by Mashiur | Dec 7, 2017 | রাসায়নিক
অ্যালকাইল অ্যামাইড এন্ড পলিঅক্সাইথিনাইল অ্যালকাইল ইথার
অনুচ্ছেদ ০২. উপাদানের গঠণ তথ্য
১. পণ্যের রাসায়নিক নাম : অ্যালকাইল অ্যামাইড এন্ড পলিঅক্সাইথিনাইল অ্যালকাইল ইথার
২. সিএএস নং : ১২৪-২৬-৫
৩. কার্যকারিতা (%) : ১৮.০%
অনুচ্ছেদ ০৩. ঝুঁকিপূর্ণ বৈশিষ্ট্য/পরিচিতি
১. শ্বাস-প্রশ্বাস সংস্পর্শ : বিশেষ কোন ফলাফল জানা যায়নি।
২. ত্বকের সংস্পর্শ : দীর্ঘ সংষ্পর্শে ত্বক জ্বালাপোড়া করতে পারে।
৩. চোখের সংস্পর্শ : কর্ণিয়া সামান্য জ্বালাপোড়া করতে পারে।
৪. গিলে ফেললে : অস্বস্তি বোধ হতে পারে।
অনুচ্ছেদ ০৪. প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতি
১. ত্বক আক্রান্ত হলে: অ্যালকাইল অ্যামাইড কাপরে লাগকে পরিধানকৃত কাপড় খুলে ফেলতে হবে। আক্রান্ত স্থান পানি, সাবান দ্বারা দ্রুত ধৌত করতে হবে।
২. চোখ আক্রান্ত হলে: আক্রান্ত চোখ অন্তত ১০ মিনিট পানি দিয়ে চোখ খোলা রেখে ধৌত করতে হবে এবং চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
৩. শ্বাস-প্রশ্বাস আক্রান্ত হলে: আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত খোলা বাতাসে নিতে হবে। তারপরেও অবস্থার উন্নতি না হলে চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হবে।
৪. গিলে ফেললে: পানি এবং দুধ পান করতে হবে। বমি করা যাবে না। চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হবে।
পাতা-১
অনুচ্ছেদ- ০৫. অগ্নি প্রতিরোধ পদ্ধতি
১. অগ্নি এবং বিস্ফোরন ঝুঁকি: জানা নেই।
২. বাতাস এবং বাস্পে বিস্ফোরন সীমা: জানা নেই।
৩. বাতাস এবং চূর্ণে বিস্ফোরন সীমা: জানা নেই।
৪. উপযুক্ত নির্বাপন মাধ্যম: কার্বন ডাই অক্সাইড, পাউডার, ফেনা, পানির বর্ষন ।
৫. বিশেষ অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা: অগ্নি নির্বাপন কর্মীকে অবশ্যই শ্বাস-প্রশ্বাস সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে। কন্টেইনারের উপর পানির বর্ষন করতে হবে।
অনুচ্ছেদ- ০৬. আকস্মিক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ পদ্ধতিঃ
১. পণ্য অবমুক্ত হয়ে ছিদ্র হয়ে পড়ে গেলে করণীয় ব্যবস্থা :
শোষনকারী উপাদান দিয়ে পণ্য শুষে নিতে হবে।
উপযুক্ত কন্টেইনারে ভরে অপসারন করতে হবে।
অনুচ্ছেদ-০৭. সংরক্ষণ এবং ব্যবহার পদ্ধতি:
১. ব্যবহার : চোখ এবং দেহের অন্যান্য অংশের সাথে সংস্পর্শ এড়াতে হবে।
২. পণ্যের চূর্ণ, বাস্প এবং ¯েপ্রতে শ্বাস গ্রহণ করা যাবে না, কাজের শেষে মুখ এবং হাত প্রচুর পরিমাণে পানি দ্বারা ধৌত করতে হবে।
৩. সংরক্ষন : কন্টেইনারের মুখ শক্তভাবে বন্ধ অবস্থায় শুস্ক এবং ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে।
অনুচ্ছেদ- ০৮. অনাবৃত নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষা
১. ব্যক্তিগত সুরক্ষা ব্যবস্থা: উপযুক্ত সুরক্ষা হাত মোজা এবং চশমা পরিধান করতে হবে।
২. বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা : বিশেষ কোন সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই।
০৯. রাসায়নিক পণ্যের ভৌতগত বিবরণ
১. গঠণগত অবস্থা ঃ ঘন তরল
২. রং ঃ হলুদ
৩. গন্ধ ঃ নেই
৪. গলনাঙ্ক ঃ ৭০০ সে.-এ
৫. স্ফুটনাঙ্ক ঃ ১০০০ সে.-এ
৬. পানিতে দ্রবনীয় ঃ দ্রবীভূত
৭. ক্ষারীয় মান ঃ প্রযোজ্য নয়
৮. নির্দিষ্ট গুরুত্ব ঃ প্রযোজ্য নয়
অনুচ্ছেদ ১০. তেজস্ক্রিয়তা /প্রতিক্রিয়া এবং স্থায়ীত্ব ঃ
১. ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিক্রিয়া : স্বাভাবিক ব্যবহারে কোন ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
২. ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্লেষিত পণ্য : কার্বন ডাই অক্সাইড।
৩. স্থায়ীত্ব : স্থায়ী।
৪. অসামঞ্জস্যতা (উপাদান এড়ানো): প্রযোজ্য নয়।
অনুচ্ছেদ- ১১. বিষক্রিয়াগত তথ্য
১. জ্বালাপোড়া করা : কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
২. এলার্জি এবং সংবেদনশীল প্রভাব : কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
৩. তীক্ষè বিষক্রিয়া : কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
৪. মিউটাজেনিক প্রভাব : কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
৫. কারসিনোজেনসিটি : তালিকাবদ্ধ নয় (উপাদান অনুযায়ী)।
৬. আইআরসি এর তালিকাবদ্ধ নয় (উপাদান অনুযায়ী)।
৭. ওএসএইচএ এর তালিকাবদ্ধ নয় (উপাদান অনুযায়ী)।
অনুচ্ছেদ- ১২. বাস্তুসংস্থানগত তথ্য
১. বায়োডিগ্রেটিবিলিটি : অংশীভূত বায়োডিগ্রেবল।
২. বিওডি ৫ (মিগ্রা ০২/এমজি) : জানা নেই।
৩. সিওডি ৫ (মিগ্রা ০২/এমজি) : জানা নেই।
৪. এওএক্স ধারণ : জানা নেই।
৫. বাস্তু বিষক্রিয়া : জানা নেই।
৬. নাইট্রোবিষক্রিয়া : জানা নেই।
অনুচ্ছেদ- ১৩. স্থাপন ব্যবস্থা বিবেচনা /বর্জ্য অপসারন
পণ্যের বর্জ্য অপসারণ পদ্ধতি : দূষিত পানি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট।
অনুচ্ছেদ- ১৪. পরিবহন তথ্য ঃ
১. আরটিএমডিআর- এডিআর : তালিকাবদ্ধ নয়।
২. আরআইডি : তালিকাবদ্ধ নয়।
৩. আইএমডিজি/আইএমসিও : তালিকাবদ্ধ নয়।
৪. আইএটিএ : তালিকাবদ্ধ নয়।
অনুচ্ছেদ- ১৫. নিয়মতান্ত্রিক তথ্য
যার যার দেশীয় এবং
আপনার দেশের আইন অনুসরণ করুন।
অনুচ্ছেদ- ১৬. অন্যান্য তথ্য ঃ
এই তথ্যাবলী আমাদের বর্তমান জ্ঞান অনুযায়ী উপস্থাপন করা হয়েছে। এই পণ্য নিরীক্ষণ করে এর এবং পূর্ব সর্তকতা বর্ণনা করা হয়েছে। এই তথ্যাবলী পরিপূর্ণ এটা আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না। গ্রহীতা অবশ্যই আমাদের পণ্য নিজ দায়িত্বে এবং পর্যবেক্ষিত আইন অনুসারে গ্রহণ করবেন।
by Mashiur | Nov 12, 2017 | রাসায়নিক
কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা নীতি
অটো টেক্সটাইল লিঃ তার সংশ্লিষ্টদের সহযোগীদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং আইনগত ও পরিবেশগত নিয়ম-নিতির প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতিশীল। প্রসজ্ঞগতই, বিভিন্ন ধরণের ডাইস ও কেমিক্যালের ব্যবহার টেক্সটাইল বাবসায়ের জন্য অপরিহার্য। ডাইস ও কেমিক্যালের নিরাপদ মজুদ,ব্যবহার ও পরিবহণের নিমিত্তে এবং আইন মেনে সুন্দর পরিবেশ,স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে অটো টেক্সটাইল লিঃ একটি কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা নীতি প্রণয়ন করেছে। জীব বৈচিত্র ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে উৎপাদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে। বিশ্বায়নের যুগে মানুষ তার জৈবিক চাহিদা মেটানোর জন্য একদিকে প্রাকৃতিক পরিবেশকে ধ্বংস করছে অন্য দিকে শিল্প কারখানায় বিভিন্ন প্রকার মারাত্মক রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে প্রাকৃতিক ইকো-সিস্টেমকে করে তুলছে বিপন্ন। রাাসায়সিক পদার্থের নিয়ন্ত্রনহীন ব্যবহারের ফলে মানুষের মধ্যে নানা প্রকার জটিল রোগব্যাধি সৃষ্টি হচ্ছে এবং নানা প্রজাতির উদ্ভিদ- প্রাণী ধ্বংস হচ্ছে । তাই কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা নীতি ও পদ্ধতির মৌলিক ও মুখ্য উদ্দেশ্য হল প্রতিষ্ঠানের জন্য রাসায়ানিক দ্রব্য ক্রয়, ব্যবহার, সংরক্ষণ, এবং অপসারণ সংক্রান্ত নিয়মাবলী ও দায়িত্ব ও কর্তব্য বিস্তারিত বর্ণনা ও বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দেয়া যাতে সুরক্ষিতভাবে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের একটি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয় । …
এই ব্যাবস্থাপনা নীতি অনুসারে-
১) সকল আইনগত নিয়ম-নীতি অনুসরণ করতে হবে।
২) নিরাপাদ ও বিকল্প কেমিক্যাল মূল্যায়ণ এবং ব্যবহারকে প্রাধান্ন দিতে হবে।
৩) কেমিক্যাল সংশ্লিষ্ট সকল তথ্যাদি যেমন- এমএসডিএস, টিডিএস, লেবেল, হ্যাজার্ড সিম্বল এবং সার্টিফিকেটসমূহ (আরএসএল ডিক্লারেশন লেটার, এপিও-ফ্রি সার্টিফিকেট ইত্যাদি) প্রস্তুতকিরী অথবা সরবরাহকারীর নিকট থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
৪) কর্মীদেরকে বিভিন্ন বিষয়ের (যেমন-এমএসডিএস, ব্যক্তিগত সূরক্ষাকারী উপকরণ, কেমিক্যালের নিরাপদ ব্যবহার ইত্যাদি)উপর প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধমে তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং তাদের মনোভাবের প্রকাশ ঘটাতে হবে।
৫) কেমিক্যাল বর্জ্যের যথাপোযুক্ত ব্যবস্থা করতে হবে।
৬)হ্রাসকৃত-ব্যবহার, পুনঃব্যাবহার ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের সু্যোগ থাকলে তা কাজে লাগাতে হবে।
উপরোল্লেখিত নিয়ম-নীতি অনূসরণ ও প্রয়োগের মাধ্যমে কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনার মূল লক্ষ্য অর্জন করা সম্বভ। শুধুমাত্র অবস্থার পরিবর্তন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুনের পরিবরতনের সাথে সঙ্গতি রেখে এ সকল নিয়ম-কানুনের পরিবরতন ও সংশোধন করা হতে পারে।
ভূমিকাঃ
অটো টেক্সটাইলস লিঃ এর কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির উদ্দেশ্যসমূহঃ
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিবেশ নীতিমালা বাস্তবায়নে সহায়তা করা ও সবার জন্য বাস যোগ্য সবুজ পৃথিবী তৈরী করা এবং ক্রেতাদের কোড অব কন্ডাক্ট বাস্তবায়নে সহায়তা করা। বিশেষ কিছু উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য অটো টেক্সটাইলস লিঃ কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা নীতি প্রনয়ণ করেছে। যেমন-
১। নিরাপদ বা ঝুঁকিমুক্ত ডাইস বা কেমিক্যাল ব্যবহার করে নিরাপদ বস্ত্র উৎপাদন করা।
২। ডাইস বা কেমিক্যালের উপযুক্ত ও যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করা।
৩। নিরাপদ ও বিকল্প ডাইস বা কেমিক্যালের মূল্যায়ন এবং সুযোগমত ব্যবহার করা।
৪। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বৃত্তিগত ঝুঁকি হ্রাস করা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৫। কেমিক্যাল বর্জ্যের শোধনের ব্যবস্থা করা।
৬। হ্রাসকৃত-ব্যবহার, পুনঃব্যাবহার ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সম্পদের সংরক্ষন করা।
৭। দেশের আইনের সাথে সাথে কারখানার নিজস্ব নিয়ম-নীতির অনুসরণ করা।
উপোরোক্ত উদ্দেশ্যাবলী শুধুমাত্র যথাযথ কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া অনুসরণের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব।
অটো টেক্সটাইলস লিঃ এর কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াঃ
সঠিকভাবে রাসায়নিক দ্রব্য সরবরাহ, ব্যবহার, সংরক্ষণ, অপসারণের জন্য বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) , দেশের প্রচলিত পরিবেশ আইনের সাথে সম্পূরক জাতীসংঘের পরিবেশ নীতিসমূহ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে স্বাক্ষ্যরিত পরিবেশ নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রবিধি, রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে ক্রেতাদের নির্দেশনা, বাংলাদেশ ক্যামিক্যাল করপোরেশন কর্তৃক কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা নীতি। কেমিক্যালের যথাযথ ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা সম্বন্ধে অটো টেক্সটাইলস লিঃ যথেষ্ট সচেতন।ডাইস ও কেমিক্যাল সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এখানে একটি সুপ্রতিষ্টিত ও কার্যকরী কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা নীতি পর্ষদ রয়েছে। কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা প্রত্যেক টেক্সটাইল কারখানার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বিবেচনার বিষয় যেহেতু উৎপাদিত পণ্যের মাণ ও নিয়োযিত কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি এর সাথে জড়িত। কেমিক্যাল/ডাইস সম্পর্কিত সকল সিদ্ধান্ত ও কর্ম্পরকল্পনার বিষয় অত্র প্রতিষ্ঠানের জেনারেল ম্যানেজার এবং সিনিয়র প্রোডাকশন ম্যানেজার গুরুত্বের সাথে তদারকি করেন।
১।কেমিক্যাল সংগ্রহ বা প্রোক্রিউরমেন্টঃ
আমরা কোন কেমিক্যাল বা ডাইস নির্বাচনের পূর্বে, উক্ত কেমিক্যাল বা ডাইস পরিবেশে কতখানি প্রভাব ফেলবে তা বিবেচনা করি, যেহেতু আমরা আমাদের কেমিক্যাল বা ডাইস ব্যবহারকারী কর্মীদের স্বাস্থ্য,নিরাপত্তা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের ব্যপারে সচেতন। যে সকল কেমিক্যালের কার্যকারীতা যথেষ্ট এবং পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব কম, সেসব কেমিক্যাল ব্যবহার করে উৎপাদন ঠিক রাখাই আমাদের কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা নীতি র মূল লক্ষ্য।
২।কেমিক্যাল মজুদকরণঃ
টেক্সটাইল কারখানার জন্য কেমিক্যাল একটি প্রত্যক্ষ কাঁচামাল। তাই প্রতিদিন আমাদের প্রচুর ডাইস বা কেমিক্যালের প্রয়োজন হয়। আমাদের ভান্ডার বা স্টোর বিভাগ ডাইস বা কেমিক্যালের সরবরাহ ও চাহিদার মাঝে সঙ্গতি রাখেন। ক্রয়কৃত ডাইস/কেমিক্যাল আমাদের কারখানার অভ্যন্তরে নিজস্ব গুদামে সংগ্রহ করা হয়। আমাদের ডাইস/কেমিক্যাল গুদাম যথেষ্ট প্রশস্ত, সুঘটিত এবং বায়ুচলাচলযুক্ত। এই গুদামের সমস্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হয় আমাদের ভান্ডার বিভাগ ও অন্যান্য বিভাগের মধ্যে সম্বন্বয় সাধনের মাধ্যমে। আমাদের কেমিক্যাল মজুদকরণ প্রক্রিয়া নিম্নোক্তভাবে পরিচালিত হয়-
ক)কেমিক্যাল খালাসকরণ বা আনলোডিংঃ
কেমিক্যালের নিরাপদ প্রয়োগ ও পরিচালনার নিমিত্তে এবং দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে কেমিক্যাল ক্রয় থেকে শুরু করে অপসারণ পর্যন্ত কেমিক্যাল সম্পর্কিত প্রত্যেকটি বিষয়ের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়। কেমিক্যালবাহী যানবাহণ আমাদের কারখানায় প্রবেশের পূর্বেই ভান্ডার বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট সকল ধরণের পূর্বপ্রস্তুতি নেয়া হয়। আমাদের প্রশিক্ষিত লোডারগণ ব্যক্তিগত সূরক্ষাকারী উপকরণ পড়ে নেয় এবং আগত যানবাহণ থেকে ডাইস/কেমিক্যাল খালাস করে নেয়। স্টোর কিপার বা ভান্ডার রক্ষক ও সুপারভাইজারগণ এই খালাসকরণের সবকিছু তদারক করেন। এ সময় সব ধরণের পূর্বসতর্কতা অবলম্বন করা হয় যেহেতু লোডারগণ ভারী প্লস্টিক কেমিক্যাল কন্টেইনার, কেমিক্যাল কার্টন বা বস্তা নিয়ে কাজ করে এবং এই কাজে দুর্ঘটনার সুযোগ রয়েছে। সব ধরণের দূর্ঘটনা এড়াতে তারা যত্ন নিয়ে কাজ করে। যারা কেমিক্যাল পরিচালনার সাথে সরাসরি জড়িত, আমরা আমাদের মানবসম্পদ ও কমপ্লায়েন্স বিভাগের মাধ্যমে তাদেরক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকি।
খ)কেমিক্যাল বিন্ন্যাস ও বিন্যাস্তকরণঃ
আমাদের কেমিক্যাল স্টোর বা গুদামকে আমরা শুধুমাত্র ডাইস/কেমিক্যাল সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করে থাকি। কর্মীরা কেমিক্যাল ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার বা বিতরণ কেন্দ্র থেকে ডাইস/কেমিক্যাল সংগ্রহ করে থাকে। কেমিক্যালের ধরণ ও গূণাগুন অনুসারে ডাইস/কেমিক্যালকে সাজিয়ে রাখা হয়। নিরাপদ কেমিক্যাল সংরক্ষণের জন্য আমরা কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা নীতি অনুসরণ করার চেষ্টা করি। বায়ু চলাচল ও পরবর্তী নিরাপত্তার জন্য ডাইস/কেমিক্যালকে নির্দিষ্ট উচ্চতা পর্যন্ত সাজানো হয়।
অনাকাক্ষীত ঘটনা এড়াতে কেমিক্যাল স্টোরে জণসাধারণের প্রবেশ সংরক্ষিত।এখনে কোন কিছু খাওয়া বা পান করা নিষেধ।
অগ্নিদূর্টনা মোকাবেলার জন্য স্টোর সেন্টারে পর্যাপ্ত স্মোক ডিটেক্টর, ফায়ার এক্সটিংগুইশার সহ যাবতীয় ফায়ার ফাইটিং ইকুইপমেন্টের ব্যবস্থা আছে। ইগজস্ট ফ্যানের মাধ্যমে স্টোরের আভ্যন্তরীণ বায়ু চলাচল ঠিক রাখা হয়।
দূর্টনা বা ছলকে যাওয়ার ঝুঁকি এড়াতে আমরা কিছু স্থানে সেকেন্ডারী কন্টেইনমেন্ট ব্যবহার করি। স্ব স্ব কেমিক্যাল কন্টেইনার বা বস্তায় এমএসডিএস লাগিয়ে রাখা হয়। কোন ডাইস/কেমিক্যাল কন্টেইনার বা বস্তার লেবেল বা নাম নষ্ট হলে আবার তা নতুন করে লাগিয়ে দেয়া হয়।
গ)কেমিক্যাল বিতরণঃ
কেমিক্যাল ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার বা বিতরণ কেন্দ্র থেকে ডাইস/কেমিক্যাল বিতরণ করা হয়। ডাইস/কেমিক্যালের সুন্দর বিতরণ ও প্রয়োগের জন্য এবং ঝুঁকি এড়াতে প্রত্যেক ডাইস/কেমিক্যালকে তার নিজস্ব কম্পার্টমেন্ট বা কোঠায় রাখা হয়। প্রত্যেক কম্পার্টমেন্ট বা কোঠাতে কেমিক্যালের নামসহ ঝুঁকিচিহ্ন লাগানো আছে। হঠাৎ ছলকে পড়া বা কোন জরুরী অবস্থা মোকাবেলা করার জন্য এই কম্পার্টমেন্ট গুলো সুন্দর প্রকৌশল দ্বারা গঠিত এবং অভ্যন্তরীণ ড্রেনেজের মাধ্যমে ইটিপি’র সাথে সংযুক্ত।কর্মীরা ডাইস/কেমিক্যাল আনা-নেওয়া করার জন্য নির্দিষ্ট ডাইস/কেমিক্যাল পাত্র বা বালতি এবং ট্রলি ব্যবহার করে। স্টোর কিপার সমস্ত ভান্ডারের দেখাশুনা করে এবং তার অধীনে কর্মরত কর্মীদেরকে পরিচালিত করে।
ঘ) জরুরী অবস্থার জন্য প্রস্তুতিঃ
যে কোন ধরণের বিরুপ অবস্থা বা দূর্ঘটনা, যেমন-অগ্নিদূর্ঘটনা,কেমিক্যাল ছলকে পড়া বা স্পিলেজ ইত্যাদি মোকাবেলা করার জন্য আমাদের যথেষ্ট পূর্বসতর্কতা বা পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করা আছে। সম্পূর্ণ কারখানা এবং স্টোরের অভ্যন্তরে যে কোন ধরণের অগ্নিদূর্ঘটনা মোকাবেলা করার জন্য যথেষ্ট পূর্বপ্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা, যেমন- ফায়ার এক্সটিংগুইশার, ফায়ার এলার্ম (হস্তচালিত ও স্বয়ংক্রিয়),অন্যান্য ফায়ার ফাইটিং যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা সহ কর্মীদেরকে কারখানার অভ্যন্তরে ফায়ার ফাইটিং প্রশিক্ষণ ও অগ্নিদূর্ঘটনার মহড়ার ব্যবস্থা করা হয়।
জরুরী মুহূর্তে ব্যবহারের জন্য কেমিক্যাল বিতরণ কেন্দ্রে ফার্স্ট এইড বক্স রাখা আছে।এখানে সেফটি শাওয়ার ও আইওয়াশের ব্যবস্থাও আছে যাতে কর্মীরা দরকার মত ব্যবহার করতে পারে।
জরুরী চিকিৎসা সেবা পাওয়ার জন্য আমাদের কারখানার অভ্যন্তরে একটি মেডিক্যাল সেন্টার আছে যা একটি দক্ষ ও ফুলটাইম মেডিক্যাল টিম দ্বারা পরিচালিত।
ঙ) এমএসডিএস ব্যবস্থাপনাঃ
ডাইস/কেমিক্যাল সম্বন্ধে কর্মদের জ্ঞান বাড়ানোর জন্য কেমিক্যাল স্টোর ও বিতরণ কেন্দ্রের বিভিন্ন স্থানে বা কেমিক্যাল কন্টেইনারে ‘দ্রব্যের নিরাপত্তা তথ্য বিবরণী চার্ট’ (এমএসডিএস)ও ‘সংক্ষিপ্ত/সহজকৃত নিরাপত্তা তথ্য বিবরণী চার্ট’ সংযুক্ত করা হয়। ‘সংক্ষিপ্ত/সহজকৃত নিরাপত্তা তথ্য বিবরণী চার্ট’ বা এ্যাবস্ট্র্যাক্টেড এমএসডিএস কে আমাদের মাতৃভাষায় সংকলিত করা যাতে শ্রমিকগণ এ্যাবস্ট্র্যাক্টেড এমএসডিএস সহজে পড়তে পারে এবং তারা যেসব ডাইস/কেমিক্যাল নিয়ে কাজ করে সেসব ডাইস/কেমিক্যাল সম্বন্ধে তাদের জ্ঞানকে বাড়াতে পারে। কেমিক্যাল প্রস্তুতকারক/সরবরাহকারী সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে আমরা সকল এমএসডিএস কে হালনাগাদ রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করে থাকি।
চ) ব্যক্তিগত সুরক্ষাকারী উপকরণঃ
ডাইস/কেমিক্যাল নিয়ে যখন কোন কাজ করা হয়, কারখানার নিয়মানুযায়ী প্রত্যক কর্মীর জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিগত সূরক্ষাকারী উপকরণ ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। কর্মক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সূরক্ষাকারী উপকরণ সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট বাক্স রাখা আছে যাতে কর্মীরা সহজে দরকার অনুযায়ী সূরক্ষাকারী উপকরণ ব্যবহার করতে পারে।আমাদের স্টোর ডিপার্টমেন্টে নিয়োযিত স্টোর কিপার ও সুপারভাইজারগণ যথেষ্ট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যেন তারা তাদের অধীনে কর্মরতদেরকে দক্ষতার সাথে পরিচালিত করতে পারে। কেমিক্যাল স্টোর বা বিতরণ কেদ্রে সুষ্ঠু ডাইস/কেমিক্যাল পরিচালনার সাথে তারা সরাসরি জড়িত থাকে। মানবসম্পদ ও কমপ্লায়েন্স বিভাগের কর্মকর্তাগণ কারখানার অভ্যন্তরীণ কর্মপরিবেশ পরিদর্শন করে সবকিছুর তদারক করেন। অতঃপর তাদের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন অনুযায়ী নতুন পদক্ষেপ প্রদান করা হয় নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য।
ছ) খালি ড্রাম বা কন্টেইনার ব্যবস্থাপনাঃ
ডাইস/কেমিক্যাল ব্যবহারের পর খালি ড্রাম/কন্টেইনারকে ভালোভাবে পরিষ্কার করার পর ধোয়া হয়। এদেরকে পরিষ্কার বা ধোয়ার পূর্বে ড্রাম/কন্টেইনারের লেবেল তুলে ফেলা হয়। এরপর এসব ড্রাম/কন্টেইনার গুলোকে প্রত্যক্ষ সূর্যের আলো/রোদ থেকে দূরে রাখতে দেশের আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট ছাউনির নিচে রাখা হয়।
৩।ডাইস/কেমিক্যালের যথাযথ প্রয়োগঃ
আমাদের ডাইং ফ্লোরে কর্মরত শ্রমিক বা ডাইং/ফিনিশিং মেশিন চালক শ্রমিকরা বিভিন্ন ধরণের কেমিক্যাল ব্যবহার করে বিধায় তারা কেমিক্যালের নিবিঢ় সংস্পর্শে আসে। ডাইং/ফিনিশিং রিকুইজিশন অনুযায়ী তারা কেমিক্যাল বিতরণ কেন্দ্র থেকে ডাইস/কেমিক্যাল সংগ্রহ করে এবং মেশিনে প্রয়োগ করে। যখনই তারা কেমিক্যাল কাজ করবে, যেমন-দাইস/কেমিক্যাল সংগ্রহ করা,আনানেওয়া করা, মেশিনে প্রয়োগ করা ইত্যাদি, তখনই ব্যক্তিগত সূরক্ষাকারী উপকরণ ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক।কেমিক্যাল গ্রহণ ও প্রয়োগের সময় ডাইস/কেমিক্যালের পাত্র বা বালতিতে ডাইস/কেমিক্যাল অনুসারে লেবেল বা ট্যাগ করতে হয়, যাতে ডাইস/কেমিক্যালের লেবেল বা নাম না থাকার কারণে ভুল প্রয়োগের সুযোগ না থাকে।
শ্রমিক/কর্মী্দের যাতে জ্ঞানের বৃ্দ্ধি হয় এবং তারা নিরাপদে ডাইস/কেমিক্যাল নিয়ে কাজ করতে পারে, সেজন্য প্রত্যেক মাসে কমপক্ষে একবার বিশেষ কিছু বিষয়ের (যেমন-নিরাপদে ডাইস/কেমিক্যাল ব্যবহার, যথাযথ ব্যক্তিগত সূরক্ষাকারী উপকরণের ব্যবহার, নিয়াপত্তার প্রস্তুতি, সহজ/সংক্ষিপ্ত এমএসডিএস) উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণের শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের মনোভাব প্রকাশের সুযগ দেয়া হয় এবং উপযুক্ত মাধ্যমে উক্ত মনোভাবের বিকাশ ঘটানোর সুযোগ দেয়া হয় যাতে নিরাপদ কেমিক্যাল পরিচালনা ও প্রয়োগের বাস্তবায়ন সহজ হয়। কারখানার বাহিরেও আমরা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে অংশ নেই এবং সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত নিয়ম-কানুনের সাথে নিজেদেরকে চলমান রাখি।
ডাইং/ফিনিশিং ফ্লোরে খাওয়া বা পান করা সকলের জন্য নিষেধ। এই নিয়ম শ্রমিকদের মঙ্গলের জন্য করা হয়েছে। কারখানার পক্ষ থেকে খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়। তাই ফ্লোরে খাবার পানির খালি বোতল এবং কেমিক্যালের কোন বালতি বা পাত্র লেবেল ছাড়া রাখা নিষেধ। এর দ্বারা অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ থেকে বাঁচা সম্ভব।
৪।কেমিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনাঃ
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া যেখানে বিভিন্ন ধরণের ডাইস-কেমিক্যালের সাথে সাথে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়।বস্ত্র প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য পানির বিকল্প নেই এবং তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে প্রচুর ডাইস/কেমিক্যাল ব্যবহারের সাথে সাথে প্রচুর দূষিত পানির উৎপন্ন হয় যা অগ্রাহ্য করার উপায় নেই।দূষিত পানিকে শোধন করার জন্য আমরা একটি কার্যকরী এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) স্থাপন করেছি যা সর্বক্ষণ দুষিত পানিকে শোধন করছে। ইটিপিতে আগত এবং ইটিপি হতে শোধনকৃত নির্গত পানির সমস্ত রেকর্ড রাখা হয় পরবর্তী প্রয়োজনের জন্ন।দূষিত পানি শোধনের ফলে অনেক স্লাজের সৃষ্টি হ্য়।আমরা আইনগত পন্থায় এ স্লাজের ব্যবস্থা করে থাকি।আইন অনুযায়ী ছয় মাস সংরক্ষণ করার পর আমাদের নিজস্ব ল্যান্ড ফিলিং সাইট বা মাটি ভরাটের জায়গায় ফেলে থাকি।
উৎপাদন প্রক্রিয়ার সাথে প্রত্যেক দিন আরও অনেক বর্জ্য, যেমন-কার্টন,পলিথিন,টুকরো কাপড়,ফ্যাব্রিক ডাস্ট ইত্যাদির উদ্ভব হয়। আমরা এ সকল বর্জ্যের যথাযথ ব্যবস্থা করে থাকি। আমাদের কারখানার অভ্যন্তরকে পরিষ্কার ও পরিপাটি রাখার নিমিত্তে একটি পরিচ্ছন্ন-কর্মীর দল বা ক্লিনার গ্রুপ রয়েছে যারা সর্বক্ষণ কাজ করে থাকে। যথার্থ ভাবে পরিষ্কির ও ময়লা ফেলার বিষয়ে আমরা তাদেরকে প্রসশিক্ষণ দিয়ে থাকি যেন তারা তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে পারে। ময়লা/বর্জ্য সংগ্রহ করার পর তারা ময়লাগুলোকে আলাদা করে পুনঃরায় কাজে লাগবে এমন ময়লা স্টোর সেকশনে পাঠিয়ে দেয় এবং অবশিষ্টাংশ ফেলে দেয়।
আমাদের কারখানার অভ্যন্তরীণ পরিবেশ কমপ্লায়েন্স বিভাগের কর্মকর্তা দ্বারা বিভিন্ন সময়ে পরিদর্শিত হয়। স্টোরসহ অন্যান্য বিভাগের শ্রমিক বা কর্মকত্রাগণ বর্জ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতেছে কিনা তা কমপ্লায়েন্স বিভাগ কর্তৃক পর্যবেক্ষণ করা হয়।
৫।আমাদের ভালো চর্চা ও উদ্দ্যোগ সমূহঃ
কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা নীতি, পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার চর্চায় অগ্রপথিক হওয়ার জনয় আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি্যপরিবেশ বান্ধব উপায়ে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য।বাস্তব কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা নীতি প্রয়োগের জন্য আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। যেমন-
(ক) প্রযুক্তির মূল্যায়ণঃ
নতুন প্রযুক্তির মূল্যায়ণ ও ব্যবহারের মাধ্যমেই আমরা আমাদের সময়,অর্থ ও সম্পদের সুব্যবহার ও সংরক্ষণ করতে পারি।আমরা আমাদের চলমান মেশিনগুলোর কার্যক্ষমতা যাচাই করি যদি এগুলো কম লিকার রেশিওতে চালানো যায়।লিকার রেশিও টেক্সটাইল কারখানার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।লিকার রেশিও কমাতে পারলেই ডাইস ও কেমিক্যালের ব্যবহার কমিয়ে কার্যকারিতা বাড়ানো সম্ভব। এমন ডাইস/কেমিক্যাল,ডাইস অক্সিলিয়ারিজ যা ব্যবহার করলে লিকার রেশিও কম লাগে বা ওয়্যাশ সাইকেল বাদ দেয়া যায়-তার কোন আবির্ভাব বা প্রবর্তন ঘটলে আমাদের উচ্চ ব্যবস্থাপনার পক্ষ থেকে তা যাচাই করে মালিক পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে কার্যকর করার পদক্ষেপ নেয়া হয়।
(খ) লিকার রেশিও সম্বনবয় করাঃ
টেক্সটাইল প্রক্রিয়আজাতকরণে লিকার রেশিও কমানো বা এডজাস্ট করার মাধ্যমে ডাইস/কেমিক্যাল ও পানি সংরক্ষণ করা যায়। লিকার রেশিও কমানো বা এডজাস্ট করার মাধ্যমে তা কমানো যায়। তা না হলে বিকল্প কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় যাতে লিকার রেশিও কম লাগে। প্রযুক্তি মূল্যায়ণের মাধ্যমে আমরা হান্টসম্যান কেমিক্যাল প্রস্তুতকারকের Avitera SE-নামক ডাইস্টাফ ব্যবহার করছি-যা স্বয়ং হান্টসম্যান কর্তৃক “সেভ দা আর্থ” শিরোনামে বাজারজাত করা হয়।আমরা তৃতীয় প্রজন্মের ওয়াশ অফ, যেমন-ডেকল আরএসএ (“রিসোর্স সেভিং এজেন্ট”) ও ক্রসকালার বিসিএসার ব্যবহার করি যা পানি সম্পদ সংরক্ষণে সহায়তা করে। বিদ্যমান ডাইস্টাফের চেয়ে ভালো কোন আবিষ্কার থাকলে তা ব্যবহারের যথাসাধ্য চেষ্টা করি।
(গ)পুনঃপ্রকৌশলের প্রয়োগঃ
টেক্সটাইল বা বস্ত্র প্রক্রিয়াজাতককরা একটি চলমান পুনঃপ্রক্রিয়া যার মধ্যে বিভিন্ন ধরণের ডাইস/কেমিক্যালের প্রয়োজন হয়। ফ্যাব্রিক রেসিপিতে সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রচুর ডাইস/কেমিক্যাল ও পানি সম্পদ বাঁচানো সম্ভব। আমাদের প্রোডাকশন টিম ট্রায়াল ও ইরোর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ডাইস/কেমিক্যালের ডোজকে অপ্টিমাইজ করার চেষ্টা করেন। যেমন- আমরা ১গ্রাম/লিটার হিসেবে ডিটারজেন্ট ব্যবহার করি। পরবর্তীতে এই ডিটারজেন্টের হারকে ১০%(0.১গ্রাম) কমিয়ে 0.৯গ্রাম/লিটার দ্বারা কয়েকটি ট্রায়াল ব্যাচ করা হয়। উক্ত ব্যাচগুলোর রিপোর্ট রিভিউ করে প্রসেস ডিজাইনকে পরিবর্ত্ন করা হয়। কাজের মানকে ঠিক রেখে প্রত্যেক কেমিক্যালের ডোজ অপ্টিমাইজেশন এভাবে করা হয়।আবার বিদ্যমান প্রসেস ডিজাইনকে পুনঃমূল্যায়ন করা হয় যদি প্রসেসের কোন অংশকে বাদ দিয়ে নতুন প্রসেস ডিজাইন তৈরী করা যায়। যেমন- কোন প্রসেস ডিজাইনে ৫মিনিটের অভারফ্লো রিঞ্জিং আছে।এখন আমাদের প্রোডাকশন টিম এই পুনঃপ্রক্রিয়া ও পুনঃপ্রকৌশলের মাধ্যমে এই রিঞ্জিং সাইকেলকেলের পরিবর্তে সিঙ্গেল ফিল্ড ওয়াশের ড্রেন সাইকেলের মাধ্যমে অপ্টিমাইজড করা যায় কিনা। শক্তি ও সম্পদের সংরক্ষণে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়। আমাদের ডাইং ও প্রোডাকশনের সিনিয়র ম্যানেজার সর্বদা উক্ত বিষয় সম্পর্কে নতুন প্রবর্তনের ব্যবপারে সচেষ্ট থাকেন।
(ঘ) সঠিক তথ্য সংরক্ষণঃ
পানি ও কেমিক্যালের ব্যবহারের পরিমাণ যাচাই করা আমাদের কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনার কার্যকারীতা মূল্যায়নের একমাত্র পরিমাপক। পানি ও কেমিক্যালের ব্যবহারের পরিমাণ সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করা হয়। তথ্য সংরক্ষণ ব্যতীত আমরা পানি বা কেমিক্যালের সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে পারি না। কেমিক্যালের মোট ব্যবহার স্টোর ডিপার্টমেন্ট থেকে এবং পানির মোট ব্যবহার ও অপসারনের পরিমাণ মিটার স্থাপনের মাধ্যমে সংরক্ষিত হয়। আবার প্রত্যেক সেকশন বা বিভাগের কেমিক্যাল ও পানি বাবহারের আলাদা আলাদা হিসেব রাখা হয় যাতে পরবর্তী কোন বিশ্লেষণে কাজে লাগে।
ঙ)সচেতনতা বৃদ্ধিঃ
ডাইস/কেমিক্যালের সঠিক ব্যবহার ও নিরাপদ কেমিক্যাল পরচালনা সম্পর্কে কর্মীদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদানের করে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ডাইস-কেমিক্যালসহ পানি ও শক্তি সম্পদের অপচয় ও অপব্যভার হ্রাস করা মম্ভব।প্রশিক্ষণ চলাকালে শ্রমিক-কর্মীদের সাথে মত আদান-প্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা প্রদান করা হয়।অল্প সচেতনতাই আমাদেরকে বড় ক্ষতি ও দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে পারে। আমাদের ডাইং ও ফিনিশিং ফ্লোর-যেখানে ডাইস/কেমিক্যাল সরাসরি ব্যবহার করা হয় সেখানে স্থানে পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত সচেতনতামূলক পোস্টার লাগানো আছে। এছাড়া ডাইস/কেমিক্যালের সঠিক ব্যবহার ও নিরাপদ কেমিক্যাল পরচালনা সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ নিয়মিত ভাবেই প্রদান করা হয়।
৬। রিভিউ/চেকিংঃ
টেক্সটাইল প্রক্রিয়াজাতকরণে আমারাই শীর্ষে না। আরও টেক্সটাইল কারখানা আছে যারা আমাদের চেয়ে ভাল। যারা শীর্ষে আছে আমারা তাদেরকে অনুসরণ করার চেষ্টা করে থাকি। আমরা এমন একটি কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির প্রবর্তন ও অনুসরণ করতে যাচ্ছি যা হবে কার্যকর, নিরাপদ ও যথার্থ।কেমিক্যাল সম্পর্কিত যেকোন বিষয় নিবিড় ভাবে প্রর্যবেক্ষণ করা হয় যাতে আমরা সমস্যা ও দূর্বলতা সহজ স্মাধান করে আরও সামনে অগ্রসর হতে পারি। কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত যেকোন বিষয় আমাদের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের মাঝে খোলাখুলি ভাবে আলোচনা করা হয় যাতে এ সম্পর্কিত সবাই মত প্রকাশের সুযোগ পায় এবং কার্যকরণ অংশ থেকেই সংশোধন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। আমরা সর্বদা আমাদের কেমিক্যাল ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং পরিবেশের অনূকূলতার দিক মাথায় রেখে সব ধরণের বাস্তব ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি।
৭। সংশোধনীমূলক পদক্ষেপঃ
ত্রুটি আমাদের কাজ বা সিদ্ধান্তের একটি অংশ। আমাদের পূর্বেকার ভুল বা দূর্বলতা সংশোধণের জন্য সব ধরণের সংশোধনীমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়ে থাকে। কার্যকরণ অংশে একটি ছোট ভুল সমস্ত উন্নয়নের পদক্ষেপকে পালটে দিতে পারে। একারনে সংশোধনীমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও তার নিয়মিত তদারকি প্রয়োজন। আমাদের কর্মস্থল প্রত্যকদিন পরিদর্শন করে যেসকল স্থানে ডাইস/ কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় সে সকল স্থানের বিদ্যমান অবস্থা যাচাই করা হয়। অবস্থার কোন পরিবর্তন পেলে সংগে সংগে উপযুক্ত লোকের সাথে যোগাযোগ করে তার সংশোধন মূলক যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়। সরাসরি কর্মীদের নিকট থেকে আমরা মতামত গ্রহণ করে যাতে কোন সমস্যার সমাধান রুট লেভেল থাকে করা যায়।
উপসংহারঃ
মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর, জীববৈচিত্রের জন্য ধ্বংসকারী, নিষিদ্ধ রাসায়নিক দ্রব্য (ইধহবফ ঈযবসরপধষ) ব্যবহার না করা, ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্য সমূহ বিধি সম্মতভাবে ব্যবহার, সংরক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও অপসারণ করার মাধ্যমে উৎপাদন ব্যবস্থা অব্যাহত রেখে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মী ব্যবস্থাপনা তৈরী-ই ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মূল লক্ষ্য।উন্নয়ন ও অগ্রগতি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং ত্রুটি তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। টেক্সটাইল প্রযুক্তিতে সার্বিক উন্নয়নের জন্য এবং একটি অভূতপূর্ব কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা প্রবর্তনের নিমিত্তে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।আমাদের কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা পর্ষদ খুবই সচেতন এবং কেমিক্যাল প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোন পরিবর্তন-প্রবর্তনের সাথে নিজেরদেরকে খাপ খাওয়াতে যথেষ্ট আগ্রহী। কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বশেষ হালনাগাদ অবস্থায় পৌঁছানোর জন্য আমরা সচেষ্ট যেহেতু আমাদের কেমিক্যাল ব্যস্থাপনা প্রক্রিয়া একটি দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যবস্থাপনা পর্ষদ দ্বারা পরিচালিত যারা দীর্ঘদিন সফলতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।তাদের অবিরাম ও অকান্ত পরিশ্রম বদৌলতে আমরা আমাদের কারখানাতে একটি নিরাপদ কেমিক্যাল পরিচালনা পরিবেশ গড়তে এবং আমাদের ব্যবসায়িক কার্যকলাপকে পরিবেশ বান্ধব উপায়ে পরিচালিত করতে সমর্থ হয়েছি।