নিরাপত্তামূলক সরঞ্জামাদি

ষ্টোরড প্রেসার টাইপ ও কার্টিজ টাইপ বর্ণনা সমুহ কি কি?

ষ্টোরড প্রেসার টাইপ

বাহ্যিক গঠন ঃ এটি একটি লোহার সিলিন্ডার যার ভিতর পাউডার থাকে। যন্ত্রটির মাথায় একটি হাতল, একটি লিভার, একটি ডেলিভারী হোজ পাইপ এবং হোজ পাইপের মাথায় নজেল থাকে। পাউডার বের করার জন্য যন্ত্রের মধ্যে ব্যবহৃত নাইট্রোজেন গ্যাসের চাপ ঠিক আছে কি না, তা দেখার জন্য একটি ছোট মিটার থাকে। এছাড়া হাতল এবং লিভারের মাঝখানে একটি সেফটি পিন থাকে যাতে বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময় লিভারে চাপ পড়ে পাউডার বের হয়ে না যায়। যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়েছে কি না তা নির্দেশ করার জন্য সেফটি পিনের মাথায় একটি সীল থাকে। …

ভিতরের গঠন ঃ সিলিন্ডারের ভিতেরর ৩/৪ অংশে পাউডার থাকে এবং এক ভাগ খালি যায়গা থাকে। সিলিন্ডারের ভিতর থেকে পাউডার বের হওয়ার জন্য একটি ডিসচার্জ পাইপ) থাকে। এছাড়াও পাউডার বের করার জন্য নাইট্রোজেন গ্যাসের একটি ছোট সিলিন্ডার থাকে।

অগ্নি নির্বাপনী রাসায়নিক উপাদান ঃ মেডিক্যাল রেজিস্টার একটি সহযোগী মাধ্যম যা থেকে দুর্ঘটনার কারন ও উৎস জানা সম্ভব। নিম্নে মেডিকেল রেজিষ্টার ব্যবহারের অতীব গুরুত্বপূর্ন কিছু পরামর্শ প্রদান করা হলো  এ অগ্নি নির্বাপনী যন্ত্রে অগ্নি নির্বাপনী উপাদান হিসেবে মনো এ্যামোনিয়াম ফসফেট বা এ্যামোনিয়াম সালফেট থাকে। অনেক সময় এ যন্ত্রে সোডিয়াম বা পটাশিয়াম বাইকার্বনেটের সাথে ২০% এ্যামোনিয়াম ফসফেট বা সালফেট মিশ্রিত অবস্থায় থাকে।

কোন্ কোন্ আগুনে ব্যবহার করা হয় ঃ এবিসি ড্রাইকেমিক্যাল পাউডার যে কোন ধরণের আগুন (কঠিন, তরল ও গ্যাস) নির্বাপনে ব্যবহার করা হয়। তাই এটিকে মাল্টি পারপাজ ফায়ার এক্সটিংগুইশার (বলা হয়। তবে এটি সলিড ফায়ার বা কঠিন পদার্থের আগুনে সবচেয়ে বেশী কার্যকরী।

ব্যবহার পদ্ধতি ঃ প্রথমে দেয়াল থেকে যন্ত্রটি নামিয়ে আনুন। এরপরে কয়েকবার ঝাকিয়ে নিন। এবার হাতল ও লিভারের মাঝখানের সেফটি পিনের মাথার সীলটি খুলুন এবং সেফটি পিনটি টান দিয়ে বের করুন। এবার ডান হাত দিয়ে যন্ত্রটি বহন করে নিয়ে আগুনের যতটুকু সম্ভব কাছে যান। এবার বাতাসের অনুকুলে গিয়ে বাম হাত দিয়ে হোজ পাইপের মাথার নজেল ধরে আগুনের দিকে তাক করান। এবার লিভারে চাপ দিন এবং আগুন নিভানো শেষ না হওয়া পর্যন্ত নজেলটি পাশাপাশি নাড়াতে থাকুন।

সাবধানতা ঃ যেহেতু যে কোন ধরণের কেমিক্যালই শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তাই পাউডার যাতে নাকে মুখে না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখুন। যদি কোনক্রমে নাকে মুখে বা চোখে লাগে তবে তাৎক্ষনিকভাবে মুখমন্ডল ও চোখ ধুয়ে নিন এবং খোলা বাতাসে শুয়ে রেখে মাথায় পানি ঢালতে থাকুন। অবস্থা খারাপ হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়া পাউডার ব্যবহার করার ফলে মেশিনারিজ ক্ষতি হতে পারে।

পরিদর্শন ও রক্ষনাবেক্ষণ ঃ

পরিদর্শন ঃ অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রটি কাজের উপযোগি আছে কি না তা জানার জন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তি প্রতি মাসে অন্ততঃ একবার যন্ত্রটি পরিদর্শন করবেন। বিশেষকরে নাইট্রোজেন গ্যাসের চাপ ঠিক আছে কিনা সে জন্য মিটার দেখা (অবশ্যই মিটারটি সবুজ দাগের মধ্যে থাকবে), ডেলিভারী হোজপাইপ কোথাও ছিদ্র আছে কিনা ইত্যাদি পরিদর্শন করে পরিদর্শনকার্ডে স্বাক্ষর করতে হবে এবং পরিদর্শনের তারিখ উল্লেখ করতে হবে।

রক্ষণাবেক্ষণ ঃ অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রটি যাতে দূর্ঘটনার সময় সহজে ব্যবহার করা যায় সেজন্য দর্শনীয় জায়গায় বাঁধামুক্ত অবস্থায় (কোন কিছু দিয়ে ঢেকে রাখা যাবে না) রাখুন। যে কেহ যাতে যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পারে সে জন্য অতি উচ্চতায় না ঝুলিয়ে হাতের কনুই বরাবর উচ্চতায় (ফ্লোর থেকে ৪৮ ইঞ্চি ) ঝুলাতে হবে। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের পাউডারের কার্যকারিতা ১ বছর পর শেষ হয়ে যায়। সুতরাং প্রতি ১ বছর পর পর পাউডার রিফিল করাতে হবে। কিন্তু যদি কোন কারণে নাইট্রোজেন গ্যাসের চাপ কমে যায় তবে এক বছরের পূর্বেই রিফিল করাতে হবে।

রিফিল করানোর নিয়ম ঃ

পরিবেশ নিয়ন্ত্রন দলের প্রত্যেক সদস্য/সদস্যাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, বর্জ্য নিষ্কাশন সহ পরিবেশ নিয়ন্ত্রন সংক্রান্ত অন্যন্য বিষয়ের উপর পর্যাপ্ত প্রশিক্ষন প্রদান করবেন। প্রথমে লিভারে চাপ দিয়ে (সকল পাউডার বের করে) অগ্নি যন্ত্রটি খালি করে ফেলুন। এবার খালি অবস্থায় যন্ত্রটির ওজন নিন। ধরা যাক এর ওজন ১৫ কেজি। এবার ৫ কেজি পাউডার পূর্ণ করলে এর ওজন হবে ২০ কেজি। এভাবে যদি কয়েকটি যন্ত্র রিফিল করানো হয়, তাহলে পাউডার সঠিক দিয়েছে কি না তা জানার জন্য আগুন জ্বালিয়ে যে কোন একটি যন্ত্র ব্যবহার করলে যদি আগুন নিভে যায়, তাহলে বুঝতে হবে সঠিক মানের পাউডার দেয়া হয়েছে।

কার্টিজ টাইপ ঃ

কারখানায় কর্মরত পর্যাপ্ত সংখ্যক পুরুষ ও মহিলা শ্রমিক-কর্মচারীদের সমন্বয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রন দল গঠন করবেন। এ অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের গঠন ও প্রেসার টাইপের মতো। তবে এ যন্ত্রে পাউডার বের করার জন্য নাইট্রোজেনের পরিবর্তে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের একটি কার্টিজ থাকে। এতে লিভারের পরিবর্তে ট্রিগার থাকে। ব্যবহারের সময় ট্রিগারে চাপ দিলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের কার্টিজটি ছিদ্র হয়ে যায় এবং গ্যাস বের হয়ে সকল পাউডার এক সাথে বের করে দেয়। ব্যবহার পদ্ধতি, রক্ষনাবেক্ষণ, কার্যকারিতা সবই প্রেসার টাইপের মতো।


Posted

in

by

Comments

2 responses to “ষ্টোরড প্রেসার টাইপ ও কার্টিজ টাইপ বর্ণনা সমুহ কি কি?”

Leave a Reply