Select Page

অগ্নি নির্বাপন ঝুঁকি সমূহ

অগ্নি নির্বাপন অস্বাস্থ্যকর ধোঁয়া প্রাথমিক অবস্থায় মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ (আগুনে পুড়ে নয় ধোঁয়া নিঃশ্বাসের সাথে গ্রহণের ফলে বেশিরভাগ মানুষ মারা যায়।) নিুে ধোঁয়ার আরও ঝুঁকি সমূহ নিচে উল্লেখ করা হলো ঃ

অগ্নিকান্ড ঘটার ফলে শ্বাসরোধকর অবস্থার সৃষ্টি হয় অথবা বাতাসে অক্সিজেনের অভাব হয়।

অগ্নিকান্ডের ফলে দূষিত গ্যাস উৎপন্ন হয়।

দীর্ঘক্ষণ উত্তপ্ত ধোঁয়া গ্রহণের ফলে ফুসফুসের ভিতর জ্বলন সৃষ্টি হয়।

উদাহরন ঃ একটি গাড়ীতে কাঁচ বন্ধ অবস্থায় সিগারেট খেলে আটকে পড়া ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং দমবন্ধ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

অগ্নি নির্বাপনে আরও যে সব ঝুঁকি থাকে তা হলো ঃ

অগ্নি নির্বাপন ধোঁয়ার ফলে দৃষ্টি অস্পষ্ট হয়ে যায়। বিল্ডিং এর ভেতরে থাকা ব্যক্তি কিছুই দেখতে পায় না। রাস্তা হারিয়ে ফেলে ধোঁয়া এবং আগুনের ফাঁদে পড়ে মৃত্যুবরণ করে।

বিল্ডিং ধ্বসে পড়তে পারে ভেতরের লোকের উপর।

বিজ্ঞান সম্মত নির্বাপন ব্যবস্থা ঃ

আগুনের মৌলিক উপাদান

আগুনের চারটি মৌলিক উপাদান আছে যা আগুন লাগাতে পারে অথবা অগ্নিশিখাকে উজ্জ্বীবিত করতে পারে। এই মৌলিক উপাদানগুলো শ্রেণীকৃতভাবে আগুনের চতুর্থ কারণ। আগুনের চতুর্থ কারণগুলো হল ঃ

ক) বশীভূত মাধ্যম (জ্বালানী)

খ) তাপ

গ) সক্রিয় রাসায়নিক পদার্থের প্রতিক্রিয়া

ঘ) অক্সিডাইজিং মাধ্যম (অক্সিজেন)

ক) বশীভূত মাধ্যম ঃ বশীভূত মাধ্যম অথবা জ্বালানী বৃহৎ আগুন লাগার প্রধান কারণ। বশীভূত মাধ্যম বা জ্বালানী আগুনের সংস্পর্শে আসলে খুব সহজেই আগুন জ্বালাতে সাহায্য করে এবং নিজে জ্বলে। সাধারণত সব ধরণের জ্বালানীই কার্বন ধারণ করে যাতে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন যুক্ত থাকে।

খ) তাপ ঃ তাপ আগুনের চতুর্থ কারণের শক্তির উপাদান। যখন তাপ জ্বালানীর সংস্পর্শে আসে তখন তাপ জ্বালানীকে জ্বলানোর জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি জোগান দেয়। ফলে খুব সহজেই জ্বালানী জ্বলতে সক্ষম হয়।  তাপের সংস্পর্শে আসার কারণে তরল এবং কঠিন জ্বালানী খুব সহজেই আগুন ধারণ করতে পারে।

গ) সক্রিয় রাসায়নিক পদার্থের প্রতিক্রিয়া ঃ অগ্নিকান্ড ঘটার ফলে সক্রিয় রাসায়নিক পদার্থ আগুন বা তাপের সংস্পর্শে আসলে খুব সহজেই ্প্রজ্জ্বলিত হতে পারে।

ঘ) অক্সিডাইজিং মাধ্যম ঃ অগ্নিকান্ড বা আগুন লাগার পর অক্সিডাইজিং মাধ্যম আগুনের সংস্পর্শে এলে সহজেই অগ্নিশিখা উদ্দীপ্ত হতে পারে।

নির্বাপক ব্যবস্থা

কিভাবে আগুন নির্বাপন করতে হবে এই শাখাতে তাই নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বর্ণনা করা হয়েছে আগুন নির্বাপনের পদ্ধতি ঃ

পানির ব্যবহার ঃ

প্রথমত, পানি আগুনকে ঠান্ডা করার মাধ্যমে নির্বাপন করে। পানি আগুনের তাপকে ঠান্ডা করে আগুন নির্বাপন করে থাকে। তাপ ছাড়া আগুন বেশিক্ষণ তার ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে না ফলে আগুন নিভে যায়।

দ্বিতীয়ত, পানি আগুনের বশীভূত মাধ্যম বা জ্বালানীকে ভিজিয়ে তাপ ধরে রাখার ক্ষমতা হ্রাস করে এবং জ্বালানীর শক্তিকে হ্রাস করে ফলে আগুন স্থায়ী হতে পারে না।

তৃতীয়ত, পানি সক্রিয় রাসায়নিক পদার্থ (আগুন ধরাতে সক্ষম) কে ক্ষমতাহীণ করে সহজেই আগুন নেভাতে পারে।

খোলা বাতাসে আগুন ঃ

খোলা বাতাসে অগ্নিকান্ড হলে যেমন খুব দ্রুতই চারিদিকে ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এতে দ্রুত সম্পদের ক্ষতির পরিমাণ বেশী হতে পারে তেমনি খোলা বাতাসে আগুন দ্রুত নেভানো সম্ভব পর্যাপ্ত পানির পানির বষর্নের ব্যবস্থার মাধ্যমে।

বন্ধ স্তুপে আগুন ঃ

বন্ধ স্থানে বা স্তুপীকৃত আগুন নির্বাপন অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে কারণ দেয়ালের রং, বিভিন্ন বশীভূত মাধ্যম যেমন- কাঠ, তেল ইত্যাদির কারণে অগ্নি শিখা মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। তবে স্তুপীকৃত অগ্নিকান্ড স্থান পানি অথবা অন্যান্য অগ্নি নির্বাপক বস্তুর মাধ্যমে অগ্নি নির্বাপন সম্ভব।

শ্বাসরোধকর আগুন ঃ

আগুনের কারণে সৃষ্ট ধোঁয়ায় বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস উৎপন্ন হতে পারে। যা শ্বাস-কষ্ট এবং চোখে অন্ধকার দেখা এবং ঝাপসা দেখার কারণ। সৃষ্ট ধোঁয়ার ফাঁদে পড়ে শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে সাময়িকভাবে অচেতন হয়ে পড়ে অগ্নিকান্ড এরিয়া থেকে বের হতে পারে না ফলে আগুনে পুড়ে মারা যায়।

অবাধ বায়ু চলাচল কৌশল অথবা আগুন বিচ্ছিন্নকরণ ঃ

অবাধ বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকা অপরিহার্য্য। অবাধ বায়ু চলাচল করলে আগুন প্রবল আকারে জ্বলতে পারে না কারণ আগুন তার জ্বলন ক্ষমতা স্থায়ী করতে পারে না। তাছাড়া অবাধ বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকলে সহজেই আগুনকে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব হয়।

আগুনের শ্রেণীকরণ ঃ

অ্যালার্মের মাধ্যমে আগুনের শ্রেণীকরণ এবং বিপদের ঝুঁকি সনাক্তকরণ করা যেতে পারে। যেমন ঃ “এক অ্যালার্ম”, “দুই অ্যালার্ম”, “তিন অ্যালাম” (ভয়াবহ আগুন)।