পোশাক শিল্পের তত্বাবধান Supervision পদ্ধতি

পোশাক শিল্পের তত্বাবধান Supervision পদ্ধতি বিস্তারিত বর্ণনা

পোশাক শিল্পের তত্বাবধান

তত্বাবধান ল্যাটিন ভাষা থেকে আগত সুপারভিশন শব্দটির অর্থ হচ্ছে দেখা। এখানে “সুপার” শব্দাংশটার মানে হল উপস্থিত বা অধিকতর বা অতিরিক্তভাবে এবং “ভিশন” শব্দাংশের অর্থ হল দেখা। অতএব সুপারভিশন বা তদারক এর মানে হলো উপর থেকে অধিকতরভাবে অধীনস্থ বা নিু পদস্থ কর্মীদের কাজকর্ম দেখা। শিল্পক্ষেত্রে তদারক বলতে কোন কাজ সম্পাদনের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত পরিচালনা মূলক ও নিয়ন্ত্রনমূলক নেতৃত্ব কে বোঝায়। কেউ কেউ সুপারভিশনকে নেতৃত্ব প্রদান সত্বেও ব্যবহার করতে চান যদিও নেতৃত্ব ও তত্বাবধানের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তত্বাবধানের তিনটি উপাদান নিুে প্রদর্শিত ত্রিভূজ আকারে পরিষ্পুটিত করা যেতে পারে। অতএব তত্বাবধান হচ্ছে একদল কর্মীও ওপর এমনভাবে কর্তৃত্ব প্রয়োগ করার কৌশল যার মাধ্যমে কাজ সম্পাদনে সর্বাধিক সম্মিলিত কার্যকারিতা অর্জন সম্ভব হয়। আবার প্রয়োগিক দিক থেকে বলা যায় যে, তত্বাবধান হলো এমন কিছু কাজ, আচরন ও উচ্চারন যে গুলোর দ্বারা কর্মীরদের কাজ পর্যবেক্ষন, উপদেশদান, নিয়ন্ত্রন ও কর্ম সমন্বয় করণের মাধ্যমে সর্বাধিক কার্যকারিতা অর্জনের জন্য সহায়তা প্রদান করা হয়।

তত্বাবধানের মূলনীতিসমূহঃ

তত্বাবধান কাজের আওতা বহুমূখী এবং ব্যাপক এর জন্য সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলী নির্দেশ করা কঠিন কারণ কর্মীদেও বহুধরনের ব্যক্তিত্বের সমাবেশ ঘটে এবং ব্যক্তি স্বতন্ত্রেও কারণে একই নিয়ম সর্বক্ষেত্রে সমানভাবে প্রয়োগ করা দুষ্কর। সফল তত্বাবধায়করা সাধারণতঃ নিুবর্নিত নীতিমালা অনুসরণ করে থাকেন।

  • কর্মীদের কাছে কি চাওয়া হচ্ছে তা তাদেরকে পরিষ্কারভাবে জানাতে হবে। কোম্পানীর নীতি ও চাহীদা তাদের কাছে পরিষ্কার ও ন্যায়সংগতভাবে ব্যাক্ত করতে হবে।
  • কাজের সময় কমৃীদেরকে প্রয়োজনীয় উপদেশ ও নির্দেশ দিতে হবে ও কাজের সন্তোষজনক অবস্থা বজায় রাখতে হবে।
  • ভাল কাজের জন্য স্বীকৃতি দিতে হবে ও প্রকাশ্যভাবে প্রশংসা করতে হবে।
  • খারাপ, দুর্বল, অদক্ষতাপ্রসূত কাজের জন্য যতখানি সম্ভব অপ্রকাশে ও গঠনমূলক সমালোচনা করতে হবে।
  • কাজের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও অবস্থা বজায় রাখতে হবে।
  • কর্মীদের কাজের দক্ষতা ও কারিগরী কাজের উৎকৃষ্ট সাধন করতে হবে এবং তাদেও নিজেদের জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য উৎসাহ দিতে হবে।
  • কর্মীরা যাতে যথোপযুক্ত কাজের দায়িত্ব পায় সেদিকে দৃর্ষ্টি রাখতে হবে এবং তারা যে অধিকতর দায়িত্ব পালনে সক্ষম তা দেখানোর সুযোগ তাদেরকে দিতে হবে।
  • উৎসাহব্যাঞ্জক নেতৃত্ব প্রদান করা এবং কার্য পদ্ধতির উৎকর্ষ সাধিত হতে পারে এমন প্রস্তাব প্রদানে তাদের কে উৎসাহিত করা ও তাদের প্রস্তাবের প্রতি গুরুত্ব দেয়া।
  • কর্মীদের সাথে মানব সুলভ ব্যবহার এবং প্রশিক্ষন ও শিক্ষাদানের সময় মানবিক স্পর্শ (ঐঁসধহ ঞড়ঁপয) ব্যবহার করতে হবে।
  • কর্মীকে যতটা সম্ভব স্বাধীনভাবে ও অকারণ হস্তক্ষেপ ব্যতীত কাজ করতে দিতে হবে।
  • কাজে, কথায়, আচরণে, সর্ব বিষয়ে সর্বক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। কারো প্রতি অযাচিত অনুগ্রহ কিংবা বিদ্বেষ প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে হবে।

তত্বাবধানের কৌশলসমূহঃ

তত্বাবধানের কৌশলগুলো প্রয়োগিক বা অনুশীল মূলক। সকল তদারকির জন্য নিুরুপ কৌশলগুলো অবলম্বন করা যেতে পারে-

তদারকি প্রারম্ভে ঃ অধীনস্থ কর্মীদের মনোভাব, অভ্যাস, বিশ্বাস, আকাঙ্খা সহ সবকিছু জানতে হবে। তারা কি করে, কিভাবে করে, কি চিন্তা করে, এগুলো জানতে হবে এবং তাদের ব্যক্তিত্বের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট চিহ্নিত করতে হবে। তাছাড়া যে বা যিনি কাজের  তদারকিতে থাকবেন তাকে সে কাজ সম্পর্কে পূনাঙ্গ জ্ঞান অর্জন করতে হবে।

আদেশদানঃ ধমক বা কড়া সুওে কড়াকড়ি কোন আদেশ প্রদান না কওে পরিস্থিতি বিশ্লষন কওে তদানুযায়ী আদেশটি এমন কাঠামোয় উপস্থাপন করতে হবে যাতে পরিস্থিতি নিজেই কর্মীদেরকে কাজের দিকে টেনে নেয়।

কর্মীদের সাহায্য ও সহযোগীতা গ্রহনঃ কর্মীদেরকে প্রশ্ন করার সুযোগ দিয়ে এবং একটা সমস্যাকে তাদেও সামনে উপস্থাপন কওে সমাধান মূলক প্রস্তাব আহবানের মাধ্যমে তাদেও অংশগ্রহন ও সহযোগীতা নিশ্চিত করতে হবে।

কাজে স্বাধীনতাঃ কর্মীদেরকে নিয়োগ যুক্তিসংগত স্বাধীন বা কর্তৃত্ব দিয়ে ধেখতে হবে, কর্মীরা যে পদ্ধতিতে যে ভাবে কাজটি করতে চায় সেভাবে করলে তত্বাবধাকের মনপূতঃ বা চাহিদানুযায়ী করতে পারে কিনা।

সিদ্ধান্ত দানঃ কোন বিষয়ে সিদ্ধান্তদানের প্রাক্কালে বিসয়টি সম্পর্কে সকল/পূর্নাঙ্গ তথ্য জেনে নিয়ে এবং সফল তথ্যেও পারস্পারিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া চিন্তা করে ও সকল তথ্যকে একীভূত করে তদানুযায়ী ও সাম্ভাব্য দ্রুততরভাবে সিদ্ধান্ত দিতে হবে।

সমালোচনা বা ত্র“টি নির্দেশঃ সহ-কর্মীদের সাক্ষতে বা জ্ঞাতসারে কাউকে বা কারো কাজকে সমালোচনা না করে যতদূও সম্ভব একান্তে সমালোচনা বা ত্র“টি নির্দেশ করতে হবে এবং শুধু ত্র“টি নির্দেশ নয় বরং ঐ কর্মী কিভাবে ত্র“টিমুক্ত হতে পাওে তার পথনির্দেশ দিতে হবে অর্থাৎ গঠনমূলক সমালোচনা করতে হবে।

অভিযোগ নিষ্পত্তিঃ অভিযোগ যত ছোটই হোক তাকে উপপেক্ষা করা যাবেনা বরং সাম্ভাব্য সঠিক সময়ে অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে হবে এবং তাৎক্ষনিক নিষ্পত্তি সম্ভব না হলে তদারককারী ঐ অভিযোগ সম্পর্কে কি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন তা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে জানাতে হবে।

সমস্যা প্রবন কর্মীর সাথে ব্যবহারঃ সমস্যা প্রবন কর্মীর সাথে কথাবলতে হবে যথাযথ কারণ ও যুক্তির সাথে কর্মীর ভূল ধরিয়ে দিতে হবে। যদি কর্মী তাতে সন্তুষ্ট না হয় তবে তাকে পরিস্থিতি বিষ্লেষন কওে আরো কারণ নির্ণয় করতে হবে এবং ধৈয্যেও সাথে কর্মীর সহযোগীতা পাবার চেষ্টা করতে হবে এবং তাতেও কাজ না হলে উর্ধ্বতন তদারককারীর সাথে আলাপ কওে পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করতে হবে।

অসদাচরণ নিয়ন্ত্রনঃ অসদাচরণ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্র্তপক্ষকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ জ্ঞাপন করতে হবে।

অদক্ষতা নিয়ন্ত্রনঃ কর্মীদের অদক্ষতায় অনেক কারণ থাকতে পারে এবং তাই অদক্ষতায় সুনিদিষ্ট কারণ বা কারণগুলো খুঁজে বের করতে হবে এবং সে অনুযায়ী দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

অনভিপ্রেত আচরণ নিয়ন্ত্রনঃ কোন অনভিপ্রেত আচরনের জন্য কর্মীকে সরাসরি দোষারোপে না করে ঐ আচরনের প্রকৃত কারন অনুসন্ধান করতে হবে এবং যথাযথভাবে দ্রুত ঐ কারণ দূর করার প্রদক্ষেপ নিতে হবে।

কাজের প্রশংসাঃ নিরপেক্ষ ও ন্যায্যভাবে কর্মীদের কাজে মূল্যায়ন করতে মান উত্তীর্ন কাজের জন্য খোলাখুলি ভাবে প্রশংসা করতে হবে এবং খুব ভালো সম্পদ করার জন্য স্বীকৃত ও পুরষ্কারের ব্যবহার করতে হবে।

সঠিক নেতৃত্বঃ কর্মীদেরকে যথাযথভাবে অনুপ্রানিত ও দলীয় চেতনায় উদ্ভুদ্ধ করতে হবে। এ জন্যে তত্বাবধায়ককে কতগুলি গুন অর্জন করতে হবে। যেমন চরিত্রবল, যোগ্যতা, সততা, নিজের অধীনস্থকর্মীদেও জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়িত্ব গ্রহন, অভান্ত বিচার ক্ষমতা, নিরপেক্ষতা, ন্যায়পরায়ানতা, নিয়মশৃঙ্খলা, সংগঠন ও সমন্বয় সাধনের ক্ষামতা ইত্যাদি।

আমরা অটো  নিটওয়্যারস লিঃ ইতিমধ্যে গুনগতমান সম্পন্ন পণ্য, সুশৃংখল কর্মপদ্ধতি ও সামাজিক কর্মকান্ড ও ঝুঁকিহীন (ক্ষতিকারক নয়) কেমিক্যাল ব্যবহারের জন্য ৩টি (তিনটি) সার্টিফিকেট অর্জন করেছি এবং পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, পরিবেশ রক্ষা ও আমেরিকার বাজারে প্রবেশের জন্য আরও ৩ টি (তিনটি) সার্টিফিকেটের কাজ চলছে।


Posted

in

by

Comments

One response to “পোশাক শিল্পের তত্বাবধান Supervision পদ্ধতি বিস্তারিত বর্ণনা”

Leave a Reply