রিক্স ম্যানেজমেন্ট

রিক্স ম্যানেজমেন্ট Risk Management এর বিস্তারিত বর্ণনা, উদ্ধারকারী দলের দয়িত্ব ও কর্তব্য

রিক্স ম্যানেজমেন্ট

ভূমিকা ঃ

অটো কম্পোজিট লিঃ এর কর্তৃপক্ষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে নিরাপদ কর্মক্ষেত্র একটি মূখ্য বিষয়, যা রক্ষা করার জন্য কর্তৃপক্ষ অঙ্গীকারবদ্ধ। এ লক্ষ্যে অটো কম্পোজিট লিঃ এর কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য, নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রনয়ণ,  কমিটি গঠন সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন যা কারখানার অভ্যন্তরীন কর্ম পরিবেশ ও কারখানার অভ্যন্তরে কর্মরত সকলের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও মালমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

উদ্দেশ্য ঃ

শিল্প কারখানার কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের জরংশ রয়েছে। আর এই সকল জরংশ সমূহ পর্যালোচনা করে যাতে কর্মক্ষেত্রে একটি নিরাপদ ও সুন্দর স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করাই এই নীতির প্রধান ও একমাত্র উদ্দেশ্য। এই উদ্দেশ্যকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য অটো কম্পোজিট লিঃ নিুোক্ত পদক্ষেপ সমূহ গ্রহন করেছে ঃ

রিক্স ম্যানেজমেন্ট এর পদক্ষেপ সমূহ ঃ

• প্রতিটি শ্রমিক/ কর্মচারী/কর্মকর্তা নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একজন হেলথ ও সেফটি অফিসার নিয়োগ প্রদান।
• জরংশ অংংবংংসবহঃ করার জন্য প্রতি বিভাগ এর সমন্বয়ে একটি কার্যকরী কমিটি গঠন।
• কমিটির সদস্যগণ দ্বারা কারখানার সকল স্থান সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ জরংশ চিহ্নিত করন।
• চিহ্নিত জরংশ সমূহ কমিটিতে আলোচনা / পর্যালোচনা করে তার প্রতিকার এর ব্যবস্থা করন এবং প্রতিকার বাস্তবায়িত হয়েছে কিনা তা আবার সরেজমিনে দেখে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন পেশ করন।
• প্রতি মাসে এই জরংশ কমিটির সাধারণ সভা আহ্বান হয়।

মাসিক সভা ঃ

কমিটি প্রতি মাসে কমিটি প্রধানের নেতৃত্বে একবার তাদের একটি সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভার যে সকল চিহ্নিতকরণ করা হয়েছে তার উপর বিশদ আলোচনা করবে। ঐ সভা থেকেই তার প্রতিকারের ব্যবস্থা সমূহ সুপারিশ করা হবে। সুপারিশ সমূহ বাস্তবায়ন করার জন্য নিদিষ্ট সময়সীমার নির্ধারন করা হবে। এ ক্ষেত্রে এই সময়সীমা নির্ভর করে জরংশ এর প্রকারভেদে। কোন কোন প্রতিকার তাৎক্ষনিক হতে পারে, কোন কোন প্রতিকার স্বল্প মেয়াদী হতে পারে, কোন কোন প্রতিকার দীর্ঘ মেয়াদী হতে পারে।
প্রকারভেদে প্রয়োজনে এই কমিটি কোম্পানীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথেও যোগাযোগ করতে পারে। এই কমিটি তাদের মাসিক প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন এর নিকট পেশ করে।
অতঃপর কর্তৃপক্ষ প্রতিকার সমূহ বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করে।
এখানে উল্লেখ্য যে, বিশেষ কোন প্রয়োজনে এই কমিটি তাৎক্ষনিক নোটিশের মাধ্যমে জরুরী সভা করতে পারে।
নিুে বিভিন্ন ধরনের জরংশ সম্পর্কে আলোচনা ও কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করা উচিৎ তা বর্ণনা করা হলো ঃ

আত্মরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি (পি পি ই) সরবরাহ ও ব্যবস্থাপনা ঃ

কারখানায় কর্মরত সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত কল্পে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনানুসারে আত্মরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি (আই গার্ড, পুলী গার্ড, নিডেল গার্ড, মেটাল হ্যান্ড গ্লোবস, রাবার হ্যান্ড গ্লাবস্, মাক্স, ক্যাপ, হেলমেট, গ্যাস মাক্স, রেসপাইওরেটরী মাক্স, আয়রন সু, এয়ার প্লাগ, রাবার ম্যাট, গগলস, গাম বুট, প্রোন ) সরবরাহ করেছেন।

নতুন সংযোজন কিংবা পরিবর্তনের জন্য কারখানয় নিযুক্ত ওয়েলফেয়ার অফিসার প্রতি মাসে একবার প্রতি সেকশনে গিয়ে আতœরক্ষাকারী সরঞ্জামাদি (পিপিই)সমূহ এ্যাসেসম্যান্ট ও ইনভেনটরী করে থাকেন।

আত্মরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি ব্যবহার সম্পর্কিত উপর প্রতি মাসে একবার আলোচনা সভা প্রশিক্ষন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত যা কমপ্লায়েন্স বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত।

রাত্রিকালীন কোন দূর্ঘটনা ঃ

• রাত্রীকালীন কোন দূর্ঘটনা ঘটলে যাতে সহজেই প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারে সেজন্য একজন দায়িত্ববান ব্যক্তিকে নিশ্চিত করা।
• প্রয়োজনে উধর্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে সাথে সংবাদ দেয়া।
• প্রয়োজনীয় জরুরী টেলিফোন নাম্বার সমূহ সুবিধাজনক কোন স্থানে লাগিয়ে রাখা।
• দূর্ঘটনায় আহত কাউকে দ্রুত সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য রাত্রিকালে কোম্পানীর একটি গাড়ী কারখানার অভ্যন্তরে রেখে দেওয়া।

বিশুদ্ধ খাবার পানি ঃ

পানির অপর নাম জীবন। এই পানি যদি বিশুদ্ধ না হয় তবে পানি বাহিত রোগে শ্রমিকগণ আক্রান্ত হতে পারে। আর এই চিন্তা মাথায় রেখে অটো কম্পোজিট লিঃ শ্রমিকদের বিশুদ্ধ সুপেয় খাবার পানির ব্যবস্থা করেছে যা থেকে  পরিক্ষিত। প্রতিটি সেকশনে শ্রমিক সংখ্যার সাথে সামাঞ্জস্য রেখে বিশুদ্ধ খাবারের পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর এটা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতি ফ্লোরে নির্ধারিত সংখ্যক ডধঃবৎ ঋরষঃবৎ এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
টয়লেট ঃ
প্রতিটি ফ্লোরে আইনের বিধান মোতাবেক প্রয়োজনীয় সংখ্যক টয়লেটের ব্যবস্থা আছে। টয়লেট থেকে জীবানু যাতে বাহিরে বের হয়ে আসতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা আছে। প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় নির্ধারিত লোক টয়লেট পরিষ্কার করে থাকে। টয়লেটের বর্জ্য এখানে সেখানে না ফেলে একটি নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে ফেলা হয়। যাহাতে ঐসব বর্জ্য থেকে কোন ক্ষতিকর কিছু না হয়।

মেডিক্যাল সার্ভিস ঃ

প্রতিটি শ্রমিকের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই কারখানা চলাকালীণ সময়ে অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা ঘন্টা চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। যে কোন ধরনের দূর্ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে আমাদের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হয় এবং প্রয়োজনে নিকস্থ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

সচরাচর ঘটে যাওয়া সাধারণ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য অভিজ্ঞ প্রাথমিক চিকিৎসক রয়েছেন যাদের কে নিকস্থ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার উপর টেনিং করানো হয়েছে। এই অভিজ্ঞ ডাক্তারগণ  অরফ বক্স্রের দায়িত্বে আছেন।

শুধু তাই নয় এই প্রতিষ্ঠানের চীফ মেডিক্যাল অফিসার এইডস্, হেপাটাইটিস ডি ও অন্যান্য সংক্রমন ব্যধির উপর কর্মশালার আয়োজন করে থাকেন যাতে উচ্চ শিক্ষা বঞ্চিত, এই সকল সাধারন শ্রমিকগণ তাদের ব্যক্তি জীবনে সাবধানতাা অবলম্বন করতে পারেন। তাদের সন্তানদের বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে পারেন।

এছাড়াও ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনা ও পরিলক্ষিত রোগব্যাধি পর্যালোচনা পূর্বক সচেতনতা ও প্রশিক্ষমূলক কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়।

 রিক্স ম্যানেজমেন্ট এর ইলেকট্রিক্যাল বৈদ্যুতিক/ ইলেকট্রিক তার ব্যবহার

প্রতিটি শ্রমিক যেখানে কাজ করে সেখানে বিদ্যুতের যথেষ্ট ব্যবহার হয়। অনেক সময় দেখা যায় যে, বিদ্যুতের তার অনেক সময় মেশিনের সাথে ফ্লোরে পরে থাকে এর ফলে যদি কখনও সে তার ছিড়ে যায় এবং কোন শ্রমিক অসাবধনতাবশত ঃ পা/হাত দেয় তাহলে বিদ্যুতাড়িত হয়ে সে শ্রমিক মারাত্মক দূর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারে এমনকি তার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই কোথাও যাতে কোন ধরনের খোলা বিদ্যুতের তার না থাকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় যে, হোল্ডারে সরাসরি তার ঢুকিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে কাজ করে যা মারাত্মক ঝুঁকি পূর্ণ। তাই কোন অবস্থাতেই এই ধরনের কাজ করতে দেখা যাবে না।

এছাড়া অনেক সময় নির্ধারিত লোডের অতিরিক্ত লোড ব্যবহার করা হয় যার ফলে অনেক সময় মারাত্মক অগ্নি দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

কার্টুন ঃ অনেক সময় দেখা যায় যে, ঊসঃু কার্টুন / ভর্তি গুলো কার্টুন অতিরিক্ত উচ্চতায় রাখা হয়। এর ফলে যেকোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই কার্টুন সব সময় একটি স্বাভাবিক উচ্চতায় রাখা বাঞ্চনীয়।

কেমিক্যাল ঃ সব ধরনের কেমিক্যালই দাহ্য বস্তু এবং ক্ষতিকারক। তাই কেমিক্যাল ব্যবহার করার সময় সাবধানতার সাথে ব্যবহার করতে হবে। প্রতিটি কেমিক্যাল এর গঝউঝ থাকতে হবে। “ক্ষতিকারক” ও “অক্ষতিকারক” এই দুইভাগে কেমিক্যাল ভাগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

নিডিল গার্ড, পুলি কভার, আই গার্ড ঃ নিডিল গার্ড, পুলি গার্ড, আই গার্ড যে মেশিনে যে ধরনের সেফটি গার্ড থাকা দরকার যা থাকতে হবে নতুবা যেকোন সময় যেকোন ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

অতিরিক্ত ওজন / ভার উত্তোলন ঃ অতিরিক্ত ভার উত্তোলনের যেকোন সময় যেকোন ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অতিরিক্ত ভার উক্তোলন না করে বিকল্প পন্থায় ভার উত্তোলন করাই শ্রেয়।

শব্দ দূষন ঃ জেনারেটর , সার্কুলার নিটিং ও এমব্রয়ডারী ইত্যাদি মেশিন অধিক শব্দ তৈরী করে যা কর্ম পরিবেশকে শব্দ দূষন করে। উক্ত মেশিনের কাছাকাছি কর্মরত সকলকে ইয়ারপ্লাগ ব্যবহার করা নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক।

পানি দূষন ঃ ওয়াশিং ও ডাইং মেশিন ব্যবহারের ফলে দূষিত পানি নির্গত হয় যা পরিবেশ দূষন করে। এটা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যেন দূষিত পানি দ্বারা পরিশোধিত যেন দূষিত না হয় এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র সংগ্রহ করা হয়।

বায়ূ দূষন ঃ জেনারেটর, বয়লার, এসি, হইতে নির্গত ধোয়াঁ, ওয়াশিং ও ডাইং মেশিন ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট বর্জ পরিবেশ দূষন করে। বায়ু দূষন যাতে না হয় তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন ও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র সংগ্রহ করা হয়।

অগ্নি দুর্ঘটনা ঃ কারখানার অগ্নি দুর্ঘটনা কোন ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা নহে। কাজেই কারখানার অগ্নি দুর্ঘটনা রোদকল্পে বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। এই গুলি রক্ষনাবেক্ষনের জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। অগ্নি দূর্ঘটনা রোধে নিম্ন লিখিত বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে। যথা ঃ

• যে সকল কারনে সাধারনত অগ্নিকান্ড ঘটে থাকে সে সকল বিষয়ে আগে থেকেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
• পর্যাপ্ত পরিমান সচল অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র, হোস পাইপ, লক কাটার, মাস্ক, ট্রেজার, রিজার্ভ পানির ট্যাংক, প্রশিক্ষিত অগ্নি নির্বাপন কর্মীর ব্যবস্থা করা।
• দিয়াশলাই / লাইটার নিয়ে কারখানায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা।
• ধুমপান সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা।
• বহিঃ নির্গমনীয় পথ সমূহ সব সময় পরিষ্কার রাখা।

ইহা ছাড়া আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে সকলে যাতে নিরাপদে বের হতে পারে, সেই জন্য প্রতিষ্ঠানটির বর্হিগমন পথে জরুরী বর্হিগমন নির্দেশনা ও জরুরী বহিগর্মন প্লান  স্থাপন করা আছে। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসে নিম্নোক্ত নম্বরে জরুরী ভাবে যোগাযোগ করতে হবে কে কোন পথে বাহির হইবে সেই জন্য সকলকে প্রশিক্ষন দেওয়া হয়। কাজেই, অগ্নি সংকেতের সাইরেন বাজার সঙ্গে সঙ্গে জরুরী বর্হিগমন প্লান অনুসারে যাতে সকলে নিরাপদে স্বল্প সময়ের মধ্যে বের হতে পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। এ ছাড়া ফ্যাক্টরীতে ফায়ার ফাইটিং এর জন্য কমিটি / দল গঠন করা হয়েছে যার বর্ননা নিম্নে প্রদত্ত হল ঃ

• ফায়ার ফাইটিং দল
• উদ্ধারকারী দল / কর্ডন পার্টি
• ফাষ্ট এইড টিম
• ফায়ার ফাইটিং দলের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ

1. আগুন লাগার সাইরেন শোনার সঙ্গে সঙ্গে ইলেকট্রিশিয়ান/অগ্নি নির্বাপক দলের দলনেতা/ফ্লেরে উপস্থিত নিকটতম ফায়ার ফাইটার অথবা সর্ব নিকটতম ব্যক্তি বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করবে।
2. আগুন লাগার সাইরেন শোনার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার ফাইটিং পার্টির প্রত্যেকে দ্রুত তাদের জন্য নির্দিষ্ট অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের কাছে চলে যাবে ও যন্ত্র নামিয়ে নেবে এবং একত্রিত হয়ে আগুন কোথায় লেগেছে তা জানার চেষ্টা বা পরবর্তী নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করবে। তবে যদি নিজ ফ্লোরে আগুন লাগে তাহলে দ্রুত আগুনের কাছে যাবে এবং আগুনের দিকে তাক করে বাতাসের প্রতিকুলে অবস্থান গ্রহন করে নিরাপদ দূরত্বে দাড়িয়ে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করবে।
3. ফায়ার ফাইটাররা কে কোনটি অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করবে তা পূর্বেই নির্ধারিত থাকবে।
4. ফায়ার ফাইটাররা কারখানার হোস পাইপের সাহায্যে, প্রয়োজনে খাওয়ার পানির ড্রামের, বাথরুমে রক্ষিত ড্রামের, যদি বয়লার থাকে তবে সেখানে রক্ষিত ড্রামের পানি দ্বারা আগুন নিভানোর চেষ্টা করবে।
5. বৈদ্যুতিক আগুন নিভাতে শুধুমাত্র কার্বন ডাই অক্সাইড অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করবে।
6. ফায়ার ব্রিগেড দল আসলে তদেরকে সর্বোতভাবে সাহায্য সহযোগীতা করবে।
7. দলের সবাই দলনেতার নেতৃত্বে কাজ করবে।
8. কর্তৃপক্ষের পরবর্তী নির্দেশের জন্য প্রস্তুত থাকবে। বিশেষ জরুরী অবস্থা ছাড়া ফ্লোর ত্যগ করবে না।

উদ্ধারকারী দলের দয়িত্ব ও কর্তব্য ঃ

• ইভাকুয়েশন প্লান অনুযায়ী ১ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে দ্রুততার সাথে সবাইকে নিরাপদে বাহিরে যেতে সহযোগিতা করবে। পূর্ব থেকে কে কোথায় দাড়িয়ে লোকজন নামাতে সহযোগিতা করবে তা নির্ধারিত থাকবে।
• বাথরুমে বা অন্য কোথাও কেহ আটকা পড়ল কিনা তা মহিলা বাথরুমে মহিলা এবং পুরুষ বাথরুমে পুরুষ কর্মীগণ খোঁজ করবে।
• কেহ আহত বা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বা তাদেরকে দ্রুত ফাষ্ট এইড টিম এর কাছে নিবে এবং কাউকে এম আই রুমে নেওয়ার প্রয়োজন হলে কাঁেধ করে অথবা প্রয়োজনে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাবে।
• আগুন যেখানে লেগেছে তার চারপাশ থেকে মালপত্র বা মেশিনপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেবে।

ফার্ষ্ট এইড টিম এর দায়িত্ব ও কর্তব্য ঃ

• আগুন লাগার সাইরেন শোনামাত্র দ্রুত ফার্ষ্ট এইড বক্সের কাছে গিয়ে নিরাপদ অবস্থান নিবে।
• আহত বা অসুস্থ রোগীকে দ্রুততার সাথে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করবে।
• প্রাথমিক চিকিৎসায় সুস্থ না হওয়ার মত অবস্থা হলে উদ্ধারকারী দলের সদস্যদেরকে দিয়ে দ্রুত এম আই রুমে প্রেরণ করবে।
• কেবল মাত্র জরুরী অবস্থা ছাড়া, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ব্যতিরেকে স্থান ত্যাগ করবেনা।

কর্ডন পার্টির দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ

• আগুন লাগার সাইরেন বাজার সঙ্গে সঙ্গে নিকটতম ফায়ার অফিস, শাখা অফিস, প্রধান অফিসকে অবহিত করতে থাকবে।
• অগ্নি দুর্ঘটনা বা আপদকালীন সময় ইউনিট/সেকশনের প্রধান প্রবেশ পথ সমুহকে বেষ্টনী করে রাখতে হবে যাতে ফ্যাক্টরীর বাহিরের কোন অপরিচিত কোন ব্যক্তিবর্গ ইউনিট/সেকশনে প্রবেশ করতে না পারে।
• অগ্নিনির্বাপনের জন্য ফায়ার সার্ভিস টীম যাতে ইউনিট/সেকশনে সহজে প্রবেশ করতে পারে এবং অগ্নি নির্বাপনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনায় কোন প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
• নিকটতম পানির উৎস কোথায় তা ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের অবহিত করবে এবং যাবতীয় সাহায্য সহযোগীতা করবে।

ভুমিকম্প ঃ

অনুভূত হইলে হইলে সাথে সাথে সাইরেন বাজাতে হবে এবং অনুসারে কারখানার সকল লোক স্বল্পতম সময়ে বাহিরে নিরাপদ স্থানে চলে আসবে। এছাড়া প্রত্যেক ইউনিটের জন্য উদ্ধারকারী দল কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে কাজ করবে। যদি ভূ-কম্পের মাত্রা বেশী থাকে এবং এর ফলে দালান কোটা ভেঙ্গে ভিতরে লোকজন আটকা পড়ে সেই ক্ষেত্রে ফায়ার ব্রিগেড ও বাহিরের অন্যান্য উদ্ধারকারী দলকে সাহায্য সহযোগিতা করবে।

বন্যা ঃ

বাংলাদেশের একটি নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। কখন কোথায় কোন এলাকা বন্যা কবলিত হবে তা বলা মুশকিল। তাই বন্যা কবলিত অথবা বন্যাত্তোর পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যেগ গ্রহন করা প্রয়োজন। বিশেষ করে কারখানা ও কারখানার শ্রমিকদের জানমাল ও সম্পদ রক্ষার জন্য ফ্যাক্টরীর নির্বার্হী কর্মকর্তার নেতৃত্বে তিনটি কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটি কারখানার সমুদয় সম্পদ ও বন্যা কবলিত শ্রমিকদেরকে নিম্নোক্ত উপায়ে সাহায্য সহযোগিতা করবে।

• কারখানার সকল সম্পদ নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা।
• ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকদের অস্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করা।
• যথাসম্ভব আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা করা।
• রোগব্যধি মহামারি আকারে বিস্তার রোধ কল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা।

শ্রমিক অসন্তোষ ঃ

শ্রমিক অসন্তোাষ অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিক আন্দোলনে রুপ নেয় যদি উহা সমাধানে যথা সময়ে সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়া হয়। কাজেই অত্র কারখানা খুব গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি অনুধাবন করে। প্রথমে শ্রমিকদের মধ্যে যাতে কোন প্রকার আন্দোলন দানা বাধঁতে না পারে সে জন্য শুরুতেই শ্রমিকদের সমস্যা গুলো অনুধাবন করে এগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। শ্রমিকদের অসন্তোষ দানা বেধেঁ ওঠার আগে উহা মিটানোর কল্পে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ এর ওয়েল ফেয়ার কমিটি নিয়মিত শ্রমিকদের অসুবিধাগুলো পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবে। এছাড়া ভিতরের অথবা বাহিরের কোন আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য নিবার্হী কর্মকর্তার নেতৃত্বে নিম্নোক্ত পদক্ষেপ সমুহ গ্রহন করতে হবে।

• ভিতরের বা বাহিরের আন্দোলনকে স্থিমিত করার জন্য নিয়োজিত সিকিউরিটি সহ স্থানীয় পুলিশ র‌্যারে সহায়তা নেওয়া।
• পরবর্তীতে সমস্যাগুলো অনুধাবন করে উহার সমাধানের জন্য চেষ্টা করা।
• যদি তাৎক্ষনিকভাবে সমাধান করা সম্ভব না হয় তবে তদন্ত পরিষদের মাধ্যমে সমাধান করা এবং ভবিষ্যতে যাতে এরুপ সমস্যার সন্মুখিন হতে না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশ মালা পেশ করা।
• বাহিরের শ্রমিক অসন্তোষ যাতে আভ্যন্তরীন শ্রমিক অসন্তোষে পরিনত না হয় বা বাহিরের শ্রমিক অসন্তোষ বা আন্দোলন ফ্যক্টরীর কোন ক্ষতি করতে না পারে সে লক্ষ্যে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সহিত সুসম্পর্ক বজায় রেখে সার্বক্ষনিক ভাবে যোগাযেগ রক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

রিক্স ম্যানেজমেন্টে বর্জ বা আবর্জনা ব্যবস্থাপনা

উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট সকল সেকশনে কাপড়ের বর্জ, সুতার বর্জ, মেশিনের বর্জ, ক্যামিকেল বর্জ, ব্যবহৃত নিডল এর বর্জ, নতুন প্যাকেটের এর বর্জ, প্লাষ্টিক/পলিথিন এর বর্জ ইত্যাদি এই নীতিমালার অর্ন্তভূক্ত।

কম্পোজিট লিঃ এর কর্তৃপক্ষ উৎপাদন প্রক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট বর্জ ও অব্যবহৃত দ্রব্যাদী শ্রেণী বিন্যাশের মাধ্যমে পৃথক করে নিষ্কাশনের ব্যবস্থাপনা কার্যকর করেছেন। কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য ও পরিবেশ নিরাপত্তা নিশ্চিত কল্পে একটি কমিটি গঠন করেছেন। উক্ত কমিটির সদস্যগন স্বাস্থ্য ও পরিবেশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট দায়বদ্ধ।
উপসংহার ঃ
যেহেতু এই শিল্প প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে একমাত্র বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসাবে ইতিমধ্যে স্বীকৃতি পেয়েছে সেহেতু এই শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিয়ত উন্নতি সাধন করাই আমাদের প্রধান কর্তব্য। একটি সুন্দর, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করতে আমরা বদ্ধ পরিকর।

Comments

5 responses to “রিক্স ম্যানেজমেন্ট Risk Management এর বিস্তারিত বর্ণনা, উদ্ধারকারী দলের দয়িত্ব ও কর্তব্য”

  1. ইঞ্জিঃ মুহাম্মদ জমির আলী Avatar
    ইঞ্জিঃ মুহাম্মদ জমির আলী

    লেখা গুলো অতি মুল্যবান।
    সকলকে অনুসরন করার অনুরোধ রইল ।

Leave a Reply