Select Page
ষ্টোরড প্রেসার টাইপ ও কার্টিজ টাইপ বর্ণনা সমুহ কি কি?

ষ্টোরড প্রেসার টাইপ ও কার্টিজ টাইপ বর্ণনা সমুহ কি কি?

ষ্টোরড প্রেসার টাইপ

বাহ্যিক গঠন ঃ এটি একটি লোহার সিলিন্ডার যার ভিতর পাউডার থাকে। যন্ত্রটির মাথায় একটি হাতল, একটি লিভার, একটি ডেলিভারী হোজ পাইপ এবং হোজ পাইপের মাথায় নজেল থাকে। পাউডার বের করার জন্য যন্ত্রের মধ্যে ব্যবহৃত নাইট্রোজেন গ্যাসের চাপ ঠিক আছে কি না, তা দেখার জন্য একটি ছোট মিটার থাকে। এছাড়া হাতল এবং লিভারের মাঝখানে একটি সেফটি পিন থাকে যাতে বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময় লিভারে চাপ পড়ে পাউডার বের হয়ে না যায়। যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়েছে কি না তা নির্দেশ করার জন্য সেফটি পিনের মাথায় একটি সীল থাকে। …

ভিতরের গঠন ঃ সিলিন্ডারের ভিতেরর ৩/৪ অংশে পাউডার থাকে এবং এক ভাগ খালি যায়গা থাকে। সিলিন্ডারের ভিতর থেকে পাউডার বের হওয়ার জন্য একটি ডিসচার্জ পাইপ) থাকে। এছাড়াও পাউডার বের করার জন্য নাইট্রোজেন গ্যাসের একটি ছোট সিলিন্ডার থাকে।

অগ্নি নির্বাপনী রাসায়নিক উপাদান ঃ মেডিক্যাল রেজিস্টার একটি সহযোগী মাধ্যম যা থেকে দুর্ঘটনার কারন ও উৎস জানা সম্ভব। নিম্নে মেডিকেল রেজিষ্টার ব্যবহারের অতীব গুরুত্বপূর্ন কিছু পরামর্শ প্রদান করা হলো  এ অগ্নি নির্বাপনী যন্ত্রে অগ্নি নির্বাপনী উপাদান হিসেবে মনো এ্যামোনিয়াম ফসফেট বা এ্যামোনিয়াম সালফেট থাকে। অনেক সময় এ যন্ত্রে সোডিয়াম বা পটাশিয়াম বাইকার্বনেটের সাথে ২০% এ্যামোনিয়াম ফসফেট বা সালফেট মিশ্রিত অবস্থায় থাকে।

কোন্ কোন্ আগুনে ব্যবহার করা হয় ঃ এবিসি ড্রাইকেমিক্যাল পাউডার যে কোন ধরণের আগুন (কঠিন, তরল ও গ্যাস) নির্বাপনে ব্যবহার করা হয়। তাই এটিকে মাল্টি পারপাজ ফায়ার এক্সটিংগুইশার (বলা হয়। তবে এটি সলিড ফায়ার বা কঠিন পদার্থের আগুনে সবচেয়ে বেশী কার্যকরী।

ব্যবহার পদ্ধতি ঃ প্রথমে দেয়াল থেকে যন্ত্রটি নামিয়ে আনুন। এরপরে কয়েকবার ঝাকিয়ে নিন। এবার হাতল ও লিভারের মাঝখানের সেফটি পিনের মাথার সীলটি খুলুন এবং সেফটি পিনটি টান দিয়ে বের করুন। এবার ডান হাত দিয়ে যন্ত্রটি বহন করে নিয়ে আগুনের যতটুকু সম্ভব কাছে যান। এবার বাতাসের অনুকুলে গিয়ে বাম হাত দিয়ে হোজ পাইপের মাথার নজেল ধরে আগুনের দিকে তাক করান। এবার লিভারে চাপ দিন এবং আগুন নিভানো শেষ না হওয়া পর্যন্ত নজেলটি পাশাপাশি নাড়াতে থাকুন।

সাবধানতা ঃ যেহেতু যে কোন ধরণের কেমিক্যালই শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তাই পাউডার যাতে নাকে মুখে না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখুন। যদি কোনক্রমে নাকে মুখে বা চোখে লাগে তবে তাৎক্ষনিকভাবে মুখমন্ডল ও চোখ ধুয়ে নিন এবং খোলা বাতাসে শুয়ে রেখে মাথায় পানি ঢালতে থাকুন। অবস্থা খারাপ হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়া পাউডার ব্যবহার করার ফলে মেশিনারিজ ক্ষতি হতে পারে।

পরিদর্শন ও রক্ষনাবেক্ষণ ঃ

পরিদর্শন ঃ অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রটি কাজের উপযোগি আছে কি না তা জানার জন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তি প্রতি মাসে অন্ততঃ একবার যন্ত্রটি পরিদর্শন করবেন। বিশেষকরে নাইট্রোজেন গ্যাসের চাপ ঠিক আছে কিনা সে জন্য মিটার দেখা (অবশ্যই মিটারটি সবুজ দাগের মধ্যে থাকবে), ডেলিভারী হোজপাইপ কোথাও ছিদ্র আছে কিনা ইত্যাদি পরিদর্শন করে পরিদর্শনকার্ডে স্বাক্ষর করতে হবে এবং পরিদর্শনের তারিখ উল্লেখ করতে হবে।

রক্ষণাবেক্ষণ ঃ অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রটি যাতে দূর্ঘটনার সময় সহজে ব্যবহার করা যায় সেজন্য দর্শনীয় জায়গায় বাঁধামুক্ত অবস্থায় (কোন কিছু দিয়ে ঢেকে রাখা যাবে না) রাখুন। যে কেহ যাতে যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পারে সে জন্য অতি উচ্চতায় না ঝুলিয়ে হাতের কনুই বরাবর উচ্চতায় (ফ্লোর থেকে ৪৮ ইঞ্চি ) ঝুলাতে হবে। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের পাউডারের কার্যকারিতা ১ বছর পর শেষ হয়ে যায়। সুতরাং প্রতি ১ বছর পর পর পাউডার রিফিল করাতে হবে। কিন্তু যদি কোন কারণে নাইট্রোজেন গ্যাসের চাপ কমে যায় তবে এক বছরের পূর্বেই রিফিল করাতে হবে।

রিফিল করানোর নিয়ম ঃ

পরিবেশ নিয়ন্ত্রন দলের প্রত্যেক সদস্য/সদস্যাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, বর্জ্য নিষ্কাশন সহ পরিবেশ নিয়ন্ত্রন সংক্রান্ত অন্যন্য বিষয়ের উপর পর্যাপ্ত প্রশিক্ষন প্রদান করবেন। প্রথমে লিভারে চাপ দিয়ে (সকল পাউডার বের করে) অগ্নি যন্ত্রটি খালি করে ফেলুন। এবার খালি অবস্থায় যন্ত্রটির ওজন নিন। ধরা যাক এর ওজন ১৫ কেজি। এবার ৫ কেজি পাউডার পূর্ণ করলে এর ওজন হবে ২০ কেজি। এভাবে যদি কয়েকটি যন্ত্র রিফিল করানো হয়, তাহলে পাউডার সঠিক দিয়েছে কি না তা জানার জন্য আগুন জ্বালিয়ে যে কোন একটি যন্ত্র ব্যবহার করলে যদি আগুন নিভে যায়, তাহলে বুঝতে হবে সঠিক মানের পাউডার দেয়া হয়েছে।

কার্টিজ টাইপ ঃ

কারখানায় কর্মরত পর্যাপ্ত সংখ্যক পুরুষ ও মহিলা শ্রমিক-কর্মচারীদের সমন্বয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রন দল গঠন করবেন। এ অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের গঠন ও প্রেসার টাইপের মতো। তবে এ যন্ত্রে পাউডার বের করার জন্য নাইট্রোজেনের পরিবর্তে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের একটি কার্টিজ থাকে। এতে লিভারের পরিবর্তে ট্রিগার থাকে। ব্যবহারের সময় ট্রিগারে চাপ দিলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের কার্টিজটি ছিদ্র হয়ে যায় এবং গ্যাস বের হয়ে সকল পাউডার এক সাথে বের করে দেয়। ব্যবহার পদ্ধতি, রক্ষনাবেক্ষণ, কার্যকারিতা সবই প্রেসার টাইপের মতো।

কার্বন-ডাই-অক্সাইড বা সিওটু CO2 টাইপ এর সহজ বর্ণনা

কার্বন-ডাই-অক্সাইড বা সিওটু CO2 টাইপ এর সহজ বর্ণনা

কার্বন-ডাই-অক্সাইড বা সিওটু টাইপ

কার্বন-ডাই-অক্সাইড বা সিওটু CO2 টাইপ সঠিক দিক নির্দেশনার মাধ্যমে কারখানা এলাকার পরিবেশ নিরাপদ, পরিষ্কারক পরিচ্ছন্ন ও ঝুকিমূক্ত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। এটিও একটি রাসায়নিক অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র। এতে পাউডারের পরিবর্তে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস থাকে। নিরাপদ কর্মপরিবেশ বজায় রাখার পাশাপাশি কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে পরিবেশ নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থাপনার উপর সচেতনতা সৃষ্টি করবেন। এ পাঠ সমাপনান্তে আপনি নিম্নোক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে সমর্থ হবেন …

১। কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের বৈশিষ্ট্য।

২। কার্বন ডাই অক্সাইড (সিওটু) অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের গঠন।

৩। কার্বন ডাই অক্সাইড যন্ত্রের অপারেশন কার্যক্রম ও স্থায়ীত্ব।

৪। কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস ব্যবহারে সুবিধা এবং অসুবিধা সমুহ ।

৫। কার্বন ডাই অক্সাইড অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের পরীক্ষা এবং রক্ষণাবেক্ষণ ।

কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের বৈশিষ্ট্যঃ

ক. সিওটু রংহীন , বর্ণহীন, গন্ধহীন পরিস্কার গ্যাস।

খ. সিওটু নিজে জ্বলে না এবং অপরকে জ্বলতে সাহায্য   করে না ।

গ. ইহা বিদ্যুৎ কুপরিবাহী ।

ঘ. সিওটু গ্যাস উদ্বায়ী  ।

ঙ. এক কেজি সিওটু তরল হাফ কিউবিক মিটারযুক্ত     গ্যাস তৈরী করতে পারে ।

চ. ইহার ডেনজারাস কনসেনট্রেশন ৯% -১০%।

বহ্যিক গঠন ঃ সিওটু অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ম্যাঙ্গানিজ স্টীলের তৈরী । এ সিলিন্ডার সীমলেস সিলিন্ডার  । সিওটু গ্যাস সিলিন্ডার প্রতিবর্গ ইঞ্চিতে ৩৩৭৫ পাঃ প্রেসারে পরিক্ষীত। সিলিন্ডার বহন করার জন্য একটি ক্যারিং হান্ডেল আছে। সিওটু সিলিন্ডারে একটি অপারেটিং লিভার (কোনটিতে অপারেটিং হুইল থাকে), সেফটি পিন, ফ্লো কান্ট্রোল ভাল্ব , হাইটেনশন ডিসচার্জ পাইপ এবং গ্যাস বের হবার হর্ণ আছে।। এটি অতি ভারী ষ্টিল দিয়ে তৈরী একটি সিলিন্ডার। যন্ত্রটির মাথায় একটি হাতল, একটি লিভার বা ট্রিগার, একটি ডেলিভারী হোজ পাইপ এবং হোজ পাইপের মাথায় হর্ণ থাকে। এ হর্ণটি গ্যাস ছড়িয়ে দেয় এবং হাতকে অতিরিক্ত ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে। এছাড়া হাতল এবং লিভারের মাঝখানে একটি সেফটি পিন থাকে যাতে বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময় লিভারে চাপ পড়ে পাউডার বের হয়ে না যায়। যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়েছে কি না তা নির্দেশ করার জন্য সেফটি পিনের মাথায় একটি সীল থাকে। কখনও কখনও গ্যাস বের করার জন্য মাথায় একটি হুইল থাকে।

ভিতরের গঠন ঃ যন্ত্রটির ভিতরে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস থাকে, যা নির্দিষ্ট তাপ ও চাপে তরল করা থাকে। অতিরিক্ত চাপে যাতে যন্ত্রটি ফেটে না যায় বা বিস্ফোরণ না ঘটে সেজন্য যন্ত্রটি খুব শক্ত ষ্টিল দিয়ে তৈরী করা হয়। গ্যাস বের করার জন্য ভিতরে একটি ডিসচার্জ পাইপ থাকে। লিভার চাপ দিলে  গ্যাস নিজের চাপেই বের হয়ে যায়।

কোন্ কোন্ আগুনে ব্যবহার করা হয় ঃ কার্বন-ডাই-অক্সাইড বা সিওটু সকল আগুন নির্বাপনের কাজেই ব্যবহার করা হয়। তবে সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে বিদ্যুৎ ও তেলের আগুনে ব্যবহার করা। এ যন্ত্রটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কার্বন-ডাই-অক্সাইড একটি শীতল ও কুয়াশার মত গ্যাস যা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং কাপড়-চোপড়ের কোন ক্ষতি করে না। ফলে এটি ব্যবহার করার পর পরিস্কার করার প্রয়োজন হয় না। এ যন্ত্রটির বিশেষ দুর্বলতা হচ্ছে এটি আগুনের শিখা নির্বাপন করে। আগুনের মূলে পৌছে ভিত্তি নির্বাপন করতে পারে না। ফলে আগুন আবার পুনরায় প্রজ্জ্বলিত (হতে পারে। সেজন্য সলিড ফায়ার বা এ ক্লাস আগুন নির্বাপনে এটি তেমন কার্যকরী নয়।

ব্যবহার পদ্ধতি ঃ সিওটু গ্যাস ৭৩ বার চাপে এবং ৩১ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড  তাপমাত্রায় তরলায়িত করে   সিলিন্ডারে প্রবিষ্ট করানো থাকে। সিলিন্ডারের ২/৩ ভাগ তরল এবং ১/৩ ভাগ গ্যাস দ্বারা পুর্ণ থাকে। অগ্নিকান্ডের সময় ব্রাকেটমুক্ত করে সিলিন্ডারের হর্ণটি আগুনের দিকে তাক করে সেফটি পিন ছিড়ে অপারেটিং ডিভাইসে চাপ দিলে প্রচন্ড আওয়াজে সিওটু তরল আকারে বের হবে এবং উহা  ডিসচার্জ হর্ণে বাতাসের সংস্পর্শে এসে গ্যাসীয় আকার ধারণ করে,  আগুনে বিস্তৃত হয়ে ঠান্ডা অবস্থা ও তুষার আবরণ সৃষ্টি করে আগুন নিভাবে।  এখানে- ৭৯ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার সৃষ্টি হয়।প্রথমে দেয়াল থেকে যন্ত্রটি নামিয়ে আনুন। এরপরে কয়েকবার ঝাকিয়ে নিন। এবার হাতল ও লিভারের মাঝখানের সেফটি পিনের মাথার সীলটি খুলুন এবং সেফটি পিনটি টান দিয়ে বের করুন। এবার ডান হাত দিয়ে যন্ত্রটি বহন করে নিয়ে আগুনের যতটুকু সম্ভব কাছে যান। এবার বাতাসের অনুকুলে গিয়ে বাম হাত দিয়ে হর্ণের হাতল ধরে আগুনের দিকে তাক করান। এবার লিভারে চাপ দিন এবং আগুন নিভানো শেষ না হওয়া পর্যন্ত হর্ণটি পাশাপাশি নাড়াতে (থাকুন।

সাবধানতা ঃ কমিটি সঠিক বর্জ্য নিষ্কাশন পদ্ধতি নিশ্চিত করে কারখানার অভ্যন্তরে ও চারপাশে পরিবেশ সহায়ক অবস্থা বজায় রাখতে সাহায্য করবেন। যেহেতু কার্বন-ডাই-অক্সাইড অত্যন্ত ঠান্ডা গ্যাস, তাই উহা যাতে নাকে মুখে না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখুন। যদি কোনক্রমে নাকে মুখে বা চোখে লাগে তবে তাৎক্ষনিকভাবে মুখমন্ডল ও চোখ ধুয়ে নিন। এটি বদ্ধ কক্ষে ব্যবহার করা হলে বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমান বেড়ে যাবে। ফলে শ্বাসকষ্ট হবে। বাতাসে ৫-৯% এর উপর কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা হলে মানুষের শ্বাস কষ্ট হয়। তাই এটি ব্যবহার করার পর সকল দরজা জানালা খুলে দিতে হবে

সিলিন্ডারে ওজন                    স্থায়ীত্ব                 সুটিং রেঞ্জ

৬.৮ কেজি                        ২৬ সেকেন্ড               ৩ মিটার

৩ কেজি                           ১৫ সেকেন্ড          ১.৫০ মিটার

৪।  সিওটু গ্যাস ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ

ক। সুবিধা

(১) সিওটু গ্যাস নন টক্সিক।

(২) ধাতব পদার্থ ব্যতীত অধিকাংশ পদার্থে প্রতিক্রিয়া করে না।

(৩) ইহা নিজস্ব চাপে সিলিন্ডার থেকে বের হয় ।

(৪) ইহা স্পর্শকাতর বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ক্ষতি করে না।

(৫) ইহা দাহ্য বস্তুর উপর কোন প্রভাব ফেলে না ।

খ। অসুবিধা সমুহঃ

(১) সিওটু গ্যাসের স্থায়ীত্ব কম । সুতরাং অল্প সময়ে পূর্ণ সুযোগ গ্রহণ করতে হবে।

(২)এ গ্যাসে বের হবার সময় নি¤œ তাপমাত্রায় Ñ৭৯ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড ¯েœা ফ্লেগ তৈরী করে,  ইহার সংস্পর্শে কুলবার্ন হতে পারে।

(৩)কনফাইন স্পেসে ইহা দৃষ্টি শক্তি সীমিত করে

(৪) বাতাসে ইহার ঘনত্ব ৯ % হলে শ্বাসকষ্ট হবে। খোলা জায়গায় সিওটুর কার্যকারিতা কম। এ ক্ষেত্রে পূনরায় আগুন লাগতে পারে।

৫। সিওটু যন্ত্রের পরীক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণ

ক। সিওটু গ্যাস দীর্ঘদিন (প্রায় ৫ বছর) রাখা যায়। তবে পিরিয়ডিকালীন পরীক্ষান্তে সমগ্র ওজনের ১০% কম হলে উহা পুনঃ ভর্তি করতে হবে।

খ। গ্যাস সিলিন্ডার যাতে মরিচা না ধরে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

গ। হর্ণ এবং ফ্লেক্সিবেল হোজ ক্ষতিগ্র¯ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

তাপ থেকে দুরে রাখতে হবে।

আগুন নিভানোর শর্ত সমূহ কি কি? আগুন লাগলে করনীয় কি?

আগুন নিভানোর শর্ত সমূহ কি কি? আগুন লাগলে করনীয় কি?

আগুন নিভানোর শর্ত সমূহ

আগুন নিভানোর শর্ত সমূহঃ বিদ্যুৎ, কেমিক্যাল এবং তেলের আগুন নির্বাপনে কোন ক্রমেই পানি ব্যবহার করা উচিৎ নয়। কারণ পানি বিদ্যুৎ পরিবাহী তাই নির্বাপনকারী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে পারেন। কেমিক্যলের আগুনে পানি দিলে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। তেল পানির চেয়ে হাল্কা। তাই তেলের আগুনে পানি দিলে আগুন না নিভে বরং ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ সকল আগুন নির্বাপনের সর্বোত্তম মাধ্যম হচ্ছে সিওটু, ফোম, ব্্েরামাইড ইত্যাদি। আমরা আগেই জেনেছি যে, আমরা শুধুমাত্র আগুনের প্রাথমিক অবস্থায়ই উহা নির্বাপনের চেষ্টা করব। আগুন নির্বাপনের কৌশল জানা না থাকলে এবং আগুনের বৈশিষ্ট্য জানা না থাকলে নির্বাপনকারী নিজেই দূর্ঘটনায় পতিত হতে পারেন। সুতরাং আগুন নির্বাপনের পূর্বে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিশ্চিত হতে হবে – …

  • স্বাস্থ্যকর খাবার পানি সরবরাহ, বাতাস প্রবাহ ব্যবস্থা এবং কারখানার অভ্যন্তরের সঠিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।আগুন ছোট এবং খুব দ্রুত বিস্তার করছে না। মনে রাখতে হবে আগুন প্রতি ২/৩ মিনিটে দ্বিগুন বা তিনগুন হতে পারে।
  • আপনি যে আগুন নির্বাপন করবেন তার জন্য প্রয়োজনীয় এবং উপযুক্ত অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র আছে। ভুল অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র বা মাধ্যম আপনার বিপদের কারণ হতে পারে।
  • আগুন যেন আপনার বের হবার পথ বন্ধ না করে দেয়, অর্থাৎ আগুন নেভানোর সময় বের হবার পথ নিশ্চিত থাকতে হবে।
  • অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র বা মাধ্যম কার্যকরী থাকতে হবে। এ জন্য অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র এবং অন্যান্য অগ্নি নির্বাপনী ব্যবস্থাসমূহ নিয়মিত পরিদর্শন করতে হবে।
  • আগে থেকেই অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের ব্যবহার জানতে হবে। কারণ যখন আগুন লাগে তখন অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের নির্দেশনা পড়ার সময় পাওয়া যাবে না। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র সব সময় আগুনের ভিত্তিতে ব্যবহার করতে হবে।
  • শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও পরিচ্ছন্ন টয়লেট সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন।যে কোন ধরণের আগুন জ্বললেই কিছু কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়, যা মানুষের জন্য ক্ষতিকর। উল, সিল্ক, নাইলন এবং কিছু প্লাষ্টিক এর আগুনে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, হাইড্রোজেন সায়ানাইড, হাইড্রোজেন ক্লোরাইড জাতীয় বিষাক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয়। সুতরাং এ সকল আগুন নিভানোর সময় অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে এবং উপযুক্ত মাস্ক এবং ব্রিদিং এ্যাপারেটাস পড়ে নিতে হবে।

আগুন লাগলে করনীয়ঃ

ক)আগুন লেগেছে নিশ্চিত হয়ে অগ্নি ঘন্টা বাজাতে হবে (যদি সম্ভব হয় প্রাথমিক ভাবে নিজেই আগুন নিভাতে হবে)। খ)ফায়ার ফাইটারদের খবর দিতে  হবে। গ)জরুরী বিভাগকে খবর দিতে হবে। যেমন-ফায়ার ব্রিগেট,বিদ্যু অফিস ,গ্যাস অফিস, থানা এবং হাসপাতাল। ঘ)সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে সবাইকে আগুন সম্পর্কে অবগত করতে হবে। ঙ)অগ্নি কান্ডের অবস্থান বুঝে ফ্যাক্টরী থেকে সমস্ত লোক নিরাপদে সরিয়ে নিতে হবে।
অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের নামের তালিকা।
 অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র এ,বি,সি পাউডার। কার্বন ডাই অক্সাইড-গ্যাস ওয়াটার হোজ স্মোক ডিটেক্টর ফায়ার ব্লাঙ্কেট গ্যাস মাস্ক স্যান্ড বাকেট ফায়ার রোপ ফায়ার বিটার লক কাটার ফায়ার হুক হাত মোজা অগ্নি ঘন্টা

পরিদর্শন ও রক্ষনাবেক্ষণ ঃ

পরিদর্শন ঃ অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রটি কাজের উপযোগি আছে কি না তা জানার জন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তি প্রতি মাসে অন্ততঃ একবার যন্ত্রটি পরিদর্শন করবেন। বিশেষকরে ডেলিভারী হোজপাইপ কোথাও ছিদ্র আছে কিনা বা মরিচা ধরেছে কি না ইত্যাদি পরিদর্শন করে পরিদর্শনকার্ডে স্বাক্ষর করতে হবে এবং পরিদর্শনের তারিখ উল্লেখ করতে হবে।

রক্ষণাবেক্ষণ ঃ অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রটি যাতে দূর্ঘটনার সময় সহজে ব্যবহার করা যায় সেজন্য দর্শনীয় জায়গায় বাঁধামুক্ত অবস্থায় (কোন কিছু দিয়ে ঢেকে রাখা যাবে না) রাখুন। যে কেহ যাতে যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পারে সে জন্য অতি উচ্চতায় না ঝুলিয়ে হাতের কনুই বরাবর উচ্চতায় (ফ্লোর থেকে ৪৮ ইঞ্চি ) ঝুলাতে হবে। যেহেতু এটি বিদ্যুৎ এবং তেলের আগুনের জন্য বেশী কার্যকরী সেহেতু বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ বোর্য, ডিষ্ট্রিবিউশন বোর্ড, জাংশন বোর্ড, জেনারেটর রূম ইত্যাদিও কাছে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। যেহেতু সিওটু একটি গ্যাস সুতরাং নতুন ক্রয়ের পর ব্যবহার না করলে ৫-১০ বছরের মধ্যে রিফিল করানোর প্রয়োজন হয় না। তবে যন্ত্রটি বছওে অন্ততঃ একবার ওজন দিতে হয়। যদি দেখা যায় যন্ত্রটির মোট ওজনের ১০% গজন কমে গিয়েছে তবে যে কোন সময় রিফিল করা প্রয়োজন। ।

রিফিল করানোর নিয়ম ঃ প্রথমে লিভারে চাপ দিয়ে (সকল গ্যাস বের করে) অগ্নি যন্ত্রটি খালি করে ফেলুন। এবার খালি অবস্থায় যন্ত্রটির ওজন নিন। ধরা যাক এর ওজন ১৫ কেজি। এবার ৫ কেজি গ্যাস পূর্ণ করলে এর ওজন হবে ২০ কেজি। এভাবে যদি কয়েকটি যন্ত্র রিফিল করানো হয়, তাহলে গ্যাস সঠিক দিয়েছে কি না তা জানার জন্য আগুন জ্বালিয়ে যে কোন একটি যন্ত্র ব্যবহার করলে যদি আগুন নিভে যায়, তাহলে বুঝতে হবে সঠিক মানের গ্যাস দেয়া হয়েছে।

ষ্টোরড প্রেসার টাইপ ও কার্টিজ টাইপ বর্ণনা সমুহ কি কি?

পোশাক শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত বিভিন্ন অগ্নি নির্বাপনী ব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

অগ্নি নির্বাপনী ব্যবস্থার

অগ্নিকান্ডের ক্ষতি ভয়াবহ ও অপূরণীয়। জান মালের হেফাজত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। অগ্নিকান্ড থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হলে অবশ্যই তা প্রতিরোধ করতে হবে। আল্লাহ্ না করেন যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটেই যায় তাহলে আমাদের সকলকে সম্মিলিতভাবে সাহসের সঙ্গে তা নির্বাপন বা মোকাবেলা করতে হবে। দায়িত্ব ও কর্তব্য আয়েশা ক্লোথিং কোং লিঃ বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানীমুখি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান। সঠিক সময়ে পোশাক জাহাজীকরণ ও উন্নত মানসম্পন্ন পোশাক রপ্তানী করায়  বাজারে ইহার অবস্থান উল্লেখযোগ্য। এই অভূতপূর্ব সাফল্য বজায় রাখতে সঠিক সময়ে উৎপাদনের বিকল্প নাই। আর এই সঠিক সময়ে উৎপাদনের জন্য চাই নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। ফলে মেইনটেন্যান্স কো-অর্ডিনেটর হিসাবে তার প্রধানতম দায়িত্বই হল কারখানার প্রয়োজনে সর্বদা বিদ্যুৎ সরবরাহের নিশ্চয়তা বিধান করা। রাসায়নিক অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র (ডিসিপি, সিওটু ও ফোম টাইপ) ঃ কাপড়, বিদ্যুৎ ও তেলের আগুন নির্বাপনের জন্য এ অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র সমূহ ব্যবহার করা হয়।  …  .

ফায়ার পয়েন্ট ঃ কারখানার প্রতি সিঁড়ির কাছে একটি লোহার ষ্ট্যান্ডে তিনটি বা চারটি খালি বালতি ঝুলিয়ে রাখা হয় এবং এর পাশে একটি পানি ভর্তি প্লাষ্টিকের ড্রাম (কমপক্ষে ৪৫ গ্যালন পানি ধারণ ক্ষতা সম্পন্ন) রাখা হয়। শুরুতেই আগুন নির্বাপনের জন্য ব্যবহার করা হয়।

ফায়ার হোজরীল ঃ এটি পানি দিয়ে আগুন নির্বাপনের একটি ব্যবস্থা। কারখানা ভবনের ছাদে ওভারহেড ট্যাংক থাকে। এ ট্যাঙ্ক থেকে ২ইঞ্চি ডায়া একটি পাইপ ফ্লোরে এটে দয়া হয়। উক্ত পাইপের সাথে একটি ফিমেল কপলিন লাগানো থাকে। একটি হোজ পাইপ উক্ত কপলিনের সাথে লাগিয়ে দেয়া হয় যার মাথায় একটি নজেল থাকে। আগুন লাগলে পানির লাইনের চাবি খুলে দিলে আগুনের দুরে দাড়িয়ে এর সাহোয্যে আগুন নির্বাপন করা যায়।

ফায়ার এ্যালার্ম বা ঘন্টা ঃ এটি দুধরনের হয়। একটি ইলেকট্রনিক এবং অপরটি ম্যানুয়াল। কারখানায় আগুন লাগলে সকলকে সতর্ক করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।

ইমার্জেন্সী লাইট বা জরুরী বতি ঃ এটি একটি স্বয়ংক্রিয় লাইট বা বাতি যা আইপিএস বা ব্যাটারীর সাথে সংযুক্ত থাকে। এছাড়া চার্জার লাইটও ও জরুরী বাতি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কারখানার ফ্লোরে এবং সিঁিড়তে এ লাইট স্থাপন করতে হয়। অগ্নি দূর্ঘটনার সময় সাধারণতঃ বিদ্যুৎ থাকে না। তখন জরুরী ভিত্তিতে (বিশেষ করে রাতের বেলায়) কারখানা থেকে বের হওয়ার জন্য এ জরুরী বাতি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

স্মোক ডিটেক্টর ঃ এটি ধোঁয়া নির্দেশক একটি স্বয়ংক্রিয় ছোট যন্ত্র। সাধারণতঃ বন্ডেড ওয়্যার হাউজ বা ষ্টোর রূম এবং যেখানে লোক চলাচল কম সেখানে স্থাপন করা হয়। অগ্নি দূর্ঘটনার সময় ধোঁয়া উৎপন্ন হওয়ার সাথে সাথে এ যন্ত্রটি সংকেত দিতে থাকে।

পি.এ. সিষ্টেম ঃ এটি একটি যন্ত্র যার সাহায্যে একটি নির্দিষ্ট স্থানে বসে সকল ফ্লোরের লোকে সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব। এমনকি শুধু একটি নির্দিষ্ট ফ্লোরের লোকর সাথেও কথা বলা সম্ভব। দূর্ঘটনার সময় সকলকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নিদের্শ প্রদানের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।

লক কাটার ঃ এটি তালা কাটা বা লোহার গ্রিল কাটার জন্য ব্যবহার করা হয়। কোন কক্ষের চাবি পাওয়া না গেলে বা দূর্ঘটনার সময় কেহ কোন কক্ষে আটকা পড়লে গ্রিল কেটে তাকে উদ্ধার করার কাজে এটি ব্যবহার করা হয়।

ফায়ার হুক ঃ এটি একটি লম্বা লোহার দন্ড যার মাথায় একটি হুক বা আংটা থাকে এবং এর মাথাটি সুচালো থাকে।  দাহ্যবস্তু সরিয়ে  আগুন নিভানোর কাজে এটি ব্যবহার করা হয়।

ম্যানিলা রোপ ঃ একটি এক ধরণের শক্ত দড়ি বা রশি। অগ্নি দূর্ঘটনায় কেহ ভবনের মধ্যে আটকা পড়লে তাকে উদ্ধারের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।

ফেস মাস্ক বা মুখোস ঃ আগুন নির্বাপনের সময় ধোঁয়া ও বিষাক্ত গ্যাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এটি মুখে পড়ে নিতে হয়।

হ্যান্ড গ্লোভস ঃ এটি বিশেষ ধরণের (অগ্নি প্রতিরোধক) মোজা। আগুন নির্বাপনের পূর্বে হাতে পড়ে নিতে হয়।

ফায়ার ব্লাঙ্কেটবা কম্বল ঃ এটি অগ্নি প্রতিরোধক একটি বিশেষ ধরণের কম্বল। চাপা দিয়ে অথবা এটি পরিধান করে আগুন নিভানোর কাজে এবং অগ্নি দগ্ধ ব্যক্তিকে বহন করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।

টর্চ লাইট ঃ অন্ধকারে জরুরী কাজ করার জন্য এবং জরুরী নির্গমন কাজে এটি ব্যবহার করা হয়।

প্রয়োজনীয় উপকরণ সহ ফার্ষ্ট এইড বক্স ঃ কারখানার কোন শ্রমিক আহত হলে তার প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।

ফ্লোরের ভিতর আটকা পড়লে কি করবেন  –

(ক) মাথা ঠান্ডা রাখুন, ধৈর্য্য হারাবেন না।

(খ) যদি সিড়িতে ধুয়া বা আগুনের তেজ না থাকে তবে সিড়ি দিয়ে বের হয়ে যেতে চেষ্টা করুন।

(গ) যদি বের হওয়া সম্ভব না হয় তবে এমন স্থানে অবস্থান করুন, যেখানে আগুনের পরিমান কম।

(ঘ) সম্ভব হলে বহির্গমন পথের নিকট অথবা জানালার নিকট অবস্থান করুন, যাতে সহজে আপনাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।

(ঙ) যেখানেই অবস্থান করুন চেষ্টা করুন বাহিরের কাহারো দৃষ্টি আকর্ষন করতে।

(চ) যদি ফ্লোরে ধুয়ার সৃষ্টি হয় তবে সব জানালা খুলে দিন এবং ফ্লোরের মেঝেতে শুয়ে পড়–ন।

(ছ) যদি রুমের মধ্যে একা আটকা পড়েন তবে দরজা ভালভাবে আটকিয়ে দরজার নিচে কাপড় দিয়ে দিন যাতে ধুয়া ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে এবং জানালার নিকট অবস্থান করুন ও সাহায্য চান।

(জ) ভুলেও জানালা দিয়ে বা ছাদ থেকে লাফ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। এতে আপনি আহত হতে পারেন।

আগুন নিভানোর শর্ত সমূহ কি কি? আগুন লাগলে করনীয় কি?

আগুন লাগলে নির্গমন পরিকল্পনা ও নির্গমন নীতি বর্ণনা

নির্গমন পরিকল্পনা ও নির্গমন নীতি

আগুন লাগলে নির্গমন পরিকল্পনা ও নির্গমন নীতি. যদি কোন ফ্লোরে আগুন লাগে তাহলে আগুন লাগার সাথে সাথে সকলকে সতর্কীকরনের নিমিত্তে   হুটার/সাইরেন/কলিং বেল বাজিয়ে সতর্ক করতে হবে।  যে কোন দূর্ঘটনার সময় সুন্দরভাবে কারখানা থেকে নেমে যাওয়ার জন্য একটি নির্গমন পরিকল্পনা ও নীতি থাকা প্রয়োজন । অন্যথায় বড় ধরণের অঘটন ঘটতে পারে। আমরা জানি, আগুন ও ধোঁয়া সব সময় উপরের দিকে যায়। সিঁিড়তে কোন প্রকার মালামাল না রাখা হলে আগুন নীচের দিকে নামার সম্ভাবনা খুবই কম। ধরা যাক, ১০ তলা একটি ভবনের ৭ম তলায় আগুন লেগেছে। এ ক্ষেত্রে নীচ তলা থেকে ৬ষ্ঠ তলা পর্যন্ত সকল শ্রমিক/কর্মচারী কমপক্ষে ২০-৩০ মিনিট পর্যন্ত নিরাপদ। সুতরাং তাদেরকে তাড়াহুড়ো করে সিঁিড় দিয়ে নীচে নামার কোন প্রয়োজন নেই। সবচেয়ে বেশী বিপদে আছে যে তলায় আগুন লেগেছে সেই তলার লোক এবং তার উপরের তলার লোক। সুতরাং যে ফ্লোরে আগুন লেগেছে সে তলার লোক সবার আগে নামবে এর পরে উপর তলার লোক। উপরের সকল লোক নামা শেষ হলে যে ফ্লোরে আগুন লেগেছে ঠিক তার নীচ তলার লোক এবং এর পরের ফ্লোরের লোক, এভাবে সকল লোক আস্তে আস্তে নেমে যাবে। কেহ যদি ধোঁয়ায় আটকা পড়েন, তাহলে নাকে রুমাল চেঁেপ ধরে হামাগুড়ি দিয়ে প্রবেশ পথ দেখে নিন (ধোঁয়া সব সময় হাটুর উপরে থাকে) এবং দাড়িয়ে আস্তে আস্তে হেটে বের হয়ে যান। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, অগ্নি দূর্ঘটনার সময় কোন ক্রমেই লিফট ব্যবহার করা যাবে না। যদি আপনার গায়ে আগুন ধরে যায় তাহলে দৌড়া-দৌড়ি না করে মাটিতে শুয়ে পড়ে গড়াগড়ি করুন, আগুন নিভে যাবে। ফোম টাইপ এক্সটিংগুইসার অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র অগ্নি নির্বাপণ কাজে ব্যবহারের সময় নজেলটি আগুনের দিকে তাক করে বাতাসের অনুকূলে থেকে অপারেটিং লিভারে/ প্রেসার রিলিজে চাজ দিলে ফোম নজলের মাধ্যমে বের হওয়ার সময় বাতাস টেনে নিয়ে নজলের মাধ্যে আলোড়িত হয়ে ফোমে পরিনত হয়ে ফোম নির্গত হবে। যা তরল ও গ্যাসিয় ছোট খাট অগ্নি নির্বাপণ করে। …

কেমিক্যাল ফোম টাইপ এস্টিংগুইশার

১০ লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন হালকা ষ্টিলের তৈরি গোলাকার একটি সিলিন্ডার। যার এক মুখ খোলা। সিলিন্ডারের উপরের অংশে একটি নব আছে। নবের নিচের অংশকে প্ল­াঞ্জার বলা হয় এবং প্ল­াঞ্জারের নিচে স্প্রিং লোডেড  সিলিন্ডার ডিস আছে। সিলিন্ডারের ক্যাপের পার্শ্বে একটি নজল আছে। এই যন্ত্রের দুটি কন্টেইনার আছে। একটি ইনার কন্টেইনার অপরটি আউটার কন্টেইনার।

এ অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রে ২টি কনটেনার থাকে। একটি বাহিরের ও একটি ভিতরের কনটেনার। বাহিরের কনটেনারে ৮ পার্সেন্ট সেডিয়াম বাই-কার্বনেটের সাথে ৩ পার্সেন্টে স্টেবিলাইজার মিশ্রিত করে ব্যবহার করা হয়। ফোমের বুদবুদের স্থায়িত্বশীলতার জন্য এ স্টেবিলাইজার ব্যবহার করা হয়। স্টেবিলাইজার চার প্রকার। এর যে কোন একটি ৩ পার্সেন্ট সডিয়াম বাই কার্বনেটের সাথে মিশ্রিত থাকে। স্টেবিলাইজার গুলি হচেছ ঃ- সেপোনাইন, লিকোরিস, এ্যালবোমিন, টার্কিরেড ওয়েল। ভিতরের কনটেনারে থাকে ১৩ পাসেন্ট এ্যালুঃ সালফেট।

অল্প গরম পানিতে মিশ্রিত করলে সহজে গলে যায়। তারপর ভিতরের কনটেনারে ভর্তি করতে হয়। অগ্নি দুর্ঘটনার সময় দু কনটেনারের কেমিক্যাল মিশ্রিত করে দিলে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে ফোম, কার্বন ডাই অক্সাইড চাপ সৃষ্টি করে ফোমকে ঠেলে বের করে আগুনে নিক্ষেপ করে। সোডিয়াম সালফেট ফোমের সাথে মিশ্রিত থাকে।

সব ফোম অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রকে সেলফ এ্যাসপিরেটিং ফোম এক্সটিংগুইসার বলে। এয়ার ফোম এক্সটিংগুইসার নামেও এ পরিচিত। এস অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রে একটি মাত্র কনটেনার থাকে। স্প্রেসার টাইপ বা গ্যাস কার্টজ টাইপ দু ধরণের এ অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রয়েছে। এতে মেকানিক্যাল ফোম কনসেনট্রেট মিশ্রিত পানি অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের মধ্যে নির্দিষ্ট স্থান পর্যন্ত ভরে রাখা হয়। গ্যাস কার্টিজ টাইপে গ্যাস কার্টিজ ও প্রেসার টাইপে বাতাস বা নাইট্রোজেন গ্যাস দ্বারা চাপ দেয়া থাকে।

এসব অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের ডিসচার্জ টিউবের শেষ অংশে বিশেষ ধরণের নজল থাকে। ব্যবহারের সময় অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের মধ্যে রক্ষিত গ্যাস কার্টিজ থেকে গ্যাস বের হয়ে বা প্রয়োগকৃত চাপ ফোম কনসেনট্রেট মিশ্রিত পানি নজল দিয়ে বের হবার সময় বাতাস টেনে নিয়ে আলোড়িত হয়ে ফোমে পরিনত হয়ে নির্গমন করে।

যতœ ও রক্ষণাবেক্ষণ

ব্যবহারের পর পরই যন্ত্রটি পরিস্কার পানিতে ধুয়ে শুকিয়ে নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে। ব্যবহারের পর কোনক্রমেই যেন যন্ত্রের ভিতরে কোন অবশিষ্ট দ্রবন না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে কারণ উক্ত দ্রব্যন এল কালি জাতিয় যা যন্ত্রটি নষ্ট করতে সক্ষম। কোনক্রমেই রৌদ্রের আলোতে রাখা যাবে না। নজল পরিস্কার রাখতে হবে। যন্ত্রটি উল্টানো যাবে না।

পোশাক শিল্প কারখানায় আগুন লাগলে করণীয় ঃ

এটি খুবই গুরুত্ব¡পূর্ণ যে কারখানায় আগুন লাগলে কি করতে হবে। আগুন লাগলে ভয় পাবেন না বা বিচলিত হবেন না। আগুন লাগতেই পারে, তবে তা কমপক্ষে ১০/১৫ মিনিটের আগে ছড়াবে না, যদি উহা থিনার বা পেট্রোল বা কোন তেলের আগুন না হয়। অথচ একটি ৮/১০ তলা বা তারও অধিক ভবন থেকে সকল শ্রমিক/কর্মচারী নেমে যেতে ৫ মিনিটের বেশী সময় লাগে না। প্রথমে নিশ্চিত হন যে কারখানায় সত্যিই আগুন লাগছে কি না। যদি লেগে থাকে, তবে কোথায় লেগেছে তা ভাল করে জানুন এবং তাড়াহুড়ো না করে আস্তে আস্তে (স্বাভাবিকের চেয়ে একটু দ্রুত) নিকটস্থ সিঁিড় দিয়ে নীচে নেমে যান।

কারখানায় আগুন লাগলে নিম্নলিখিত কাজসমূহ দ্রুত সম্পাদন করতে হবে ঃ

  • প্রথমেই ফায়ার এ্যালার্ম বা ঘন্টা বাজিয়ে সকলকে দূর্ঘটনার বিষয়ে সতর্ক করতে হবে।
  • কারখানার বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ বন্ধ করতে হবে
  • নিকটবর্তী ফায়ার ষ্টেশন বা ফায়ার সার্ভিস হেড কোয়ার্টারকে অগ্নি দূর্ঘটনার বিষয়ে সঠিক ঠিকানা এবং তথ্য প্রদানপূর্বক অবগত করাতে হবে। (ফায়ার সার্ভিসের জরুরী নম্বর- ৯৫৫৫৫৫৫ অথবা ১০২)
  • কারখানায় গঠিত (প্রশিক্ষিত) অগ্নি নির্বাপক দল আগুন নেভানোর চেষ্টা করবে।
  • উদ্ধারকারীদল কারখানার সকল ফ্লোরের শ্রমিক/কর্মচারীকে সুশৃঙ্খলভাবে কারখানা থেকে বের হতে সাহায্য করবে এবং কারখানার ফ্লোরে কোথাও কোন শ্রমিক/কর্মচারী আছে কি না ভালভাবে খোঁজ করে দেখবে।
  • প্রাথমিক চিকিৎসা দল দূর্ঘটনায় কোন শ্রমিক/কর্মচারী আহত হলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত ডাক্তারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে (যদি প্রয়োজন হয়)।
  • ফায়ার সার্ভিস বিভাগকে আগুন কোথায় লেগেছে এ বিষয়ে তথ্য দিতে হবে, কারখানার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার (বৈদ্যুতিক স্থাপনা, কেমিক্যাল গোডাউন, জেনারেটর রূম, বয়লার রূম ইত্যাদি) অবস্থান জানাতে হবে এবং আগুন নির্বাপনের কাজে সকল ধরণের সহযোগিতা করতে হবে।

এখানে উল্লেখ্য যে, কারখানায় আগুন লাগলে করণীয় বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশাবলী সম্বলিত ফায়ার সেফটি প্ল্যান এবং ইভাকুয়েশন প্ল্যান থাকতে হবে। প্রতি কারখানায় জরুরী দূর্ঘটনা মোকাবেলা কমিটি গঠন করতে হবে এবং নিয়মিত শ্রমিক/কর্মচারীদের সমন্বয়ে আলোচনা সভা করতে হবে।

আগুন নিভানোর শর্ত সমূহ কি কি? আগুন লাগলে করনীয় কি?

শ্রেণী বিন্যাস অনুযায়ী আগুন নির্বাপনের মাধ্যম এর বর্ণনা

আগুন নির্বাপনের মাধ্যম

আগুন কোন আতঙ্কিত বস্তু নয়, অথবা দুর্দমনীয় কোন দানব নয় যে একে দমন বা নিয়ন্ত্রন করা যাবে না। উৎপত্তি স্থল থেকে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়তে আগুনের অনেক সময় লাগে। আর এ সময়ের মধ্যে আগুনকে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন আগুন নিয়ন্ত্রনের কৌশল জানা। কৌশল জানতে প্রয়োজন অগ্নি নির্বাপণ প্রশিক্ষণ। এরই ধারাবাহিকতায় আল- মুসলিম গ্র“পে কর্মরত শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগনকে কর্মস্থলে সকল প্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কোম্পানী ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।আর এই দায়িত্ব সঠিক বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।সকল দাহ্যের আকার আয়তন এবং আগুনে পোড়ানোর পর কয়লার সৃষ্টি হয়। যেমন-বাঁশ,কাঠ,তুলা,কাপড় এক কথায় বলা যায় সলিড এবং বুনন শিল্পে যা কিছু ব্যবহার করা হয়। …

আগুনের শ্রেনী বিন্যাস ও নির্বাপন মাধ্যম

পৃথিবীর সকল সাধারন আগুনকে স্বল্প সময়ের মধ্যে নির্বাপনের জন্য দাহ্য বস্তুর প্রকার ভেদে ৪টি শ্রেনীতে ভাগ করা হয়েছে। যথা- ক, খ, গ, ও ঘ শ্রেনীর আগুন। তবে যে সকল আগুনকে শ্রেনীভূক্ত করা যায় না সেই সকল আগুনকে বিশেষ আগুন বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেমন- বৈদ্যুতিক আগুন, কেমিক্যাল, রেডিও একটিভ ইত্যাদি।

“ক” শ্রেনীর আগুন ঃ কঠিন দাহ্য বস্তু হচ্ছে “ক” শ্রেনীর আওতাভূক্ত। অর্থাৎ যার আকার, আয়তন ও ওজন আছে। যেমন- কাঠ, পাট, তুলা, কাপড়, কাগজ, বাঁশ ইত্যাদি।

নির্বাপন মাধ্যমঃ “ক” শ্রেনীর আগুন সবচেয়ে ভাল নির্বাপন মাধ্যম হচ্ছে পানি। এছাড়াও সোডা এসিড এক্সটিংগুইসার, ওয়াটার টাইপ এক্সটিংগুইসার, কার্বনড্রাই অক্সাইড এক্সটিংগুইসার, ডিসিপি এক্সটিংগুইসার ব্যবহার করা যায়।

“খ” শ্রেনীর আগুনঃ “খ” শ্রেনীর আওতাভূক্ত হচ্ছে তরল জাতীয় দ্রব্য। তরল দাহ্য বস্তু হচ্ছে যার আয়তন ও ওজন আছে কিন্তু আকার নেই। সাধারন ভাবে বলা যায় হাইড্রোকার্বন বা তেল।

নির্বাপন মাধ্যমঃ “খ” শ্রেনীর আগুনের সবচেয়ে নিরাপদ নির্বাপন মাধ্যম হচ্ছে ফোম বা প্রজ্জলিত তরল পদার্থের উপর আবরন সৃষ্টি করে অক্সিজেন বা বাতাস সীমিত করে আগুন নির্বাপন করে। তেলের আগুনে কেমিক্যাল ফোম, এয়ার ফোম, অক্সিজেন, ডিসিপি ব্যবহার করা যায়।

“গ” শ্রেনীর আগুনঃ “গ” শ্রেনীর পর্যায়ভূক্ত দাহ্যবস্তু হচ্ছে গ্যাস, গ্যাস হচ্ছে যার ওজন আছে কিন্তু আকার ও আয়তন নেই।

নির্বাপন মাধ্যমঃ অক্সিজেন বা ডিসিপি

“ঘ” শ্রেনীর আগুনঃ “ঘ” শ্রেনীর আগুনের দাহ্য বস্তু হচ্ছে ধাতু।

নির্বাপন পদ্ধতিঃ সাধারন অগ্নি নির্বাপন মাধ্যম দ্বারা এই শ্রেনীর আগুন নির্বাপন করা যায় না, সুতরাং এ প্রকার আগুন নির্বাপন করতে বিশেষ ধরনের ড্রাই পাউডার ব্যবহার করতে হয়। যেমন- ঞঊঈ, ঞঊঋ, বালি, ছাই ইত্যাদি।

ফায়ার হুক, ফায়ার বিটার বা অন্য কোন উপায়ে।

পানি (বালতি, ড্রাম, হোজরীল, ¯িপ্রংকলার, হাইড্রেন্ট) ব্যবহার করা (সর্বোত্তম মাধ্যম)।

ভারি জিনিস (মোটা কাপড়, কম্বল, কাঠ ইত্যাদি) দিয়ে চাপা দেয়া এবং সিওটু  অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করা।

ড্রাই কেমিক্যাল পাউডার বা ডিসিপি (এবিসি টাইপ) ব্যবহার করা

ফোম টাইপ অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র (সর্বোত্তম মাধ্যম)

ও সিওটু (আগুন ছোট হলে) অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করা।

ডিসিপি (এবিসি টাইপ) ব্যবহার করা (আগুন ছোট হলে)।

গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করা (গ্যাসের লাইনের চাবি বা রাইজার বন্ধ করা) (সর্বোত্তম মাধ্যম)

সিওটু অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করা (আগুন ছোট হলে)

ডিসিপি (এবিসি টাইপ) ব্যবহার করা

ডি টাইপ ফায়ার এক্সটিংগুইশার

বিশেষ ধরণের ড্রাই কেমিক্যাল পাউডার

টারনারী ইউটেকটিক ক্লোরাইড বা ফ্লোরাইড (টিইসি/টিইএফ পাউডার) যা সোডিয়াম ক্লোরাইড, পটাসিয়াম ক্লোরাইড এবং বেরিয়াম ক্লোরাইড বা ফ্লোরাইড এর মিশ্রনে তৈরী করা হয়।

ড্রাই স্যান্ড বা শুকনা বালু, গ্রাফাইট গুড়া, ছাই ইত্যাদি

কারখানা এলাকায় অগ্নিকান্ড সমুদয় ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিতে পারে। এর কারণে গুরুতর আহত হবার এমনকি মৃত্যূর ঘটনাও ঘটতে পারে। তারপরও যে কোনো মূল্যে মানসম্মত ও উন্নত ডিজাইন ও উপকরণ ব্যবহার করে কারখানায় অগ্নি দূর্ঘটনার ঝুকি শুন্য পর্যায়ে নিতে হবে। তাই অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দিয়ে অগ্নি দূর্ঘটনায় যাতে জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি না হয় সেজন্য অগ্নি দুর্ঘটনায় আমাদের কি করনীয় এব্যাপাওে সকলকে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলার সানসেই এ নীতিমালা প্রনীত।সঠিক ও গুনগত মানের বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার করা, কোন প্রকার লুজ ওয়্যারিং না রাখা, ওয়্যারংি কনসিলড বা কনডুইট করা, ভাঙ্গা প্লাগ, সকেট, কাটাউট ইত্যাদি পরিবর্তন করা, অভিজ্ঞ ইলেকট্রিশিয়ান বা ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা ওয়্যারিং করানো, বৈদ্যুতিক চ্যানেলগুলো নয়মিত পরিস্কার করা ইত্যাদি। প্র্রতিটি লাইনের জন্য অটোমেটিক সার্কিট ব্রেকার বসানো, অটোমেটিক মেইন সুইচ, অটোমেটিক ভোল্টেজ ষ্টাবিলাইজার বসানো, একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর সকল ওয়্যারিং পরিবর্তন করা এবং সকল বৈদ্যুতিক স্থাপনা নিয়মিত পরিদর্শনের জন্য কারখানায় সার্বক্ষণিকভাবে একজন দক্ষ ইলেকট্রিশিয়ান (সার্টিফিকেটধারী) নিয়োগ দেয়া।

সেলাই মেশিনের মটর নিয়মিত পরিস্কার করণ ও তেল-মবিল দেয়া, মেশিনের সাথে উপযুক্ত আর্থিং সংযোগ দেয়া, বৈদ্যুতিক তারের কানেকশন লুজ না থাকা ইত্যাদি।

মানব সভ্যতার উন্নতি এবং অগ্রগতিতে আগুনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা যেমন অপরিসীম ঠিক তেমনি সভ্যতাকে ধ্বংশ করে, সম্পদ বিনষ্ট করে এমনকি মানুষের মূল্যবান জীবন কেড়ে নিয়ে যুগে যুগে এই আগুনই পালন করে চলেছে তার ধ্বংসাত্বক কর্মকান্ড।বৈদ্যুতিক জেনারেটর অবিরাম না চালিয়ে নির্দিষ্ট সময় অন্তর বন্ধ রাখা, জেনারেটর কক্ষে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা, দক্ষ অপারেটর থাকা ইত্যাদি।

কারখানায়া সঠিক মানের বয়লার ব্যবহার করা। বয়লার কক্ষে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা, বয়লার পরিচালনার জন্য দক্ষ অপারেটর (সার্টিফিকেটধারী) নিয়োগ দেয়া এবং নিয়মিত পরিদর্শন করা। বয়লার কারখানা ভবনের বাইরে স্থাপন করা।

কারখানার অভ্যন্তরে ধুমপান সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করতে হবে। সিগারেট ধরানোর পরে ম্যাচের কাঠি এবং ধুমপান শেষে অবশিষ্টাংশ ভালভাবে নিভিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে।

কারখানার অভ্যন্তরে কোন প্রকার রান্না-বান্না না করা বা অন্য কোন কাজে আগুন না জ্বালানো।

কারখানার অভ্যন্তরে কোন প্রকার ওয়েল্ডিং এর কাজ না করা। বিশেষ কারণে ওয়েল্ডিং করার প্রয়োজন হলে পর্যাপ্ত সাপোর্ট দিয়ে নিতে হবে।

কাপড় আয়রন করার পর বা বিদ্যুৎ চলে গেলে আয়রন বন্ধ করে নির্দ্ধারিত জায়গায় রাখতে হবে। থিনার ব্যবহারের জন্য আলাদা কক্ষ থাকতে হবে। উক্ত কক্ষে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। থিনার ব্যবহারকারীকে অবশ্যই গ্লোভস এবং মুখোস ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহার করার পূর্বে থিনারের ¯েপ্র মেশিনটি ভালভাবে চেক করে নিতে হবে।

এ আগুনে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে এবং কোন অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে। সুতরাং মন মানসিকতা পরিবর্তনই এ আগুন বন্ধের উপায়।

এ আগুন শত্র“ দ্বারা সংঘটিত হয়। সুতরাং শত্র“ থেকে সাবধান থাকতে হবে এবং কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।

কারখানার ভিতর কিছুতেই কেমিক্যাল সংরক্ষণ করা যাবে না। সম্পূর্ণ আলাদা কক্ষে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নিয়মানুসারে কেমিক্যাল সংরক্ষণ করতে হবে।

কাপড়ের গুদামে কাপড় সমূহ নির্দিষ্ট নিয়মে সংরক্ষণ করতে হবে, যেমন ছাদ থেকে কমপক্ষে এক ফুট নীচে, দেয়াল থেকে এক ফুট দুরে, ফ্লোরে কমপক্ষে ৬ ইঞ্চি পাটাতন তৈরী করে এবং প্রতিটি সারির মাঝখানে কমপক্ষে ৩ ফুট ফাকা রেখে কাপড় সংরক্ষণ করা। বন্ডেড ওয়্যার হাউজের মধ্যে কোন ক্রমেই বৈদ্যুতিক লাইনের সংযোগ রাখা যাবে না। প্রয়োজনে চার্জার, আইপিএস ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।

আগুন প্রতিরোধের জন্য পোশাক শিল্প কারখানা কমপক্ষে ৩/৪ ঘন্টা আগুন প্রতিরোধে সক্ষম দ্রব্য দিয়ে পাকা করে তৈরী করতে হবে এবং কারখানার মেঝে, সিঁিড় ও সান সাইড সব সময় পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।