পেশাগত স্বাস্থ্য Occupational Health

পেশাগত স্বাস্থ্য Occupational Health ও নিরাপওার ঝুকিসমূহ কি?

পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা

শ্রমিক-মালিকের যৌথ প্রচেষ্টার ফলে যে কোন কারখানাতেই উন্নতমানের উৎপাদন করা সম্ভব। যেহেতু কল্যাণমুখি উৎপাদন ব্যবস্থায় শ্রমিকই মুখ্য ভূমিকা পালন করে। সেহেতু শ্রমিকের সুস্ব্স্থ্যা রক্ষা ও তাদের পেশাগত নিরাপওাদানের বিষয়টি অবশ্যই জরুরী হিসাবে শ্রমিক, মালিক, সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকলের বিবেচনা করা দরকার। বিশেষ করে কর্মক্ষেএে শ্রমিকের পেশাগত স্বাস্থ্য এবং পেশাগত নিরাপওার ব্যাপারে শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের গুরূত্বপূর্ন ভূমিকা থাকা দরকার। এক কথায় পেশাগত স্বাস্থ্যওক্ষা হলো, যেকোন ব্যাবসায়িক শিল্প প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, গার্মেন্টস কারখানা, কৃষি-খামার, চা-বাগান কিংবা অন্য যে কোন ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে এমন কোন প্রতিক’ল পরিবেশ সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকা- যা শ্রমিক-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে কিংবা মারাত্বক কোন দূর্ঘটনা সৃষ্টি করবে।

সাধারনত পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপওার ক্ষেএে, শ্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের উচিত পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমে শ্রমিকদের শুধুমাএ কর্মক্ষেএের রোগ ও দূর্ঘটনা বিবেচনা না করে শ্রমিকের দৈহিক, মানসিক এবং সামাজিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়াবলরি দিকে লক্ষ্য রাখা। ‘পেশাগত স্বাস্থ্য’ বলতে যে কোন পেশায় কর্মরত সকল শ্রমিকের দৈহিক, মানসিক এবং সামাজিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়াবলী বোঝায়। পেশাগত স্বাস্থ্যের সঙ্গে ‘প্রতিকার ও প্রতিরোধ’ উভয় ব্যাবস্থাই যুক্ত রয়েছে।

স্বাস্থা-সমস্যা সৃষ্টির প্রক্রিয়া ঃ

সাধারনত স্বাস্থ্যের ওপর যে কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে হলে কোন দূষিত বস্তুকে হয় শরেিরর সংস্পর্শে আসতে হবে অথবা শরীরে প্রবেশ করতে হবে। ৩টি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারনত তা সম্পন্ন হয়ে থাকে ঃ

১.শ্বাস-প্রশ্বাস ।

২.সংস্পর্শ ।

৩.গলধ:করণ

দূর্ঘটনার কারনসমূহ ঃ

  • অপর্যাপ্ত প্রশিক্ষন।
  • যোগাযোগের অভাব।
  • পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব।
  • খন্ডকালীন কাজ বা ফলাফলের ভিওিতে মজুরী দেওয়া।
  • চাপ সৃষ্টি।
  • মেশিনারী ডিজাইন ও কার্যপদ্ধতিতে নিরাপওাহীনতা।
  • অপর্যাপ্ত নিরাপওা ব্যবস্থা।
  • নিরাপওামূলক পোশাক/সরঞ্জামাদি ব্যবহার বা সরবরাহ না করা।
  • কাজে অন্যমনস্কতা ।

পেশাগত স্বাস্থ্য নিরাপওার ঝুকিসমূহ ঃ

  • আসা-যাওয়ার পথরোধ বা বাধাগ্রস্থ।
  • বৈদ্যুতিক ত্র“টি।
  • পিচ্ছিল পথ।
  • শিখাযুক্ত বা বিস্ফোরন ঘটায় এমন রাসায়নিক দ্রব্যের উপস্থিতি।
  • ভারী জিনিসপএ।
  • মেশিনের তত্বাবধান বা নিরাপওাবেষ্টিত না থাকা।
  • গরম-ঠান্ডা জিনিসপএ।
  • ধারালো বা ঘূর্ণায়মান যন্ত্রপাতির উপস্থিতি ।

যেখানেই ঝুঁকি দেখা যাক বা চোখে পড়–ক দেরি না করে তা সরিয়ে ফেলতে হবে, যাতে আশেপাশে বা অন্য কোন জায়গায় তা দেখা না দেয়।ঝুঁকিকে নিয়ন্ত্রনে আনার ৩টি সহজ ধাপ ঃ

  • উৎপওি স্থানে।
  • উৎপওি স্থান থেকে শ্রমিকের কাছে পৌছানোর পথে।
  • শ্রমিকের কাছে।

ঝুঁকি কমানোর জন্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ঃ

  • কাজের জায়গা পরিদর্শন।
  • অভিযোগ সংগ্রহ।
  • সবচেয়ে আগে কি করা দরকার তা নির্ধারন।

কর্মস্থলে দূর্ঘটনা এড়াতে হলে ঃ

  • ঝুঁকিপূর্ণ কাজে মাথায় হেলমেট পরে কাজ করুন।
  • চোখে চশমা পরে কাজ করুন।
  • হাতে গ্লোভস্ পরে কাজ করুন।
  • পায়ে বুট জুতা পরে কাজ করুন।
  • মুখে মাক্স ব্যবহার করুন।
  • কর্মস্থলে নিরাপদে কাজ করুন।
  • অসুস্থ্য শরীরে কাজ করা বিপদজনক।
  • অসুস্থ্যবোধ করলে ফ্যাক্টরিতে অবস্থিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • কাজের সময় তন্দ্রা ঘটাতে পারে এমন ঔষধ সেবন করবেন না।
  • মাদক দ্রব্য সেবন করা থেকে বিরত থাকুন।
  • সুস্থ্য শ্রমিক অধিক উৎপাদনের পূর্বশর্ত।
  • সর্ব প্রকার সাবধানতা অবলম্বন করে মেশিন চালানো উচিত।
  • কর্মস্থলে প্রয়োজনীয় ঢিলা পোশাক পরিহার করে এপ্রোন পরা বাঞ্ছনীয় অথবা ওড়না ভালোভাবে পেঁচিয়ে কাজ করুন বং কর্মস্থলে শাড়ি পরা পরিহার করুন।
  • কাজের সময় অন্য চিন্তা পরিহার করুন।
  • মূহুর্তের অসাবধানতা বিপদের কারন হতে পারে।
  • কাজ শেষে হাত মুখ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে ধুয়ে ফেলুন।
  • বৈদ্যুতিক তারের ইনসুলেটর নষ্ট হয়ে গেলে সর্ট সার্কিট হয়ে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
  • কাজ শুরুর পূর্বে আপনার মেশিন ভালোভাবে এবং নিয়মিত পরীক্ষা করুন । ত্র“টিপূর্ণ তার বা মেশিনের কোন ত্র“টি ধরা পড়লে অথবা কারখানার কোথাও কোন ত্র“টিপূর্ণ তার বা কোন মেশিন আপনার চোখে ধরা পড়লে সাথে সাথে ইলেকট্রিশিয়ানকে জানান একই সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করুন।
  • মনে রাখবেন ঝুঁকিপূর্ণ মেশিন এবং ত্র“টিপূর্ণ বৈদ্যুতিক তারের সর্টসার্কিট গার্মেন্টস্ ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকান্ডের অন্যতম কারন।
  • কাজ শুরুর পূর্বে মেশিনারী নিরাপওা গার্ড (যেমন- নিডিল গার্ড, পুলি কভার, নীচের মটর পুলি কভার, আই গার্ড ইত্যাদি) ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখুন।
  • ব্যক্তিগত সুরক্ষা পদ্ধতি (যেমন-রাবার গ্লোবস্, মেটাল গ্লোবস্, মাক্স, চশমা, ইয়ার প্লাগ, এপ্রোন ইত্যাদি) পরিধান করে কাজ করুন ।

এই নিরাপওা বিধান সম্পূর্ন ভাবে না মেনে চললে আপনার এবং উৎপাদক মালিক উভয়েরই মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে যা সমাজ এবং দেশের জন্যও ক্ষতি বটে।

Comments

4 responses to “পেশাগত স্বাস্থ্য Occupational Health ও নিরাপওার ঝুকিসমূহ কি?”

  1. M Kibria Shah Avatar
    M Kibria Shah

    হ্যালো AutoGarment!

    বাংলা ভাষায় OSH কন্টেন্টের অপ্রতুলতা নিরসনে আপনাদের এই চেষ্টা অবশ্যই অন্যদেরকে অনুপ্রানিত করবে।

    ধন্যবাদ।

Leave a Reply