কারখানার পরিবেশ পোশাক কারখানার বর্জের শ্রেনী বিভাগ

কারখানার পরিবেশ কি? পোশাক কারখানার বর্জের শ্রেনী বিভাগ বর্ণনা ও বর্জ্য অপসারন পদ্ধতি

পরিবেশ কি?

আমাদের চারিপাশে যা আছে তা নিয়েই আমাদের পরিবেশ। পরিবেশ অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয়। আমরা যে পরিবেশে বাস করি সে পরিবেশকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব আমাদেরই। তাই আমাদের কৃত কর্মের জন্য যাতে পরিবেশ নষ্ট বা দুষিত না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখার দায়িত্বও আমাদের …

সমস্ত প্রযোজ্য আইন এবং বৈধ বজায় সহ প্রবিধান সঙ্গে পূর্ণ সম্মতি মধ্যে সব অপারেশন পরিচালনা করা হয় . নিম্নে উল্লেখিত কারনগুলোর দ্বারা কর্ম ক্ষেত্র পরিবেশ নষ্ট হতে পারে।

  • অপরিষ্কার ও নোংরা কারখানা।
  • অপরিশোধিত গ্যাস, বাষ্প , ধোঁয়া, ইত্যাদী।
  • কারখানার বর্জ্য পদার্থ।
  • দুর্গন্ধ।
  • মেশিন, কাচাঁমাল, উৎপন্ন কাপড়ের এলোমেলো অবস্থান, ইত্যাদী।

কারখানার পরিবেশ ভালো না হলে কিকি ক্ষতি হতে পারে।

সক্রিয়ভাবে কুমারী কাঁচামাল এবং, কাঁচা মাল ব্যবহার অপ্টিমাইজেশান ক্রমাগত উন্নতি দেখাচ্ছে বৃদ্ধি পুনর্ব্যবহার এবং কাঁচামাল পুনরায় ব্যবহার দ্বারা পরিবেশের উপর তার প্রভাব তার ব্যবহার হ্রাস করা হয়

  • কর্মস্থলে পরিবেশ খারাপ হলে তা শ্রমিকের স্বাস্থ্যকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে যা কর্মস্থলে শ্রমিকের অনুপুস্থিতির হার বাড়িয়ে দেয়। ফলশ্রুতিতে কারখানার উৎপাদনশীলতা কমে যায়।
  • পরিবেশ ভালো না থাকলে শ্রমিক অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। কোথায় সেবা পাওয়া যায়, সব বিপজ্জনক বর্জ্য একটি অনুমোদিত কোম্পানী বা লাইসেন্সকৃত রিসিভার দ্বারা পরিচালিত হতে হবে.
  • শ্রমিকের কর্ম ক্ষমতা কমে যায়।
  • কারখানার উৎপাদনশীলতা কমে যেতে পারে।
  • দূষিত পরিবেশের কারনে উপাদিত পন্যের ক্ষতি হতে পারে বা তা নষ্ট হতে পারে।
  • দূষিত পরিবেশের কারনে কমপ্লায়েন্স বিঘিœত হতে পারে।

কারখানার পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য আমাদেরকে নিম্ন লিখিত সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।

বর্জ্য বর্জন অগ্রগতি দেখায় এবং সক্রিয়ভাবে বিজ্ঞপ্তি অর্থনীতি সাথে ইন-লাইন সমাধান প্রস্তাব

  • কারখানার মধ্যে প্রয়োজনীয় আলোর ব্যবস্থা করা দরকার।
  • প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করা।
  • কারখানার অভ্যন্তরের তাপমাত্রা ও আদ্রতা সহনীয় মাত্রায় রাখার ব্যবস্থা করা।
  • কারখানায় কোন বর্জ্য ফেলে রাখা যাবেনা।
  • বর্জ্য সময়মত অপসারন করার ব্যবস্থা করতে হবে।
  • বিভিন্ন পোকা – মাকঁড়, মশা-মাছি যাতে কারখানায় সহজে ঢুকতে না পারে সে ব্যবস্থা করা।
  • কারখানার ভিতরে যাতে কোন ধোঁয়ার সৃষ্টি না হয় সে দিকে খেয়াল রাখা।
  • কারখানায় ভালো পয়ঃ নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
  • কারখানার আশে পাশের এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।
  • দূগন্ধ সৃষ্টিকারী কোন পদার্থ কারখানা অভন্ত্যরে রাখা যাবেনা।

পোশাক কারখানার বর্জের শ্রেনী বিভাগ

সাধারনত বর্জ্যের পচন প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে বর্জ্যকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা ঃ ১.  বায়োডিগ্রেডেবল এবং নন বায়োডিগ্রেডেবল। যে সকল দ্রব্য সহজে প্রাকৃতিক নিয়মে পচেঁ যায় সেগুলিকে  বায়োডিগ্রেডেবল বর্জ্য বলে। অপরদিকে যে সকল বর্জ্য প্রাকৃতিক  নিয়মে পচেঁনা তাদেরকে  নন বায়োডিগ্রেডেবল বর্জ্য বলে। পচন প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে বর্জ্য বিভিন্ন উপায়ে ডিসপোসাল করা হয়। বর্জ্যের ধরন এবং পচন প্রক্রিয়া অনুযায়ী এদেরকে নিম্ন লিখিত ভাবে ভাগ করা যায় ঃ

  • ফেব্রিক ওয়াষ্ট বায়োডিগ্রেডেবল
  • ফেব্রিক ওয়াষ্ট নন বায়োডিগ্রেডেবল
  • মিসসেলেনিয়াস ওয়াষ্ট  বায়োডিগ্রেডেবল
  • মিসসেলেনিয়াস ওয়াষ্ট  নন বায়োডিগ্রেডেবল

পোশাক কারখানার ডিসপোসালের জন্য নিম্নলিখিত পদ্বতি অনুসরন করতে হবে ঃ

কারখানায় যে সকল বর্জ্য উৎপন্ন হয় তা পরিবেশের জন্য অতি ক্ষতিকর। অপারকল্পিত বর্জ্য ডিসপোসাল কারখানার চারপাশকে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর  করে তোলে। অপরিষ্কার পরিবেশ কারখানার পরিবেশকে দূষিত করে  তোলে যা স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। পরিকল্পিত বর্জ্য শোধন পদ্বতি পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করে। পচন প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন বর্জ্য বিভিন্ন উপায়ে ডিসপোসাল করা হয়।

ফেব্রিক ওয়াষ্ট  বায়োডিগ্রেডেবল:

তুলা ও অযান্য প্রাকৃতিক উৎস্য থেকে উৎপন্ন ফেব্রিকগুলো বায়োডিগ্রেডেবল। সহজে পচে যায় বলে বায়োডিগ্রেডেবল দ্রব্য পরিবেশের উপর কোন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না। এ সমস্ত ফেব্রিক ওয়াষ্ট আলাদাভাবে গুদামজাত করতে হবে। এবং কখনো সিনথেটিক ফেব্রিক ওয়াষ্টের সাথে মিশানো যাবেনা।

ফেব্রিকস নন বায়োডিগ্রেডেবল:

সিনথেটিক ফেব্রিক্স কখনো বায়োডিগ্রেডেবল না কারন এগুলো প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় পচেঁনা। এজন্য সিনথেটিক ফেব্রিক্স পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই এ সকল ফেব্রিক কৃত্রিম উপায়ে বিশেষ পদ্বতির মাধ্যমে পচানো হয়।  সিনথেটিক ফেব্রিক্স ওয়াষ্টকে আলাদাভাবে গুদামজাত করতে হবে এবং কখনো কৃত্রিম উপায়ে প্রস্তুতকৃত নন বায়োডিগ্রেডেবল ওয়াষ্টের সাথে মিশানো যাবেনা।

মিসসেলেনিয়াস  ওয়াষ্ট  বায়োডিগ্রেডেবল :

যে সমস্ত  দ্রবাদি প্রাকৃতিক উৎস্য থেকে উৎপন্ন বা প্রস্তুত করা হয় সে সমস্ত দ্রব্য সহজে  বায়োডিগ্রেডেবল। সহজে পচে যায় বলে  এ সমস্ত বায়োডিগ্রেডেবল ওয়াষ্ট পরিবেশের উপর কোন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না। এ সমস্ত ওয়াষ্ট আলাদাভাবে গুদামজাত করতে হবে। এবং কখনো কৃত্রিম উপায়ে প্রস্তুতকৃত নন বায়োডিগ্রেডেবল ওয়াষ্টের সাথে মিশানো যাবেনা।

মিসসেলেনিয়াস  ওয়াষ্ট  নন বায়োডিগ্রেডেবল :

যে সমস্ত আইটেম কৃত্রিম ও প্লাষ্টিক দ্রব্য থেকে প্রস্তুত হয় সে সমন্ত আইটেম বায়োডিগ্রেডেবল না ও প্রাকৃতিক উপায়ে স্বাভাবিকভাবে পচেনা। এগুলোর নিরাপদ ডিসপোসালের জন্য বিশেষ পদ্বতি অনুসরন করা হয়। এ সমন্ত  ওয়াষ্ট আলাদাভাবে গুদামজাত করতে হবে। কখনো অন্য কোন দ্রব্যের সাথে মিশানো যাবেনা।

বর্জ্য ডিসপোসাল এলাকা :

প্রতিটি  কারখানার বর্জ্য  ডিসপোসালের জন্য একটি নির্দিষ্ট এলাকা থাকা উচিত। উপরের উল্লেখিত বর্জ্য গুদামজাত করার  জন্য আলাদা আলাদা প্রকোষ্ঠ / ঘর থাকতে হবে এবং প্রত্যেকটি প্রকোষ্ঠ / ঘরে কোন ধরনের বর্জ্য আছে তা চিহ্নিত করে সাইন  / প্লেট কার্ড লাগাতে হবে। এছাড়া প্রকোষ্ঠ / ঘরের বাইরে লিখে রাখা উচিত যাতে সহজে বুঝা যায় কোন প্রকোষ্ঠ / ঘরে কোন দ্রব্য রাখা আছে।

যে এলাকায় বর্জ্য রাখা হবে তার উপরে অবশ্যই সেড থাকতে হবে, বৃষ্টির পানি পড়ে এমন জায়গায় কখনো রাখা যাবেনা। যদি বর্জ্য খোলা জায়গায় রাখা হয় তাহলে বৃষ্টির পানির সাথে আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে এবং বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে যাবে ও গন্ধ ছড়াবে এবং এলাকার পরিবেশ নষ্ট হবে।

কারখানা থেকে বর্জ্য অপসারন একটি নিয়মিত কাজ। বর্জ্য  অপসারনের সময়সূচী প্রত্যেক কারখানার দেয়ালে টানিয়ে রাখা উচিত যাতে সবাই জানে কবে বর্জ্য অপসারন করতে হবে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার বর্জ্য অপসারন করা উচিত। এর ব্যতিক্রম হলে কারখানার অভ্যন্তরে বর্জ্যের  স্তুপ হয়ে যাবে এবং কারখানার ভিতরে নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করবে।

বর্জ্য অপসারন অবশ্যই এ কাজে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দ্বারা করা উচিত। যে প্রতিষ্ঠানে বা ব্যক্তি বর্জ্য অপসারন কাজে নিয়োজিত থাকবে তার অবশ্যই লোকাল অথরিটি কর্তৃক অনুমোদিত লাইসেন্স থাকতে হবে এবং নিয়োগ প্রদানকারী কারখানা লিখিত চুক্তির মাধ্যমে অপসারনকারী প্রতিষ্ঠানকে নিয়োজিত করবে।

টিউব লাইট ঃ

নষ্ট টিউব লাইট কারখানার অন্যতম বর্জ্য তাই ইহাকে অত্যান্ত সর্তকতার সহিত অপসারন করতে হবে। একটি টিউব লাইটে যে পরিমান মার্কারী থাকে তা একটি মাঝারী মানের পুকুরের মাছ ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট। সমন্ত টিউব লাইট বক্সেও মধ্যে  উলম্ব /দাড়াঁনো অবস্থায়  গুদামজাত করা উচিত, সমান্তরাল অবস্থায় গুদামজাত করলে  ভেংগে গিয়ে মার্কারী  বের হয়ে যেতে পারে।

Comments

4 responses to “কারখানার পরিবেশ কি? পোশাক কারখানার বর্জের শ্রেনী বিভাগ বর্ণনা ও বর্জ্য অপসারন পদ্ধতি”

Leave a Reply