পরিবহন পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা গুলো কি কি

পরিবহন পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা গুলো কি কি?

পরিবহন পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা

পরিবহন ব্যবস্থাপনা যে কোনো উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য সুষ্ঠ পরিবহন ও বিপনন, কাচামাল সরবরাহকরণ থেকে শুরু করে যে কোনো ধরনের মালামাল পরিবহন এবং উৎপাদনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের সুন্দর কর্মপরিবেশের অংশ হিসেবে অত্র প্রতিষ্ঠান একটি পরিবহন পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা নীতি প্রনয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এরই প্রতিফলন স্বরূপ পরিবহন পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা নীতি অত্র প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্্রমিকদের অবগতির জন্য প্রকাশ করা হইল। এখানে উলে¬খ্য যে, এই পরিবহন পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা নীতি পরবর্তী নির্দেশ না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে।

এই পরিবহন ব্যবস্থাপনা নীতি দুটি অংশে বিভক্ত থাকিবে, যথাক্রমেঃ 

১।পণ্য, কাচামাল ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি পরিবহন।

২।উৎপাদনের স্বার্থে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্্রমিকদের আনা-নেওয়া বিষয়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনা। 

পণ্য, কাচামাল ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি পরিবহন

  • রপ্তানি পণ্য সবসময় কাভার্ড ভ্যান কিংবা কন্টেইনারে পরিবাহিত হইবে।
  • রপ্তানি পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে লোডিং থেকে শুরু করে পণ্য বের হওয়া পর্যন্ত সার্বিক দায়িত্বে থাকিবে কমার্শিয়াল বিভাগ।
  • কাভার্ড ভ্যান বা কন্টেইনার ”ব্যবস্থাপনা প্রশাসন” বিভাগের অন্তর্গত।
  • কাভার্ড ভ্যান বা কন্টেইনারের পণ্য লোডিং হইতে শুরূ করে বের হওয়া পর্যন্ত এবং গেইট ছাড়পত্র প্রদানের পূর্বে নিরাপত্তা বিভাগ অবশ্যই কার্টুন বা অন্যান্য পণ্যের লট (খড়ঃ) গননা করিবে এবং সংশি¬ষ্ট ব্যক্তিবর্গের নিকট অবহিত করিবেন। অতঃপর সংশি¬ষ্ট ব্যক্তিবর্গ গেইট ছাড়পত্রে স্বাক্ষর পূর্বক উর্ধঃতন কর্মকর্তার অবগতি ও স্বাক্ষরের পর পণ্যবাহী গাড়ী ফ্যাক্টরী গেইট অতিক্রম করিবে।
  • কাচামাল সরবরাহের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সরবরাহকারী তাহাদের নিজস্ব পরিবহনে কাচামাল সরবরাহ করিবেন। একই সঙ্গে সরবরাহকৃত মালের স্বাক্ষরিত চালান গেইটে নিবন্ধন পূর্বক ষ্টোরে জমা দিবেন। গেইটে নিরাপত্তাকর্মী পণ্য বা মাল গগণা পূর্বক চালানের সাথে মিলাইবেন এবং নিবন্ধন করিবেন।
  • যে সকল সরবরাহকারী তাহাদের পণ্য বা মাল নিজস্ব পরিবহনে পৌছাবেন না, তাহারা অত্র ফ্যাক্টরীর কাভার্ড ভ্যান কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভাড়াকৃত গাড়িতে পন্য বা মাল সামগ্রী মিলে পৌছাবেন এবং একই সংগে একই নিয়মে নিরাপত্তা কর্মী গননা পূর্বক চালান নিবন্ধিত করিবেন এবং ষ্টোর কর্তৃপক্ষের নিকট বুঝিয়ে দিবেন। এখানে উল্লে¬খ্য যে, ভাড়াকৃত গাড়ির ভাড়া অতি শীঘ্রই অর্থ ও হিসাব হইতে নির্দিষ্ট ভাউচারের মাধ্যমে প্রদান করিতে হইবে। ভাউচারে অবশ্যই কি ধরণের মাল বা পন্য পরিবাহিত হইয়াছে এবং উৎসস্থল ও গন্তব্য উল্লে¬খ থাকিতে হইবে।
  • প্রতিষ্ঠান হইতে রপ্তানী পন্য ব্যতীত যে কোন ধরণের মালামাল, যেমন- সাইজিং সুতা, কেমিক্যালস্ বা অন্য কোন পন্য ফ্যাক্টরীর অভ্যন্তর হইতে বাহিরে নিতে হইলে অবশ্যই গেইট ছাড়পত্র ও চালান দেখাইতে হইবে। চালান এবং গেইট ছাড়পত্রে নির্দিষ্ট বিভাগীয় প্রধান,ষ্টোর কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসন বিভাগের অবগতির স্বাক্ষর থাকিতে হইবে। আরও উল্লে¬খ্য যে চালান পত্র ও গেট ছাড়পত্রে কি উদ্দেশ্যে, কত পরিমান পন্য, গন্তব্য সহ উল্লে¬খ থাকিতে হইবে।
  • প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের স্বার্থে যে কোন ধরণের ভাড়াকৃত বাহনের ভাড়া দ্রæত নির্দিষ্ট ভাউচারের মাধ্যমে উৎস, গন্তব্য, পন্যের ধরণ ও পরিমান উল্লেখ পূর্বক পরিশোধ করিতে হইবে।

কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্্রমিক পরিবহন ব্যবস্থাপনা

  • প্রতিষ্ঠান মালিক তার বিবেচনা মোতাবেক নির্দিষ্ট কর্মকর্তাদের পরিবহনের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গাড়ী প্রদান করিতে পারিবেন।
  • নিজস্ব দায়িত্বে প্রাপ্ত গাড়ীর জ্বালানী খরচ বাবদ প্রদানকৃত নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট প্রদান করা হইবে।
  • কর্মকর্তাদের বরাদ্দকৃত গাড়ী চালানোর জন্য প্রত্যেক গাড়ীপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের একজন ড্্রাইভার প্রদান করা হইবে, যার সার্বিক দায়-দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের নিকট থাকিবে।
  • নিয়োগকৃত ড্্রাইভারদেরকে কর্তৃপক্ষের আদেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট কর্মকর্তার গাড়ী পরিচালনা করিতে হইবে।
  • যে কোনো ধরনের অনাহুত পরিস্থিতিতে, যেমন – দূর্ঘটনায় গাড়ীপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ড্্রাইভার উভয়ই মুখপাত্রের ভুমিকায় থাকিবেন।
  • প্রতিষ্ঠানের মাইক্রোবাসগুলো কর্মকর্তাদের আনা-নেয়াসহ প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে ব্যবহৃত হইবে।
  • সর্ব সময়ের জন্য একটি মাইক্রোবাস জরুরী প্রয়োজনের তাগিদে ফ্যাক্টরী অভ্যন্তরে অবস্থান করিবে।
  • প্রতিষ্ঠানের কোন মাইক্রোবাস কেহ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করিতে পারিবে না।
  • কোন বিভাগের/ব্যাক্তির গাড়ির প্রয়োজন হইলে (গাড়ি প্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যতিত) নির্র্র্র্র্র্র্র্র্র্দিষ্ট ফরমের মাধ্যমে প্রশাসন বিভাগকে অবগত করিবেন এবং প্রশাসন বিভাগ প্রয়োজনীতা ও প্রাচুর্যতা ভিত্তিতে গাড়ি প্রদান করিবেন।
  • সকল গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের । প্রতি ৫০০০ কিলোমিটার চালানোর পর প্রত্যেকটি গাড়ি রেগুলার সার্ভিসিং-এ যাইবে।
  • প্রত্যেকটি গাড়িতে একটি করে লগবুক থাকিবে। যেখানে পূর্ববর্তী সার্ভিসিং হইতে কত কিলোমিটার চালানো হইয়াছে তাহার রেকর্ড থাকিবে। এবং সেই রেকর্ড মোতাবেক গাড়ি সার্ভিসিং-এ পাঠানো হইবে। এখানে উলে¬খ্য যে, প্রতিষ্ঠানের মাইক্রোবাস ( কোম্পানীর কাজে নিয়োজিত ) এর লগবুকে কিলোমিটার, গন্তব্য ও উদ্দেশ্য সহ পরিবাহিত ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গের স্বাক্ষর থাকিতে হইবে।
  • যে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী কোম্পানীর গাড়িতে যাতায়াত করেন, রেগুলার সার্ভিসিং বা গাড়ি ওর্য়াকশপে থাকাকালীন সময়ে তাহারা নিজ দায়িত্বে যাতায়াত করিবেন। কর্তৃপক্ষ এই সময়ে গাড়ি দিতে বাধ্য থাকিবেন না।
  • কর্র্তৃপক্ষ কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তিবর্গই শুধু গাড়ি ব্যবহার করিবেন। অন্য কেউই গাড়িতে যাতায়াত করিতে পারিবে না। এই ব্যাপারে নির্দিষ্ট গাড়ির ড্রাইভার তাহাদের নিজ নিজ পরিচালিত গাড়ির জন্য সজাগ থাকিবেন।
  • গাড়িতে আসন ফাঁকা থাকিলে অমনোনীত ব্যক্তিরা যাতায়াত করিতে পারিবেন। সেইক্ষেত্রে মনোনীত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সর্বোচ্চ পদস্থ এর মতামত অনুসারে চলিবে।
  • ফ্যাক্টরীর বাহিরে গাড়ি চলমান অবস্থায় গাড়িতে উপস্থিত সর্বোচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার নির্দেশ মোতাবেক চলিবে এবং তিনি-ই চলমান গাড়ির সার্বিক দায়িত্বে থাকিবেন।
  • গাড়ির যে কোন জরুরী প্রয়োজনে ওর্য়াকশপে যেতে পারিবে এবং দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তি যত দ্রæত সম্ভব এই ব্যপারে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিবে।
  • প্রত্যেক গাড়ির ড্রাইভার তাদের গাড়ির কাগজাদি সবসময় আপ-টু-ডেট রাখিবে। নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই ড্রাইভারগণ তাহদের কাগজাদির ব্যাপারে প্রশাসন বিভাগকে অবহিত করিবে। এবং প্রশাসন বিভাগ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
  • প্রত্যেক গাড়ির ড্রাইভার নিজ নিজ গাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখিবে। এই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করিবে।
  • কোম্পানীর প্রত্যেকটি গাড়ির জন্য কোম্পানী কর্তৃক মনোনীত ইনস্যুরেন্স কোম্পানীতে গাড়ির ইনস্যুরেন্স করিবেন।
  •   ঢাকা  থেকে ফ্যাক্টরিতে আসার সময় সূচি হল সকাল – ৬.৩০ মিনিট । 

          ফ্যাক্টরি  থেকে ঢাকা যাবে সন্ধ্যা – ৬.৩০ মিনিট ।

         

  বিঃ দ্রঃ যদি কোন ধরনের জরুরি কাজের ক্ষেত্রে বা কোন ধরনের দূর্ঘটনা বা বিশেষ প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সময় সূচি পরিবর্তন হইতে পারে ।

এই নীতিমালার অধীনে অত্র প্রতিষ্ঠানের পরিবহন ব্যবস্থা পরিচালিত হইবে। পরিবহন ব্যবস্থা সঠিকভাবে পরিচালনার তাগিদে একজন পরিবহন কর্মকর্তা থাকিবেন, যিনি সরাসরি প্রশাসন বিভাগের অন্তর্গত এবং অত্র নীতিমালার আলোকে পরিবহন ব্যবস্থা পরিচালিত হইবে


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply