শ্রমিকদের সহিত আচরন সংক্রান্ত নীতিমালা বিস্তারিত বর্ণনা

শ্রমিকদের সহিত আচরন সংক্রান্ত নীতিমালা বিস্তারিত
শ্রমিকদের সহিত আচরন সংক্রান্ত নীতিমালা বিস্তারিত বর্ণনা

শ্রমিকদের সহিত আচরন সংক্রান্ত নীতিমালা

সূচনা  ঃ একটি প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন ধরণের শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করে। এই সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সহিত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সম্পর্ক কেমন হবে? কিভাবে ব্যবস্থাপণা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বিষয়টি বিবেচনা করবে, তা একটি নীতিমালার আলোকে নির্দ্ধারিত না হলে শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক তিক্ত হতে বাধ্য। এক্ষেত্রে তার অধীনস্থ সকল শিল্প কারখানার শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করার জন্য ১৯৬৫ সালের শ্রম আইন এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কনভেনশনের আলোকে একটি সুষম আচরন বিধি প্রণয়নের ব্যবস্থা করেছে। এই আচরন বিধি অনুসরণ করলে শ্রমিক-মালিক সম্পর্কে কখনও বিরোধ দেখা দেবেনা। See English Version

উদ্দেশ্যে  ঃ যে কোন আইন, বিধি বা নিয়মই হোক না কেন তা যদি সঠিক ভাবে প্রণয়ন এবং উহার কার্য্যকরী প্রয়োগ না হয়, তা হলে ঐ বিধি, আইন বা নীতিমালা কখনই শ্রমিক কর্মচারীর কল্যান বয়ে আনবে না। কর্তৃপক্ষ তাই লিঙ্গ বেইসম্ম  শ্রমিক-কর্মচারীর সার্বিক কল্যানের বিষয় বিবেচনা করে একটি নীতিমালা প্রনয়ণ করেছে। এ নীতিমালার প্রধান বিষয় ও তার আলোচনা পর্য্যাক্রমে নীচে প্রদান করা হল ঃ

ক. ভর্ৎষনা ও নির্যাতন

খ. অভিযোগ গ্রহন

গ. আর্থিক দন্ড

ঘ. জোর পূর্বক কাজ করানো

ঙ. শ্রমিকদের অধিকার

চ. ব্যক্তিগত সুযোগ/সুবিধা

ছ. মহিলা শ্রমিক নিয়োগ

জ. শিশু শ্রমিক নিয়োগ

ঝ. চিকিৎসা সুবিধা

ঞ. সংগঠন করার অধিকার

ট. স্বল্পকালীন ছুটি

ঠ. উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

ড. বেতন বৃদ্ধি/পদোন্নতি

ঢ. রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার

ণ. ব্যক্তিগত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা

ক.        ভর্ৎষনা ও নির্যাতন ঃ কোন শ্রমিককে গালিগালাজ, কটুক্তি, শারিরীক বা মানষিক ভাবে নির্যাতন করা যাবেনা। কোন শ্রমিককে যৌন হয়রানি করা যাবেনা। কাহার ও বিরুদ্ধে অনুরুপ অভিযোগ উত্থাপিত হলে এবং অভিযোগ প্রমানিত হলে ১৯৬৫ সালের শ্রম আইনের ধারা ১৭ ও ১৮ মোতাবেক তার/তাহার বিরুদ্ধে শস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে আমাদের অঙ্গীকার হচ্ছে কোন অবস্থায়ই শ্রমিককে কোনরুপ নির্যাতন না করা। এ বিষয়ে আমরা নিয়মিত আলোচনা সভা করে শ্রমিক কর্মচারীদের বুঝিয়ে থাকি। শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য অটো  কর্তৃপক্ষ সার্বক্ষণিক প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছে।

খ.        অভিযোগ গ্রহন ঃ কোন শ্রমিক যদি কারও বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করতে চায় তবে তা আন্তরীকতার সাথে শুনতে বা গ্রহণ করতে হবে। এ ব্যাপারে যতদুর সম্ভব ত্বরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

আমরা আমাদের শ্রমিকদের যে কোন অভিযোগের বিষয়ে খুবই আন্তরীক। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ পেশ করতে কোন বাধা নাই।এ ছাড়া অভিযোগ বাক্স/সুপারিশ সংক্রান্ত বাক্সের মাধ্যমেও শ্রমিকেরা তাদের আবেদন কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করতে পারে। আমরা অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকি।

গ.        আর্থিক দন্ড ঃ কোন শ্রমিক অপরাধ করলে সে অপরাধের জন্য তাকে কোনরুপ আর্থিক দন্ড প্রদান করা যাবে না। আর্থিক দন্ড প্রদান আইনতঃ নিষিদ্ধ। এমনকি কোন শ্রমিককে বিনা পরিশ্রমিকে কাজ করানো যাবে না। ইহাও দন্ডনীয় অপরাধ।

আমরা কখনও কোন শ্রমিককে আর্থিক দন্ড প্রদান করি না, এমনকি কখনও বিনা পরিশ্রমিকে কোন শ্রমিককে দিয়ে কাজ করানো হয় না। এটা আমাদের অঙ্গীকার।

ঘ.        জোর পূর্বক কাজ করানোঃ কোন শ্রমিককে দিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করানো যাবে না। ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন শ্রমিককে দিয়ে অধিকাল(ঙাবৎঃরসব) কাজ করানো যাবে না। এই রুপ কার্যকলাপ দন্ডনীয় অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে।

শ্রমিকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে দিয়ে কাজ করানো অটো -এর মূলনীতির পরিপন্থী। এই নীতিমালা সমুন্নত রাখা আমাদের প্রতিশ্র“তি।

ঙ.        শ্রমিকের অধিকার ঃ কোন শ্রমিককে তার ন্যায্য অধিকার হইতে বঞ্চিত করা যাবে না। সঠিক মুজরী, ছু্িট, স্বল্পকালীন ছুটি সহ যেসব অধিকার একজন শ্রমিক শ্রম আইন অনুসারে প্রাপ্য হবেন তার সবই তাকে ভোগ করতে দিতে হবে। এরুপ অধিকার থেকে বঞ্চিত করা দন্ডনীয় অপরাধ।

প্রতজ্ঞিা  ঃ এ বিষয়ে আমাদের অঙ্গীকার হলো সমতার ভিত্তিতে কাজ করা। শ্রমিক যদি তার অধিকার না পায়, তবে তার থেকে চাহিদাকৃত উৎপাদন পাওয়া যাবেনা। আমরা তাদের সব অধিকার সংরক্ষণে সচেষ্ঠ।

চ.         ব্যক্তিগত সুযোগ/সুবিধা ঃ কারখানায় নিয়োজিত সকল শ্রমিককে তার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে সুযোগ/সুবিধা প্রদান করতে হবে। ব্যক্তিগত সুযোগ/সুবিধা হতে তাহাদেরকে বঞ্চিত করা যাবে না।

প্রতজ্ঞিা  ঃ আমরা প্রতিটি শ্রমিকও তার ব্যক্তিগত ব্যাপারে সহানুভুতিমূলক আচরণ করে থাকি। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তাদেরকে স্বল্পকালীন ছুটি দেয়া হয়ে থাকে। এ জন্য তার বেতন কর্তন বা ছুটি থেকে কর্তন করা হয়ন।

ছ.        মহিলা শ্রমিক নিয়োগঃ নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন রুপ বৈষম্য করা যাবেনা। মহিলা শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদেরকে মাতৃত্ব কালীন অবস্থা সম্পর্কে কোন রুপ প্রশ্ন বা পরীক্ষা করা যাবেনা। এরুপ কার্যকলাপ দন্ডনীয় অপরাধ। মাতৃত্বকালীন অবস্থায় মহিলা শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে ও কোন রুপ বিধি নিষেধ আরোপ করা যাবে না। মহিলা শ্রমিকদের বেতন নির্দ্ধারনে ও কোন রুপ বৈষম্য গ্রহণ যোগ্য নয়।

প্রতজ্ঞিা  ঃ অটো  তার সকল শ্রমিককে সমতা আইনে বিচার করে।  বেতন নির্দ্ধানরেও কোন বৈষম্য করা হয় না।

জ.       শিশু শ্রমিক নিয়োগ ঃ নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন অবস্থায়ই শিশু শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না। শিশু শ্রমিক নিয়োগ আইনতঃ দন্ডনীয় অপরাধ।

প্রতজ্ঞিা  ঃ অটো  তার আওতাধীন কোন প্রতিষ্ঠানেই শিশু শ্রমিক নিয়োগ করে না। বরং শিশুদের লেখা পড়ায় উৎসাহিত করার জন্য অটো  একটি অবৈতনিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে।

ঝ.        চিকিৎসা ঃ শ্রমিকগন কারখানায় আসার পর যে কোন কারনে অসুস্থ হোক না কেন তাহার সু-চিকিৎসার বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তিসহ যে কোন জরুরী ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

প্রতজ্ঞিা  ঃ অটো  কর্তৃপক্ষের অঙ্গীকার অনুযায়ী শ্রমিকদের সব ধরণের চিকিৎসার ব্যয় ভার কারখানা কর্তৃপক্ষ বহন করে। জরুরী প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক সব ধরনের ঔষধ সরবরাহ করা হয়। অটো   কর্তৃপক্ষ মনে করে সুস্থ্য শ্রমিক ব্যতিত উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়।

ঞ.       সংগঠন করার অধিকার ঃ সকল শ্রমিকের নিজ ইচ্ছা মত সংগঠন করা বা তাতে যোগদান করার অধিকার আছে।  এক্ষেত্রে কোন শ্রমিককে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। ইহা দন্ডনীয় অপরাধ।

প্রতজ্ঞিা  ঃ অটো  কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। শ্রমিকদের সংগঠন করার বা তাতে যোগদান করতে কখনই বাধা দেয় না। এটা অটো  নীতিমালার পরিপন্থী। এখানে কর্মকর্তা, কর্মচারী সমন্বয়ে বিভিন্ন কমিটি ( রয়েছে। এ সকল কমিটি সার্বক্ষনিক ভাবে শ্রমিকদের কল্যান মুলক কাজে নিয়োজিত।

ট.         স্বল্পকালীন ছুটিঃ ব্যক্তিগত জরুরী প্রয়োজনে সকল শ্রমিককে স্বল্পকালীন সময়ের জন্য ছুটি প্রদান করতে হবে। এজন্য তার জমাকৃত ছুটি থেকে বা বেতন থেকে কর্তন করা যাবে না। ইহা নিষিদ্ধ।

প্রতজ্ঞিা  ঃ অটো  কর্তৃপক্ষ তার কর্মীবাহিনী তথা শ্রমিকদের সব সময়ই সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছে। জরুরী প্রয়োজনে তাদেরকে স্বল্পকালীন ছুটি দেয়া হয়। এ জন্য ছুটি বা বেতন কর্তন করা হয় না। অটো  কর্তৃপক্ষ সকলের মানবিকতার মূল্য দেয়।

ঠ.         উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্দ্ধারন  ঃ কোন শ্রমিককে তার যোগ্যতার অধিক কাজ করতে দেয়া যাবে না। এ লক্ষে উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্দ্ধারন করে দেয়া নীতি বিরুদ্ধ। ইহা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

প্রতজ্ঞিা  ঃ অটো  কর্তৃপক্ষ তার শ্রমিকদের নিয়োগের সময় যোগ্যতার ভিত্তি নিয়োগ করে। কোন অবস্থায়ই শ্রমিককে উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্দ্ধারণ করে দেয়া হয় না। শ্রমিকদের যোগ্যতা অনুসারে কারখানার কাজের লক্ষমাত্রা নির্দ্ধারণ করা হয়।

ড.        বেতন বৃদ্ধি/পদে ঃ যোগ্যতাই একজন শ্রমিককে যাচাই-এর মুলসূত্র। যোগ্য শ্রমিক কর্মচারীকে বেতন বৃদ্ধি বা পদোন্নতির সুবিধা প্রদান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনরুপ বৈষম্য করা যাবে না। সামাজিক অবস্থান বা ব্যক্তিগত সম্পর্ককে যোগ্যতার মাপকাঠি হিসাবে গননা করা নিষিদ্ধ।

প্রতজ্ঞিা  ঃ আমরা প্রতি বৎসর শ্রমিক কর্মচারীদেরকে তাদের যোগ্যতা অনুসারে বেতন বৃদ্ধির সুযোগ প্রদান করে থাকি। এ ক্ষেত্রে কোনরুপ বৈষম্য করা হয় না। এ ছাড়া যোগ্য শ্রমিক-কর্মচারীকে পদোন্নতি প্রদান ও অটো  এর নীতি মালার অংশ।

ঢ.         রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার ঃ কারখানায় খোলা মেলা অবস্থায় রাসায়নিক দ্রব্য (ঝঢ়ড়ঃ জবসড়াবৎ) ব্যবহার করা যাবে না। নির্দ্ধারিত নিরাপত্তা নীতি অনুসরণ করা স্বাপেক্ষে উহা ব্যবহার করা যেতে পারে।এক্ষেত্রে খোলামেলা ব্যবহারের অপকারিতা সংশ্লিষ্ঠ শ্রমিক কর্মচারীদেরর অবহিত করতে হবে এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামুলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

প্রতজ্ঞিা  ঃ অটো  এর কোন শিল্প কারখানায় খোলামেলা ভাবে স্পট রিমুভার ব্যবহার করা হয় না। শ্রমিকদেরকে প্রয়োজনীয় বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়। খোলামেলা ব্যবহারের কু-ফল সম্পর্কে শ্রমিকদের সর্বদা অবহিত করা হয়। এছাড়া চচঊ ব্যবহার সম্পর্কে নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান অটো  কর্তৃপক্ষের অঙ্গীকার।

ন.        ব্যক্তিগত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা ঃ শ্রমিকের উপর অর্পিত কাজের জন্য যদি তার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ শ্রমিককে দিয়ে সম্পাদন করা যাবে না। স্বাস্থ্য হানিকর কোন দ্রব্য ব্যবহারের পূর্বে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সতর্কতামুলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

প্রতজ্ঞিা  ঃ অত্র তার শ্রমিক কর্মচারীদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক গঁংশ, এধং গঁংশ-সহ অন্যান্য নিরাপত্তা মুলক দ্রব্য সামগ্রী সরবরাহ করে। এগুলি ব্যবহারের কারণে এ কারখানায় দূর্ঘটনা ঘটেনা বল্লেই চলে। আমরা শ্রমিকদের সুস্বাস্থ্যের ব্যপারে সম্পূর্ণ সজাগ।

৩.        উপসংহার  ঃ একটি সুষ্ঠ, সুন্দর ও পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা অনুসরণ করলে যে কোন শিল্প কারখানা তার লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে। অটো  তাই শ্রমিকদের সাথে আচরণ সংক্রান্ত নীতিমালাকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে এবং এর অনুসরণ বাধ্যতামূলক বলে গন্য করে। অটো  মনে করে মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক উৎপাদনে মুল চালিকা শক্তি।

By Mashiur

He is Top Class Digital Marketing Expert in bd based on Google Yahoo Alexa Moz analytics reports.. He is certified IT Professional from Aptech, NCC, New Horizons & Post Graduated from London Metropolitan University (External) in ICT. Cell# +880 1792525354. যোগাযোগ এর জন্য নিম্নে Leave a Reply এ গিয়ে কমেন্টস Comments করুন

Leave a Reply