গার্মেন্টস কারখানায় জরুরী দুর্ঘটনা প্রতিকার পদ্ধতি ও নীতিমালা সমূহ

গার্মেন্টস কারখানায় জরুরী দুর্ঘটনা প্রতিকার পদ্ধতি ও নীতিমালা সমূহ

অগ্নি দূর্ঘটনা

গার্মেন্টস কারখানার আপদকালীন/দুর্যোগকালীন সময়ে ব্যক্তি ও বস্তুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জরুরী মুহুর্তে একটি পূর্ব পরিকল্পনা প্রণয়ন ও এর বাস্তবায়নের জন্য পূর্ব নির্ধারিত মানব সম্পদ এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর যথাযথ ব্যবস্থাপনা একটি অপরিহার্য বিষয়। তাই কারখানার সকলের নিরাপত্তার জন্য কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ততার উর্দ্ধে অগ্নি নিরাপত্তা, বোমা হামলা, হুমকি, ভুমিকম্প, বন্যা, বজ্রপাত প্রতিরোধ মুলক সকল ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। কারখানায় দুর্যোগকালীন অবস্থা মোকাবেলার জন্য একটি লিখিত পরিকল্পনা রয়েছে যা যথাযথভাবে পালনের জন্য সকলেই অঙ্গীকারাবদ্ধ। প্রতিষ্ঠানের যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য একটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে যার সদস্যগণ দুর্যোগকালীন অবস্থা মোকাবেলার জন্য যথাযথ এবং কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।কারখানার আপদকালীন/দুর্যোগকালীন সময়ে ব্যক্তি ও বস্তুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জরুরী মুহুর্তে একটি পূর্ব পরিকল্পনা প্রণয়ন ও এর বাস্তবায়নের জন্য পূর্ব নির্ধারিত মানব সম্পদ এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর যথাযথ ব্যবস্থাপনা একটি অপরিহার্য বিষয়। তাই কারখানার সকলের নিরাপত্তার জন্য কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ততার উর্দ্ধে অগ্নি নিরাপত্তা, বোমা হামলা, হুমকি, ভুমিকম্প, বন্যা, বজ্রপাত প্রতিরোধ মুলক সকল ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। কারখানায় দুর্যোগকালীন অবস্থা মোকাবেলার জন্য একটি লিখিত পরিকল্পনা রয়েছে যা যথাযথভাবে পালনের জন্য সকলেই অঙ্গীকারাবদ্ধ। প্রতিষ্ঠানের যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য একটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে যার সদস্যগণ দুর্যোগকালীন অবস্থা মোকাবেলার জন্য যথাযথ এবং কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।

  • কারখানায় পর্যাপ্ত সংখ্যক অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছাড়া ও কোম্পানীর নিজস্ব অটমেটিক ফায়ার হাইড্রেন্ট পাম্প সহ অগ্নি নির্বাপনের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ফায়ার হোস থাকা দরকার
  • অগ্নিকান্ডের উৎস তাৎক্ষনিক ভাবে চিহ্নিত করার জন্য অটমেটিক হিট স্মোক ডিটেক্টর সিষ্টেম স্থাপন করা হয়েছে যা কারখানার  মেইন গেট হতে চিহ্নিত করতে পারেন।
  • সাথে সাথে বেজে উঠবে ফ্লোরের ফায়ার এলার্ম উক্ত ফায়ার এলার্ম এর শব্দ শুনার সাথে সাথে সকল শ্রমিককে সিড়ি দিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে নিচে নিরাপদ স্থানে পৌছাতে হবে এবং সেকশন ইনচার্জ গুনে গুনে দেখবেন তার সেকশনের কোন শ্রমিক/কর্মচারী বাদ পড়েছে কিনা তাহা নিশ্চিত করবেন।
  • অগ্নি নির্বাপনের জন্য প্রতিটি ফ্লোরে অগ্নি নির্বাপন টীম গঠন করে তাদেরকে উপযুক্ত প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে তারা তাদের দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ করবে।
  • কারখানায় মোট শ্রমিকের মধ্যে নুন্যতম ২৫% শ্রমিককে ফায়ার ফাইটার প্রশিক্ষন প্রদান করা হয়েছে এবং ৭৫% শ্রমিককে নিজস্ব ফায়ার অফিসারের মাধ্যমে প্রশিক্ষন প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতি মাসে একবার করে ফায়ার ড্রিল করার ব্যবস্থা করা দরকার

বোমা হামলার হুমকি

  • বোমা হামলার হুমকি হলে কারখানার প্রতি ফ্লোরে ফায়ার এলার্ম সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে উক্ত ফায়ার এলার্ম এর শব্দ শোনার সাথে সাথে সকল শ্রমিককে সিড়ি দিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে নীচে নিরাপদ স্থানে পৌছাতে হবে।
  • কোন শ্রমিক উক্ত সময়ে যদি আহত হয় অথবা পড়ে যায় তার জন্য রয়েছে রেসকিউ টীম তাহারা উক্ত আহত শ্রমিককে নিরাপদ স্থানে পৌছে দিতে হবে।

ভুমিকম্প

  • ভুমিকম্প হওয়ার সাথে সাথে প্রতি ফ্লোরে স্থাপিত ফায়ার এ্যালার্ম বেজে উঠবে, উক্ত ফায়ার এ্যালার্ম এর শব্দ শোনার সাথে সাথে সকল শ্রমিককে সিড়ি দিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে নীচে নিরাপদ স্থানে পৌছাতে হবে।
  • কোন শ্রমিক উক্ত সময়ে যদি আহত হয় অথবা পড়ে যায় তার জন্য রয়েছে রেসকিউ টীম তাহারা উক্ত আহত শ্রমিককে নিরাপদ স্থানে পৌছে দিবে।
  • উক্ত সময় কারখানার বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করতে হবে। এখানে উল্লেখ্য যে, ভুমিকম্পের সময় অবশ্যই বিল্ডিং এর নিকট থেকে একটু দুরে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে হবে।

কেমিকেল নির্গমন, বিষ্ফোরণ ও দূর্ঘটনা

ফ্যাক্টরীর উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত কেমিকেল থেকে বিভিন্ন ধরনের ঝুকির সম্ভাবনা রয়েছে। কেমিকেলের অসাবধান ব্যবহার, অনিয়ন্ত্রিত পরিবহন, নিয়ম বহির্ভূত স্টোরেজ অগ্নিকান্ড কিংবা অন্য কোন কারনে কেমিকেল নির্গমন, বিষ্ফোরণ কিংবা কেমিকেল জনিত স্বাস্থ্য ঝুকির সম্ভাবনা থাকে। এই ধরনের দূর্ঘনায় জরুরী অবস্থা মোকাবেলা কমিটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ যথারীতি
০১. বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করবে।

০২. কেমিকেল থেকে অগ্নিকান্ড ঘটলে অগ্নি নির্বাপনী সদস্যগণ নির্বাপনে সক্রিয় হবে।

০৩. ফ্যাক্টরী থেকে সকল কর্মরত ব্যক্তিগণকে নিরাপদে বের হওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

০৪. প্রয়োজন হলে ফায়ার সার্ভিস, হাসপাতাল, পুলিশ, র‌্যাব ও স্থানীয় প্রশাসনকে ফোন করবে।

জরুরী অবস্থায় পালনীয়

১। সকল শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তাগনের কারখানার প্রতি তলার ফ্লোর প্লান  সম্পর্কে ও জরুরী বর্হিগমন পথ সম্পর্কে সম্যক ধারনা থাকা আবশ্যক যাতে জরুরী অবস্থা মোকাবেলা করার উপকরন সমূহের অবস্থান প্রদর্শিত হয়েছে।

২।  জরুরী অবস্থায় বিচলিত না হয়ে ঠান্ডামাথায় পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে এবং নিজ নিজ দ্বায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে ও তা পালন করতে হবে।

৩।  জরুরী অবস্থায় বৈদ্যুতিক সেফটি কমিটির সদস্যগন বৈদ্যুতিক সূইচ গুলো বন্ধ করে দিবেন।

৪।  আগুন সহ অন্যান্য দূর্ঘটনা দেখা দিলে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যাক্তিগন সাথে সাথে সাইরেন এবং হাত ঘন্টা বাজিয়ে সবাইকে সতর্ক করবেন।

৫।  মাইকিং করে সকল শ্রমিক কর্মচারীকে আগুন লাগার স্থান সম্পর্কে অবহিত করতে হবে এবং সতর্কতার সাথে নিজে এবং অন্যকে বাহির হওয়ার জন্য পথ নির্দেশনা ও করনীয় আদেশ উপদেশ প্রদান করতে হবে।

৬।  দূর্ঘটনা এড়ানোর জন্য প্রথমে গর্ভবতী মহিলা, যদি শিশুকেন্দ্রে কোন শিশু থেকে থাকে তাকে তারপরে মহিলাকর্মী অতপর পর্যায়ক্রমে অন্যদেরকে বাগিরে আনার ব্যবস্থা করার জন্য নিয়োজিত ব্যক্তিদের সতর্কতার সহিত ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

৭।  শ্রমিক কর্মচারীগনকে বাহির হওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য নিয়োজিত ব্যক্তিরা নিজ নিজ কর্তব্য স্থানের প্রতিটি জায়গা এমনকি টয়লেট পরীক্ষা করে দেখবে কোন লোক আটকা পড়ে আছে  কিনা।

৮।  যারা অগ্নি নিবাপক যন্ত্র ব্যবহার করবে তারা নিজ নিজ অগ্নি নির্বপক যন্ত্র ব্যবহারের পূর্বে গ্যাস মাস্ক সহ অন্যান্য আতœরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি ব্যবহার করতে হবে।

৯।  দুর্ঘটনার সময় কর্মীরা হলুদ দাগের/তীর চিহিৃত স্থানের মধ্য দিয়ে সারিবদ্ধভাবে শৃঙ্খলবদ্ধ হয়ে বের হবে।

১০। হলুদ দাগের মধ্য দিয়ে বের হওয়ার সময় জরুরী নির্গমন পথের যেটি কাছাকাছি সেটি বেছে নিবে।

১১। যাতে কোন প্রকার ভয়ভীতি বা দৌড়াদৌড়ি শুরু না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

১২। কোন অবস্থায়ই জরুরী বর্হিগমন পথ আটকিয়ে অথবা তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকতে পারবে না। জরুরী বর্হিগমন লাইট এবং ফ্লোরে অবস্থিত জরুরী লাইট সর্বদা জ্বালিয়ে রাখতে হবে।

১৩। দূর্ঘটনার সাথে সাথে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিগন স্থানীয় দমকল বাহিনী, থানা (পুলিশ ষ্টেশন) র‌্যাব ও হাসপাতাল কে সংবাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।

১৪। প্রাথমিক চিকিৎসক কর্মীরা এবং স্বেচ্ছাসেবক কর্মীরা তাদের উপর অর্পিত দ্বায়িত্ব সূন্দরভাবে পালন করবে সাথে সাথে বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা কমিটি, কারখানা নিরাপত্তা কমিটি, অগ্নি নিরাপত্তা কমিটির সদস্যগন নিজ নিজ দ্বায়িত্ব কর্তব্য সুষ্ঠ ও সুন্দর ভাবে পালন করবে।

১৫। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রসহ সংশি¬ষ্ট অন্যান্য যন্ত্রপাতি দৈনিক চেক করুন এবং চেক লিষ্টে স্বাক্ষর করুন।

১৬। যদি কোন শ্রমিক আহত হয় তাকে সাথে সাথে সংশি¬ষ্ট প্রাথমিক চিকিৎসাকারীর কাছে নিয়ে আসুন, অবস্থা খারাপ হলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে  প্রেরন করুন।

১৭। কারখান দুর্ঘটনা কবলিত হলে সকল শ্রমিক কর্মচারী সুশৃঙ্খল ভাবে এসেম্বলি পয়েন্টে বিভাগ অনুযায়ী সারিবদ্ধ ভাবে দাড়াতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট  বিভাগের প্রধানগন দৈনিক হাজিরা বই (Attendence Register)) চেক করে ঐ দিনের হাজিরা মিলিয়ে নেবেন।

১৮। যদি উক্ত দিনের হাজিরা অনুযায়ী কোন ব্যক্তির সন্ধান না পাওয়া যায় তৎক্ষনাত বিভাগীয় প্রধানগন উক্ত ব্যক্তিকে খুজে বের করার ব্যবস্থা করবেন।

Comments

Leave a Reply