শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিল নীতি

শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিল নীতি সাধারণত কেমন হওয়া উচিত ?

কল্যাণ তহবিল নীতি

শ্রমিক কল্যান কমিটি – শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে, শ্রমিকদের সমস্যার উৎসমূলেই  সমাধানের লক্ষ্যে এবং শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিল সম্পর্কিত বিষয়াদীর সঠিক মূল্যায়নের লক্ষ্যে ফোর উইংস লি: এর শ্রমিক এবং কর্তৃপক্ষের সদস্য সমন্বয়ে একটি শ্রমিক কল্যান তহবিল  কমিটি গঠন করার নীতিমালা প্রনয়ন করা হলো। যে সমস্ত ক্ষেত্রে কল্যাণ তহবিল হতে সাহায্যের জন্য আবেদন করা যাবে তা নিন্মরুপ ঃ

  • কর্মকালীন অবস্থায় কেহ কোন প্রকার দূর্ঘটনার স্বীকার হলে।
  • শারিরীকভাবে গুরুতর অসুস্থ্য হলে চিকিৎসা খরচ বাবদ। (কোম্পানী ডাক্তারের সুপারিশক্রমে)
  • দূর্ঘটনার ফলে কোন অঙ্গহানী হলে।
  • আগুনে পুড়ে বাসস্থানের ক্ষতিসাধিত হলে।
  • প্রসবকালীন জটিলতায় প্রসুতির মৃত্যূ হলে।
  • কণ্যাদায়গ্রস্থতার ক্ষেত্রে কল্যাণ তহবিল হতে সহায়তা দান।
  • বিবিধ

আবেদন পদ্ধতি ঃ

এইচ আর এন্ড কমপ্লাইন্স বিভাগ হতে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে। আবেদন পত্রে শ্রমিক অংশগ্রহনকারী কমিটির অন্তঃত ২ (দুই জন) সুপারিশ ও স্বাক্ষর নিশ্চিত করতে হবে। অতঃপর সংশ্লিষ্ঠ সেকশনের স্বাক্ষর নিশ্চিত করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে সাহায্যপ্রাপ্তি সম্পন্ন হবে।

নীতিমালা সম্পর্কে অবহিত করন/ যোগাযোগ ঃ

এই পলিসি যাতে কারখানার সব জায়গায় ও সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীকে কারখানার সাউন্ড সিস্টেম, শ্রমিক প্রতিনিধি, নোটিশ বোর্ড, মিটিং, ট্রেনিং এর মাধ্যমে অবহিত করা হয়। এছাড়াও দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ও ওয়েলফেয়ার অফিসার ও এইচ আর এন্ড কমপ্লাইন্স অফিসারগরেন মাধ্যমে অবহিত করা হয় এবং এই নীতিমালার যাবতীয় কার্যক্রম নথিভূক্ত করা হয়।

শ্রমিক কল্যান – উদ্দেশ্য :

  • শ্রমিক ও মালিক উভয়পক্ষের অধিকার স্বার্থ রক্ষা করা।
  • একটি হৃদ্যতাপূর্ন শ্রমিক মালিক সম্পকের্র সৃষ্টি করা ।
  • কাজের শর্তাদী ও পরিবেশ সমুন্নত রাখা ।
  • দক্ষতা বৃদ্ধি ও উৎপাদনশীলতায় আন্তরিকতা সৃষ্টি করা।

শ্রমিক কল্যান – মূল নীতি :

  • কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা ।
  • রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পর্ক না রাখা।
  • স্থানীয় জনগন কিংবা বহিরাগত কারো সাথে সম্পর্ক রাখবেনা।
  • ফ্যাক্টরীর কল্যান কমিটির কোন সদস্য অন্য কোন কমিটির সদস্য না হওয়া।

শ্রমিক কল্যান -কমিটির কাজ :

  • শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস, সমযোতা এবং সহযোগীতা বৃদ্ধিও লক্ষ্যে কাজ করা।
  • শৃংখলা বোধে উৎসাহিত করা ,নিরাপত্তা , পেশাগত স্বাস্থ্য রক্ষা ও সংরক্ষনের ব্যবস্থা শ্রমিক এবং তাদের পরিবার বর্গের প্রয়োজনীয় কল্যানমূলক ব্যবস্থা সমূহের উন্নয়নের লক্ষে আদেশ ,উপদেশ ,শিক্ষার মাধ্যমে উৎসাহিত করা ।
  • উৎপাদন লক্ষমাএা অর্জন ,উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি,উৎপাদন হ্রাস ও অপচয় রোধ করা এবং আন্তরিক হওয়া এবং আন্তরিকতা সৃষ্টি করা।

কল্যান কমিটির সদস্যদের নিয়োগ ও স্থায়িত্ব :

  • শ্রমিকগনের প্রতিনিধির সংখ্যা মালিকের প্রতিনিধির সংখ্যা অপেক্ষা কম হবেনা।
  • কোন শ্রমিক, যে অন্তত দুই বৎসর সন্তোষজনকভাবে চাকুরীতে বহাল রয়েছে সে উক্ত কমিটির সদস্য হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে ,যদি না সে ফৌজদারী মোকাদ্দমায় আসামী হয়ে থাকে । তার নামে থানায় বা কোর্টে ডাইরী বা মামলা থাকলেও সদস্য হওয়ার অযোগ্য হবে ।মানসিক ভারসাম্যহীন,প্রতিবন্দী, দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থ কর্মীও অযোগ্য বলে গন্য হবে।
  • কমিটির স্থায়িত্বকাল /মেয়াদকাল- ১বৎসর।
  • মহিলা / নারী শ্রমিকের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।

শ্রমিক কল্যান কমিটির দায়িত্ব ও কর্তব্য:

  • শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষের অধিকার ও স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করা ও রক্ষা করা।
  • শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষের মধ্যে পারষ্পরিক বিশ্বাস, সহযোগিতা ও সমঝোতা সৃষ্টি করা।
  • ফ্যাক্টরীর উন্নয়ন কর্মকান্ডে শ্রমিকদের সম্পৃক্ত করা।
  • কারখানার উন্নয়নের সাথে সম্পর্কীত নিয়মনীতি বিষয়ে শ্রমিক ও মালিকদের অবহিত করা।
  • স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টি সহ শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ এবং জীবন ব্যবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা পালন করা।
  • পন্যের মান ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখা।
  • সকল প্রয়োজনীয় তথ্য শ্রমিকদের অবহিত করা।
  • জাতীয় শ্রম আইনের সুবিধাদি যাতে শ্রমিকরা গ্রহন করতে পারে সে বিষয়ে কাজ করা।

শ্রমিক কল্যান কমিটির কর্মপন্থা:

  • প্রতি দুই মাসে অন্তত একবার কমিটির মিটিং করা (বিশেষ প্রয়োজনে জরুরী মিটিং করা যেতে পারে)
  • ২/৩ সদস্য ছাড়া কোরাম পূর্ণ হবে না এবং মিটিং বাতিল হবে।
  • কাজ চলাকালে (বিশেষ জরুরী প্রয়োজনে ) অথবা কাজের পরে মিটিং করা যাবে

ফিডব্যাক ও কন্ট্রোল ঃ

কারখানায় কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীর আকস্মিক কোন দূর্ঘটনা, অঙ্গহানী, গুরুতর অসুস্থ্যতা, কণ্যাদায়গ্রস্থতা, প্রসবকালীণ জটিলতা প্রভৃতি ক্ষেত্রে শ্রমিক কল্যাণ তহবিল হতে অর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। এই পলিসি কারখানায় বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ সর্বদা  সচেতন এবং সার্বিক ব্যাবস্থা গ্রহন করে। এর পরও যদি পলিসি বাস্তবায়ন না হয় বা বাস্তবায়নের পথে কোন বাধাঁর সস্মুখীন হয় , তবে সদা নিয়ন্ত্রন করার জন্য কার্যকরী পরিষদ ও নির্বাহী পরিচালক ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন। এমনকি মাননীয় ব্যাবস্থাপনা পরিচালকের হস্তক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

পরিশেষে, অটো  গ্র“প একটি প্রতিষ্ঠান ও পরিবারের নাম। এই পরিবারের একজন সদস্যের সমস্যা সকলের সমস্যা বলে বিবেচিত হয়। তাই অটো  গ্র“পে কর্মরত সকল শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর কল্যান কল্পে গঠিত এই  ওয়েল ফেয়ার ফান্ড যেন যথাযথভাবে তার উদ্দেশ্য সাধন করতে পারে এ লক্ষ্যে অটো  গ্র“প বদ্ধ পরিকর।


Posted

in

by

Comments

8 responses to “শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিল নীতি সাধারণত কেমন হওয়া উচিত ?”

Leave a Reply