কারপাল টানেল সিনড্রোম
বছর খানেক এক ব্যক্তি কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে কাজ করবার পরে হঠাৎ করে হাতের তালুতে এবং মাঝের আঙ্গুঁলগুলোতে ব্যথা অনুভব করে কিন্তু সে প্রথমে এদিকে কোনো গুরুত্ব দেয়নি। এখন তার এমন অবস্থা যে কব্জি না বেঁধে সে কাজই করতে পারেনা।
একজন ইলেট্রিশিয়ান এর কথাই ধরা যাক। তার এখন নিদারুণ চিন্তা কি করে একজন নির্মাণ সুপারভাইজার এর কাজ পাওয়া যায় কেননা সে তার হাত দুটোতে এমন আঘাত পেয়েছে যে একটা স্ক্রু-ড্রাইভার ঘুরানোর শক্তিও যেন তার নেই।
আরও একজন যে ইলেকট্রনিক প্লান্ট-এ সার্কিট বোর্ড এ্যাসেম্বলিং এর কাজ করে। দীর্ঘদিন তার উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেশি ছিল যে জন্য তার পারিশ্রমিকও ছিল বেশি কিন্তু সাম্প্রতিককালে তার হাত দুটো কেমন যেন শক্ত বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। গরম পানিতে হাত রাখলে কিছুটা নরম হয়। আগের মতো সে আর কাজ করতে পারেনা। তার উৎপাদিত পণ্যে প্রত্যাখ্যানের হার বেড়েই চলেছে।
এদের প্রত্যেকেই একই রোগে ভুগছে যার নাম কারপাল টানেল সিনড্রোম। কারণ তারা দীর্ঘ সময় ব্যাপী পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ করেছে এবং কোনোরূপ সতর্কতা অবলম্বন করেনি কিংবা আঘাত প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি।
এই ব্যধি আরটিআই টাইপেরই এটি অতি সাধারণ প্রকারভেদ। এতে একই কাজ বারবার এবং দীর্ঘ সময় ধরে করাতে হাতের শিরা-উপশিরাগুলো অবসন্ন হয়ে তাদের কর্মক্ষমতা এক পর্যায়ে হারিয়ে ফেলে। শিরাগুচ্ছগুলোতে অবিরাম প্রচন্ড চাপে কারণে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয, ঐ ব্যথা ধমনীতেও চলে আসে। ফলে হাত দিয়ে কিছু আঁকড়ে ধরার শক্তি, অনুভূতি এবং নিয়ন্ত্রণ সবই হারিয়ৈ যায়। অপারেশন করেও তেমন কোনো সুফল পাওয়া যায়না।
কারপাল টানেল সিনড্রোম এড়ানোর পথ
এ এমনই একটা রোগ বা আঘাত যা সময় থাকতে প্রতিরোধ না করা গেলে পরবর্তীতে আর কোনো কার্যকর প্রতিষেধক পাওয়া যায়না। এটা দীর্ঘ সময় ধরে মানুষকে আক্রান্ত করে এবং এর প্রকোপ কমাতেও লাগে দীর্ঘদিন। তবে হ্যাঁ, এর আক্রমণের সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে আপনি অনেক কিছু করতে পারেন, যেমন-
কব্জি বাঁকা করে বারংবার হাত চালানো এড়িয়ে চলুন।
নিরপেক্ষ অবস্থানে হাত রাখুন কিংবা তালুর দিকে সামান্য বাঁকিয়ে রাখুন।
কাজের জন্য সঠিক হাতিয়ার ব্যবহার করুন।
প্রতি ঘন্টা পরপর হাত দুটোকে একটু বিশ্রাম দিন। আপনার কাজের ধারাবাহিকতা গুলো পুনর্বিন্যাস করে নিন যাতে সব সময় আপনাকে একই কাজ একইভাবে বারবার না করতে হয়।
যদি আপনার মনে হয় আপনি সিটিএস-এ আক্রান্ত হতে চলেছেন দেরী না করে চিকিৎসকের সাহায্য নিন। কর্মস্থলকে কিছুটা এদিক-সেদিক করে কিংবা কাজের অভ্যাসে কিছু রদ করতে পারলে কাজ হতে পারে।