস্থ্যকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে।

• অপরিষ্কার, নোংরা, ধুলাবালি, গ্যাস, বাষ্প
• মেশিন ও কাচাঁমাল এবং গার্মেন্টস ও কাপড়ের এলোমেলো অবস্থান।
• বর্জ্য পদার্থ নির্গমন।
• বর্জ্য পানি নির্গমন।
• পানি দূষন।

মানসিক ঝুকিঁ ঃ একজন শ্রমিক বা কর্মীর মানসিক ও সামাজিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া যা তার কর্ম পরিবেশে, কর্মের শর্তাবলী ও কর্মক্ষেত্রে উদ্ধতর্ন কর্মকর্তা ও সহকর্মীদের আচার আচরন থেকে সৃষ্টি হয়। এ ধরনের ঝুঁকি একজন কর্মীকে কর্মের সহিত মানিয়ে নিতে বাধাঁ সৃষ্টি করে।

মানাসিক ঝুকিঁ সৃষ্টিকারী উপাদান ঃ

• বৈষম্য
• চাকুরীর অনিশ্চয়তা
• কম বা নিম্ন মজুরী
• অনিয়মিত মজুরী ও ওভারটাইম প্রদান
• অতিরিক্ত কাজের চাপ
• দীর্ঘ কর্মঘন্টা
• চাকুরীতে পেশাগত অদক্ষতা
• হয়রানী ও নির্যাতন

বৈষম্য ঃ

বৈষম্যের শিকার হলে কর্মীর মন বিষিয়ে যায়, হতাশার সৃষ্টি হয় ও মনোবল কমে যায়।

চাকুরীর অনিশ্চয়তা ও কম বা নিম্ন মজুরী ঃ
অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কারনে সৃষ্টি হয় হতাশা, ভয়, টেনশন এমনকি দুর্ঘটনা ঘটে, ফলে শ্রমিকের শারীরিক ও মানসিকভাবে রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

দীর্ঘ কর্ম ঘন্টা ঃ
একজন শ্রমিকের পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং খাদ্য গ্রহনের জন্য বিরতির প্রয়োজন আছে। অনির্ধারিত ও দীর্ঘ সময় কাজ শ্রমিকের ক্লান্তি বাড়ায়, স্বাস্থ্যগত সমস্যা হয় ফলে অনুপুস্থিতি ও অসুস্থতার হার বেড়ে যায়।

চাকুরীতে পেশাগত অদক্ষতা ঃ
একই কাজের পুনরাবৃত্তি এবং কর্ম পরিধির সীমাবদ্ধতার ফলে দক্ষতার উন্নতি হয়না। কর্মে অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হয় এবং শ্রম দক্ষতা ও কর্ম দক্ষতার অপব্যবহার হয়।

হয়রানি ও নির্যাতন ঃ
কর্ম ক্ষেত্রে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হলে কর্মীর মন তিক্ত হয়ে যায় যা থেকে হতাশার সৃষ্টি হয় এবং মনোবল কমে যায়।

মানাসিক ঝুকিঁতে করনীয় ঃ

নিজেকে উফুল্ল রাখতে হবে।
কাজ সম্পাদনের দৈহিক ও কোন ক্রমেই অসুস্থ অবস্থায় কাজ করা যাবেনা।
সদা সর্তক থাকতে হবে।
নিজ ও পারিপার্শি¦ক অবস্থা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
যে ব্যক্তি কাজ করবে তাকে অবশ্যই উক্ত মেশিন সর্ম্পকে এবং দূর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ও পর্যাপ্ত দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
নিরাপত্তা বিষয়ক ট্রেনিং।
পারষ্পারিক ব›ধুত্ব ও শ্রদ্ধাবোধ।

আঘাত উত্তর ব্যবস্থা ঃ

প্রশিক্ষন প্রাপ্ত ফার্স্ট এইড এর তত্ত্বাবধায়নে পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদীসহ ফার্স্ট এইড বক্সের ব্যবস্থা।
জরুরী অবস্থায় ফ্যাক্টরীর মেডিক্যালে ডাক্তার ও নার্সের শরনাপন্ন হওয়া।
অতঃপর প্রয়োজনে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা।]

দূর্ঘটনা রেকর্ড রেজিষ্ট্রার ঃ

• দূর্ঘটনা রেকর্ড রেজিষ্ট্রার একটি সহযোগী মাধ্যম, যা থেকে দূর্ঘটনার কারন ও উৎস জানা যায়। নিম্নে দূর্ঘটনা রেকর্ড রেজিস্ট্রারের ব্যবহার সমুহ দেওয়া হলো ঃ
• কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক মাসে দূর্ঘটনা রেজিস্ট্রার চেক করবেন এবং সকল দূর্ঘটনা পর্যালোচনা করবেন এবং একই ধরনের দূর্ঘটনার শ্রেনী বিন্যাস করবেন।
• কারখানা কর্তৃপক্ষ সাধারন দূর্ঘটনার কারন সমুহ চিহ্নিত করে যথাযথ প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
• কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতি মাসে বেশী দূর্ঘটনা কবলিত সেকশন চিহ্নিত করবেন এবং উক্ত সেকশনে দূর্ঘটনা কমাতে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহন নিবেন।

প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাদী ঃ

• সবসময় নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা এবং অন্যকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে সাহায্য করা।
• নিজের কাজের জায়গা এবং আশেপাশের জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।
• কাচাঁমাল এবং তৈরি দ্রবাদি সাজানো গোছানো রাখা।
• চলাচলের জন্য নিদির্ষ্ট বর্হিগমন পথ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।
• সঠিক উপায়ে টয়লেট ব্যবহারের পর পর্যাপ্ত পরিমানে পানি ব্যবহার করা।
• ইটিপির মাধ্যমে বর্জ্য পানি পরিশোধন নিশ্চিত করা।
• খাবার পানি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশুদ্ধ খাবার পানি ব্যবহার ও পান করা।
• নিজ নিজ সেকশনে নির্ধারিত আত্মরক্ষামূলক সরঞ্জামাদী (পিপিই) ব্যবহার করা।
• খাবারের আগে হাত মুখ ধোয়ার অভ্যাস।
• খাদ্য দ্রব্য হাতে না লাগিয়ে চামচ ব্যবহার করা অথবা ভালোভাবে হাত ধুয়ে খাবার খাওয়া।

ফ্যাক্টরী পর্যায়ে করনীয় ঃ

• ফ্যাক্টরীর প্রতিটি ফ্লোরে পর্যাপ্ত পরিমানে অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জামাদী থাকতে হবে।
• অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জামাদীর একটি স্টার্ন্ডাড তালিকা ( এনেক্স – ৩) নাম সহ সরঞ্জামাদীর সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
• প্রতিটি ফ্লোরে ফায়ার স্টেশন,থানা ও হাসপাতালের টেলিফোন নম্বর লেখা থাকতে হবে।
• কমপ্লায়েন্স অফিসার /সেইফটি অফিসার / ওয়েল ফেয়ার অফিসার / এডমিন অফিসার একটি দূর্ঘটনা রেজিস্ট্রার মেইনটেন করবে।
• প্রতি মাসে কমপক্ষে অন্ততঃ একবার ফায়ার ড্রিল এবং ফায়ার ট্রেনিং করতে হবে ।
• প্রতিটি প্রশিক্ষনের জন্য হাজিরা রেজিষ্ট্রার মেনটেইন করতে হবে।
• ফ্যাক্টরী পযার্য়ে কমপ্লায়েন্স অফিসারগন বিভিন্ন ট্রেনিংএর সময়মূচী প্রস্তুত করবেন, ফেসেলিটেট করবেন ও প্রশিক্ষন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবেন।
• অগ্নি নির্বাপক দল আগুন নেভানোর যাবতীয় ব্যবস্থা করবে।
• সেইফটি অফিসার ম্যানুয়ালে বণির্ত নিয়মে একটি দূর্ঘটনা রেজিষ্ট্রার খাতা সংরক্ষন করবেন।
• উদ্ধারকারী দল দূর্ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন।
• পরবর্তীতে প্রয়োজনে তাদেরকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।