দাহ্যবস্তুর শ্রেণী বিন্যাস
দাহ্যবস্তুর শ্রেণী বিন্যাস এর বর্ণনা – শ্রেণীর আগুনের সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম হচ্ছে ‘ফোম’ ফোমের প্রদান কাজ হচ্ছে প্রজ্জ্বলিত তরণ পদার্থের উপর আবরণ সৃষ্টি করে অক্সিজেন সীমিত করে আগুন নির্বাপন করা। তেলের আগুন কেমিকেল ফোম,এয়ার ফোম, কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যবহার করা যায়। সকল দাহ্যবস্তু একই তাপমাত্রায় জ্বলে না। কোন কোন দাহ্যবস্তু আগুনের স্ফুলিংগ পেলেই জ্বলে ওঠে, যেমন-থিনার। আবার কোন কোন আগুন জ্বলার জন্য প্রচুর তাপমাত্রার দরকার হয় যেমন, কাঠের গুড়ি, মোটা কাপড়, কয়লা ইত্যাদি। গ্রামাঞ্চলে দেখা যায় কাঠের চুলায় রান্না করার সময় আগুন জ্বালানোর জন্য প্রথমে খড়-কুটা বা শুকনো পাতা বা কখনও কেরোসিন তেল ব্যবহার করা হয়। কারণ খড়-কুটা বা কেরোসিন তেল ইত্যাদি জ্বলার জন্য সামান্য তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। তাপমাত্রা আস্তে আস্তে বেড়ে গিয়ে কাঠে আগুন ধরে যায়। …
কোন দাহ্যবস্তু কতটুকু তাপমাত্রায় জ্বলে, এর উপর ভিত্তি করে দাহ্যবস্তুকে সাধারণতঃ তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়;
যেমন ঃটিন্ডার ফুয়েল বা স্বল্প তাপমাত্রার জ্বালানী ঃ এ সকল জ্বালানী জ্বলার জন্য সামান্য তাপমাত্রা প্রয়োজন হয়। এগুলো সাধারণত ঃ ০০ফারেনহাইট থেকে ৭৩০ফারেনহাইট তাপমাত্রায় জ্বলে।
উদাহরণ ঃ থিনার, অকটেন, ডিজেল, পেট্রাল, কেরোসিন, তারপিন, রং, বার্ণিস, গ্যাসোলীন, তুলা, আঁশ ইত্যাদি।
কিন্ডলিং ফুয়েল বা মধ্যম তাপমাত্রার জ্বালানী ঃ এ সকল জ্বালানী জ্বলার জন্য মধ্যম মাত্রার তাপমাত্রা প্রয়োজন হয়। এগুলো সাধারণত ঃ ৭৩০ফারেনহাইট থেকে ১৫০০ফারেনহাইট তাপমাত্রায় জ্বলে।
উদাহরণ ঃ খড়, কুটা, কাঠি, শুকনো পাতা, পাতলা কাগজ ইত্যাদি।
বাল্ক ফুয়েল বা অধিক তাপমাত্রার জ্বালানী ঃ এ সকল জ্বালানী জ্বলার জন্য অধিক তাপমাত্রা প্রয়োজন হয়। এগুলো সাধারণত ঃ ১৫০০ফারেনহাইট বা তার অধিক তাপমাত্রায় জ্বলে।
উদাহরণ ঃ কাঠ, বাঁশ, মোটা কাপড়, মোটা কাগজের কার্টুন, কয়লা ইত্যাদি।
আগুনের বিস্তার প্রক্রিয়া ঃ
যে সকল দাহ্য বস্তুর আয়তন আছে কিন্তু আকার নেই এবং পোড়ার পর কোন কিছু অবশিষ্ট থাকেনা বা কয়লার সৃষ্টি হয়না এই শ্রেণীর আগুনই ই শ্রেণীর আগুন । শ্রেণীর আগুন আওতাভুক্ত হচ্ছে তরল জাতীয় দ্রব্য । সাধারণ ভাবে বলা যায় হাইড্রো কার্বন। কারণ হাইড্রোজেন ও কার্বনের মিলিত ফলই হচ্ছে তেল। কোন বস্তুতে আগুন লাগলে উহা এক স্থানে সীমাবদ্ধ থাকে না। সময়ের সাথে সাথে উহা সমস্ত জায়গায় এমনকি এক ফ্লোর থেকে অন্য ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। এ বিস্তার প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। সাধারণতঃ নিম্ন লিখিত তিনটি পদ্ধতিতে আগুন বিস্তার করে থাকে। যেমন-
- কন্ডাকশন বা পরিবহন
- কনভেকশন বা পরিচলন
- রেডিয়েশন বা বিকিরণ
আগুন নির্বাপন পদ্ধতি ঃ
এ শ্রেনীর আগুন নির্বাপনের সব থেকে ভাল মাধ্যম হচ্ছে পানি। এছাড়া এ শ্রেণীর আগুনে প্রাথমিক অবস্থায় সোডা, এসিড এক্সটিংকুইসার,ওয়াটার পাইপ এক্সটিংকুইসার, কার্বন ডাউ অক্সাইড, ডি,সি,পি ড্রাই কেমিক্যাল পাউডার ব্যবহার করা যায়। আগুন নির্বাপন নীতি থেকে আমরা জেনেছি যে, আগুন জ্বলার জন্য প্রয়োজনীয় চারটি উপাদানের যে কোন একটিকে সরিয়ে দিলেই আগুন নিভে যাবে। এ চারটি উপাদানের এক একটি উপাদানকে সরানোকে এক একটি পদ্ধতি বলা হয়। নিম্নে এ চারটি পদ্ধতির নাম দেয়া হলো-
স্টারভেশন ঃ এ পদ্ধতিতে যে স্থানে আগুন লেগেছে তার নিকটবর্তী স্থান থেকে সকল দাহ্যবস্তু সরিয়ে ফেলা হয়। যেমন, কোন কাঁচা বাড়ীঘরে বা বস্তিতে আগুন লাগলে পার্শ্ববর্তী ঘর ভেঙ্গে দেয়া হয় যাতে আগুন আর ছড়াতে না পারে। গ্যাসের আগুন নির্বাপন করতে হয় কার্বন ডাই অক্সাইড বা বি,সি,পি দ্বারা। হাই প্রেসার ¯েপ্র দিয়েও আগুন নির্বাপন করা যায়। আগুন ছোট হলে ভেজা কাপড় বা অন্য কিছু দ্বারা ছটকা আঘাত করেও আগুন নেবানো সম্ভব । গ্যাস পাইপ ফেটে আগুন ধরলে সাপ¬াই বন্ধ করে আগুন নির্বাপন করতে হবে।
কুলিং ঃ এ পদ্ধতিতে সাধারণতঃ আগুন নিভানোর কাজে পানি ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও কার্বন-ডাই-অক্সাইড বা সিওটু একটি ঠান্ডা গ্যাস। তাই আগুন ছোট থাকলে কুলিং পদ্ধতিতে সিওটু অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। যে সকল দাহ্য বস্তুর আকার,আয়তন নেই এবং জ্বলবার পর কোন কয়লা থাকেনা তাই হচ্ছে ঈ শ্রেণীর আগুন। যেমন-গ্যাস জাতীয় পদার্থ
স্মুদারিং ঃ এ পদ্ধতিতে আগুন যখন ছোট থাকে তখন ভাড়ী কোন বস্তু বা কাপড় দিয়ে চাপা দিলে বা সিওটু এবং ফোম টাইপ (ঋড়ধস ঞুঢ়ব) অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র (তেলের আগুনে) ব্যবহার করলে অক্সিজেন সরে যায় এবং আগুন নিভে যায়। শ্রেণীর আগুন ঃ ডি শ্রেনীর আগুন হচ্ছে বিশেষ ধরণের আগুন। এ আগুনের দাহ্য বস্ত হচ্ছে ধাতু। সাধারণ অগ্নি নির্বাপন মাধ্যম দ্বারা এ শ্রেনীর আগুন নির্বাপন সম্ভব না।