পোশাক শিল্পে অভিযোগ

পোশাক শিল্পে অভিযোগ ও পরামর্শ নীতি সমূহ কি কি?প্রতিষ্ঠানের শৃঙখলা রক্ষার্থে পদক্ষেপ

অভিযোগ ও পরামর্শ নীতি

উদ্দেশ্য ঃ অটো গ্র“প এর সকল শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও আন্তরিক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য এবং শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনার স্বার্থ সংরক্ষনের জন্য আমরা অভিযোগ ও পরামর্শ নীতি গ্রহন করে থাকি।

পরিধি ঃ প্রতিষ্ঠানের সকল শ্রমিকগণ তাদের কার্যক্ষেত্রে উদ্ভুত বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ  এবং সমস্যা সমাধানের জন্য যে কোন ধরনের অভিযোগ তাদের উর্ব্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে উত্থাপন করতে পারবে।
কোম্পানীতে কর্মরত শ্রমিকদের কোন অভিযোগ ও পরামর্শ নীতি থাকলে তা সর্বোচ্চ কর্মকর্তার কাছে পৌছানোর জন্য নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় ঃ
(ক) সাজেশন বাক্স ঃ শ্রমিকদের কোন অসুবিধা বা অভিযোগ থাকলে তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌছানোর জন্য আমরা টয়লেট, ক্যান্টিন এবং কোম্পানীর বিভিন্ন স্থানে সাজেশন বাক্স স্থাপন করে থাকি এবং শ্রমিকদের যে কোন ধরণের সমস্যা অভিযোগ বা পরামর্শ থাকলে তা লিখিত ভাবে বাক্সে ফেলার জন্য উৎসাহ প্রদান করে থাকি।
(খ) ওয়েল ফেয়ার অফিসার ঃ আমরা মহিলা ওয়েল ফেয়ার অফিসার নিয়োগ করে থাকি যাতে শ্রমিকরা তাদের সকল প্রকার সুযোগ, সুবিধা- অসুবিধা, পরামর্শ, অভিযোগ সহজেই জানাতে পারে এবং তার উপদেশ গ্রহন করতে পারে।
(গ) শ্রমিক সংঘ ঃ শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষনের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ কর্মকর্তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য আমরা শ্রমিদের দ্বারা শ্রমিক প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে “শ্রমিক সংঘ” বা ওয়ার্কারস ফোরাম ”গঠণ করেছি।
মৌখিকভাবে বা সাজেশন বক্সের মাধ্যমে কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে অভিযোগ পাওয়ার ৩ (তিন) কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে ৫ (পাঁচ) কর্মদিবসের মধ্যে কর্তৃপক্ষের জবাব নোটিশ বোর্ডের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। কোন অভিযোগকারীর অভিযোগ যদি মিথ্যা বলে প্রমানিত হয় তাহলে, অভিযোগকারীকে তার সত্যতা প্রমাণ করতে বলা হয়। যদি সে সত্যতা প্রমান করতে পারে তবে কোম্পানীর নীতি অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর যদি অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণ করতে না পারে তবে মিথ্যা অভিযোগের কারনে তাকে কোম্পানীর নীতি অনুযায়ী আইনানুগ ভাবে শাস্তি প্রদান করা হবে।

শাস্তিমুলক ব্যবস্থা

চাকুরী থেকে বরখাস্ত করন

কোন শ্রমিককে বরখাস্ত বা ছাঁটাই করার ক্ষেত্রে আমরা নির্দিষ্ট শ্রম আইন মেনে চলি অর্থাৎ কোন্ কোন্ প্রকারের অসদাচরণের জন্য একজন শ্রমিককে বরখাস্ত করব তার কিছু নির্দিষ্ট বিধান মেনে চলি। নিুলিখিত অসদাচরণের জন্য আমরা একজন শ্রমিককে বরখাস্ত করে থাকি।
নিুে উক্ত অসদাচরনের বর্ণনা দেওয়া হল ঃ-
১। অসদাচরণ সমুহ ঃ (ক) স্বেচছায় কাজে অনুপস্থিত থাকা কিংবা একাকী বা সংঘবদ্ধভাবে কোন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার আইনানুগ বা যুক্তিসঙ্গ আদেশ ইচছাকৃত পালন না করা, স্বেচছাকৃত অবাধ্যতা বা বেয়াদবী ।
(খ) মালিকের, প্রতিষ্ঠানের কিংবা ব্যবসার স¤পদ চুরি, মিথ্যাচার, প্রতারণা বা অসাধুতা ।
(গ) মালিকের অধীনে নিজেকে বা অন্য কোন শ্রমিকদের চাকুরীর ব্যপারে ঘুষ বা বেআইনীভাবে অন্য কোনরপ উৎকোচ নেয়া বা দেয়ার কারণে।
(ঘ) ছুটি ব্যতিরেকে অভ্যাসগত ভাবে কাজে অনুপস্থিতি বা ছুটি ব্যতিরেকে ১০ (দশ) দিনের বেশী অনুপস্থিতি ।
(ঙ) অভ্যাসগতভাবে বিলম্বে কাজে উপস্থিতি ।
(চ) কারখানার মধ্যে দাঙ্গা-হাঙ্গামামুলক বা গোলযোগপূর্ণ আচরণ করা অথবা নিয়ম শৃঙ্থলা ভঙ্গকারী যে কোন কাজ করা।
(ছ) শিপ্ল প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য যে কোন আইন বা নিয়ম বা বিধান অভ্যাসগত ভাবে ভঙ্গ করার অভ্যাস ।
(জ) অভ্যাসগত ভাবে কাজে অবহেলা ও উপেক্ষা বা ফাঁকি দেওয়া, কোন কাজ না করার অভ্যাস ।
(ঝ) কোন কাজ বা ক্রটি যার জন্য জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে সে কাজে অন্যদেরকে উস্কানি দেয়া, বার বার তা করা বা সে কাজে অবহেলা করা ।
(ঞ) বেআইনী ধর্মঘট বা ধীরে কাজ করা অথবা অবৈধ ধর্মঘট বা ধীরে কাজ করার জন্য অন্যদেরকে উস্কানী দেওয়া ।
(ট) মালিকের অফিসের দলিলপত্র নষ্ট করা, বিকৃত করা, বা মিথ্যা প্রতিপন্ন করা বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিসাধন করা।

উপরোল্লিখিত গুরতর অপরাধের দায়ে কোন শ্রমিককে বরখাস্ত করার জন্য আমরা প্রথমে ভালভাবে তদন্ত করে দেখি এবং পরবর্তিতে লিখিতভাবে অভিযোগ এনে তাকে ব্যাখ্যা ও কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় এবং তদন্ত কমিটির সামনে স্বাক্ষীসহ উপস্থিত হয়ে আÍপক্ষ সমর্থনের স¤ম্পর্ণ সুযোগ দেওয়া এবং তার কথা শুনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তার বিরদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে গুরতর শাস্তি হিসাবে বরখাস্ত করা যায় বা লঘু শাস্তি হিসাবে পদাবনিত, পদোন্নতি বন্ধ, ইনক্রিমেন্ট বন্ধ বা সাময়িক ভাবে চাকুরী থেকে অপসারন করা যায়। এ ব্যপারে আমরা সর্বদা সুবিচারের নীতি অবলম্বন করি।
উপরোল্লিখিত কারন ব্যতিরেকে কোন শ্রমিকদের চাকুরীর অবসানের ক্ষেত্রে নিুলিখিত নীতিগুলি মানা হয় ঃ –
তাকে ১২০ দিনের টারমিনেশন নোটিশ দেওয়া হয়।
যদি ১২০ দিনের নোটিশ না দেওয়া হয় তবে ১২০ দিনের মজুরী তাকে দেওয়া হয়। ৩০ দিনের নোটিশের ক্ষেত্রে ৯০ দিনের মজুরী দেওয়া হয় এবং আইন সম্মত অন্যান্য পাওনাদি (যদি থাকে) পরিশোধ করা হয়।

প্রতিষ্ঠানের শৃঙখলা রক্ষার্থে অন্যান্য পদক্ষেপ ঃ

১। সতর্কীকরণ ঃ লঘু অপরাধের জন্য কর্তৃপক্ষ কোন কর্মচারীকে সতর্ক হবার লিখিত নির্দেশ দিতে পারেন। কোন কর্মচারীকে যদি কোন অপরাধের জন্য
একাধিক বার সতর্ক করে দেওয়া হয়, তবে পরবর্তী কালে তাকে অভ্যাসগত কারণে গুরতর শাস্তি দেওয়া যাবে ।

২। বিনা অনুমতিতে কাজে অনুপস্থিত থাকা ঃ ছুটির শেষে কাজে যোগ না দিলে বা বিনা অনুমতিতে কাজে অনুপস্থিত থাকলে এবং তা ১০ দিনের বেশী হলে
তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার পর যথোপযুক্তকারণ দর্শাতে না পারলে সে চাকুরীর অধিকার হারাবে।

৩। জরিমানা ঃ সংশ্লিষ্ট আইনে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন শৃঙখলা পরিপন্থি কার্যকলাপের জন্য কর্মচারীদের জরিমানা করতে পারেন।

চাকুরী থেকে অব্যহতি গ্রহনের নিয়ম ঃ

১। কোন স্থায়ী শ্রমিক চাকুরী থেকে অব্যাহতি নিতে চাইলে তাকে ১ (এক) মাস পূর্বে লিখিত নোটিশ দিতে হবে।
২। অসুস্থতাজনিত কারণে কোন শ্রমিক চাকুরী থেকে অব্যাহতি নিতে চাইলে তাকে কর্তৃপক্ষের নিকট শারীরিক অসামর্থতার বিষয়ে একটি ডাক্তারী সার্টিফিকেট
জমা দিতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে পূর্ব নোটিশের প্রয়োজন হবে না।
৩। অব্যাহতি প্রাপ্ত কর্মীকে কো¤পানী কর্তৃক তাকে প্রদত্ত ড্রেস, মাস্ক, কাটার, এয়ারপ্ল্যাগ, চশমা, গামবুট ইত্যাদি জমা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নিয়ে
অফিসে জমা দিতে হবে।


Posted

in

by

Comments

One response to “পোশাক শিল্পে অভিযোগ ও পরামর্শ নীতি সমূহ কি কি?প্রতিষ্ঠানের শৃঙখলা রক্ষার্থে পদক্ষেপ”

Leave a Reply