বাংলাদেশের কারখানা আইন - ১৯৬৫

বাংলাদেশের কারখানা আইন – ১৯৬৫। শ্রম আইনের আলোকে

বাংলাদেশের কারখানা আইন – ১৯৬৫

বাংলাদেশের কারখানা আইনের সারাংশ নিুে দেওয়া হলো ঃ –
১। এই আইন শুধুমাত্র সেই সকল কারখানার জন্য প্রযোজ্য হবে, যেখানে ১০ বা তারও অধিক কর্মী নিয়োগ প্রাপ্ত আছে।
২। উৎপাদন প্রত্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট দক্ষ, অদক্ষ, কারিগরিক, অথবা করণিক কাজে লিপ্ত সকলেই কর্মী হিসাবে আখ্যায়িত করা হবে।
৩। জনবলের আভিধানিক বিষয় হলোঃ- বয়স্ক, কিশোর ও শিশু।
ক) বয়স্ক ব্যক্তি ঃ যার বয়স ১৮ বা তারও বেশি।
খ) কিশোর ঃ যার বয়স ১৪ থেকে ১৮ বছর।
গ) শিশু ঃ যার বয়স ১৪ বছরের নিচে।
৪। মজুরীর সংঙ্গা মজুরী আইন ১৯৩৬ – এ আছে। যেমনঃ স্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীর মজুরী সর্বসাকুল্যে নুন্যতম ৯৩০.০০ টাকা।
৫। সাপ্তাহিক ছুটি ঃ সপ্তাহে ১ (এক ) দিন।
৬। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কাজ হলে অন্য একদিন অতিরিক্ত ছুটি দিতে হবে।
৭। একজন বয়স্ক কর্মী দিনে ৬ ঘন্টার বেশী কাজ করতে বাধ্য নহে যদি না ১ ঘন্টা বিরতি দেয়া হয় অথবা ৫ ঘন্টার বেশী কাজ করতে বাধ্য নহে যদি না অর্ধ ঘন্টা বিরতি দেয়া হয়ে থাকে।
৮। ক) সাপ্তাহি কাজের সময়-
ক্স দিনে ৯ ঘন্টা ( ১ ঘন্টা বিরতি সহ )
ক্স সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টা ।
খ) সপ্তাহে অধিককাল ( ওভার টাইম সহ ) সর্বোচচ ৬০ ঘন্টা। তবে বছরে গড়ে ৫৬ ঘন্টার বেশী নয়।
৯। অধিক কাল ওভার টাইম ) কাজ করলে দ্বিগুন হারে মজুরী দিতে হবে।
১০। সনাক্ত করার জন্য প্রতিটি কর্মীর আলাদা আলাদা আইডি কার্ড থাকতে হবে।
১১। মজুরী সহ বাৎসরিক ছুটিঃ-
ক্স প্রতি ২২ কার্য দিবসে ১ দিন।
ক্স একত্রিকরণ (বয়স্ক শ্রমিক) সর্বোচচ ২০ দিন।
১৪। নৈমিত্তিক ছুটিঃ মজুরীসহ ১০ দিন এবং এই ছুটি পরবর্তী বছরে যোগ হবে না।
১৫। অসুস্থতা ছুটিঃ ১৪ দিন (অর্ধবেতনে) এবং এই ছুটি পরবতী বছরে যোগ হবে না।
১৬। উৎসব / ট্রাডিশনাল ছুটিঃ মজুরীসহ কমপক্ষে ১০ দিন (সরকারী সাধারণ ছুটি) এবং এই ছুটি পরবর্তী বছরে যোগ হবে না। পর্ব উপলক্ষে যে কোন
অবকাশের দিন হলে শ্রমিককে কাজ করানো যেতে পারে। কিন্তু এর বিনিময়ে ৫১ ধারা অনুসারে ক্ষতিপুরণমুলক ২ দিনের পূর্ণ বেতন এবং একটি বিকল্প
ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
১৭। গর্ভকালীন ছুটি ঃ পুর্ণ মজুরী সহ শিশু জন্মের পূর্বে ৬ সপ্তাহ এবং শিশু জন্মের পরে ৬ সপ্তাহ মোট ১২ সপ্তাহ ছুটি প্রদান করা হবে। এই ছুটি কেবল মাত্র
তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে যারা কমপক্ষে ৯ মাস যাবৎ কর্মরত আছে।
১৮। কর্মীদের স্বাস্থ্য, পরিচছন্নতা, নিরাপত্ত্বা ও কল্যানের বিষয়ে কারখানা আইনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের বিধান আছে।

শ্রম আইনের আলোকে আমাদের কারখানা নীতিমালা :

অ-পক্ষপাতিত্বমূলক বা বৈষম্যহীনতা নীতি

সকল মানুষ ও পারিপার্শ্বিকতার প্রতি সমান সম্মান প্রদর্শনে বিশ্বাসী। দৈনন্দিন কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে  কোন প্রকার পক্ষপাতিত্ব না করে শ্রদ্ধার সাথে নিুোক্ত নীতি অনুকরণ করে এবং এ ব্যাপারে সকলের সহযোগীতা কামনা করে।

১। কর্মসংস্থান, বেতন, সুযোগ-সুবিধা, অগ্রিম প্রদান, কর্মচ্যুতি অথবা অবসর গ্রহণের সিন্ধান্ত সম্পুর্ণভাবে প্রতিটি কর্মীর নিজস্ব শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাদারী যোগ্যতা ও কর্মক্ষেত্রের কর্ম দক্ষতার উপর নির্ভরশীল। এ ক্ষেত্রে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ, বৈবাহিক বা গর্ভাবস্থা অথবা রাজনৈতিক মতাদর্শ বা বয়সের কারণে ভেদাভেদ সৃষ্টি করা হয় না।
২। স্থায়ী আইন সর্বদা মেনে চলা হয় এবং স্থানীয় আইনের প্রতি সর্বদা সম্মান প্রদর্শন করা হয়।
৩। উর্দ্ধতন ব্যবস্থাপক কোম্পানীর সকল নীতি প্রয়োগে সজাগ দৃষ্টি রাখেন যাতে করে কারো প্রতি কোন প্রকার পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হয় না।
৪। কর্মীদের ন্যায়সংগত সুযোগ-সুবিধা এবং কর্ম-সন্তষ্টি নিয়ে ব্যবস্থাপকের সাথে আলোচনার জন্য কোম্পানীতে গঠিত “শ্রমিক ফোরাম ও কমপ্লায়েন্স বিভাগ” অন্যতম মাধ্যম হিসাবে কাজ করে থাকে।
৫। কর্মীদের জানার এবং পরিস্কার ধারণা থাকার জন্য কোম্পানীর সকল নীতি বোর্ডে প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। এছাড়াও নতুন কর্মীদের পরিচিতি মূলক প্রশিক্ষন এবং নিদিষ্ট সময় অন্তর অন্তর সকল কর্মীদের ধারাবাহিক প্রশিক্ষণে নীতি সমুহ আলোচনার ব্যবস্থা আছে।
৬।কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য প্রার্থীকে কাজের নাথে সম্পর্কহীন কোন ব্যক্তিগত বা আইন বহির্ভূত প্রশ্ন করা হয় না।
৭। কর্মক্ষেত্রে নতুন কোন সুযোগ সৃষ্টি হলে প্রথমে পৃরাতন কর্মীদেরকে জানানো হয় এবং তাদেরকে প্রতিযোগিতা করার জন্য সম্পুর্ন সুযোগ দেওয়া হয়।
৮। চাকুরী প্রার্থীবদের দরখাস্তসমুহ পর্যালোচনার মাধ্যমে অ-পক্ষপাতিত্বমূলক নীতির সামঞ্জস্যতা মূল্যায়ন করা হয়।
৯। বিশেষ ধরণের কাজে, বিশেষত যারা শারিরীকভাবে দূর্বল, নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয় চাহিদার দিকে নজর দেওয়া হয়।


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply