Select Page
অগ্নী নিরাপত্তা কি? আগুনের ক্ষেত্রে করনীয় বিষয় সমুহ কি কি?

অগ্নী নিরাপত্তা কি? আগুনের ক্ষেত্রে করনীয় বিষয় সমুহ কি কি?

অগ্নী নিরাপত্তা ঃ

আগুন, তৈরী পোষাক শিল্পে একটি প্রধান সমস্যা যা নিমিষেই ধ্বংস করে দিতে পারে তৈরী পোষাক ও এর প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে, শেষ করে দিতে পারে শ্রমিকদের মূল্যবান জীবন।  ৩০% কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের নিয়ে কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষন দিবে। সকল শ্রমিকের জন্য সাধারনভাবে প্রশিক্ষনের উপাদান হিসাবে দেয়ালে লিফলেট/ পোষ্টার লাগাতে হবে। সরকারী প্রতিষ্ঠানের অগ্নি প্রশিক্ষন প্রাপ্ত কর্মচারী দিয়ে ফায়ার সাব-কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষন ও পুনঃ প্রশিক্ষন দিতে হবে। অগ্নিনিরাপত্তার প্রশিক্ষন সংক্রান্ত সকল রেকর্ড সংরক্ষন করতে হবে। এই ভয়াবহ আগুনকে প্রতিরোধের জন্য ব্যাবিলন গ্রুপের “ফায়ার সেফটি পলিসি” নামে লিখিত কৌশল আছে যা নিম্নে দেওয়া হলো ঃ Also check english version …

  • কারখানার প্রতিটি সেকশন থেকে বের হওয়ার দরজা কারখানায় কাজ চলাকালীন সময়ে  খোলা থাকে যাতে সব দরজা দিয়ে সহজে বের হওয়া যায়।
  • সাধারণ বর্হিগমন পথ ছাড়া অগ্নিকান্ডের সময় বের হয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে জরুরী বর্হিগমনের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক জরুরী বর্হিগমন পথ আছে এবং এগুলো এমন ভাবে অবস্থিত যাতে প্রত্যেক ব্যক্তির তার কাজের স্থান থেকে বর্হিগমন পথ পর্যন্ত বাধাহীন ভাবে এবং স্বচ্ছন্দে পৌছাতে পারে।
  • কারখানায় নিযুক্ত প্রতিটি শ্রমিকের জন্য অগ্নিকান্ড সম্পর্কে  কার্যকর এবং সহজে শ্রবণযোগ্য উপায়ে হুসিয়ারী সংকেত দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।
  • আগুন লাগলে দ্রুত কারখানায় এসে যাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সক্ষম হয় এ জন্য স্থানীয় ফায়ার ব্রিগেড ইউনিটের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করা হয়।
  • কারখানার প্রতিটি সেকশনে প্রয়োজসীয় সংখ্যক একটি করে ফায়ার হোজ পাইপ আছে ।
  • অগ্নি দূর্ঘটনা ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নীতিমালা বিশেষ বর্ণনা

  • প্রত্যেক ফ্লোরে স্থানীয় ভাষায় লিখিত প্রতিটা আইটেম নির্দেশ করে নির্গমন নক্সা থাকবে, যাতে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র, ফায়ার হোস, প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্স, পানির ট্যাংক, বাকেট থাকবে এবং ”আমি এখানে” শব্দসমূহ দ্বারা নিজের অবস্থান বুঝাবে।কারখানায় কার্বন-ডাইঅক্রাইড,  ড্রাই পাউডার, কার্বন টেট্রাক্লোরাইড নির্মিত যথেষ্ট পরিমান বহন যোগ্য অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র আছে ।
  • কারখানার প্রত্যেক বিভাগে নিযুক্ত শ্রমিকদের এক চতুর্থাংশকে বহনযোগ্য অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষন দেওয়া হয়।
  • অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে  প্রশিক্ষনকে আরো কার্য কারী করার জন্য প্রত্যেক মাসে কমপক্ষে একবার করে কারখানায় অগ্নিনির্বাপক মহরার আয়োজন করা হয়।
  • আগুন লাগলে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করার জন্য কারখানায় “ফায়ার ফাইটিং টিম” ও “রেসকিউ টিম ” নামে দু টি টিম আছে।
  • কারখানার জন্য বিপদজনক হওয়ার যুক্তিসংগত যথেষ্ট কারণ থাকায় কারখানার অভ্যন্তরে ধুমপান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অগ্নি নিরাপত্তা (ঋরৎব ঝধভবঃু) ঃ আগুনের কারনে যে ধরনের ক্ষয় ক্ষতি হয় তা কখনো আন্দাজ করা যায় না। অগ্নিকান্ড থেকে নিরাপদ থাকার দুটি উপায় রয়েছে, যেমন – আগুনের সূত্রপাত হতে না দেয়া এবং অগ্নিকান্ড হলে পরিকল্পনা মোতাবেক নির্বাপন করে ক্ষয়ক্ষতি রোধ করা। অগ্নিকান্ড রোধ কিংবা

 

অগ্নি নিরাপত্তা

অগ্নিকান্ডের জন্য সাধারনত ঃ কারখানা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নিম্নলিখিত নীতিগুলি গ্রহন করবে ঃ

বর্হিগমন দরজাঃ

জরুরী প্রয়োজনে ব্যবহার করার জন্য বর্হিগমন দরজা প্রস্থে  ৩র্২র্  এবং উচচতায় ৭র্৮র্  হবে। প্রতিটি দরজা এমন ভাবে তৈরী করতে হবে যাহা বাইরে থেকে খোলা যায়। প্রতিটি দরজায় ইংরাজী ও স্থানীয় ভাষায় লাল অক্ষরে “বর্হিগমন” কথাটি লেখা থাকবে। কাজ করার সময় কারখানার সকল ফ্লোরের দরজা/ বর্হিগমন পথ খোলা থাকবে। লাল ও হলুদ রং দ্বারা প্রত্যেকটি দরজা/ বর্হিগমন পথ জেব্রা ক্রসিং দেয়া থাকবে।

জরুরী নির্গমন বাতি ঃ

সকল দরজা/ বর্হিগমন পথে, ফ্লোর ও সিড়িতে ব্যাটারী চালিত জরুরী বাতি থাকবে। জরুরী প্রয়োজনে বের হবার জন্য ফ্লোরে হলুদ চিহ্নিত চলাচলের পথ থাকবে, যাতে বহির্গমন নির্দেশিত লাল রঙের তীর চিহ্ন দেয়া থাকবে। সকল চলাচলের পথ পরিস্কার থাকবে ও কোন বাধা থাকবে না। প্রতিটি সিড়ির সাথে মজবুত হ্যান্ডরেইল থাকবে, যাতে কেউ পড়ে না যায়।

হুশিয়ারী সংকেত/ গং বেল/ পি.এ. সিস্টেম ঃ

আগুন লাগলে শ্রমিকদের সতর্ক করার জন্য ফ্লোরে ব্যাটারী চালিত হুশিয়ারী সংকেত ও হস্তচালিত গং বেল থাকবে। হুশিয়ারী সংকেত ও গং বেল কথাটি শ্রমিকের বোধগম্য ভাষায় লাল কালিতে লেখা থাকবে। জরুরী প্রয়োজনের মুহুর্তে সকলকে নির্দেশ দেয়ার জন্য প্রত্যেক ফ্লোরে ব্যাটারী চালিত পি.এ. সিস্টেম থাকবে।

ফায়ার বালতি ঃ

প্রতি ১০০০ বর্গফুট মেঝে এলাকার জন্য লাল রং করা পানি ভর্তি ২টি করে বালতি থাকবে।

অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ঃ

প্রতি ১০০০ বর্গফুটের জন্য ১টি করে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র থাকবে। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রসমূহ প্রতিটি ৫Ñ৬ কেজি ওজন সম্পন্ন কার্বন Ñডাই- অক্সাইড এবং এবিসি পাউডারের হতে হবে। লাল ও হলুদ জেব্রা মার্কিং দ্বারা প্রত্যেক অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র নির্দেশ করবে। প্রতিটি অগ্নি নির্বাপক  যন্ত্রের উপর “অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র” কথাটি লেখা থাকবে এবং ব্যবহারবিধি থাকবে। অগ্নি নির্বাপক প্রত্যেক অগ্নি নির্বাপক  যন্ত্রের জন্য ১টা রক্ষনাবেক্ষন কার্ড থাকবে এবং মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে কিনা ও ব্যবহারের উপযুক্ত কিনা সেটা একজন দায়িত্বশীল লোক প্রতি মাসে পরীক্ষা করে নিশ্চিত করবে।

অগ্নি মহড়া ঃ

অগ্নি দূর্ঘটনার সময় নিরাপদ নির্গমনের জন্য শ্রমিকদের প্রশিক্ষন দেয়ার জন্য প্রতি মাসে অগ্নি মহড়া দিতে হবে। মহড়া, মহড়ার সময় এবং দূর্ঘটনার উপর ভিত্তি করে রেকর্ড রাখতে হবে। মহড়াটি এমন ভাবে হবে যেন এটা দ্বারা প্রকৃত অবস্থা বোঝা যায়।

ফায়ার হোস ঃ

প্রত্যেক ফ্লোরে সংরক্ষিত জলাধারের সাথে ফায়ার হোস সংযুক্ত থাকবে এবং পাইপটির দৈর্ঘ্য ফ্লোরের ৯০% এলাকাজুড়ে হবে। বৎসরে ২ বার হোস পাইপের কার্যকারীতা পরীক্ষা করতে হবে।

অগ্নি নিরোধক যন্ত্রপাতি ঃ

কারখানার প্রত্যেক ফ্লোরে নিম্নলিখিত সরঞ্জামাদি থাকবে ঃ ক) হুক (ধাতব)    খ) বিটার (ধাতব)   গ) স্ট্রেচার (২ টি)

ঘ)        ব্লাংকেট (২ টি)   ঙ) গ্যাস মাস্ক (৫ টি)   চ) লক কাটা

অগ্নি নির্ব াপনের জন্য এবং আগুনের ক্ষেত্রে করনীয় বিষয় সমুহ ঃ

অগ্নি প্রতিরোধ, প্রতিকার ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সকল বিভাগ থেকে সদস্য নিয়ে একটি ফায়ার কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটির সকল সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্দেশ করতে হবে। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সনাক্ত করার জন্য ”আর্ম ব্যান্ড” দিতে হবে এবং সম্ভব হলে তাদের এ্যাপ্রোন/ জ্যাকেট দিতে হবে। প্রতি মাসে অগ্নি মহড়ার পর সাব-কমিটির সদস্যরা একবার মিলিত হবে এবং রেকর্ড সংরক্ষন করবে।

  • বিচলিত হয়ে উপস্থিত বুদ্ধি হারাবেন না, নিজেকে ধীর-স্থির রাখুন।
  • হাতের কাছে যেটুকু পানি পাওয়া যায় সুচনাতেই অগ্নিল, বস্তা দিয়ে আগুন চাপা দিন।
  •  তৈল জাতীয় আগুনে পানি না দিয়ে বালু, ভিজা মোটা কাপড় বা ভিজা কম্বল বা ফোম জাতীয় রাসয়সিক পদার্থ ব্যবহার করুন।
  •  আগুন যাতে বিস্তৃত হতে না পারে সেজন্য আশেপাশের জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলুন।
  • বৈদ্যুতিক আগুন লাগলে দ্রুত মেইন সুইচ বন্ধ করুন।
  • পরনের কাপড়ে আগুন লাগলে সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে গড়াগড়ি দিন বা ভিজা মোটা কম্বল দিয়ে নিজেকে জড়িয়ে নিন। কখনো দৌড়াবেন না। তাহলে  আগুন বেড়ে যাবে।
ফায়ার এলার্ম বাজলে বা দূর্ঘটনার সময়ে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য

ফায়ার এলার্ম বাজলে বা দূর্ঘটনার সময়ে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য

র্ঘটনার সময়ে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য

ফায়ার এলার্ম বাজলে বা দূর্ঘটনার সময়ে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য  – বাংলাদেশ শ্রমনিবিড় শিল্পগুলোর মধ্যে ১০০% রপ্তানীমুখী তৈরি পোশাক শিল্প অন্যতম। দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী এ দেশের প্রচুর মানুষ সরাসরি সম্পৃক্ত, যাদের ৯০%  নারী শ্রমিক। ফ্যাক্টরীর বিভিন্ন স্থানে লাগানো স্মোক ডিটেক্টর ও হিট ডিটেক্টরের মাধ্যমে কোন স্থানে অগ্নি-কান্ডের ঘটনা ঘটলে তা কন্ট্রোল প্যানেলে প্রদশর্ন করবে সয়ংক্রিয় ভাবে বেল বাজবে। এই বেলের শব্দ শুনে সকলে অগ্নি-কান্ড স¤পর্কে অবহিত হবে। এবং কন্ট্রোল প্যানেলের রিপোর্ট দেখে কোন স্থানে অগ্নি-কান্ড ঘটেছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ছাড়াও দেয়ালের বিভিন্ন জায়গায় লাগানো গং বেল (ঘন্টা) বাজিয়ে ফায়ার এলার্ম দেয়া যাবে যাহা বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর ব্যবহার করার জন্য রাখা হয়েছে। পোশাক শিল্পের উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে সদা সচেষ্ট এই বিপুল শ্রম-শক্তির সার্বিক কল্যাণে, কর্মক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা বিধানে সকলের সু-দৃষ্টি, সম্মিলিত উদ্যোগ ও সচেতনতা অত্যাবশ্যক। তৈরি পোশাক শিল্প কারখানা এবং এ শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিক/কর্মচারীদের উন্নয়নে অটো নীটওয়্যার লিঃ সদা জাগ্রত ও সচেষ্ট এবং এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। Read Similar Types of Post

একটি ইলেকট্রিক মটর ও একটি ইঞ্জিন চালিত ফায়ার পা¤প পানি সরবরাহের জন্য লাগানো আছে। যখন অগ্নি-কান্ডে ব্যবহৃত হবে তখন মোটর চালিত পা¤প ষ্ট্যান্ড বাই হিসাবে ও ইঞ্জিন চালিত পা¤প প্রধান ভুমিকা পালন করবে। ইঞ্জিন চালিত পা¤পটি পূর্ব নির্ধারিত চাপ (প্রেসার) কমা/বৃদ্ধির কারনে চালু/বন্ধ হয়। যদি কোন কারনে হাইড্রেন্ট চালু করা হয় তাহলে পা¤প সয়ংক্রিয় ভাবে চালু হয়ে যায়। এ কারনে বিদ্যুৎ সরবরাহ সব সময় চালু রাখা প্রয়োজন। তাই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য একটি ষ্ট্যান্ড-বাই জেনারেটর লাগানো আছে যা গভীর নলকুপ মোটর পা¤েপর জন্য। পোশাক শিল্পে কর্মরত সকল প্রিয় শ্রমিক/কর্মচারী/কর্মকর্তাদের জরুরী পরিস্থিতি  নিয়ন্ত্রন, অগ্নি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা বৃদ্ধিকল্পে প্রচার পত্রটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।  …

স¤পুর্ন হাইড্রেন্ট পদ্ধতিতে সচল রাখা তথা পানির চাপ বজায় রাখার জন্য জকি পা¤প বসানো আছে। যদি কোন কারনে পানির চাপ কমে যায় তাহলে জকি পা¤প চালু হয়ে পানি পূর্ণ করে দেয়। এই পা¤পটিও পূর্ব নির্ধারিত চাপ (প্রেসার) কমা/বৃদ্ধির কারনে চালু/বন্ধ হয়। বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প একটি অনন্য রপ্তানীমুখী প্রতিষ্ঠান। গুনগত মানের জন্য বিশ্বজুড়ে  যার সুনাম রয়েছে। প্রতি বৎসর গার্মেন্টস শিল্পখাত থেকে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা অজির্ত হয়ে থাকে। ঊনবিংশ শতাব্দীর নব্বই দশক থেকে বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্পের প্রসার খুবই ব্যাপক ও উৎসাহব্যঞ্জক। সম্প্রতি কিছু গামের্ন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পে সংঘটিত অগ্নিকান্ড ও দূর্ঘটনা দেশবাসীকে বিচলিত করেছে। এ প্রসংগে অগ্নিকান্ড ও দূর্ঘটনা প্রতিরোধ একান্ত জরুরী।

কমপ্লায়েন্স বিভাগের দায়িত্ব ও কর্তব্য ঃ

সকল কর্মকর্তা/কর্মচারী/শ্রমিকগণকে নিয়মিত বিভিন্ন ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল অগ্নি নিরাপত্তামূলক প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা এবং তার রেকর্ড রাখা কমপ্লায়েন্স বিভাগের দায়িত্ব। নির্ধারিত সময়সূচি অনুসারে কমপ্লায়েন্স ম্যানেজার / কমপ্লায়েন্স অফিসার / ওয়েলফেয়ার অফিসার কারখানায় কর্মরত ব্যক্তিদের বিষয়ভিত্তিক   প্রশিক্ষণ প্রদান করেন এবং এ সংক্রান্ত রেকর্ড সংরক্ষণ করেন। প্রশিক্ষণের বিষয়সমূহ নি¤œরূপ। যথা,

গ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক ইন্টারনাল প্রশিক্ষণ প্রতি মাসে অন্তত এক বার।

অগ্নি মহড়া প্রতিমাসে অন্তত এক বার।

অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ প্রতিমাসে এক বার।

অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র এবং সরঞ্জামাদীর পরীক্ষা প্রতিমাসে এক বার।

অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রিফিল রেজিষ্টার সংরক্ষণ।

অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক এক্সটারনাল প্রশিক্ষণ (বিজিএমইএ, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এর মাধ্যমে) প্রতি বছর অন্তত দুই  বার।

প্রাথমিক চিকিৎসক দলের সদস্যদের প্রশিক্ষণ।

মুক্ত দরজা নীতি।

ক্যমিকেলের যথাযথ ব্যবহার ও প্রশিক্ষন।

নিয়োমিত ইলেক্ট্রিক লাইন পরীক্ষা ও রেজিঃ সংরক্ষন।

উদ্দেশ্য

গার্মেন্টস শিল্পে অগ্নিকান্ড বা দূর্ঘটনা প্রতিরোধ এবং প্রতিকার প্রসংগে কিকি করনীয় তার সমক্য ধারনা দেয়া।

ফার্ষ্ট এইড টিম এর দায়িত্ব ও কর্তব্য ঃ

এই দলের সদস্যবৃন্দ আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর আহত ব্যক্তিদের শ্রেনীবিন্যাস করে প্রয়োজন অনুযায়ী এম্বুলেন্স কিংবা উপস্থিত গাড়িতে করে হাসপাতালে/নার্সিংহোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন।

  • আগুন লাগার সাইরেন শোনামাত্র দ্রুত ফার্ষ্ট এইড বক্সের কাছে গিয়ে নিরাপদ অবস্থান নিবে।
  • আহত বা অসুস্থ রোগীকে দ্রুততার সাথে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করবে।
  • প্রাথমিক চিকিৎসায় সুস্থ না হওয়ার মত অবস্থা হলে উদ্ধারকারী দলের সদস্যদেরকে দিয়ে দ্রুত এম আই রুমে প্রেরণ করবে।
  • কেবল মাত্র জরুরী অবস্থা ছাড়া, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ব্যতিরেকে স্থান ত্যাগ করবেনা।

ফায়ার এলার্ম বাজলে বা দূর্ঘটনার সময়ে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য ঃ-

  • আগুন লেগেছে দেখা মাত্র যে কেউ ফ্লোরে স্থাপিত ফায়ার এলার্ম সুইচ টিপে এলার্ম বাজাবে।
  • ফায়ার এলার্ম বা হুইসেল শোনা মাত্র ফায়ার ফাইটার ব্যতীরেকে ফ্লোরের সমস্ত লোকজন যত দ্রুত সম্ভব মেশিনের সুইচ অফ করে অথবা হাতের কাজ ফেলে ইভাকুয়েশন প্লান অনুযায়ী প্রত্যেকে সিঁিড় দিয়ে নেমে যাবে।
  • ফায়ার এলার্ম বা হুইসেল শোনা মাত্র ইলেকট্রিশিয়ান বা ফায়ার ফাইটিং দলের সদস্য ইলেকট্রিক মেইন  সুইচ অফ করবে এবং সাবষ্টেশন থেকেও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফ্যাক্টরীর মেইন  সুইচ অফ করবে।
  • লোকজন সিঁিড় দিয়ে দ্রুত নামার সময় কোনভাবেই ধাক্কাধাক্কি এবং বিশৃংখলার সৃষ্টি করবেনা।
  • দ্রুত নামার সময়ে কেউ আতংক সৃষ্টি এবং হৈ-চৈ বা কান্নাকাটি করবেন না।
  • দ্রুত নামার সুবিধার্থে  নিজের জুতা বা টিফিন ক্যারিয়ার বা অন্য কিছু সঙ্গে নেয়ার চেষ্টা করবেন না।
  • ফ্যাক্টরী থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাড়িয়ে গাড়ী চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবেন না।
  • কারো গায়ের কাপড়ে আগুন ধরে গেলে তৎক্ষনাত ফ্লোরে শুয়ে গড়াগড়ি দিতে হবে। কোনক্রমেই দৌড়ানো যাবেনা।
  • ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে বাহির হওয়ার দেখতে না পেলে দ্রুত ফ্লোরে বসে হামাগুড়ি দিয়ে বাহির হয়ে আসতে হবে।
  • এছাড়া ফায়ার ফাইটিং, রেসকিউ, ফাস্ট এইড এবং অন্যান্য সকলে তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব ও কতর্ব্য বিশ্বস্ততা এবং সাহসিকতার সাথে অবশ্যই পালন করবে।

অগ্নি  নির্বাপক দলের দায়িত্ব ও কতর্ব্য ঃ-

ফায়ার বেলের শব্দ শুনার সাথে সাথে এই দলের সদস্য বৃন্দ কন্ট্রোল প্যানেল কিংবা অন্য কারো মাধ্যমে অগ্নি-কান্ডের ঘটনাস্থল জেনে নিয়ে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদী সহ তথায় উপস্থিত হবেন এবং আগুন নিভানোর ব্যবস্থা করবেন। এই দলের নির্ধাতি ব্যক্তি ষ্ট্যান্ডবাই জেনারেটরের মাধ্যমে ফায়ার পা¤প চালু রেখে হাইড্রেন্ট পয়েন্টে যাতে সার্বক্ষনিক পানি সরবরাহ বজায় থাকে তা নিশ্চিত করবেন। আগুন যাতে অন্য এলাকায় ছড়াতে না পারে সে জন্য প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা করা এই দলের মুল দায়িত্ব।

  • আগুন লাগার সাইরেন শুনার সঙ্গে সঙ্গে ইলেকট্রিশিয়ান / ফায়ার ফাইটিং সদস্য ফ্লোরে বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করবে।
  • আগুন লাগার সাইরেন শুনার সঙ্গে  সঙ্গে অগ্নি নির্বাপক দলের প্রত্যেকে দ্রুত নিদির্ষ্ট অগ্নি নির্বাপনীর কাছে চলে যাবে ও যন্ত্র নামিয়ে নিবে এবং আগুন কোথায় লেগেছে তা জানার চেষ্টা  করবে এবং দ্রুত আগুনের কাছে গিয়ে আগুনের ধরন অনুযায়ী অগ্নি নির্বাপনী যন্ত্র ব্যবহার করবে।
  • অগ্নি নির্বাপকেরা রক্ষিত ড্রামের অথবা ফায়ার হোস পাইপের পানি দ্বারা আগুন নেভাতে চেষ্টা করবে।
  • বৈদ্যুতিক আগুন নিভাতে শুধু মাত্র কাবর্নড্রাই অক্সাইড অগ্নি নির্বাপনী যন্ত্র ব্যবহার করবে। কোর অবস্থাতেই পানি ব্যবহার করা যাবে না।
  • অন্যান্য আগুনের ক্ষেত্রে এবিসি ও পানি ব্যবহার এবং কেমিক্যাল আগুনের ক্ষেত্রে ফোম ব্যবহার করতে হবে।
  • ফায়ার ব্রিগেড দল এসে পৌছালে তাদেরকে সর্বাত্ত্বকভাবে সহযোগীতা করতে হবে।
  • সবাইকে মিলে মিশে এক সাথে কাজ করতে হবে।
  • আহত ব্যক্তি প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের পর সুস্থ্য না হলে উদ্ধারকারী দলের সদস্যকে দিয়ে দ্রুত হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে।
  • নিজের ফ্লোরে আগুন লাগলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত স্থান ত্যাগ করবেন না।

অগ্নিকান্ড বা দূর্ঘটনার কারণ সমুহ ঃ-

  • এ যাবৎ কালের সকল অগ্নিকান্ডের মূল কারণ হিসেবে বৈদ্যুতিক ”শর্ট সাকির্ট” কে চিহ্নিত করা হয়েছে।
  • বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকে অগ্নিকান্ড হতে পারে।
  • দিয়াশলাই, সিগারেটের লাইটার থেকে অগ্নিকান্ড ঘটতে পারে।
  • যে কোন ধরনের বিষ্ফোরক বা কেমিক্যাল থেকে অগ্নিকান্ড বা দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

অগ্নিকান্ড বা দূঘটনা প্রতিরোধে সর্তকতামূলক ব্যবস্থা সমুহ ঃ-

  • অগ্নিকান্ড ঘটার সুযোগ না দেয়াই এর প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
  • পর্যাপ্ত পরিমান সচল অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র বিভিন্ন সুবিধাজনক পয়েন্টে মজুদ রাখা।
  • অগ্নিকান্ডের সময় আত্ম বিশ্বাসী হয়ে অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রের  ব্যবহার।
  • বিড়ি,সিগারেট তথা ধূমপান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা।
  • দিয়াশলাই বা সিগারেটের লাইটার সমতে ফ্যাক্টরীতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা।
  • গ্যাস লাইন, বৈদ্যুতিক লাইন তথা ফিকচার ফিটিংস নিয়মিত পরিদর্শন করা এবং পরিদর্শন বইতে তা লিপিবদ্ধ করা।
  • ফ্যাক্টরীতে কেমিক্যাল ব্যবহারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা।
  • অগ্নি নির্বাপনের উপর নিয়মিত অনুশীলন/ মহড়ার ব্যবস্থা গ্রহন করতঃ সকলকে  সচেতন  করা।
  • প্রত্যেক ফ্লোর/সেকশনে অগ্নিনির্বাপক দল এবং উদ্ধারকারী দল গঠন করা।
  • ফ্যাক্টরী  চলাকালীন  প্রত্যেক গেটের / দরজায় তালা খোলা রাখা এবং তালা চাবি প্রশাসনিক কর্মকর্তার নিকট জমা রাখা। প্রশাসনিক কর্মকর্তা অবশ্যই তা নিশ্চিত করবেন।
  • ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে যাবার পর রুটিন মাফিক নিয়মিত চেক করা। উক্ত চেকের সময় এডমিন, সিকিউরিটি, ইলেকট্রিক এবং ষ্টোরের প্রতিনিধি থাকবে।
  • প্রত্যেক সিঁিড়তে এবং ফ্লোরের উভয় প্রান্তে জরুরী বাতি/চার্জার লাইটের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

অগ্নি নির্বাপনের জন্য দল সমুহের সংগঠন ঃ-

অগ্নি নির্বাপনকারী দল (ফায়ার ফাইটিং) ঃ-

আবরনী দলের সদস্যবৃন্দ অগ্নি কান্ডের ঘটনাস্থল তথা অন্যান্য গুরূত্বপূর্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে কোন সামগ্রী যাতে চুরি বা বেহাত না হয় তা নিশ্চিত করবেন। প্রত্যেক ইউনিট/শাখা/সেকশনের প্রধানগন অগ্নি নির্বাপনের সাবির্ক দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের তত্ত্বাবধায়নে অগ্নিনির্বাপক দল কাজ করবে।

ফায়ার ফাইটিং দলের দায়িত্ব ও কতর্ব্য ঃ

  • আগুন লাগার সাইরেন শুনার সঙ্গে সঙ্গে ইলেকট্রিশিয়ান / ফায়ার ফাইটিং সদস্য ফ্লোরে বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করবে।
  • আগুন লাগার সাইরেন শুনার সঙ্গে  সঙ্গে অগ্নি নির্বাপক দলের প্রত্যেকে দ্রুত নিদির্ষ্ট অগ্নি নির্বাপনীর কাছে চলে যাবে ও যন্ত্র নামিয়ে নিবে এবং আগুন কোথায় লেগেছে তা জানার চেষ্টা  করবে।পরবর্তীতে দ্রুত আগুনের কাছে গিয়ে আগুনের ধরন অনুযায়ী অগ্নি নির্বাপনী যন্ত্র ব্যবহার করবে।
  • অগ্নি নির্বাপকেরা রক্ষিত ড্রামের অথবা ফায়ার হোস পাইপের পানি দ্বারা আগুন নেভাতে চেষ্টা করবে।

উদ্ধারকারীদল ঃ-

  • প্রথমে মানুষ এবং পরে মালামাল উদ্ধার করবে।
  • ফ্লোরের লোকজনদেরকে দ্রুত স্থান ত্যাগ করতে সাহায্য করা।
  • কেউ যদি আহত হয় তাকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া।
  • মালামাল রক্ষা করা।

কর্ডন পার্টি ঃ-

অবস্থান – ফ্যাক্টরীর মেইন গেট ও রাস্তার উপরের মেইন গেট।

কর্ডন পার্টির দায়িত্ব ও কতর্ব্য ঃ

  • অগ্নিনির্বাপনের জন্য ফায়ার সার্ভিস টীম যাতে ইউনিট/সেকশনে সহজে প্রবেশ করতে পারে এবং অগ্নি নির্বাপনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনায় কোন প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
  • আগুন লাগলে বা ঐ রকম কোন দূর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত ফ্যাক্টরীর মূল ফটক সমুহ খুলে দিবে।
  • ফ্যাক্টরীর শ্রমিক কর্মচারীদেরকে এবংপার্ক করা গাড়ীকে দ্রুত বাহির হতে সাহায্য করবে।
  • ফ্যাক্টরীর ভিতরে যেন বাহিরের লোক বা কোন গাড়ী অবৈধভাবে প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করবে এবং অবৈধ অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা থাকলে তা প্রতিহত করবে।
  • ফ্যাক্টরীর সামনের রাস্তা সর্বদা উম্মুক্ত রাখবে যেন প্রয়োজনে ফায়ার ব্রিগেড, পুলিশের গাড়ী ও এ্যাম্বুলেন্স দ্রুত চলাচল করতে পারে।
  • আগুন লাগলে বা ঐ রকম কোন দূর্ঘটনা ঘটলে আনুষঙ্গিক সাহায্য সহযোগীতা প্রদান এবং কর্তৃপক্ষের যে কোন নির্দেশ পালনের জন্য  প্রস্তুত থাকবে।
  • আগুন লাগার সাইরেন বাজার  সঙ্গে সঙ্গে নিকটতম ফায়ার অফিস, শাখা অফিস, প্রধান অফিসকে অবহিত করতে থাকবে।
  • অগ্নি দুর্ঘটনা বা আপদকালীন সময় ইউনিট/সেকশনের প্রধান প্রবেশ পথ সমুহকে বেষ্টনী করে রাখতে হবে যাতে ফ্যাক্টরীর বাহিরের কোন অপরিচিত কোন ব্যক্তিবর্গ ইউনিট/সেকশনে প্রবেশ করতে না পারে।
  • নিকটতম পানির উৎস কোথায় তা ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের অবহিত করবে এবং যাবতীয় সাহায্য সহযোগীতা করবে।

আগুন লাগলে চালকদের কতর্ব্য ঃ

১. ফায়ার সাইরেন বা সংকেত শোনার সাথে সাথে নিজ নিজ গাড়ী অতি  দ্রুত মেইন গেটের বাইরে নিয়ে যাবে। তবে রাস্তার উপরে কোনক্রমেই গাড়ী দাঁড় করে রাখা যাবেনা যাতে  ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ী সহ অন্য গাড়ী চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়।

২. ফ্যাক্টরীর ভিতরে গাড়ী পার্কিং-এর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন গাড়ীর মুখ সামনের দিকে বা বাহির মুখী  হয়ে থাকে।

৩. গাড়ী পার্কিংএর সময় খুব প্রয়োজস না হলে হ্যান্ড ব্রেক লাগাবেন না। যাতে প্রয়োজনে ঠেলে  গাড়িটি সরানো যায়।

৪. অকেজো / মেরামতাধীন গাড়ী এমনভাবে পাকিং করতে হবে যেন সম্ভাব্য অগ্নি ঝুঁকি থেকে দুরে থাকে এবং পথের মাঝখানে গাড়ী দাড় করে রাখা যাবে না।

অগ্নি দূর্ঘটনা ঘটলে নি¤œলিখিত বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে ঃ

  • ধোয়াঁ শ্বাস-প্রশ্বাসের সংগে ভিতরে নেয়া যাবেনা।
  • কাপড় বা ভেজা রুমাল/গামছা দিয়ে মুখ ঢাকতে হবে।
  • যদি কাবর্ন ডাই অক্সাইড (সিওটু) ব্যবহার করা হয় তবে নাকে বা গলায় ধোঁয়া প্রবেশের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
  • সকল দরজা জানালা খুলে দিতে হবে যাতে সব ধোয়াঁ বেরিয়ে
  • যায়।
  • সবাই এক সংগে বের হবার জন্য দরজার দিকে যাওয়ার সময় তাড়াহুড়া করা যাবেনা।
  • লাইন ধরে শৃংখলার সহিত বের হতে হবে।
  • জরুরী নির্গমন পথ অথবা সহজে যাওয়া যায় এমন পথ দিয়ে বের হতে হবে।
অগ্নি দূর্ঘটনা ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নীতিমালার বিশেষ বর্ণনা

অগ্নি দূর্ঘটনা ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নীতিমালার বিশেষ বর্ণনা

দূর্ঘটনা ও নিরাপত্তা নীতি

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: মানব সভ্যতার উন্নতি এবং অগ্রগতিতে আগুনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা যেমন অপরিসীম ঠিক তেমনি সভ্যতাকে ধ্বংশ করে, সম্পদ বিনষ্ট করে এমনকি মানুষের মূল্যবান জীবন কেড়ে নিয়ে যুগে যুগে এই আগুনই পালন করে চলেছে তার ধ্বংসাত্বক কর্মকান্ড। কারখানা এলাকায় অগ্নিকান্ড সমুদয় ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিতে পারে। এর কারণে গুরুতর আহত হবার এমনকি মৃত্যূর ঘটনাও ঘটতে পারে। তারপরও যে কোনো মূল্যে মানসম্মত ও উন্নত ডিজাইন ও উপকরণ ব্যবহার করে কারখানায় অগ্নি দূর্ঘটনার ঝুকি শুন্য পর্যায়ে নিতে হবে। তাই অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বদায় অগ্রাধিকার দিয়ে অগ্নি দূর্ঘটনায় অত্র কারখানায় কর্মরত সকল শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কোম্পানীতে অগ্নি নিরাপত্তা নীতিমালা প্রণোয়ণ করা হয়েছে। কারখানার সকল কর্মীদের একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরী করার জন্য প্রচলিত আইনানুযায়ী কারখানায় নিুোক্ত নীতিমালা অনুসরণ করা হয়ে থাকে । …

“ অটো  সুয়েটার্স লিঃ ” কারখানার জন্য একটি সু-পরিকল্পিত বাস্তবতা সম্পন্ন নিরাপত্তা নীতি প্রণয়ন করা। আর সে লক্ষে কর্র্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যগুলো নিম্নে আলোকপাত করা হলো ঃ

ক) কারখানার প্রতিটি শ্রমিকের আত্মরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

খ) অনাকাঙ্খিত বৈদ্যুতিক ও অগ্নি দূর্ঘটনার জন্য পর্যাপ্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ ও নিয়মিত অনুশীলন করা।

গ)  কারখানায় ভালোভাবে কাজ করার একটি সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা।

ঘ) কারখানা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা পরিষ্কার পরিছন্ন রাখা।

ঙ) কারখানার প্রতিটি ষ্টাফ ও শ্রমিককে  সচেতন করে তোলা।

চ) সম্পদের সুরক্ষা ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা।

ভুমিকা ঃ বাংলাদেশের শ্রমনিবিড় শিল্পগুলোর মধ্যে রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস শিল্প অন্যতম। গার্মেন্টস শিল্প বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ  ১০০% রপ্তানী মুখী শিল্প। দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী এ শিল্পে দেশের অনেক শ্রমিক সরাসরি সম্পৃক্ত। সম্প্রতি কিছু গার্মেন্টস শিল্পে সংঘটিত অগ্নিকান্ডের ফলে দুর্ঘটনা দেশবাসীকে বিচলিত করেছে। এ কারনে অগ্নিকান্ড এবং তা থেকে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ একান্ত জরুরী। গার্মেন্টস শিল্পের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সদা সচেষ্ঠ এই বিপুল শ্রম শক্তির সার্বিক কল্যাণে,কর্মক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা বিধানে সকলের সু-দৃষ্টি,সম্মিলিত উদ্যেগ ও সচেতনতা অত্যাবশ্যক। অটো  সুয়েটার্স লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, কারখানার কর্মী ও সম্পদের নিরাপত্তা রক্ষা করা প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য। তার প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা মূলক ব্যবস্থা নিশ্চত করার লক্ষ্যে নীতিমালা  প্রনয়ণ করা জরুরী। প্রতিটি কারখানার উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি সুন্দর ও নিরাপদ কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করতে “অটো  সুযেটার্স লিমিটেড” কর্র্তৃপক্ষ দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে। আর সেই লক্ষ্যে একটি সুষ্ঠ ও পরিপূর্ণ নিরাপত্তা নীতি প্রণয়ন এবং তা কার্যকর করার কোন বিকল্প নেই।

অগ্নি নিরাপত্তা ঃ

ভবন ও যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা ঃ অগ্নিকান্ড থেকে নিরাপত্তার জন্য একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ নীতিমালা প্রণয়ন করা আছে যা সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করতে হবে। কারখানা ভবনটি এমন স্থানে এমন ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে এবং যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে তা মানুষের জীবন ও নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক বা ঝুকিপূর্ণ নয় ।

অগ্নিকান্ড সম্পর্কে সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা ঃ

  • কারখানাটি দুইটি বিকল্প সিঁড়ি সহ বহির্গমনের নিরাপদ ব্যবস্থা রয়েছে ।
  • আগুন লাগার সাথে সাথে ফায়ার এ্যালার্ম এবং গং বেল বাজাতে হবে।
  • বহিঃগমন পথ ও লেনগুলি লাল রং দিয়ে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করতে হবে।
  • কারখানা কক্ষের সকল দরজা সমূহ স্লাইডিং টাইপের / বাইরের দিকে খোলা যায় এমন ভাবে তৈরী হয়েছে ।
  • পর্যাপ্ত পরিমানে অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা এবং আইনানুযায়ী অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রগুলো স্থাপন করা হয়েছে ।
  • ফ্যাক্টরীর কাজ চলাকালীন কোন অবস্থাতেই ফ্যাক্টরীর নির্গমণ পথ বন্ধ রাখা যাবে না।
  • স্পষ্টভাবে শ্রবনযোগ্য হুশিয়ারী সংকেতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ।
  • জরুরী বহির্গমন পথটি লাল কালিতে সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত করণ করা হয়েছে ।
  • ফ্যাক্টরীর আয়তন অনুযায়ী প্রতি ৫০০ (পাচঁশত) বর্গফুটের জন্য একটি অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র থাকবে যেগুলো প্রতি মাসে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে এবং ফ্যাক্টরীর লক্ষ্যনীয় জায়গায় টানানো থাকবে।
  • কারখানাটিতে নিয়মিত অগ্নি মহড়ার ব্যবস্থা আছে । প্রতিমাসে ১/২ বার এই মহড়ার আয়োজন করা হয় ।
  • কারখানাটিতে অগ্নি নিরাপত্তামূলক নকশা স্থাপন করা হয়েছে ।
  • মাসে অন্ততঃ একবার অগ্নি প্রতিরোধের অনুশীলনের মাধ্যমে শ্রমিকদেরকে এই অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত করতে হবে।
  • অগ্নি দূর্ঘটনা এড়ানোর জন্য এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে শ্রমিকদের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে । এর অংশ হিসাবে শ্রমিকদের কর্ম পোশাক (স্কার্ফ, এপ্রোন ইত্যাদি) পরিধানে উৎসাহিত করন এবং খোলা চুল ও ঢিলেঢালা পোশাক বর্জনের পরামর্শ দেয়া হয় ।
  • অগ্নি নির্বাপন সরঞ্জামাদির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন স্থায়ী ‘ফায়ার অফিসার’ রাখা হয়েছে ।
  • জরুরী বহিঃগমন পরিকল্পনা লিখিত ও স্কেচের মাধ্যমে উল্লেখ যোগ্য জায়গায় টানাতে হবে এবং সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সম্যক ধারণা থাকতে হবে।

বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা ঃ

  • কারখানাটিতে ব্যবহৃত সকল বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি সঠিক ভাবে আবৃত করে রাখা হয়েছে ।
  • ফ্যাক্টরীতে পর্যাপ্ত আলোর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাক ঊসবৎমবহপু খরমযঃ এর ব্যবস্থা করতে হবে।
  • বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদির সঠিক ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২ জন স্থায়ী ইলেক্ট্রশিয়ান / বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি রাখা হয়েছে ।
  • মেইন সুইচ বোর্ডগুলি যথাযথ ভাবে চিহ্নিত করে সেগুলো সব সময় অপপবংংরনষব (সুগম) রাখতে হবে যেন প্রয়োজনের সময়    ব্যবহার করতে কেউ বাধা প্রাপ্ত না হয়।
  • মেশিন নিরাপত্তা ঃ
  • স্ত বৈদ্যুতিক সংযোগ নিরাপদভাবে করতে হবে।
  •  কোথা ও কোন খোলা তার, ইনসুলিশন টেপযুক্ত তার থাকবে না।
  • কোথা ও কোন বাতি ফিউজ হলে তা সাথে সাথে বদলাতে হবে যেন আলোর স্বল্পতা না হয়।
  • ফ্যাক্টরীতে অবস্থিত সুন্দর ও পরিপাটি করে রাখতে হবে।
  • সকল স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের  ব্যবস্থা রাখতে হবে।
  • ষ্টোরের র‌্যাক যেন বেশী উঁচুতে না হয়।
  • ষ্টোরে বৈদ্যুতিক তার সংযুক্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে না।
  • সকল স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফায়ার হোজ পাইপ, ড্রাম ভর্তি পানি,বালতি ও বালু ভর্তি বালতির  ব্যবস্থা রাখতে হ
  • অপেক্ষাকৃত বিপজ্জনক যন্ত্রপাতি সমূহ যেমন বয়লার মেশিন, থ্রেড সাকার মেশিন আলাদা স্থাানে ঘিরে রাখার ব্যবস্থা আছে ।
  • জেনারেটর রুমটি কারখানা কক্ষ থেকে অপেক্ষাকৃত দূরে রাখা হয়েছে এবং জেনারেটরের মেশিন ম্যানের জন্য শব্দ নিয়ন্ত্রণ এয়ার প্লাগ সরবরাহ করা হয়েছে ।
  • কর্মস্থলের সকল ফ্লোর, চলাচলের পথ, সিঁড়ি ইত্যাদি সার্বক্ষণিক ভাবে বাধা মূক্তভাবে প্রস্তুত করে নির্মাণ করা হয়েছে ।
  • মেশিনের সাথে সংযুক্ত তার এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক তার এমন ভাবে বিন্যন্ত করতে হবে যেন  অপারেটরদের স্বাভাবিক কাজ বাধাগ্রস্থ না হয়।
  • কাটিং মেশিনের কাটিং ম্যানের জন্য মেটাল হ্যান্ড গ্লোভস বা ধাতব হাত মোজা সরবরাহ করা হয়েছে ।
  • সকল মেশিন গুলোর মেশিন গার্ড সমূহ নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখা হয় ।
  • মেইন সুইচ বোর্ডের উল্লেখ যোগ্য সুইচগুলোর  “ঙঘ” এবং “ঙঋঋ” এর উরৎবপঃরড়হ মার্কিং করে রাখতে হবে।
  • সকল শ্রমিকদের বিনা মূল্যে আতœরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি (আই গার্ড, চশমা, ডাষ্ট মাস্ক, গ্যাস মাস্ক ইত্যাদি) সরবরাহ করা   হয়েছে  ।
  • সমস্ত এ্যালার্ম সিস্টেম যথাযথ ভাবে নিশ্চিত করতে হবে এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ কেটে দেয়া অবস্থায় এগুলোর বিকল্প ব্যবস্থা রাখতে হবে।
  • শ্রমিকদেরকে আতœরক্ষামূলক সরঞ্জামাদি নিয়মিত ব্যবহারের জন্য সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে ।

নীতিমালা সম্পর্কে অবহিত করন/ যোগাযোগ ঃ

আকস্মিক অগ্নি দূর্ঘটনা যেকোন মুহূর্তে ঘটতে পারে। তাই এই পলিসি সম্পর্কে কারখানার সকল শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সম্যক ঞ্জান থাকা আবশ্যক। এই পলিসি কারখানার সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীকে জানানোর মাধ্যমগুলো হচ্ছে- কারখানার সাউন্ড সিস্টেম, শ্রমিক প্রতিনিধি, নোটিশ বোর্ড, মিটিং ও ট্রেনিং ।

এছাড়াও দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ও এইচ আর এন্ড কমপ্লাইন্স অফিসারগনের মাধ্যমে অবহিত করা হয় এবং এই নীতিমালার যাবতীয় কার্যক্রম নথিভূক্ত করা হয়।

ফিডব্যাক ও কন্ট্রোল ঃ

এই পলিসি কারখানায় বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ সর্বদা  সচেতন এবং সার্বিক ব্যাবস্থা গ্রহন করে। এর পরও যদি পলিসি বাস্তবায়ন না হয় বা বাস্তবায়নের পথে কোন বাধাঁর সস্মুখীন হয়, তবে সদা নিয়ন্ত্রন করার জন্য কার্যকরী পরিষদ ও নির্বাহী পরিচালক ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন। এমনকি মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালকের হস্তক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

পরিশিষ্ঠ ঃ

সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে পোশাক শিল্পের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশের পোষাক শিল্পের নাম ইতিমধ্যেই বহিঃ বিশ্বে একটি স্বতন্ত্র পরিচয় খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছে। তাই এই শিল্পের মাধ্যমে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের এই গতিকে ত্বরান্বিত করতে হলে, এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রথমেই দৃষ্টিপাত করতে হবে এর প্রাণ শক্তির দিকে। আর তা হলো এই শিল্পে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারী। একটি সুন্দর পরিবেশ, জান-মালের নিরাপত্তা প্রতিটি শ্রমিক-কর্মচারীকে নিজ কর্মে আরো অনুপ্রাণিত করবে, বাড়বে উৎপাদন।গ্র“পে কর্মরত শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগনকে কর্মস্থলে সকল প্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কোম্পানী ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।আর এই দায়িত্ব সঠিক বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

শিল্প নিরাপত্তা নীতিমালা কি? বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নীতি কি?

শিল্প নিরাপত্তা নীতিমালা কি? বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নীতি কি?

শিল্প নিরাপত্তা নীতিমালা

শিল্প নিরাপত্তা নীতিমালা কি? বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নীতি কি? অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থার অংশ হিসাবে কারখানা নিন্মোক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে –  …

  • সকল অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র যথাযথভাবে রক্ষনাবেক্ষন করা হয় এবং একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির তত্বাবধানে প্রতি মাসে চেক করে চেকলিষ্টে স্বাক্ষর করা হয়।
  • সুইং মেশিনের বেল্ট, ওভারলক মেশিনের নিডিল গার্ড, স্ল্যাপ-বাটন মেশিনের বেল্ট এবং সেফটি গার্ড, নিয়মিতভাবে চেক করা।
  • কাটিং মেশিনের অপারেটরগণ মেশিন ব্যবহারের সময় হাতে মেটাল গ্লোভস ও মুখে মাস্ক ব্যবহার করে কিনা তা নিয়মতিভাবে চেক করা।
  • ওভারলক মেশিন বা পেডিং কাটার অপারেটরগণ মাস্ক ব্যবহার করে কিনা নিশ্চিত করা।
  • বিদ্যুৎ চলে গেলে সাথে সাথে মেশিনের সুইচ অফ ও নিডিল প্রেসার ফিট নিচে নামিয়ে রাখা।
  • ভেজা হাত দিয়ে মেশিনের সুইচ অফ অন না করা।
  • যদি কোন ত্র“টিপূর্ন অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র দেখা যায় তবে তাৎক্ষনিকভাবে তা পূনঃভর্তির জন্য পাঠানো হয় এবং প্রতি বছর প্রতিটি অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র পূনঃভর্তি করা হয়।
  • বয়লার, আয়রন ও মেশিনের সাথে বৈদ্যুতিক সংযোগ তার নিয়মিত ভাবে চেক করা।

বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নীতি

  • বিপদ সংকেত শোনামাত্র দ্রুত প্রধান সুইচ বন্ধ করা।
  • প্রতিটি বৈদ্যুতিক লাইন সুইচ, সার্কিট ব্রেকার, ফ্যান, কাটআউট দৈনিক ভিত্তিতে পরীক্ষা করা।
  • বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা শক্তির সাহায্যে চালিত প্রতিটি যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করা।
  • বৈদ্যুতিক লাইন আছে এমন প্রতিটি স্থান নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।
  • বৈদ্যুতিক জেনারেটর নিয়মিত চেক করা।

বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নীতিমালা

পোশাক শিল্পে / ফ্যাক্টরীতে কর্মরত সকল কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার প্রতি দৃষ্টি রাখা প্রাথমিক দায়িত্ব। নীটওয়্যার লিঃ বিশ্বাস করে যে, প্রত্যেকে সচেতন থাকলেই দলগত কিংবা সমষ্টিগত নিরাপত্তা বজায় রাখা সম্ভব। বৈদ্যুতিক তার থেকে আগুনের সূত্রপাত হওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা। কারণ যতক্ষণ ইউনিট/ফ্লোর চালু  থাকে ততক্ষণ বৈদ্যুতিক ব্যবহার অব্যাহত থাকে। তাই এ বিষয়ে যে সকল নিরাপত্তার দরকার তা নি¤েœ উল্লেখ করা হল ঃ

  • কাজের শুরু ও শেষে ইউনিট/ফ্লোরে বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
  • বয়লার কক্ষ পরিদর্শনের উপযোগী হতে হবে এবং বাষ্প লাইনে ছিদ্র  বা লিকেজ থাকবে না ও খোলা (ন্যাকেড) পাইপ থাকবে না।
  • কোথাও কোন খোলা তার থাকতে পারবে না।
  • ডি.বি বোর্ডে ডেনজার সাইন লাগানো থাকবে ।
  • ডি.বি. বোর্ড গুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন  ও আশে পাশে কোন মালামাল থাকবে না। বোর্ড তালা দিয়ে আটকানো থাকবে না।
  • ডি.বি বোর্ডের নিচে রাবার ম্যাট থাকতে হবে।
  • পিছ আয়রন ছকেট থেকে বিচ্ছিন্ন  না করে কর্ম স্থল ত্যাগ করা যাবে না।
  • পিছ আয়রন বা ভ্যাকুয়াম আয়রন সবসময় পুরোপুরি ঠিক থাকতে হবে এবং সর্বদা আয়রন স্ট্যান্ডে এর উপর রাখতে হবে।
  • সকল মেশিনের মটরে পুলি কভার  থাকতে হবে।
  • কোন মটর, ফ্যান, মেশিনের বাজে শব্দ থাকতে পারবে না।
  • কোন প্রকার টেপ মোড়ানো / ভাঁঙ্গা বা পোড়া প্লাগ, সকেট, সুইচ থাকবে না।
  • টিউব লাইটের স্টার্টার সঠিকভাবে থাকতে হবে।
  • মটর বা মেশিনের তারগুলি সুন্দরভাবে ড্রেসিং থাকতে হবে।
  • সব চ্যানেলগুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন  থাকতে হবে। ভিতরে কোন ডাস্ট থাকবে না।
  • প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করতে হবে।

কারখানা তত্ত্বাবধান নীতি

  • প্রতিটি ফ্লোরে সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে ফ্লোর ইভাকুয়েশন ম্যাপ লাগানো আছে, যাতে জরুরী বহির্গমন পথ, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রাদির সঠিক অবস্থান চিহ্নিত করা আছে। কারখানায় ব্যবহৃত ও প্রক্রিয়াধীন ফেব্রিক ও কাটাকাপড় মেঝের উপর যত্রতত্র ফেলা থেকে বিরত থাকা।
  • জরুরী বহির্গমন রাস্তা সুস্পষ্টভাবে হলুদ রং দ্বারা এবং লাল রংয়ের তীর চিহ্ন দ্বারা নির্দেশ করা আছে, যাতে সহজেই বুঝতে পারে জরুরী বহির্গমন রাস্তা কোনদিকে অবস্থিত।
  • অগ্নি নির্গমন পথ সব সময় পরিষ্কার রাখা ও নির্গমন পথের উপর কোনকিছু ফেলা থেকে বিরত থাকা।
  • মেশিনের দুই সারির মাঝে চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রাখা হয়েছে এবং চলাচলের পথ উজ্জল হলুদ রং দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে।
  • প্রতিটি ফ্লোরে নির্দ্দিষ্ট সংখ্যক ফায়ার এ্যলার্ম এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যেন ফ্লোরের যে কোন প্রান্ত থেকে ইহা স্পষ্টভাবে শোনা যায়। কাখানার সকল স্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।
  • মেশিন ও টেবিল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও মেশিন লাইন সোজা রাখা।
  • পর্যাপ্ত আলো বাতাস এর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
  • সকল কর্মীগন যাতে জরুরী বহির্গমন পথের সাথে পরিচিত থাকে সেভাবে তাদেরকে প্রশিক্ষন দেওয়া হয় এবং নতুন কর্মীদের নিয়োগ দানের পরপরই পরিচিতিমূলক পর্বের অংশ হিসাবে ফ্লোরের জরুরী বহির্গমন পথের সাথে পরিচিত করে দেওয়া হয়। কাপড় সর্বত্র গুছিয়ে রাখা।
  • খাবারের স্থানে পরিষ্কার আলো ও বাতাসের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
  • প্রতিটি ফ্লোরে তিনটি অগ্নি নিরাপত্তা দল রয়েছে যাদের কাজ হলো অগ্নি নির্বাপন, মালামাল রক্ষা করা এবং উদ্ধার কাজ পরিচালনা করা।
  • অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের আশ পাশ ও কারখানায় অবস্থিত সুইচ বোর্ডের আশ পাশ সবসময় পরিষ্কার ও বাধামুক্ত রাখা।
  • অগ্নি নির্বাপক কর্মী, প্রাথমিক চিকিৎসক দল এবং ঝাড়–দারগণ নিজ নিজ নির্দিষ্ট পোশাক পরিধানরত আছে কিনা নিশ্চিত করা।
  •  জরুরী অবস্থাকে মোকাবেলার বাস্তব অভিজ্ঞতা হিসাবে প্রতিমাসে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সামনে ফায়ার ড্রিল করানো হয় এবং ফায়ার ড্রিলের ছবি সংরক্ষন করা হয়।
জরুরী পরিস্থিতিতে করণীয় নীতিমালা সমূহ কি কি?

জরুরী পরিস্থিতিতে করণীয় নীতিমালা সমূহ কি কি?

জরুরী পরিস্থিতিতে করণীয় নীতিমালা

ভূমিকাঃ গার্মেন্টস্ শিল্প ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের একটি সুনামধন্য রপ্তানী শিল্প হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। গার্মেন্টস শিল্পের প্রসার খুবই ব্যাপক ও আশাব্যাঞ্জক যাহা প্রতিবছর সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়তা করে। অগ্রনী এই গার্মেন্টস শিল্পের বিভিন্ন ধরনের জরুরী পরিস্থিতি প্রুসকিত করার নিমিত্তে সুষ্ঠ নীতিমালা থাকা একান্ত বাঞ্জনীয়। যে কোন জরুরী অবস্থার সৃষ্টি হয় প্রাকৃতিক ভাবে এবং দূর্ঘটনার মাধ্যমে । আমরা জানি জরুরী অবস্থার বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ যে কোন মূহুর্তে সৃষ্টি হতে পারে। তাই অত্র প্রতিষ্ঠান  জরুরী অবস্থা মোকাবেলা লক্ষ্যে বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহন করেছে এবং এই সকল পদ্ধতি তার কর্মীদের মাঝে পৌছিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বিশেষ প্রশিক্ষন কার্যক্রম গ্রহন করেছে। যে সমস্ত জরুরী দুর্যোগ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো – …

(১)  অগ্নি কান্ড

(২)  বন্যা

(৩)  ঝড় বা জলোচ্ছাস

(৪)  ভুমিকম্প

উদ্ধেশ্যঃ গার্মেন্টস শিল্পে যে কোন জরুরী অবস্থায় (অগ্নিকান্ড বা দূর্ঘটনা) করণীয়, প্রতিরোধ এবং প্রতিকার প্রসঙ্গে কি কি করতে হবে সেই সম্বন্ধে যথাযথ নীতিমালার মাধ্যমে আলোকপাত করা। Read This Article In English

জরুরী অবস্থার প্রকারঃ  জরুরী অবস্থা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।

  • অগ্নিকান্ড
  • ভূমিকম্প
  • বন্যা
  • রাত্রীকালীন (ফ্যাক্টরী বন্ধ অবস্থায়) জরুরী অবস্থা (স্যাবোটাজ বা ডাকাতি বা রাহাজানি)
  • উত্তেজিত শ্রমিকদের ব্যাপারে করণীয়

অগ্নিকান্ডঃ অগ্নিকান্ড বা দূর্ঘটনা প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থাসমূহঃ

  • অগ্নিকান্ডের ঘটার সুযোগ না দেয়াই এর প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
  • পর্যাপ্ত পরিমান সচল অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র বিভিন্ন সুবিধাজনক পয়েন্টে মজুদ রাখা।
  • অগ্নিকান্ডের সময় আত্মবিশ্বাসী হয়ে অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রের ব্যবহার করা।
  • বিড়ি, সিগারেট তথা ধুমপান সম্পুর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা।
  • দিয়াশলাই বা সিগারেটের লাইটার সমেত ফ্যাক্টরীতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা।
  • গ্যাস লাইন, বৈদ্যুতিক লাইন তথা বিভিন্ন ফিকচার ফিটিংস নিয়মিত পরিদর্শন করা এবং পরিদর্শন বইতে তা লিপিবদ্ধ করা।
  • ফ্যাক্টরীতে ক্যামিক্যালস ব্যবহারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা।
  • অগ্নিনির্বাপনের উপর নিয়মিত অনুশীলন/মহড়ার ব্যবস্থা গ্রহন করতঃ সকলকে সচেতন করা।
  • প্রত্যেক ফ্লোর/সেকশনে পূর্বাহ্নে অগ্নি নির্বাপক দল এবং উদ্ধারকারী দল গঠন করা।
  • ফ্যাক্টরী চলাকালীন প্রত্যেক গেটের/দরজার তালা খোলা রাখা এবং তালাচাবি প্রশাসনিক কর্মকর্তার নিকট জমা রাখা। প্রশাসনিক কর্মকর্তা অবশ্যই তা নিশ্চিত করবেন।
  • ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে যাবার পর রুটিন মাফিক নিয়মিত চেক করা। উক্ত চেকের সময় এ্যাডমিন, সিকিউরিটি, ইলেকট্রিক ষ্টোরের প্রতিনিধি থাকবে।
  • প্রত্যেক সিঁড়িতে এবং প্রত্যেক ফ্লোরের উভয় প্রান্তে জরুরী বাতি/চার্জার লাইটের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
  • ফ্যাক্টরীতে অবস্থানরত গাড়ীগুলো সবসময় বহির্মূখী করে পার্ক করতে হবে। যাতে সল্প সময়ে নিরাপদ অবস্থান গ্রহন সহ গাড়ী কর্তৃক কোন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না হয়।
  • প্রত্যেক ফ্লোরে নিয়ন্ত্রনের সুবিধার্থে পিএ ইকুইপমেন্ট/হ্যান্ড মাইকের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

ভূমিকম্প ঃ ভূমিকম্পের জন্য সতর্কমূলক ব্যবস্থা সমূহঃ

পৃথিবীতে যত প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগ রয়েছে তার মধ্যে ভুমিকম্প অন্যতম। প্রথিবীতে অদ্যবধি এমন কোন প্রযুক্তি আবিস্কৃত হয়নি যার মাধ্যমে এর প্রতিরোধ করা সম্ভব। এমনকি, কোথায়, কখন ভূমিকম্প হবে, তারও সঠিক তথ্য আগাম জানা সম্ভব নয়। তাইতো প্রায় প্রতি বছরই প্রতিবার কোন না কোন দেশে ভুমিকম্প সংঘটিত হচ্ছে এবং জান-মালের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। দেখুন, বসেপড়–ন, ঢ়াকুন এবং অপেক্ষা করুন। ভুমিকম্পকালীন সময়ে দেখতে হবে কোন কোন জিনিস আপনাকে আঘাত করতে পারে। এরপর মাটিতে বসে পড়ে শক্ত টেবিল, ডেস্ক বা খাটের নীচে আশ্রয় নিতে হবে। যদি শক্ত ডেস্ক বা টেবিল না পাওয়া যায় তবে বাহু দিয়ে মাথা ঢেকে ঘরের কোনে দেয়ালের কাছে বা শক্ত পিলারের নীকট (যেখানে পিলার এবং ভিমের সংযোগ ঘটছে, সে স্থান সবচেয়ে উত্তম) আশ্রয় নিন। কম্পন না থামা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কাঁচ, জানালা, বাহির দেয়াল বা দরজা, ঝুলন্ত বস্তু, ভারী আলমারী বা শেলফ ইত্যাদি থেকে দুরে থাকুন। কখনও লিফট ব্যবহার করবেন না। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিন, বিদ্যুৎ, গ্যাস সব লাইন বন্ধ করে দিন, জরুরী মোকাবেলার জন্য জরুরী কমিটিকে ব্যবহার করুন এবং ভুমিকম্পের মহড়া করুন।

  • ভূমিকম্পের আগাম খবর নেয়ার ব্যবস্থা
  • ভূমিকম্পের সময় আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করা
  • সময়মত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থ্ াকরা
  • দাহ্য পদার্থ সাবধানে সংরক্ষন করা যেন ভূমিকম্পের সময় পড়ে গিয়ে কোন ধরনের দূর্ঘটনা না ঘটাতে পারে।
  • একের অধিক দাহ্য পদার্থ একই সঙ্গে না রাখা
  • ভূমিকম্পের উপর অনুশীলন/মহড়ার ব্যবস্থা গ্রহন করতঃ সকলকে সচেতন করা
  • প্রত্যেক ফ্লোরে ইউনিটে পূর্বহ্নেই উদ্ধারকারী দল চিহ্নিত করা
  • ফ্যাক্টরীর প্রত্যেক গেট ভিতর হইতে তালা খোলা থাকবে।
  • ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা।

বন্যাঃ  বন্যার জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সমূহঃ

বন্যা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা সচরাচর বাংলাদেশে মাঝে মাঝেই মারাত্মক আকার ধারন করে। বন্যায় সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলার লক্ষ্যে আমাদের নিম্নোক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে –

  • যদি বন্যার পানি ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে চেষ্টা করুন খাট বা চৌকি উচু করে ঘরের মালামাল এবং নিজেকে রক্ষা করতে।
  • যদি ঘরে অবস্থান করা সম্ভব না হয় তবে নিকটস্থ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করুন।
  • যদি শিশু বাচ্চা থাকে সেক্ষেত্রে যেখানেই অবস্থান করুন খেয়াল রাখবেন বাচ্চা যেন পানিতে না              পড়ে যায়।
  • ফুটন্ত পানি পান করুন ভুলেও বন্যার পানি পান করবেন না।
  • ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিলে হাতে তৈরী খাবার স্যালাইন খান।
  • বন্যার আগাম খবর এবং সর্বশেষ পরিস্থিতি জানার ব্যবস্থা করা ।
  • সময়মত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা ।
  • যাবতীয় জিনিসপত্র, যন্ত্রপাতি বন্যার পানির বিপদ সীমার উপরের উচ্চতায় কোন স্থানে ষ্টোর করা।
  • বন্যার সময় আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করা।
  • প্রত্যেক ফ্লোরে ইউনিটে পূর্বাহ্নেই উদ্ধাকারী দল চিহ্নিত করা।
  • বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন।

ঝড় বা জলোচ্ছাস ঃ

ঝড় অঞ্চলগুলোতে প্রায়শঃই লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও অন্যান্য অঞ্চলের উপর দিয়েও মাঝে মাঝে ঝড় বয়ে যায়। ঝড় বা জলোচ্ছাসের সময় আমাদের যে সকল সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত তা হলো ঃ –

(ক) উপকুল অঞ্চলে ঝড়ের সময় বিপদ সংকেত দেওয়া হয়। বিপদ সংকেত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করুন, প্রয়োজনে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিন।

(খ) অন্যান্য অঞ্চলের ক্ষেত্রে ঝড়ের সময় দরজা খুলে ঘরের মধ্যে অবস্থান করুন, ভুলেও গাছের নীচে অবস্থান করবেন না।

(গ) যদি কাঁচা ঘর হয় সেক্ষেত্রে ঘরের ভিতরে অবস্থান না করাই ভাল।

 

রাত্রিকালীন জরুরী অবস্থার (ফ্যাক্টরী বন্ধ অবস্থায় স্যাবোটিজ/ ডাকাতি ইত্যাদি) জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সমূহঃ

  • রাত্রিকালীন জরুরী অবস্থায় যোগাযোগ করার জন্য দায়িত্ববান কাউকে নিবেদিত করা।
  • পর্যাপ্ত পরিমান সতর্কীকরন যন্ত্র (সাইরেন/কলিংবেল) সুবিধাজনক স্থানে মজুদ রাখা
  • জরুরী অবস্থায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করা।
  • জরুরী টেলিফোন নম্বর সমূহ (থানা পুলিশ, ফায়ার বিগ্রেড, স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী) বিভিন্ন সুবিধাজনক স্থানে লাগিয়ে রাখা।

উত্তেজিত শ্রমিকদের জন্য সতর্কমূলক ব্যবস্থা সমূহঃ

  • শ্রমিকদের উত্তেজিত হওয়ার সুযোগ না দেওয়াই ভাল।
  • উত্তেজিত শ্রমিকদের ন্যায় সঙ্গত দাবী দাওয়া বা অভিযোগের নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা।
  • শ্রমিকদের মোটিভেশনের ব্যবস্থা করা।
  • সতর্কমূলক ব্যবস্থা হিসাবে আগে থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা ও প্রয়োজনীয় স্থানে (স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ থানা) জানিয়ে রাখা।
  • জানমালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা ।
  • সম্ভাব্য অগ্নিকান্ডের জন্য সতর্কমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা।

জরুরী অবস্থার প্রতিকার সমূহ ঃ

  • যদি কোন ফ্লোরে আগুন লাগে তাহলে আগুন লাগার সাথে সাথে সকলকে সতর্কীকরনের নিমিত্তে হুটার/সাইরেন/কলিং বেল বাজিয়ে সতর্ক করতে হবে।
  • যে ফ্লোরে আগুন লেগেছে সে ফ্লোরের বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ অফ করে দিতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফ্যাক্টরীর প্রধান সুইচসহও অফ করে দিতে হবে।
  • অগ্নিনির্বাপক দল ও উদ্ধারকারী দল ব্যতীত মহিলা ও পুরুষগণ ঙ্গ মিনিটে দ্রুততায় সিঁড়ি দিয়ে স্কেপ প্লান অনুযায়ী বের হয়ে যাবে।
  • নিরাপত্তায় নিয়োজিত ব্যক্তিগন তৎক্ষন্নাৎ ফ্যাক্টরীর চারটি গেটের ভিতর এবং বাহিরে অবস্থান নিবে। বাহির থেকে কেহ যেন অনুপ্রবেশ করতে না পারে তার ব্যবস্থা নিবে অর্থাৎ কর্ডন দলের কাজ করবে। তাছাড়া মানুষ ও গাড়ী চলাচলের জন্য সম্মখের রাস্তা উন্মুক্ত রাখবে।
  • অগ্নিনির্বাপক দল কর্তৃক ফ্লোর/সেকশনে রক্ষিত অগ্নিনির্বান যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
  • অগ্নিনির্বাপক দল এবং উদ্ধারকারী দলকে আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করতে হবে।
  • ফ্লোর বা সেকশন থেকে লোকজন নেমে যাওয়ার পর উদ্ধারকারী দল দ্রুত দূর্ঘটনা কবলিতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসক দলের কাছে নিয়ে যাবে এবং প্রয়োজনে ফ্যাক্টরীর চিকিৎসা কেদ্রে পৌছে দিবে।
  • কাহারো গায়ের কাপড়ে আগুন লেগে গেলে তৎক্ষন্নাৎ ফ্লোরে গড়াগড়ি দিতে হবে। কোন ক্রমেই দৌড়ানো যাবে না ।
  • বাথরুম/টয়লেট ও বিল্ডিং এর ছাদ চেক করতে হবে যাতে কোন লোক আটকা পড়ে না থাকে।
  • কোন ভাবেই সিঁড়ি ব্যতীত অন্য কোন অবস্থায় নামবার চেষ্টা করবে না।
  • অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে উদ্ধারকারী দল দূর্ঘটনায় কবলিত মালামাল উদ্ধার করবে।
  • বন্যার সময় পানি ঢুকার পূর্বেই সমস্ত যন্ত্রপাতি, জিনিসপত্র, জরুরী কাগজপত্র নিরাপদ উচ্চতায় নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে।
  • পানিপুর্ণ বা পানির কাছাকাছি স্থানে বৈদ্যূতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
  • বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা ।
  • বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করার পয়োজনীয় ব্যবস্থা করা ।
  • ভূমিকম্পের সময় মহিলা এবং পুরুষগন নির্ধারিত স্ব-স্ব সিঁড়ি দিয়ে স্কেপ প্লান অনুযায়ী বের হয়ে যাবে।
  • ভূমিকম্পের পর উদ্ধারকারী দল দূর্ঘটনায় কবলিত লোকজন এবং জিনিসপত্র উদ্ধার করবে।
  • উদ্ধারকারী দলকে আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করতে হবে।
  • ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা।
  • ফ্যাক্টরী বন্ধ থাকা অবস্থায় রাত্রিকালীন যে কোন জরুরী অবস্থায় কর্তব্যরত ব্যক্তি অতি সত্তর নিবেদিত দায়িত্ববান কে এবং প্রয়োজনীয় সকল জায়গায় অবহিত করবেন।
  • যে কোন জরুরী অবস্থা মুখোমুখী হওয়ার সাথে সাথে সতর্কী করনের নিমিত্তে সাইরেন কলিংবেল বাজিয়ে সকলকে সতর্ক করতে হবে।

প্রশাসনিক শাখা কর্তৃক গ্রহনীয় বিবিধ ব্যবস্থাঃ

  • আহত লোকজনকে প্রয়োজন অনুযায়ী ফ্যাক্টরীর চিকিৎসা কেন্দ্রে বা নিকটবর্তী হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে।
  • অনতিবিলম্বে ফায়ার বিগ্রেডকে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য টেলিফোন করতে হবে।

অগ্নি নির্বাপন/জরুরী অবস্থার জন্য দল সমূহের সংগঠন

নিরাপত্তায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ ঃ-

কাজঃ অনুপ্রবেশকারীকে প্রতিহত করা এবং সামনের রাস্তাটি গাড়ীচলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখা যাতে ফ্যাক্টরীর লোকজন নির্বিঘেœ বাসায় গমন করতে পারে এবং ফায়ার বিগ্রেড, পুলিশের গাড়ী চলাচল করতে পারে।

অগ্নি নির্বাপনকারী দলঃ পত্যেক ইউনিট/শাখা/সেকশনের প্রধানগন অগ্নি নির্বাপনের সার্বিক দায়িত্ব পালন করবে। তাদের তত্ত্বাবধানে অগ্নি নির্বাপনকারী দল এবং উদ্ধারকারী দল কাজ করবে। তারা নির্বাহী পরিচালক, জি এমদের সাথে আলোচনা পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

উদ্ধারকারী দলঃ প্রথমে মানুষ এবং পরে মালামাল উদ্ধার করবে।

প্রাথমিক চিকিৎসা দলঃ দূর্ঘটনা কবলিতদের দ্রুত প্রাথমিক চিচিৎসা প্রদান করিবে।

অগ্নি নির্বাপক, উদ্ধারকারী এবং প্রাথমিক চিকিৎসকদের দল সংগঠন এবং যাবতীয় দায়ীত্ব ও কর্তব্য ।

উপসংহারঃ

যে কোন জরুরী অবস্থায় আমাদের সকলকে সর্বসময়ের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে একটু অসতর্ক হলেই সাধারনত ভয়াবহ ও অপূরণীয় ক্ষতির কারন হয়। তাই সম্মিলিতভাবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য। জান ও মালের হেফাজত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। একটি কথা সকলকে মনে রাখতে হবে যে, সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা থাকলে যে কোন সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। আর এরই ফলশ্র“েিত বিরাট ক্ষতি ও বিশৃংখলা থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব।  যে কোন জরুরী অবস্থায় আমাদের সকলকে একাত্ব হয়ে কাজ করতে হবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারনত ক্ষতি হবে ভয়াবহ ও অপুরণীয়। তাই সম্মিলিত ভাবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য । জান ও মালের হেফাজত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।

অগ্নি মহড়ার নীতিমালা কি? অগ্নি নির্বাপন পদক্ষেপ কি?

অগ্নি মহড়ার নীতিমালা কি? অগ্নি নির্বাপন পদক্ষেপ কি?

অগ্নি নিরাপত্তা:

শ্রম নিবিড় রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস ইন্ডাট্রিজ এর অগ্নি মহরা নিরাপত্তা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারখানার শ্রমিকদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য অগ্নি দূর্ঘটনা এড়ানো ও অগ্নি নির্বাপনের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নিুর্লিখিত ব্যবস্থাদি ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। যা প্রতিটি শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগনকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে। সে লক্ষে আমরা প্রতি মাসে এক বার অগ্নি নির্বাপক মহরা এর আয়োজন করে থাকি। Fire Related Article in English …

কঠিন পদার্থের / কাপড়ের আগুন ঃ

আগুনের উৎপত্তির জন্য যে সমস্ত উপাদানগুলির সম্মনয় বিবেচ্য তা হল দাহ্য বস্তু, তাপ ও অক্সিজেন। উপরোক্ত তিনটি উপাদানের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটার  ফলেই আগুনের সৃষ্টি হয়। আগুন নির্বাপন নীতির মূল বিষয় হচ্ছে যে প্রক্রিয়ায় আগুনের সৃষ্টি হয়েছে সেই প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করা। অর্থাৎ আগুনের তিনটি উপাদানের এবং রাসায়নিক বিক্রিয়া এর মধ্যে যদি কোন একটিকে বিচ্ছিন্ন করা যায় বা অপসারন করা যায় তাহলে নির্বাপন হবে। এটাই হচ্ছে অগ্নি নির্বাপনের মূল নীতি। সাধারনত পানি বা অইঈ / উঈচ অগ্নি নির্বাপনযন্ত্র ব্যবহার কওে কাপড়, কাগজ, কাঠ ইত্যাদিও আগুন নেভানো যায়। এ ছাড়া ও ভেজা কাপড় দিয়ে অথবা কম্বল দিয়ে ও এই আগুন নেভানো যায়।

তরল পদার্থের আগুন ঃ

অগ্নিকান্ডের প্রধান কারন হচ্ছে অসাবধানতা। অসাবধনতার কারনে মূহুর্তের মধ্যে ভয়াভহ অগ্নিকান্ডের সুচনা করতে পারে। সকল প্রকার আগুন একই প্রকারে নির্বাপন করা সম্ভব নয়। দাহ্য বস্তুর প্রকার ভেদের উপর অগ্নি নির্বাপন মাধ্যম নির্ভর করে। এই আগুন সাধারনতঃ  তেল বা পেট্রোল থেকে উৎপন্ন হয়। পানি দিয়ে এই আগুন নেভানোর চেষ্টা করা মোটেই উচিৎ না।

বৈদ্যুতিক আগুন ঃ

বৈদ্যুতিক তাওে শর্ট সার্কিট থেকে অথবা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি থেকে এ আগুনের উৎপত্তি হয়। এ ধরনের আগুনে কখনো পানি জাতীয় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করা য়ায় না কারণ এতে বিদ্যুতায়িত হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই এ জাতীয় আগুন নিভানোর জন্য সার্কিটব্রেকার ও মেইন সুইচ বন্ধ করতে হবে। পাউডার টাইপ এক্সটিংগুইশার বা কার্বন-ডাই-অক্সাইড  এক্সটিংগুইশার ব্যবহার করতে হবে।

অগ্নি দূর্ঘটনা ঘটলে নিুলিখিত বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে ঃ

  • ধোঁয়া শ্বাস-প্রশ্বাসের সংগে ভিতÍ নেয়া যাবে না।
  • কাপড় অথবা ভেজা টাওয়েল দিয়ে মুখ ঢাকতে হবে।
  • যদি কার্বন- ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করা হয় তবে নাকে বা গলায় ধোঁয়া প্রবেশের ব্যপাওে সর্তক থাকতে হবে।
  • সকল দরজা জানালা খুলে দিতে হবে।
  • সবাই এক সংগে বের হবার জন্য দরজার দিকে যেতে তাড়াহুড়া করা যাবে না।
  • লাইন ধরে বেরুতে হবে।
  • জরুরী নির্গমন পথ অথবা সহজে পাওয়া যায় এমন নির্গমন পথ দিয়ে বের হতে হবে।

অগ্নি মহড়ার নীতিমালা

অগ্নি নির্বাপনের জন্য পানি একটি মাধ্যম। পানি ছাড়া তাপ জনিত সূত্রকে বিচ্ছিন্ন করা যায়। আবার কিছু কিছু দাহ্য পর্দাথ  আছে যেখানে পানি ব্যবহার করা যায় না, যেমন তেল জাতীয় গ্যাস, অথবা বিদ্যুৎ।

  • অগ্নিকান্ডজনীত কারণে ঘন্টা/সাইরেন বাজানোর সাথে সাথে সকল শ্রমিক মেশিন সুইচ বন্ধ করে চলাচলের রাস্তায় এসে দাঁড়াবে।
  • কারখানা থেকে বর্হিগমনের সময় সারিবদ্ধ ওখলাবদ্ধভাবে বাহির হইবে।
  • এসময় শ্রমিকরা নিজ অবস্থানে থেকে সমগ্র কারখানা পর্যবেক্ষন করিবে কোথায় অগ্নিকান্ড সংঘঠিত হয়েছে?
  • কারখানার যে অংশে অগ্নিকান্ড সংঘটিত হয়েছে  সে অংশে কর্মরত শ্রমিকগনকে আগে বাহির হইতে সহায়তা করিবেন।
  • অতঃপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য অংশের শ্রমিকরা কারখানা হইতে বাহির হইবে।
  • অগ্নি নির্বাপনে দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মীরা সকল শ্রমিক কারখানা হইতে বাহির হয়েছে কিনা নিশ্চিত হইবেন।
  • সকল শ্রমিক ফ্লোর ত্যাগ করেছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কোন শ্রমিক কারখানা আঙ্গীনা ত্যাগ করিবে না।
  • প্রাথমিক চিকিৎসা কর্মীগন আহত শ্রমিকদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করিবে।
  • যে সকল শ্রমিক দেরীতে বাহির হইবে তার কারন উৎঘাটন করতঃ তাদেরকে অগ্নিমহড়া বিষয়ক ব্রিফিং প্রদান করিবে।

অগ্নি নির্বাপনের চারটি মাধ্যম আছে, সেগুলো নিম্নরুপঃ

(১) দাহ্য বস্তু সীমিত করন পদ্ধতিঃ  আগুনলেগে গেলে এই পদ্ধতিতে অগ্নি নির্বাপন সহজতর হয়।

(ক) আগুনের নিটক থেকে দাহ্য বস্তু সরিয়ে নেয়া অথবা আগুনকে দাহ্য বস্তু থেকে সরিয়ে নেয়া।

(২) তাপ সীমিত করন পদ্ধতিঃ  ক্ষেত্র বিশেষ এই প্রক্রিয়ায় আগুনে পানি  নিক্ষেপ করে তাহা সীমিত করে অগ্নি নির্বাপক করা যায়।

(৩) অক্সিজেন সীমিত করন পদ্ধতিঃ  অক্সিজেন সীমিত করে আগুন নির্বাপন করা যায়। এক্ষেতে কার্বনডাই অক্সাইড, ইত্যাদি  ব্যবহার করা যায়।

(৪) রাসায়নিক বিক্রিয়ার যোগসূত্র বিচ্ছিন্ন করন পদ্ধতিঃ  আগুন লাগার তিনটি উপাদনের সাথে যতক্ষন পর্যন্ত না রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে ততক্ষন আগুন লাগবে না। সুতরাং রাসায়নিক বিক্রিয়া সূত্রকে বিচ্ছিন্ন করতে পারলেই আগুন থাকবে না। আগুনে পাউডার নিক্ষেপ করে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করা হয়।

অগ্নি নিরাপত্তা নীতিমালা

  • সার্বিক অগ্নি নিরাপত্তার স্বার্থে ফ্লোরে কর্মী নির্গমনের জন্য দুটি প্রশস্ত সিড়ির ব্যবস্থা রহিয়াছে।
  • কারখানার বহির্গমনের দরজা সমূহ সকল সময়ের জন্য খোলা রাখা হয় এবং কাজ চলাকালীন সময় কখনও বন্ধ রাখা হয় না।
  • অগ্নি নির্বাপনের জন্য একটি সু-সংঘটিত এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অগ্নি নির্বাপক দল সার্বক্ষনিক ভাবে নিয়োজিত রাখা হয়েছে।
  • অগ্নি নির্বাপক দলের সদস্যদের সনাক্তকরনের ব্যবস্থা রহিয়াছে।
  • কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা রাখা হইয়াছে এবং তা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও চেক করা হয়।
  • জরুরীর অবস্থার ক্ষেত্রে কর্মস্থল ত্যাগের জন্য চিহিৃত ও বাধা মুক্ত চলাচলের রাস্তা নির্দিষ্ট রাখা হইয়াছে।
  • জরুরীর অবস্থার সময় নিকটস্থ ফায়ার ষ্টেশনে সংবাদ দেওয়ার জন্য নোটিশ বোর্ডে ও ফ্লোরে জরুরী ফোন নম্বর প্রদশর্নের ব্যবস্থা রাখা হইয়াছে।
  • মাসে কম পক্ষে দু’বার ফায়ার ড্রিল করা হয়।

অগ্নি নির্বাপন পদক্ষেপ

  • আগুন দেখা মাত্র ঋরৎব অষধস বাজাতে হবে।
  • দ্রুত ইলেকট্রিক সুইচ বন্ধ করতে হবে।
  • মাইকিং এর মাধ্যমে সকল শ্রমিককে সতর্কতার সহিত বাহির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া।
  • নিয়মিত ফায়ার ড্রিল মহড়ায় অংশ গ্রহণ করা।
  • কোন প্রকার চধহরপ (ভয় ভীতি) বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখা।
  • স্থানীয় দমকল বাহিনী ও থানা পুলিশকে খবর দেওয়া।
  • অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রপাতি চেক করে লিষ্টে সাইন করা।