Select Page
প্রসূতি ভাতা পাওয়ার অধিকার ও পরিশোধ পদ্ধতি এর বর্ণনা

প্রসূতি ভাতা পাওয়ার অধিকার ও পরিশোধ পদ্ধতি এর বর্ণনা

মাতৃত্বকালীন  সুবিধা প্রদান নীতি

অটো গ্র“পের এর কর্তৃৃপক্ষ ১৯৩৯ সালের মাতৃত্বকল্যাণ আইন অনুযায়ী মহিলা শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন সুযোগ সুবিধা প্রদান করার লক্ষ্যে অঙ্গীকারাবদ্ধ। কোন মহিলা শ্রমিক অন্তসত্তা হলে কম্পানি তাকে প্রসূতি ভাতা প্রদান করবে।

উদ্দেশ্য ঃ এই প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত সকল মহিলা শ্রমিকদের আইনানুযায়ী মাতৃত্বকালীন সুযোগ সুবিধা ও কল্যাণ প্রদান করা।

পরিধি ঃ যে সকল মহিলা কর্মী কমপক্ষে ৯ মাস যাবৎ কর্মরত এবং সন্তান সম্ভবা তাদের জন্য পূর্ণ বেতন সহ ১২ সপ্তাহের মাতৃত্বকল্যাণ ছুটি সংরক্ষিত।

প্রসূতি ভাতা পাওয়ার অধিকার ও পরিশোধ পদ্ধতি ঃ

  • প্রসূতি ভাতা পাওয়ার জন্য একজন মহিলা কর্মীকে কমপক্ষে ন্যুনতম ৯ মাস একটানা এই কোম্পানীতে কাজে নিয়োজিত থাকতে হবে।
  • কোন মহিলা শ্রমিক অন্তঃসত্বা হলে লিখিত বা মৌখিকভাবে ওয়েলফেয়ার অফিসারকে জানাবে ।
  • সন্তান প্রসব হওয়ার ছয় সপ্তাহ পূর্বে কোম্পানীর নির্দিষ্ট ফরমে চিকিৎসকের প্রত্যয়ন পত্র সহ আবেদন পেশ করবে।
  • নোটিশ প্রদানের তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন মাস যে মজুরী উপার্জন করেছে তার ভিত্তিতে তার দৈনিক গড় মজুরীর পরিমান হিসাব করে ছয় সপ্তাহের ভাতা প্রদান করা হবে।
  • আবেদন পত্র কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন করার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কর্তৃপক্ষ ৬ সপ্তাহের অগ্রীম টাকা এবং ৯০ দিনের ছুটি প্রদান করবেন।
  • সন্তান প্রসবের পর পুনরায় চিকিৎসকের প্রত্যয়নপত্র কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করলে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কর্তৃপক্ষ অবশিষ্ট ৬ সপ্তাহের বেতন প্রদান করবেন।
  • একজন মহিলা কর্মী কর্মরত অবস্থায় সর্বোচ্চ ২ বার প্রসূতি ভাতা  সুবিধা পাবেন।
  • প্রসূতি ইচ্ছে করলে তিনি তার পক্ষে প্রসূতি ভাতা গ্রহণ করার জন্য একজন ব্যক্তিকে মনোনীত করে যেতে পারেন।
  • সন্তান প্রসবের ৬ মাসের মধ্যে সন্তান প্রসবের প্রমাণপত্র পেশ না করতে পারলে তিনি প্রসূতি সুবিধা বা এর কোন অংশ পাওয়ার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।
  • মাতৃকালীন ছুটি শেষ হবার পর প্রসূতি কোম্পানীর নির্ধারিত ফরম পূরণের মাধ্যমে পুনরায় চাকুরীতে যোগদান করতে পারবেন।

মাতৃকল্যাণ ভাতা প্রদান সুবিধাদি

অত্র কারখানায় কর্মরত যে সকল মহিলা কর্মী প্রসুতি ভাতা পাওয়ার যোগ্য তারা নিুেলিখিত যে কোন এক পদ্ধতিতে প্রসূতি ভাতা নিতে পারবেন।

প্রথম পদ্ধতিঃ  ৮ (আট) সপ্তাহের মধ্যে সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা রয়েছে এ মর্মে একজন চিকিৎসক কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রত্যায়ণ পত্র পেশ করার ৩ (তিন) কর্ম দিবসের মাতৃকালিন সুবিধার প্রথম ৮ (আট) সপ্তাহের ভাতা পরিশোধ করা হবে। পরবর্তী ৮ (আট) সপ্তাহের পাওনা সন্তান প্রসবের প্রত্যায়ণ পত্র পেশ করার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পরিশোধ করা হবে। এমন কি তিনি পুণরায় কাজে  যোগদান না করেও শুধুমাত্র সন্তান প্রসবের প্রত্যায়ণ পত্র পেশ করলে বাকী  ৮ (আট) সপ্তাহের ভাতা পরিশোধ করা হবে।

দ্বিতীয় পদ্ধতিঃ প্রসবের দিনসহ প্রসবের দিন পর্যন্ত উক্ত মেয়াদের জন্য (প্রথম আট সপ্তাহ) সন্তান প্রসবের প্রত্যায়ণপত্র পেশ করার ৩ (তিন) কর্ম দিবসের মধ্যে প্রথম ৮ (আট) সপ্তাহের মার্তৃকল্যাণ ভাতা পরিশোধ করা হবে। অবশিষ্ট ৮ (আট) সপ্তাহের ভাতার জন্য তিনি যে সন্তান প্রসব করেছেন অনুরূপ প্রমাণ পত্র পেশ করার ছয় সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।

তৃতীয় পদ্ধতিঃ উপরোক্ত স¤পুর্ন মেয়াদের ১৬ (ষোল) সপ্তাহ মাতৃকল্যাণ সুবিধার জন্য তিনি যে সন্তান প্রসব করেছেন এ মর্মে প্রমাণ পত্র পেশ করার ৩ (তিন) কর্ম দিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।

মাতৃকল্যাণ সুবিধা ভাতা প্রদান প্রদ্ধতি

  • যখন কোন মহিলা কর্মী নিজেকে গর্ভবতী বলে ধারনা করবে তৎক্ষনাৎ সে সরাসরি কারখানার মেডিকেল অফিসারের নিকট রিপোর্ট করবে।
  • মেডিকেল অফিসার তাকে পরীক্ষা করে গর্ভবতী কিনা তা নিশ্চিত করবেন এবং তার চিকিৎসার রেকর্ড রাখবেন। মেডিকেল অফিসার তাকে স্বাস্থ্যগত এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর মেডিকেল চেকের জন্য উপদেশ দিবেন।
  • মেডিকেল অফিসার কারখানার সকল গর্ভবতী মহিলাদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর পরীক্ষা করণ নিশ্চিত করবেন।
  • সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখের ৮ সপ্তাহ পূর্বে মেডিকেল অফিসার মাতৃকালিন চিকিৎসার ডকুমেন্ট সমূহের এক কপি পার্সোনেল সেকশনের কল্যাণ অফিসারের নিকট প্রেরণ করবেন, যাতে তিনি প্রথম ৮ সপ্তাহের মাতৃকালিন ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
  • পরবর্তীতে কল্যাণ অফিসার হিসাব শাখার সাথে সমন্বয় করে মাতৃকালিন ছুটি যাওয়ার পূর্বে প্রথম ৮ সপ্তাহের মাতৃকালিন ভাতা প্রদান নিশ্চিত করবেন।
  • সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখের ৯ সপ্তাহ পূর্বে মেডিকেল অফিসার গর্ভবতী মহিলাকে ডেকে তার মাতৃকালিন সুবিধা ভাতা প্রদানের লক্ষ্যে কো¤পানির নির্ধারিত ফরম (মার্তৃকালিন ভাতা পাওয়ার আবেদন) পুরণ নিশ্চিত করবেন। যদি সে লিখতে না পারে সেক্ষেত্রে তাকে মেডিকেল অফিসার/নার্স ফরম পুরণে সহযোগিতা করা পূর্বক তার স্বাক্ষর/টিপসই নিশ্চিত করবেন এবং পুরণকৃত ফরম তাৎক্ষণিকভাবে কল্যাণ অফিসারের নিকট প্রেরণ করবেন।
  • কল্যাণ অফিসার পুরণকৃত ফরম পাওয়ার সাথে সাথে তার নাম কো¤পানীর কেন্দ্রীয় ম্যাটারনিটি রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করবেন। তিন ধরনের মাতৃকল্যান ভাতা প্রদানের সুবিধাসমূহ জানাবেন এবং তার পছন্দানুযায়ী হিসাব শাখার সাথে সমন্বয় করে মাতৃকল্যাণ ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। কল্যাণ অফিসার মাতৃকল্যান সুবিধা পাওয়ার তিনটি পদ্ধতি তাকে জানানো হয়েছে এরূপ প্রত্যায়ন পত্রের দুই কপিতে স্বাক্ষর/টিপসহি গ্রহন করবেন। এক কপি কর্মীর ব্যক্তিগত ফাইলে এবং অন্য কপি কেন্দ্রীয় ম্যাটারনিটি ফাইলে সংরক্ষণ করবেন।

প্রথম পদ্ধতিতে ভাতা প্রদানঃ

  • যদি কেহ প্রথম পদ্ধতিতে ভাতা নিতে চান, সেক্ষেত্রে কল্যাণ অফিসার ম্যাটারনিটি নোটিফিকেশনের ৩ (তিন) কর্ম দিবসের মধ্যে হিসাব শাখার সাথে সমন্বয় করে প্রথম ৮ সপ্তাহের ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। ভাতা প্রদান ভাউচারের তারিখ সহ রেফারেন্স ম্যাটারনিটি রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করবেন এবং এক কপি পেমেন্ট ভাউচার সংশ্লিষ্ট কর্মীর ব্যক্তিগত ফাইলে রাখবেন।
  • সর্বশেষে কল্যাণ অফিসার নিশ্চিত করবেন যে, সংশ্লিষ্ট কর্মী ৮ সপ্তাহের মাতৃকল্যাণ ভাতা নিয়ে মাতৃকল্যাণ ছুটিতে যাচেছন।
  • মাতৃকালিন ছুটিতে যাওয়ার পূর্বে কল্যাণ অফিসার তাকে সন্তান প্রসবের পর পরবর্তী ৮ সপ্তাহের ভাতা সুবিধা এবং ইহা পাওয়ার জন্য করণীয় বিষয় স¤পর্কে অবহিত করবেন এবং এ সংক্রান্ত একটি প্রত্যায়ণ পত্র সংশ্লিষ্ট কর্র্মীর স্বাক্ষর/টিপসহি সহ ব্যক্তিগত ফাইলে সংরক্ষন করবেন এবং এক কপি কেন্দ্রীয় ম্যাটারনিটি ফাইলে রাখবেন।
  • সন্তান প্রসবের পর সংশ্লিষ্ট কর্মী কারখানার মেডিক্যাল অফিসারের নিকট সন্তান প্রসবের প্রত্যায়ণ পত্র প্রদান করবে। মেডিক্যাল অফিসার প্রত্যায়ণ পত্রের এক কপি কল্যাণ অফিসারের নিকট প্রেরণ করবেন।
  • কল্যাণ অফিসার সর্বদা মাতৃকালিন ছুটি ভোগরত কর্মীদের রিপোর্টিং তারিখ সমূহের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন এবং যখনই সন্তান প্রসবের কোন প্রত্যায়ণ পত্র হাতে পাবেন তাৎক্ষনিকভাবে হিসাব শাখার সাথে সমন্বয় করে বাকী ৮ সপ্তাহের মাতৃকালিন ভাতা ৩ (তিন) কর্ম দিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে প্রদান করা নিশ্চিত করবেন। কল্যাণ অফিসার আরও নিশ্চিত করবেন যে, হিসাব শাখা দ্বিতীয় কিস্তি প্রদানের ভাউচার, রেফারেন্স ও তারিখসহ কেন্দ্রিয় ম্যাটারনিটি রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করেছেন। এক কপি পেমেন্ট ভাউচার কর্মীর ব্যক্তিগত ফাইলে এবং এক কপি কল্যাণ অফিসার কেন্দ্রীয় ম্যাটারনিটি ফাইলে রাখবেন।

দ্বিতীয় পদ্ধতিতে ভাতা প্রদানঃ

  • যদি কেহ দ্বিতীয় পদ্ধতিতে ভাতা নিতে চান, সেক্ষেত্রে কল্যাণ অফিসার তাকে প্রথম ৮ সপ্তাহের মাতৃকালিন ভাতা সময়মত প্রদানে সাহায্য করবেন। মাতৃকালিন ছুটি যাওয়ার পূর্বে বাকী ৮ সপ্তাহের ভাতা পাওয়ার জন্য করণীয় বিষয় স¤পর্কে উপদেশ দিবেন এবং তা একটি প্রত্যায়র পত্রে স্বাক্ষর/টিপ সহির মাধ্যমে রেকর্ড রাখবেন। ইহার এক কপি সংশ্লিষ্ট কর্মীর ব্যক্তিগত ফাইলে এবং এক কপি কেন্দ্রীয় ম্যাটারনিটি ফাইলে রাখবেন।
  • সন্তান প্রসবের পর সংশিষ্ট কর্মী কারখানার মেডিক্যাল অফিসারের নিকট সন্তান প্রসবের প্রত্যায়ণ পত্র প্রদান করবেন। মেডিক্যাল অফিসার প্রত্যায়ণ পত্রের এক কপি কল্যাণ অফিসারের নিকট প্রদান করবেন।
  • কল্যাণ অফিসার সর্বদা মাতৃকালিন ছুটি ভোগরত কর্মীদের রিপোর্টিং তারিখ সমূহের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন এবং যখনই সন্তান প্রসবের কোন প্রত্যায়ণ পত্র হাতে পাবেন তাৎক্ষনিকভাবে হিসাব শাখার সাথে সমন্বয় করে বাকী ৮ সপ্তাহের মাতৃকালিন ভাতা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে প্রদান করা নিশ্চিত করবেন। কল্যাণ অফিসার আরও নিশ্চিত করবেন যে, হিসাব শাখা দ্বিতীয় কিস্তি প্রদানের ভাউচার, রেফারেন্স ও তারিখ সহ কেন্দ্রীয় ম্যাটারনিটি রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করেছেন। এক কপি পেমেন্ট ভাউচার কর্মীর ব্যক্তিগত ফাইলে এবং এক কপি কল্যাণ অফিসার কেন্দ্রীয় ম্যাটারনিটি ফাইলে রাখবেন।

তৃতীয় পদ্ধতিতে ভাতা  প্রদানঃ

যদি কেহ তৃতীয় পদ্ধতি ভাতা নিতে চান, সেক্ষেত্রে কল্যাণ অফিসার সন্তান প্রসবের প্রত্যায়ণ পত্র হাতে পাওয়ার পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে হিসাব শাখার সাথে সমন্বয় করে সংশ্লিষ্ট কর্মীর ১৬ সপ্তাহের মাতৃকালিন ভাতা প্রদান নিশ্চিত করবেন। কল্যাণ অফিার আরও নিশ্চিত করবেন যে, হিসাব শাখা স¤পূর্ন ১৬ সপ্তাহের ভাতা প্রদানের ভাউচারের রেফারেন্স তারিখ কেন্দ্রীয় ম্যাটারনিটি রেজিষ্টিারে লিপিবদ্ধ করেছেন এবং ভাউচারের এক কপি সংশ্লিষ্ট কর্মীর ব্যক্তিগত ফাইলে, এক কপি কেন্দ্রীয় ম্যাটারনিটি ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

অ-পক্ষপাতিত্বমূলক বা বৈষম্যহীনতা নীতি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

অ-পক্ষপাতিত্বমূলক বা বৈষম্যহীনতা নীতি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

অ-পক্ষপাতিত্বমূলক বা বৈষম্যহীনতা নীতি

অ-পক্ষপাতিত্বমূলক বা বৈষম্যহীনতা 

সকল মানুষ ও পারিপার্শ্বিকতার প্রতি সমান সম্মান প্রদর্শনে বিশ্বাসী। কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্টানের সকল মানুষ ও পারিপার্শ্বিকতার প্রতি সমান সম্মান প্রদর্শনে বিশ্বাসী । দৈনন্দিন কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে কোন প্রকার পক্ষপাতিত্ব না করে শ্রদ্ধার সাথে নিæোক্ত নীতি অনুসরণ করে এবং সকলের সহযোগিতা কামনা করে। দৈনন্দিন কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে গ্র“প কোন প্রকার পক্ষপাতিত্ব না করে শ্রদ্ধার সাথে নিম্নোক্ত নীতি অনুকরণ করে এবং এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করে।কর্মসংস্থান, বেতন, সুযোগ-সুবিধা, অগ্রিম প্রদান, কর্মচ্যুতি অথবা অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত সম্পুর্ণভাবে প্রতিটি কর্মীর নিজস্ব শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাদারী যোগ্যতা ও কর্মক্ষেত্রের কর্ম দক্ষতার উপর নির্ভরশীল। এ ক্ষেত্রে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ, বৈবাহিক বা গর্ভাবস্থা অথবা রাজনৈতিক মতাদর্শ বা বয়সের কারণে ভেদাভেদ সৃষ্টি করা হয় না। …

  • কর্মসংস্থান, বেতন, সুযোগ-সুবিধা, অগ্রিম প্রদান, কর্মচ্যুতি অথবা অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে প্রতিটি কর্মীর নিজস্ব শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাদারী যোগ্যতা ও কর্মক্ষেত্রের কর্মদক্ষতার উপর নির্ভরশীল। এ ক্ষেত্রে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ, বৈবাহিক বা গর্ভাবস্থা অথবা রাজনৈতিক মতাদর্শ বা বয়সের কারণে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে না। স্থানীয় আইন সর্বদা মেনে চলা হয় এবং স্থানীয় আইনের প্রতি সর্বদা সম্মান প্রদর্শন করা হয়।
  • স্থানীয় আইন সর্বদা মেনে চলা হয় এবং স্থানীয় আইনের প্রতি সর্বদা সম্মান প্রদর্শন করা হয়।  গ্র“প উর্দ্ধতন ব্যবস্থাপক কোম্পানীর সকল নীতি প্রয়োগে সজাগ দৃষ্টি রাখেন যাতে করে কারো প্রতি কোন প্রকার পক্ষপাতমূলক আচরণ করা না হয় ।
  • কর্মীদের ন্যায়সংগত সুযোগ-সুবিধা এবং কর্ম-সšতুষ্টি নিয়ে ব্যবস্থাপকের সাথে আলোচনার জন্য কোম্পানীতে গঠিত “শ্রমিক ফোরাম ও কমপ্লায়েন্স বিভাগ” অন্যতম মাধ্যম হিসাবে কাজ করে থাকে।
  • উর্ধ্বতন ব্যবস্থাপক কোম্পানির সকল নীতি প্রয়োগে সজাগ দৃষ্টি রাখেন যাতে করে কারো প্রতি কোন প্রকার পক্ষপাতমূলক আচরণ করা না হয়। কর্মীদের জানার এবং পরিস্কার ধারণা থাকার জন্য কোম্পানীর সকল নীতি বোর্ডে প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। এছাড়াও নতুন কর্মীদের পরিচিতি মূলক প্রশিক্ষন এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর সকল কর্মীদের ধারাবাহিক প্রশিক্ষণে নীতি সমুহ
    আলোচনার ব্যবস্থা আছে।
  • গ্র“প কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য প্রার্থীকে কাজের সাথে সম্পর্কহীন কোন ব্যক্তিগত বা আইনবহির্ভূত প্রশ্ন করে না।
    কর্মক্ষেত্রে নতুন কোন সুযোগ সৃষ্টি হলে প্রথমে পুরাতন কর্মীদেরকে জানানো হয় এবং তাদেরকে প্রতিযোগিতা করার
    জন্য সম্পুর্ন সুযোগ দেওয়া হয়।
  • চাকুরী প্রার্থীদের দরখাস্তসমূহ পর্যালোচনার মাধ্যমে অ-পক্ষপাতিত্বমূলক নীতির সামঞ্জস্যতা মূল্যায়ন করা হয়।
    বিশেষ ধরণের কাজে, বিশেষত যারা শারিরীকভাবে দুর্বল, নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয় চাহিদার দিকে নজর দেওয়া হয়।

বৈষম্যহীন আচরন নীতিমালা

কর্মীদের ন্যায়সংগত সুযোগ-সুবিধা এবং কর্ম-সন্তুষ্টি নিয়ে ব্যবস্থাপকের সাথে আলোচনার জন্য কোম্পানীতে গঠিত ”কমপ্লায়্যান্স বিভাগ” অন্যতম মাধ্যম হিসাবে কাজ করে থাকে। সব মানুষ সমান। ফ্যাশনস লিঃ সমান ভাবে নারী ও পুরুষ কর্মীদের কাজের মূল্যায়ন করে থাকে। এখানে নারী, পুরুষ, ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে সকলের অধিকার সমান। অটো নীটওয়্যার লিঃ সবার দক্ষতা অনুযায়ী পারিশ্রমিক,পদোন্নতি ইত্যাদি দিয়ে থাকে যাতে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের সাথে কোন রূপ ভূল বুঝাবুঝির সৃষ্টি না হয়। কারখানায় যাতে কোন বৈষম্য মুলক কর্ম কান্ডের সৃষ্টি না হয় সেজন্য নি¤œলিখিত নীতিমালা অনুসরন করা হয়ঃ-

  • কারখানায় যে কোন শাখায় নিয়োগের ক্ষেত্রে  নারী, পুরুষ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, শিক্ষা ও বয়স নির্বিশেষে শুধু মাত্র কাজের দক্ষতাই হবে নিয়োগ প্রাপ্তির প্রধান বিবেচ্য বিষয়। যে শ্রমিকের কাজের দক্ষতা বেশী  তার  গ্রেড/বেতন  বেশী  হবে এটাই স্বাভাবিক। লিঙ্গীয় বা অন্য কোন ধরনের বৈষম্য বা বিশেষাধিকার অত্র কারখানা কখনও সমর্থন করে না। উল্ল্যেখ থাকে যে, মহিলা শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে কখনো অন্তঃসত্বার পরীক্ষা করা হয় না।
  • কর্মীদের জানার এবং পরিস্কার ধারনা থাকার জন্য কোম্পানীর সকল নীতি বোর্ডে প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। এছাড়াও নতুন কর্মীদের পরিচিতি-মূলক প্রশিক্ষণ এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর সকল কর্মীদের ধারাবাহিক প্রশিক্ষণে নীতিসমূহ আলোচনার ব্যবস্থা আছে। কারখানায় যে কোন শাখায় বেতন ধরার ক্ষেত্রে নারী, পুরুষ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ , শিক্ষা ও বয়স নির্বিশেষে শুধু মাত্র যোগ্যতা ও কাজের দক্ষতাই হবে প্রধান বিবেচ্য বিষয়। নারী-পু রুষ সবাইকে সমান চোখে দেখা হয় এবং এ ক্ষেত্রে বেতনের কোন বৈষম্য করা হয় না।
  • চাকুরীতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে দক্ষতার প্র মান ও কর্মে  নিষ্ঠার মুল্যয়নই হবে প্রধান বিবেচ্য বিষয়। এ ক্ষেত্রে কোন রকমের স্ব -জন প্রীতি বা বৈষম্য করা হয় না। আমরা শ্রমিক নিয়োগ, পদোন্ন তি এবং অন্যান্য সুবিধা সমূহের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ ,হিন্দু বৌদ্ধ অর্থাৎ জাতিগত কোন বৈষম্যের সৃষ্টির ক্ষেত্রে সম্পূর্ন  উদার নীতি মেনে চলি।
  • কারখানায় যে কোন শাখায় ছুটি ভোগের ক্ষেত্রে নারী, পুরুষ, জাতি, ধর্ম, শিক্ষা, বয়স, পদবী বিন্যাস না করে শ্রম আইন অনুসারে ছুটি ভোগ করতে দেয়া হয়।
  • কর্মক্ষেত্রে নতুন কোন সুযোগ সৃষ্টি হলে প্রথমে পুরাতন কর্মীদেরকে জানানো হয় এবং প্রতিযোগিতা করার জন্য সম্পূর্ণ সুযোগ দেওয়া হয়। সুষ্ঠ কর্ম পরিবেশ বজায় রেখে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। আমরা শ্রমিক কর্মচারী ও স্টাফদেরকে প্রয়োজনীয় ট্রেনিং দিয়ে থাকি যাতে কারখানায় কোন রকম বৈষম্যের সৃষ্টি হতে না পারে।
  • কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য প্রার্থীকে কাজের সাথে সম্পর্কহীন কোন ব্যক্তিগত বা আইনবহির্ভূত প্রশ্ন করা হয় না।
  • কারখানায় কর্মে নিযুক্ত কারো প্রতি যদি কোন রকম বৈষম্য বা পক্ষপাতিত্ব মূলক আচরন করা হয় তবে তার সাথে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক কঠোর শাস্তি মুলক ব্যবস্থা নেয়া হয়।

সারাংশ

অ-পক্ষপাতিত্বমূলক বা বৈষম্যহীনতা নীতি- চাকুরী প্রার্থীদের দরখাস্তসমূহ পর্যালোচনার মাধ্যমে অ-পক্ষপাতিত্বমূলক নীতি’র সামঞ্জস্যতা মূল্যায়ণ করা হয়। বিশেষ ধরনের কাজে, বিশেষত যারা শারিরীকভাবে দুর্বল, নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয় চাহিদার দিকে নজর দেওয়া হয়।

অভিযোগ ও পরামর্শ নীতি সংক্ষিপ্ত ও তথ্য নিরভর বর্ণনা

অভিযোগ ও পরামর্শ নীতি সংক্ষিপ্ত ও তথ্য নিরভর বর্ণনা

অভিযোগ ও পরামর্শ নীতি

 উদ্দেশ্য

অভিযোগ যে কোন প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। নানাবিধ করণে অভিযোগ উথ্যাপিত হতে পারে।  আর অভিযোগের সাথে জড়িত রয়েছে প্রতিষ্ঠানের বৈষম্যমূলক আচরণের মাত্রা, উৎপাদনশীলতা, শ্রমিক অসন্তোষ সহ অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ন বিষয়। তাই সুন্দর কর্মপরিবেশ ও কার্যসন্তুষ্টি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখার মাধ্যমে অভিযোগ সর্বনিু পর্যায়ে রাখা। আর এ জন্যেই অটো  নিটওয়্যারস্ লিঃ এর কর্তৃপক্ষ অভিযোগের ব্যপারে খোলা দরজা নীতি অবলম্বন করে থাকেন। ফ্যাশন্স লিঃ  এর সকল শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও আন্তরিক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য এবং শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনার স্বার্থ সংরক্ষনের জন্য আমরা অভিযোগ ও পরামর্শ নীতি গ্রহন করে থাকি।

পরিধি

প্রতিষ্ঠানের সকল শ্রমিকগণ তাদের কার্যক্ষেত্রে উদ্ভুত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য যে কোন ধরনের অভিযোগ তাদের  উপরোথ কর্তৃপক্ষের কাছে উত্থাপন করতে পারবে।
কোম্পানীতে কর্মরত শ্রমিকদের কোন অভিযোগ বা পরামর্শ থাকলে তা সর্বোচ্চ কর্মকর্তার কাছে পৌঁছানোর জন্য নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় ঃ
(ক) সাজেশন বাক্স ঃ শ্রমিকদের কোন অসুবিধা বা অভিযোগ থাকলে তা উপরো¯থ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছানোর জন্য আমরা টয়লেট, ক্যান্টিন এবং কোম্পানীর  বিভিন্ন স্থানে সাজেশন বাক্স স্থাপন করে থাকি এবং শ্রমিকদের যে কোন ধরণের সমস্যা অভিযোগ বা পরামর্শ থাকলে তা লিখিত ভাবে বাক্সে ফেলার জন্য উৎসাহ প্রদান করে থাকি।

(খ) ওয়েল ফেয়ার অফিসার ঃ আমরা মহিলা ওয়েল ফেয়ার অফিসার নিয়োগ করে থাকি যাতে শ্রমিকরা তাদের সকল প্রকার সুযোগ, সুবিধা- অসুবিধা, পরামর্শ, অভিযোগ সহজেই জানাতে পারে এবং তার উপদেশ গ্রহন করতে পারে।

(গ) শ্রমিক সংঘ ঃ শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষনের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ কর্মকর্তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য আমরা শ্রমিকদের দ্বারা শ্রমিক প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে “শ্রমিক সংঘ” বা ওয়ার্কারস ফোরাম ”গঠন করেছি।  মৌখিকভাবে বা সাজেশন বক্সের মাধ্যমে কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে অভিযোগ পাওয়ার ৩ (তিন) কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে ৫ (পাঁচ) কর্মদিবসের মধ্যে কর্তৃপক্ষের জবাব নোটিশ বোর্ডের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। কোন অভিযোগকারীর অভিযোগ যদি মিথ্যা বলে প্রমানিত  হয় তাহলে, অভিযোগকারীকে তার সত্যতা প্রমাণ করতে বলা হয়। যদি সে সত্যতা প্রমান করতে পারে তবে কোম্পানীর নীতি অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর যদি অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণ করতে না পারে তবে মিথ্যা অভিযোগের কারনে তাকে কোম্পানীর নীতি অনুযায়ী আইনানুগ ভাবে শাস্তি প্রদান করা হবে।

অভিযোগ পরিচালনার জন্য নিুলিখিত পদ্ধতি অনুসরন করা হয়ঃ

  • যে কারো অভিযোগ যেকোন সময় সরাসরি প্রশাসন বা মানব সম্পদ বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাতে পারেন।
  • যে কেউ তার লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ শ্রমিক কল্যান কর্মকর্তার মাধ্যমে জানাতে পারেন।
  • প্রত্যেক বিভাগে রয়েছে ডডঈ এর সদস্য তাদের মাধ্যমেও অভিযোগ জানানো যায়।
  • অভিযোগ জানানোর জন্য প্রতি ফ্লোরের সিঁড়িতে রাখা আছে ১টি করে অভিযোগ বা পরামর্শ বাক্স, যে কেউ তার লিখিত অভিযোগ উক্ত বাক্সে ফেলতে পারেন।
  • অভিযোগ বাক্স প্রতি ১৫ দিন পর পর খোলা হয়।
  • অভিযোগকারীর পরিচয় অবশ্যই গোপন রাখা হয়।
  • প্রাপ্ত সকল অভিযোগ গুরুত্বসহকারে পর্যবেক্ষন করা হয়।
  • আনীত অভিযোগের সত্যতা যাচায়ের জন্য নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং উক্ত নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির দায়িত্ব পালন করে থাকেন অভিযোগ নিয়ন্ত্রন কমিটির সদস্যরা ।
  • অভিযোগ প্রমানিত হওয়ার পর অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের ধরন অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়।
  • প্রাপ্ত সকল অভিযোগ ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থাসহ লিপিব্ধকরনের জন্য একটি রেজিষ্টার ব্যবহার করা হয়।

অভিযোগ উত্থাপনের পদ্ধতি ঃ

যে কোন শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে তার যে কোন ধরনের সমস্যা নিম্নলিখিত উপায়ে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নিকট উত্থাপন করতে পারেন।

  • সরাসরি মৌখিকভাবে
  • সরাসরি লিখিতভাবে
  • নাম ঠিকানা গোপন করে পরামর্শ / অভিযোগ বাক্য্রের মাধ্যমে

মৌখিক অভিযোগ ঃ

  • কার্য সম্পর্কিত সমস্যার জন্য যে কোন শ্রমিক তার সুপারভাইজার এবং লাইনচিফ এর নিকট মৌখিকভাবে পেশ করতে পারবেন এবং উক্ত সমস্যার সমাধান না হলে উৎপাদন ব্যবস্থাপক অথবা ওয়েলফেয়ার কর্মকতাকে জানাতে পারবেন। ওয়েলফেয়ার কর্মকর্তাগণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করবেন।
  • যে কোন প্রকার হয়রানি, অসদাচারণ, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, মজুরী, ওভারটাইম, পারস্পারিক দ্বন্দ ইত্যাদি যে কোন বিষয়ে শ্রমিকরা তাদের অভিযোগ তার ইনচার্জ / ওয়েলফেয়ার অফিসারের নিকট পেশ করতে পারবেন। ইনচার্জ / ওয়েলফেয়ার অফিসারগণ তাৎক্ষনিক সমাধানের জন্য প্রসাশন বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
  • অধিক জটিল অভিযোগের ক্ষেত্রে ওয়েলফেয়ার কর্মকর্তাগণ উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের শরনাপন্ন হবেন এবং প্রয়োজনে তদন্তের মাধ্যমে উক্ত সমস্যার ফলপ্রসু সমাধান করবেন।
  • শ্রমিকগণ নিম্নলিখিতভাবে তাদের মৌখিক অভিযোগ ওয়েলফেয়ার অফিসারের নিকট উত্থাপন করতে পারবেন।
  • অফিস চলাকালীন সময়ে সরাসরি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে।
  • শ্রমিকদের সাথে ওয়েলফেয়ার অফিসার / কমিটির কোন সদস্যবৃন্দের সাক্ষাৎকারের সময়।
  • শ্রমিকদের সাথে দলগত আলোচনার সময়।
  • ফ্লোর পরিদর্শনের সময়।

লিখিত অভিযোগ ঃ

  • সরাসরি লিখিতভাবে।
  • নাম ঠিকানা গোপন করে পরামর্শ / অভিযোগ বাক্য্রের মাধ্যমে।

সরাসরি লিখিত অভিযোগ ঃ

যদি কোন শ্রমিক মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে গৃহীত ব্যবস্থায় সন্তষ্ট না হন, সে ক্ষেত্রে তিনি সরাসরি লিখিতভাবে তার অভিযোগ কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারবেন। তবে মৌখিক ভাবে না জানিয়ে সরাসরি লিখিতভাবেও জানানো যাবে।

  • প্রশাসন / এইচ আর ডি বিভাগ প্রাপ্ত লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভ্যান্তরীন তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
  • প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বর্গের স্বাক্ষ্য গ্রহণ ও ব্যক্তিগত শুনানির ব্যবস্থা করবেন।
অংশগ্রহনকারী কমিটি Participation Committee গঠনের নিয়ম

অংশগ্রহনকারী কমিটি Participation Committee গঠনের নিয়ম

অংশগ্রহনকারী কমিটি

ফ্যাশনস্ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে যে, উক্ত কোম্পানীর অব্যহত উন্নতি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে সুস্থ্য শ্রম-ব্যবস্থাপনা এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও সামগ্রিক উৎপাদনশীলতা  বৃদ্ধির জন্য শ্রমিকদের পরামর্শ ও সক্রিয় অংশগ্রহন একান্ত প্রয়োজন।  তাছাড়া কোম্পানী শ্রমিকদের কল্যাণ ও মালিক-শ্রমিকের মধ্যকার যেকোন ভুল বুঝাবুঝি ও অসন্তোষ দূর করতে পারস্পারিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ২০৫ ধারা বাস্তবায়নের লক্ষ্য অংশগ্রহনকারী কমিটি (Participation Committee) গঠন সংক্রান্ত নির্বাচনী বিধিমালা গঠন করা হলো …

অংশগ্রহনকারী  কমিটির উদ্দেশ্য

কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা ও দাবী-দাওয়া নিয়ে সরাসরি কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করার জন্য এবং প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ও মালিক সকলেরই অংগীভূত হওয়ার ভাব প্রোথিত ও প্রসার করা ওবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রমিকগণের অঙ্গীকার ও দায়িত্ব জাগ্রত করার লক্ষ্যে গ্রমেন্টস কম্পোজিট লিমিটেডে বাংলাদেশ শ্রম আইন – ২০০৬ এর ২০৫ ধারা অনুযায়ি একটি কার্যকরী অংশগ্রহনকারী কমিটি গঠন করা হয়েছে যেখানে মালিক প্রতিনিধি ও প্রত্যেক ফ্লোরের/সেকশনের শ্রমিককে অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। এ কমিটি উভয় পক্ষের অভিন্ন স্বার্থে বিভিন্ন সুপারিশ প্রণয়ন করে থাকে এবং মত পার্থক্য দূর করার চেষ্টা করে থাকে।

  • নির্বাচন পরিষদ নির্বাচনের যাবতীয় ব্যবস্থা করার জন্য দায়ী থাকবেন। শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা করা। একটি হৃদ্যতাপূর্ণ মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক সৃষ্টি ও পরিচালনা করা।
  • কোন শ্রমিক প্রতিনিধি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত না থাকলে, অথবা তিনি চাকুরিতে ইস্তফা দিলে অথবা  পরিষদের সদস্যপদ হারালে তার উত্তরাধিকারী নির্বাচিত হবে যেখান থেকে পদটি শূন্য হয়েছে সেই  গ্রূপ,শাখা অথবা বিভাগে থেকে ।কাজের শর্ত ও পরিবেশ উন্নত করা।
  • নির্বাচন পরিচালনার জন্য মালিক এবং উভয়পক্ষ থেকে সমপরিমান সদস্য নিয়ে বিজ্ঞপ্তি মারফত মালিক একটি নির্বাচন কমিটি গঠন করবেন । এর প্রতিলিপি শ্রম পরিচালককে প্রেরন করতে হবে : দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানো।
  • শ্রমিক অংশগ্রহনকারী কমিটি কমিটি সম্পূর্ন নিরপেক্ষ।
  • শ্রমিকের নির্বাচনের মাধ্যমে শ্রমিক প্রতিনিধি নির্বাচিত।
  • শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির সমন্বয়ে শ্রমিক অংশগ্রহনকারী কমিটি    সংগঠিত।
  • ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির সংখ্যা কখনও শ্রমিক প্রতিনিধির চেয়ে বেশী হবে না।
  • শ্রমিক ও কারখানার  প্রয়োজনে ন্যায়সঙ্গত সুযোগ সুবিধা প্রনয়ণে গৃহিত মতামত শ্রমিক অংশগ্রহনকারী কমিটির মাসিক সভায় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
  • বিভিন্ন দল, শাখা অথবা বিভাগসমূহ থেকে কতজন প্রতিনিধি নির্বার্চিত হবে তা র্নিধারন করে দিতে হবে । শ্রম আইনের সঠিক ব্যবহার ও প্রয়োগ নিশ্চিত করা;
  • উক্ত সভার কার্য বিবরনী ৭ দিনের মধ্যে নির্ধারিত নির্দিষ্ট ঠিকানায় শ্রম অধিদপ্তরকে প্রেরন করতে হবে।
  • শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে পারষ্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস, সমঝোতা-সহযোগিতা বৃদ্ধি, ও হৃদ্যতাপূর্ন শ্রমিক-মালিক স¤পর্ক সৃষ্টি ও পরিচালনা করা প্রচেষ্টা চালানো।
  • উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা অর্জন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, উৎপাদন খরচ হ্রাস এবং অপচয় রোধ করা এবং উৎপাদিত দ্রব্যের মান উন্নত করা।
  • শৃংখলাবোধে উৎসাহিত করা, নিরাপত্তা, পেশাগত স্বাস্থ্য রক্ষা এবং কাজের অবস্থার উন্নতি বিধান ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা।
  • বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, শ্রমিক শিক্ষা এবং পরিবার কল্যাণ প্রশিক্ষণে উৎসাহিত করা।
  • শ্রমিক এবং তাহাদের পরিবারবর্গের প্রয়োজনীয় কল্যাণমূলক ব্যবস্থাসমূহের উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
  • মালিক ও শ্রমিকের মাঝে সুসম্পর্ক স্থাপনই এই কমিটির মূল বৈশিষ্ট্য।
  • সার্বিক তত্বাবধানে কর্তৃপক্ষ গোপন ব্যালটে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন ঠিক করতে হবে, যা মনোনয়ন নিরীক্ষার দিন থেকে চার দিনের কম এবং দশ দিনের বেশী হবে না ।

অংশগ্রহনকারী  কমিটির নীতিমালা

  • কোন রাজনৈতিক দলের বা কোন ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য হতে পারবেনা এবং স্থানীয় জনগণ কিংবা বহিরাগত কারো সাথে সম্পর্ক যুক্ত হবে না।
  • কমিটির সদস্যগণ কারখানার গুরুত্বপূর্ণ কাজের ক্ষতি সাধন করে নিরাপত্তা কমিটির কোন কাজ করতে পারবে না।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা ঃ

গোপন  ব্যালটের মাধ্যমে শ্রমিকদের প্রতিনিধি নির্বাচনের উদ্দেশ্যে, নোটিশ র্বোডে বিজ্ঞপ্তি সেঁটে  যথারীতি ঘোষনা দিয়ে অংশগ্রহন পরিষদে শ্রমিকদের প্রতিনিধি নির্বাচনের আহবান জানাবেন। নির্বাচন কমিশনার অংশগ্রহনকারী কমিটির সদস্য নির্বাচন প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন করার জন্য একটি নির্দিষ্ট দিন তারিখ উল্ল্যেখসহ নির্বাচনী তফসিল ঘোষনা করিবেন । কারখানার সহজবোধ্য জায়গায় যেখানে শ্রমিকরা সহজে যাতায়াত করে অথবা নোটিশ বোর্ডে ইহা অবশ্যই টাঙ্গিয়ে দিতে হবে যাতে কারখানার শ্রমিকরা ইহা সহজেই অবগত হতে পারে । ভোটার তালিকায় প্রতিলিপি যুগপৎ নোটিস বোর্ড এবং প্রতিষ্ঠানের প্রকাশ্য স্থানসমূহে প্রদর্শিত হতে  হবে । এর নোটিসসহ ভোটার তালিকার একটি প্রতিলিপি শ্রম পরিচালককে পাঠাতে হবে যেন তিনি  তার যে কোন কর্মকর্তাকে নির্বাচন তত্ত¡াবধান করার জন্য ক্ষমতা দিতে পারেন ।

জামানত/ব্যায় ঃ নৈমিত্তিক এবং বদলী শ্রমিক ছাড়া অন্য সকল  শ্রমিক যারা প্রতিষ্ঠানে  অন্যুন তিন মাস চাকরি করেছেন, তারা সবাই শ্রমিকদের প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন । অংশগ্রহনকারী কমিটির সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের কোন জামানত প্রদান করতে হবে না এবং নির্বাচনের যাবতীয় ব্যায় কারখানার মালিক নিজেই বহন করবেন । 
মনোনীত প্রার্থীগণের খসড়া তালিকা প্রকাশ ঃ সহকারী নির্বাচন কমিশনার তাহার নিকট দাখিলকৃত মনোনয়ন পত্রসমূহ বাছাইপূর্বক মনোনয়ন প্রাপ্ত যোগ্য প্রার্থীদের ছবি সহ নামের খসড়া তালিকা নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করবেন।

মনোনয়নঃ যেকোন ভোটার অংশগ্রহন পরিষদে প্রতিনিধি নির্বাচনের  উদ্দেশ্যে একজন যথার্থ যোগ্য ভোটার নাম প্রস্তাব অথবা সমর্থন করতে পারেন । প্রত্যেক নিয়োগকারী কর্তৃক সরবরাহকৃত পৃথক মনোনয়নপত্র ’ড ফরমে’ হতে হবে এবং তা প্রস্তাবক কর্তৃক সমর্র্থিত এবং প্রার্থী কর্তৃক স্বাক্ষরিত হবে । যদি কোন গ্রূপ,শাখা অথবা বিভাগে বরাদ্দ আসনের চেয়ে প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হয় তবে নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত তারিখে ভোট অনুষ্ঠিত হবে । নির্বাচন গোপন ব্যালটে অনুষ্ঠিত হবে এবং তা র্নিধারিত পরিষদ কর্তৃক পরিচালিত হবে ।

মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে যে সকল প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ বলে গৃহীত হয়েছে তাদের সংখ্যা যদি নির্বাচিতব্য প্রতিনিধির সমান হয় তবে নির্বাচিত পরিষদ বিজ্ঞপ্তি দ্বারা সে সকল প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষনা করবেন  প্রত্যেক মনোনয়নপত্র মনোনয়ন দিবসে অথবা তার আগে প্রার্থী অথবা তার প্রস্তাবক অথবা তার সমর্থক নিয়োগকারীর কাছে দেবেন । তিনি লিখিত স্বীকারপত্রের মাধ্যমে মনোনয়নপত্র গ্রহন  করবেন। 

বাছাই : মনোনয়নপত্র পরীক্ষায় প্রার্থীগন , তাদের প্রস্তাবকগন এবং তাদের ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য যেকোন ব্যক্তি উপস্থিত থাকতে পারেন এবং নির্বাচন কমিটি  প্রদত্ত সকল মনোনয়নপত্র পরীক্ষার জন্য তাদের সঙ্গত সুযোগ দেবেন । নির্বাচন পরিষদ  মনোনয়নপত্র পরীক্ষায় উপস্থিত সকল ব্যক্তির উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্রসমূহ পরীক্ষা     করবেন এবং যেকোন মনোনয়নপত্র সম্পর্কে  কোন ব্যক্তি আপত্তি উত্থাপন করলে তার নিস্পওি   করবেন । নির্বাচন পরিষদ  যেকোন মনোনয়নপত্র বাতিল করতে পারেন । যদি তাঁরা সন্তষ্ট হন যে : ক) বিধি অনুযায়ী শ্রমিকদের প্রতিনিধি হওয়ার অযোগ্য, অথবা  খ)  মনোনয়ন বিধির কোন নিয়ম মান্য করা হয়নি ।

প্রার্থীর প্রত্যাহার ঃ সহকারী নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক কোন প্রার্থী তার প্রাপ্ত মনোনয়নপত্র বাতিল করতে চাইলে নোটিশ প্রকাশের পরবর্তী ০৩ (তিন) দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনারের বরাবর আপীল করতে পারবেন।

অংশগ্রহনকারী  কমিটির  গঠন

গঠনের তারিখ থেকে অংশগ্রহন পরিষদের কার্যকালের মেয়াদ হবে দুই বছর । কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদ্বয় অংশগ্রহনকারী কমিটি গঠন সংক্রান্ত নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনার, সহকারী নির্বাচন কমিশনার, প্রিজাইডিং অফিসার, পরিদর্শক এবং পুলিং এজেন্ট নিয়োগ সহ অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহন করবেন । কোন সাময়িক শূন্যপদ পূরন করার উদ্দেশ্যে কোন সদস্য নির্বাচিত হলে মেয়াদের অনূওীর্ণ অবশিষ্ট সময় পর্যন্ত তিনি সদস্য থাকবেন ।

অংশগ্রহনকারী  কমিটির  দায়িত্ব ও কর্তব্য

  • শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষের অধিকার ও স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করা।
  • শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস , সহযোগিতা ও সমঝোতা সৃষ্টি করা।
  • কারখানার উন্নয়ন কর্মকান্ডে শ্রমিকদের সম্পৃক্ত করা।
  • জাতীয় শ্রম আইনের সুবিধাদি যাতে শ্রমিকরা গ্রহণ করতে পারে সে বিষয়ে কাজ করা।
  • শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষের অধিকার ও স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করা ও তা রক্ষা করা এবং প্রতিষ্টানের প্রতি শ্রমিকের অঙ্গীকার ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা।
  • শ্রমিক ও মালিক পক্ষের মধ্যে পার¯পারিক বিশ্বাস, সহযোগিতা ও সমঝোতা সৃষ্টি করা।
  • কারখানার উন্নয়ন কর্মকান্ডে শ্রমিকদের স¤পৃক্ত করা।
  • প্রচলিত শ্রম আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা ও প্রচলিত শ্রম আইনের সুবিধাদি যাতে শ্রমিকরা গ্রহন করতে পারে সে বিষয়ে কাজ করা।
  • বৃত্তিমূলক শিক্ষা, পরিবার কল্যান এবং প্রশিক্ষন বিষয়ক উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।
  • কারখানার উন্নয়নের স্বার্থ স¤পর্কিত নিয়মনীতি বিষয়ে শ্রমিক ও মালিকদের অবহিত করা।
  • স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয় সহ শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ এবং জীবন ব্যবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা পালন করা।
  • শৃংখলাবোধ, নিরাপত্তা, পেশাগত স্বাস্থ্য রক্ষা, কাজের অবস্থার উন্নয়ন ও সংরক্ষনের ব্যবস্থা করা।
  • পন্যের মান ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে ভুমিকা রাখা ও উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা অর্জন , উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, উৎপাদন খরচ হ্রাস এবং অপচয় রোধ করা ও উৎপাদিত দ্রব্যের মান উন্নত করা।
  • সকল প্রয়োজনীয় তথ্য মালিক ও শ্রমিকদের অবহিত করা।  
  • সময় মত মিটিং এ উপস্থিত থাকা।
  • কমিটি ও কমিটির প্রতিনিধিদের স্বার্থ পরিপন্থি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা যাবে না। বদলী, পদোন্নতি, চাকুরী থেকে বরখাস্ত ইত্যাদি ব্যাপারে কারখানায় বিদ্যমান নির্দিষ্ট নিয়ম পালন করা হবে।
  • অনভিপ্রেত কোন ঘটনার উদ্ভব ঘটলে, কর্তৃপক্ষের সংগে আলোচনার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
  • সাধারণ শিক্ষা, বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।
  • কারখানার উন্নয়নের সাথে সম্পর্কিত নিয়ম নীতি বিষয়ে শ্রমিক ও মালিকদের অবহিত করা।
  • স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টি সহ শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ এবং জীবন ব্যবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা পালন করা।
  • পণ্যের মাণ উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখা।
  • সকল প্রয়োজনীয় তথ্য শ্রমিকদের অবহিত করা।

অংশগ্রহনকারী  কমিটির কর্মপন্থা

প্রতিষ্ঠানের প্রধান হবেন অংশ গ্রহন পরিষদের চেয়ারম্যান / সভাপতি এবং তিনি অংশগ্রহন পরিষদের  সভাসমূহে সভাপতিত্ব করবেন । প্রতি ১৫ দিনে একবার কমিটির মিটিং করা ( প্রয়োজনে জরুরী মিটিং করা যেতে পারে)।

  • শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে পারষ্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস ,সমঝোতা এবং সহযোগীতা বৃদ্ধির প্রচেষ্ঠা চালানো ।
  • মাসে অন্তত একবার একত্রিত হয়ে শ্রমিক অংশ গ্রহন কমিটির দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোচনা, মতামত গ্রহণ ও প্রদান  করতঃ করণীয় সম্বন্ধে ফ্যাক্টরীর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় উত্থাপন করা।
  • ফ্যাক্টরীতে কর্মরত সকল ষ্টাফ ও শ্রমিকগণের ব্যক্তিগত ফাইল নীতিমালা অনুযায়ী সংরক্ষিত হচ্ছে কি-না তা পর্যবেক্ষন করা।
  • ষ্টাফ ও শ্রমিকদের বেতন, ভাতা, বোনাস ও ওভার টাইম বিল সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ের উপর অভিযোগ গ্রহণ ও সমাধান করা।
  • ষ্টাফ ও শ্রমিকদের আর্থিক সুবিধাদি এবং ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয়াদি তদারকি করা।
  • শ্রমিক প্রতিনিধিগণ তাদের মধ্য থেকে সহ-সভাপতি নির্বাচন করবেন এবং তিনি  সভাপতির     অনুপস্থিতিতে পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করবেন।১৮ বৎসরের নীচে কোন শ্রমিক নিয়োগ রোধ করা।
  • শ্রমিকদের হয়রানী ও জোরপূর্বকভাবে যেন কাজ করানো না হয় তা নিশ্চিত করা।
  • কোন ষ্টাফ/শ্রমিক শৃংখলা পরিপন্থী কোন কাজ করলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কি-না তা নিশ্চিত করা।
  • নিয়মিত শ্রমিকদের নিয়ে প্রশিক্ষন কার্য পরিচালিত হচ্ছে কি-না তা তদারকি করা।
  • আঘাত ও রোগের কারণে অসুস্থ শ্রমিকগণের নানাবিধ বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি রাখা
  • পার্সোনেল / এইচ আর অফিসার অথবা শ্রমকল্যান অফিসার পরিষদে নিয়োগকারীদের অন্যতম  প্রতিনিধি হবেন এবং সদস্য সচিব হিসাবে কাজ করবেন এবং তিনি পরিষদের সভার বিবরণী রাখার জন্য এবং সভা আহ¡বান করার জন্য দায়ী থাকবেন। কোম্পানীর নীতিমালা অনুযায়ী সকল প্রকার ছুটি প্রাপ্তি নিশ্চিত করা।
  • কাজ চলাকালে অথবা কাজের পরে মিটিং করা যাবে।
  • মিটিং এর আলোচ্য সূচী মিটিং এর পূর্বেই স্থির করা।
  • মিটিং এর কার্য বিবরণী লিপিবদ্ধ করা।
  • সভার কার্য বিবরণী কারখানা কর্মীদের মধ্যে প্রচার করা।
  • মিটিং এর যে কোন তথ্য বা আলোচনা কারখানার বাইরে প্রচার করা যাবে না।

অংশগ্রহনকারী কমিটি Participation Committee গঠনের নিয়ম- এই কমিটির মেয়াদ কাল হবে পূর্ন এক বছর । তবে যে সমস্ত সদস্য /সদস্যা কমিটিতে আছে তারা যদি কোন কারনে চাকুরী ছেড়ে চলে যায় তবে তার স্থলে নতুন সদস্যা/সদস্য নিতে হবে । এছাড়া এক বছর পর বছর পর সভাপতি সহ নতুন সদস সদস্যা/সদস্য নিতে হবে ।

শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের  নিয়মাবলী ও সুবিধা সমূহ কি কি?

শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের নিয়মাবলী ও সুবিধা সমূহ কি কি?

শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের  নিয়মাবলী

সূচনা

কম্পোজিট লিমিটেড বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে একটি বিশেষ স্থান দখল করে নিয়েছে। অত্র প্রতিষ্ঠান শ্রমিক কল্যাণ সম্পর্কিত বিভিন্ন আইন-কানুন, আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও সামাজিক কল্যাণমুখী দায়বদ্ধতার প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল। তাই . কম্পোজিট লিমিটেড তার আগামী দিনের চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে গার্মেন্টস শিল্পের সুষ্ঠু বিকাশমান ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য শ্রমিক কল্যাণ মুখী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। অতি আবশ্যকীয় ও একটি সুষ্ঠু নীতিমালার অধীনে পরিচ্ছন্ন পরিবেশে কল্যাণমুখী ব্যবস্থাধীনে একটি ডে-কেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করলে ফ্যাক্টরীতে কর্মরত মহিলা শ্রমিকগণ তাদের সন্তানদের নিশ্চিন্তে এবং নিরাপদে রেখে কাজ করলে উৎপাদন বৃদ্ধি ও পন্যের সুষ্ঠু মান রক্ষার সহায়ক হবে বলে . কম্পোজিট লিমিটেড কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে।শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে মা ও শিশু পরিচর্যার বিশেষ ব্যস্থা নেওয়া হয়েছে।

উদ্দেশ্য

ফ্যাক্টরীতে কর্মরত মহিলা শ্রমিকগণ যাতে তাদের শিশু সন্তানদের ফ্যাক্টরী কমপ্লেক্সের ভিতরে একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে রেখে নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারে সে জন্যই এ ডে কেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

আওতাঃ

কম্পোজিট লিমিটেড ফ্যাক্টরী কমপ্লেক্সে ডে-কেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সেখানে একজন বিবাহিতা মহিলা শ্রমিক ৬ বৎসর-এর কম বয়সী শিশু সন্তানদের কারখানা খোলা থাকা দিনগুলিতে বিনা খরচে রাখতে পারেন। এই ডে-কেয়ার সেন্টার সকাল ৮.০০ ঘটিকা থেকে সন্ধ্যা ৭.০০ ঘটিকা পর্যন্ত খোলা থাকে।

নিয়মাবলী ঃ

  • কোন মহিলা শ্রমিক যদি তার শিশু সন্তান, শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখতে চায় তবে তাকে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে ।
  • কোম্পানী কর্তৃক নির্ধারিত ডাক্তার দ্বারা শিশুর শারিরীক অবস্থা পরীক্ষা করতে হবে ।
  • অনধিক ৬ (ছয়) বৎসর বয়সের শিশুদের শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের সুবিধা প্রযোয্য নয়।
  • সকালে শিশু, শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখার সময় শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের নির্ধারিত রেজিষ্টারে মা ও শিশুর নাম লিপিবদ্ব করতে হবে এবং টোকেন সংগ্রহ করতে হবে ।
  • ছুটির সময় টোকেন জমা দিয়ে শিশু বুঝে নিতে হবে ।

সুবিধাসমূহঃ ঃ

  • প্রয়োজনীয় সংখ্যক কেয়ারটেকার সার্বক্ষণিকভাবে শিশুদের পরিচর্যার দায়িত্বে নিযুক্ত থাকেন। ডে-কেয়ার সেন্টারে নিুোক্ত সুবিধাসমূহ বিদ্যমান ঃ
  • স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে অভিজ্ঞ আয়া দ্বারা শিশুর পরিচর্যার ব্যবস্থা রযেছে ।
  • শিশুদের জন্য খাবার (দুধ, সুজি, চিনি, ডিম, মাছ, মাংস, খিচুরী ও ফল) দেয়ার ব্যবস্তা রয়েছে ।
  • নির্দিষ্ট সময় পর পর মা তার শিশুকে দেখতে পারবেন । যে সকল শিশুরা শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুগ্ধ পান করে থাকে তাদের ক্ষেত্রে মায়েরা ১ ঘন্টা পর পর বুকের দুগ্ধ খাওয়াবার জন্য সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন।
  • কারখানয় নিয়োগপ্রাপ্ত অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা নিয়মিত শিশু স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা ও প্রয়োজনানুসারে শিশুর চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে ।
  • প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিছানা।
  • টয়লেট সুবিধা।
  • খেলনা সামগ্রী।
  • শিশুদের পড়া লেখার সরঞ্জাম।
  • প্রয়োজনীয় ক্রোকারিজ এবং কাটলারিজ।
  • ডে-কেয়ার সেন্টারে অবস্থানরত শিশুদের সাথে মায়েরা নিয়মিত বিরতিতে দেখা করতে পারেন।
  • পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তা (ঈষবধহষরহবংং ্ ঝধভবঃু) ঃ শিশুদের বাসোপযোগী করার ব্যবস্থা করতে হবে। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। শিশুদের বসা, খেলা করা, ঘুমানো এবং স্বাচ্ছন্দ চলাফেরার ব্যবস্থা রাখতে হবে। ঘরে এমন কোন আসবাবপত্র, কাঁচের বোতল রাখা যাবে না যাতে শিশুরা আঘাত প্রাপ্ত হয়। শিশুদের খেলাধুলার জন্য সুন্দর সুন্দর খেলনা রাখতে হবে। তবে এমন কোন খেলনা রাখা যাবে না যাতে খেলনা থেকেই শিশুরা আঘাত পায়। এ রুমে শুধু সংশ্লিষ্ট শিশু মায়েরা ছাড়া অন্যদের যাতায়াত নিষিদ্ধ। নিরাপদ “ফিডিং” প্রদানের জন্য এখানে পৃথক ব্যবস্থা থাকতে হবে। শিশুদের দেখা শুনার জন্য প্রশিক্ষন প্রাপ্ত আয়া থাকতে হবে। কক্ষটি কর্তব্যরত চিকিৎসক কর্তৃক নিয়মিত পরিদর্শনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। তিনি শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় পাশাপাশি কক্ষটিও নিরাপদ রাখার ব্যাপারে যথাযথ উপদেশ দেবেন।

উপসংহারঃ

রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস শিল্পে উৎসাহী ও নিবেদিতপ্রান শ্রমিক ও কর্মচারীবৃন্দ সাফল্যের নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করেন। স্বাভাবিক ভাবেই এই শিল্পে নিয়োজিত সবার জন্য যথাযথ সম্মান নিয়ে কাজ করার ব্যবস্থা করলে তা শিল্পের বিকাশে প্রভূত সহায়ক হবে। এটা ব্যবস্থাপকদের দায়িত্ব যে, এমন একটি উৎপাদন সহায়ক কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা যেখানে সবাই সুস্থ ও সুন্দরভাবে কাজ করতে পারে। এ লক্ষ্যেই . কম্পোজিট লিমিটেড এমন একটি উৎপাদন সহায়ক কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি এবং বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।

নারীর মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার বাস্তবায়ন পদ্ধতি

নারীর মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার বাস্তবায়ন পদ্ধতি

নারীর মানবাধিকার

বাংলাদেশের নারী যুগ যুগ ধরে শোষিত অবহেলিত হয়ে আসছে। পুরুষশাসিত সমাজ ব্যবস্থায় ধর্মীয় গোঁড়ামী, সামাজিক কুসংস্কার, কুপমন্ডুকতা, নিপীড়ন ও বৈষম্যের বেড়াজালে তাকে সর্বদা রাখা হয়েছে অবদমিত। তার মেধা ও শ্রমশক্তিকে শুধুমাত্র সাংসারিক কাজেই ব্যয় করা হয়েছে। সমাজ ও দেশ গঠন কাজে তাকে কখনও সম্পৃক্ত করা হয়নি। নারী আন্দোলনের অগ্রদূত মহীয়সী বেগম রোকেয়া নারী জাগরণের আহবান জানিয়ে বলেছিলেন, “তোমাদের কন্যাগুলোকে শিক্ষা দিয়ে ছেড়ে দাও, তাহারা নিজেরাই নিজেদের অন্নের সংস্থান করুক”। তাঁর এ আহবানে নারীর অধিকার অর্জনের পন্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা রয়েছে। উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে এ দেশে নারী জাগরণের সাড়া পড়েছিল সাধারণতঃ শিক্ষা গ্রহণকে কেন্দ্র করে। এছাড়া, ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে নারী তার অধিকার আদায়ে সচেতন হয়ে ওঠে। বাহান্নোর ভাষা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এর স্বাধিকার আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য।নারির কল্যাণ আছে নারীর মানবাধিকার

পূর্ব ইতিহাস ঃ

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ দীর্ঘ প্রত্যাশিত স্বাধীনতা লাভ করে। এই স্বাধীনতা যুদ্ধে পুরুষের পাশাপাশি নারীও অসামান্য অবদান রাখে। যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়াও বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদান এবং স্বামী ও সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়ে আমাদের মায়েরা এক বিশাল দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের নিদর্শন রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে আমাদের ২ লক্ষাধিক মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। মানবাধিকার লংঘনের এই জঘন্য অপরাধ কখনই ভুলবার নয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে নারী আত্মনির্ভরশীল হতে সচেতন হয়ে ওঠে। শিক্ষা গ্রহণের, কর্মসংস্থানের প্রত্যাশায় নারী সমাজের মাঝে বিপুল সাড়া জাগে। গ্রামের নিরক্ষর নারী সমাজের মাঝেও কাজের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হবার আগ্রহ জাগে। জাতীয় উৎপাদনে নারীর অংশগ্রহণ আবশ্যক হয়ে ওঠে। নারী উন্নয়নে সরকারী ও বেসরকারীবাবে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।

স্বাধীনতার পর হতে নারীর উন্নয়নের বিষয়টি কার্যতঃ অবহেলিত ছিল। দেশের প্রচলিত আইন কানুনকে উপেক্ষ করে নারী নির্যাতন ও নারীর প্রতি অবহেলার মাত্রা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। অবশ্য এ সময়ে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় নারী সংগঠনগুলির আন্দোলনের ভূমিকাও ছিল অগ্রণী। বেসরকারী সাহায্য সংস্থাগুলিও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মসূচী অব্যাহত রাখে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রাজনৈতিক দলগুলির পাশে পাশে নারী সংগঠনগুলিও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। ফলশ্র“তিতে নিজেদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁরা সচেতন হয়ে ওঠে। এতে করে দেশে নারী উন্নয়নে এক বিরাট সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। বর্তমান সরকার দেশের বৃহত্তর নারী সামাজের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটিয়ে তাদেরকে পশ্চাৎপদ অবস্থা থেকে তুলে আনতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ । নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে নারীর সার্বিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

নারীর মানবাধিকার ও সংবিধান

১৯৭২ সনে নবগঠিত রাষ্ট্র বাংলাদেশের সংবিদান রচিত হয়। তৎকালীন সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় রচিত এ সংবিধানে নারীর মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। সংবিধানের ২৭ ধারায় উল্লেখ আছে যে, “সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান ও আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।” ২৮(১) ধারায় রয়েছে, কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ ভেদে বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবে না”। ২৮ (২) ধারায় আছে, “রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন”। ২৮ (৩)-এ আছে, “কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ নারী-পুরূষভেদ বা বিশ্রামের কারণে জনসাধারণের কোন বিনোদন বা বিশ্রামের স্থানে প্রবেশের কিংবা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে কোন নাগরিককে কোনরূপ অক্ষমতা, বাধ্যবাধকতা, বাধা বা শর্তের অধীন করা যাইবে না”। ২৮ (৪)-এ উল্লেখ আছে যে, নারী বা শিশুদের অনুকূলে কিংবা নাগরিকদের কোন অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান প্রনয়ন হইতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না”। ২৯ (১) এ রয়েছে ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদলাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে”। ২৯(২) এ আছে, “কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ নারী-পুরুষ ভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মের নিযোগ বা পদলাভের অযোগ্য হইবেন না কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাঁহার প্রতি বৈষম্য  প্রদর্শন করা যাইবে না”। ৬৫ (৩) ধারায় নারীর জন্য জাতীয় সংসদে আসন সংরক্ষিত রাখা হয়েছে এবং ধারার অধীনে স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান সমূহে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে।

অটো এর নারী উন্নয়ন নীতি:

নারীর মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার বাস্তবায়ন

  • মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার সকল ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ যে সম-অধিকারী, তার স্বীকৃতি স্বরূপ নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ করা,
  • নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও) বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা;
  • নারীর মানবাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান আইন সংশোধন ও প্রয়োজনীয় নতুন আইন প্রণয়ন করা;
  • বিদ্যমান সকল বৈষম্যমূলক আইন বিলোপ করা এবং আইন প্রণয়ন ও সংস্কারে লক্ষ্যে গঠিত কমিশন বা কমিটিতে নারী আইনজ্ঞদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা;
  • স্থানীয় বা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোন ধর্মের, কোন অনুশাসনের ভুল ব্যাখ্যার বিত্তিতে নারী স্বার্থের পরিপন্থী এবং প্রচলিত আইন বিরোধী কোন বক্তব্য বা অনুরূপ কাজ করা বা কোন উদ্যোগ নেয়া যাবে না;
  • বৈষম্যমূলক কোন আইন প্রণয়ন না করা বা বৈসম্যমূলক কোন সামাজিক প্রথার উন্মেষ ঘটতে না দেয়া;
  • গুণগত শিক্ষার সকল পর্যায়ে, চাকুরীতে, কারিগরিী প্রশিক্ষণে, সম পারিতোষিকের ক্ষেত্রে, কর্মরত অবস্থায় স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তায়, সামাজিক নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য পরিচর্যায় নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করা;
  • মানবাধিকার ও নারী বিষয়ক আইন সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান ও সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করা;
  • পিতা ও মাতা উভয়ের পরিচয়ে সন্তানের পরিচিতির ব্যবস্থা করা যেমন, জন্মনিবন্ধীকরণ, সকল সনদপত্র,

মেয়ে শিশুর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সাধন এবং সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নতুন আইন প্রণয়ন করা

  • বাল্য বিবাহ, মেয়ে শিশু ধর্ষণ, নিপীড়ন, পাচার এবং পতিতা বৃত্তির বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা;
  • পরিবারের মধ্যে এবং বাইরে মেয়ে শিশুর প্রতি বৈষম্যহীন আটরণ করা এবং মেয়ে শিশুর ইতিবাচক চিত্র তুলে ধরা;
  • মেয়ে শিশুর চাহিদা যেমন, খাদ্য, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের প্রতি বিশেষ শুরুত্ব প্রদান করা;
  • শিশুশ্রম বিশেষ করে মেয়ে শিশুশ্রম দূরীকরণ কর্মসূচী বাস্তবায়নের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া;

নারীর প্রতি সকল প্রকার নির্যাতন দূরীকরণ

  • পারিবারিক ও সামাজিক পর্যায়ে এবং কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি শারীরিক, মানসিক ও যৌন নিপীড়ন, নারী ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তিতে নিয়োগ, যৌতুক ও নারীর প্রতি সহিংসতা দূর করা;
  • নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সম্পর্কীত প্রচলিত আইন যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে সংশোধন এবং নতুন আইন প্রণয়ন করা;
  • নির্যাতিত নারীকে আইনগত সহায়তা দেয়া এবং নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত করা ।
  • নারী পাচার বন্ধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা এবং নারীর সুষ্ঠু বিচার পাবার অধিকার আদায়ের লক্ষে নারী মানবাধিকার আইন সংশোধন করা।
  • নারীর প্রতি নির্যাতন দূরীকরণ এবং এক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগের জন্য বিচার ব্যবস্থায় পুলিশ বাহিনীর সর্বস্তরে ত হারে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা;
  • বিচার বিভাগ ও পুলিশ বিভাগতে নারীর অধিকার সংশ্লিষ্ট আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া ও জেন্ডার সংবেদনশীল করা;
  • নারী ও মেয়ে শিশু নির্যাতন ও পাচার সম্পকীয় অপরাধের বিচার ছয় মাসের মধ্রে নিষ্পন্ন করার লক্ষ্যে বিচার পদ্ধতি সহজতর করা।

সশস্ত্র সংঘর্ষ ও নারীর অবস্থান

  • সশস্ত্র সংঘর্ষ ও জাতিগত যুদ্ধে নারীর অধিকতর নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা;
  • সংঘর্ষ বন্ধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা;
  • আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠার মিশনে নারী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা;

শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ

  • নারী শিক্ষা বৃদ্ধি, নারী পুরুষের মধ্যে শিক্ষার হার ও সুযোগের বৈষম্য দূর করা এবং উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় নারীকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে সক্রিয় ও স্পষ্ট নীতি অনুসরণ করা;
  • আগামী দশ বছরে নিরক্ষরতা দূর করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা, বিশেষতঃ মেয়ে শিশু ও নারী সমাজের শিক্ষা প্রশিক্ষণের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া;
  • বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা;
  • মেয়েদের জন্যে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা;
  • টেকসই উন্নয়ন ও অব্যাহত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে নারীর জন্য আনুষ্ঠানিক ও অআনুষ্ঠানিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচী গ্রহণ এবং শক্তিশালী করা;
  • শিক্ষার ক্ষেত্রে নারী ও মেয়ে শিশুর সমান অধিকার নিশ্চিত করা, শিক্ষার সকল পর্যায়ে অসমতা দূর করা, শিক্ষাকে সর্বজনীন করা, ভর্তির হার বৃদ্ধিসহ নিরক্ষরতা দূর করা এবং মেয়ে শিশুকে বিদ্যালয়ে ধরে রাখার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা;
  • জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে সকল স্তরের পাঠ্যসূচীতে নারী-পুরুষ সমতা প্রেক্ষিত সংযোজন করা;
  • নরীর দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সকল প্রশিক্ষণে নারীকে সমান সুযোগ দেয়া;
  • নারী ও মেয়ের প্রতি দৃষ্টি রেখে বিদ্যমান নীতিসমূহের খাতওয়ারী সময়ভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা;
  • কারিগরী প্রযুক্তিগত ও উচ্চ শিক্ষাসহ সকল পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা;

ক্রীড়া ও সংস্কৃতি

  • ক্রীড়া ক্ষেত্রে নারীর বর্ধিত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা;
  • স্থানীয় পর্যায়ে নারীর জন্য পৃথক ক্রীড়া কমপ্লেক্স গড়ে তোলা;
  • সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে নারীর বর্ধিত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা;
  • নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাণে নারীকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সরকারী অনুদানের ব্যবস্থা করা;

জাতীয় অর্থনীতির সকল কর্মকান্ডে নারীর সক্রিয় ও সমঅধিকার নিশ্চিত করণ

  • অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান সমূহের সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং নারী-পুরুষের মধ্যে বিরাজমান পার্থক্য দূর করা;
  • অর্থনৈতিক নীতি (বাণিজ্যনীতি, মুদ্রানীতি, করনীতি প্রভৃতি) প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করা;
  • নারীর ক্ষমতায়নের প্রতি লক্ষ্য রেকে সমষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নে ও কর্মসূচীতে নারীর চাহিদা ও স্বার্থ বিবেচনায় রাখা;
  • সমষ্টিক অর্থনৈতিক নীতির প্রয়োগে বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রতিহত করার লক্ষ্যে নারীর অনুকূলে ংধভবঃু হবঃং গড়ে তোলা;
  • সম্পদ, কর্মসংস্থান, বাজার ও ব্যবসায় নারীকে সমান সুযোগ ও অংশীদারিত্ব দেয়া;
  • শিক্ষাপাঠ্যক্রম, বিভিন্ন পুস্তকাদিতে নারীর অবমূল্যায়ন দূরীভূত করা এবং নারীর ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরা;
  • নারী-পুরুষ শ্রমিকদের সমান মজুরী ও কর্মস্থলে নিরাপত্তা প্রদান এবং চাকুরী ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা;
  • নারীর অংশগ্রহণ প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নারীর অবদানের স্বীকৃতি দেয়া;
  • জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর অবদান প্রতিফলনের জন্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোসহ সকল প্রতিষ্ঠানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা;
  • সরকারের জাতীয় হিসাবসমূহে গার্হস্থ্য শ্রমসহ সকল নারী শ্রমের সঠিক প্রতিফলন নিশ্চিত করা;
  • নারী যেখানে অধিক সংখ্যায় কর্মরত আছেন সেখানে যাতায়াত ব্যবস্থা, বাসস্থান, বিশ্রামাগার, পৃথক প্রক্ষালনকক্ষ এবং দিবাযতœ কেন্দ্রে স্থাপনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

নারীর দারিদ্র্য দূরীকরণ

  • দরিদ্র নারী শ্রমশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধিকল্পে তাদের সংগঠিত করে ও প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন এবং বিকল্প অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুযোগ সৃষ্টি করা;
  • দরিদ্র নারীকে উৎপাদনশীল কর্মে এবং অর্থনৈতিক মূলধারায় সম্পৃক্ত করা;
  • অন্ন, বস্ত্র বাসস্থান, চিকিৎসা শিক্ষাসহ নারীর সকল চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা;
  • জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে নারীর দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা দান ও অনুপ্রাণিত করা।

নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন

নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে জরুরী বিষয়াদি যথা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা প্রশিক্ষণ, জীবনব্যাপী শিক্ষা, কারিগরী শিক্ষা, তথ্য, উপার্জনের সুযোগ, উত্তরাধিকার, সম্পদ, ঋণ প্রযুক্তি এবং বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অর্জিত সম্পদসহ ভূমির উপর অধিকার ইত্যাদির ক্ষেত্রে নারীর পূর্ণ ও সমান সুযোগ এবং নিয়ন্ত্রণের অধিকার দেয়া এবং সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নতুন আইন প্রণয়ন করা।

নারীর কর্মসংস্থান

  • নারী শ্রমশক্তির শিক্ষিত ও নিরক্ষর উভয় অংশের কর্মসংস্থানের জন্যে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করা;
  • চাকুরী ক্ষেত্রে নারীর বর্ধিত নিয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রবেশ পর্যায়সহ সকল ক্ষেত্রে কোটা বৃদ্ধি এবং কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা;
  • সকল নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে সরকার অনুসৃত কোটা ও কর্মসংস্থান নীতির আওতায় চাকুরী ক্ষেত্রে নারীকে সকল প্রকার সম-সুযোগ প্রদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করা;
  • নারী উদ্যেক্তা শ্রেণী গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও ঋণদান কর্মসূচী গ্রহণ করা;
  • নারীর বর্ধিত হারে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ, অবস্থান ও অগ্রসরমানতা বজায় রাখার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পরিবেশ গড়ে তোলা;
  • নারীর ব্যাপক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল আইন, বিধি ও নীতির প্রয়োজনীয় সংস্কার করা।

সহায়ক সেবা

সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে ও উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নারীর কার্যকর অংশগ্রহণের লক্ষ্যে সহায়ক সেবা সেমন, শিশুযতœ সুবিধা, কর্মস্থলে শিশু দিবাযতœ পরিচর্যা কেন্দ্র, বৃদ্ধ, অক্ষম, প্রবিন্ধী নারীদের জন্যে গৃহায়ন, স্বাস্থ্য, বিনোদনের ব্যবস্থা প্রবর্তন, সম্প্রসারণ এবং উন্নীত করা;

নারী ও প্রযুক্তি

  • নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন, আমদানী ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে জেন্ডার প্রেক্ষিত প্রতিফলিত করা;
  • উদ্ভাবিত প্রযুক্তির প্রয়োগের ফলে নারীর স্বার্থ বিঘিœত হলে গবেষণার মাধ্যমে ঐ প্রযুক্তিকে নারীর প্রতি ক্ষতিকারক উপাদানমুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা;
  • প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নারীর স্বার্থের অনুকূল লক্ষ্যসমূহ অর্জনের জন্যে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও সংস্কার করা;

নারীর খাদ্য নিরাপত্তা

  • দুঃস্থ নারীর চাহিদা ও প্রয়োজনের প্রতি লক্ষ্য রেখে সরকারী খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা;
  • নারীর রাজনৈতিক অধিকার অর্জন ও প্রয়োগ এবং এর সুফল সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা;
  • নির্বাচনে অধিকহারে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুপ্রাণিত করা;
  • নারীর রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের ও প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগে সচেতন করা এবং তৃণমূল পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত ভোটার প্রশিক্ষণ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা;
  • রাজনীতিতে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণে তাগিদ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে নারী সংগঠনসহ বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রচার অভিযান গ্রহণ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা;
  • জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে চলতি সময়সীমা শেষ হবার পর ২০০১ সালে বর্ধিত সংরক্ষিত আসনে প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য উদ্যোগ নেয়া;
  • স্থানীয় সরকার পদ্ধতির সকল পর্যায়ে বর্ধিত সংরক্ষিত আসনে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা;
  • সিদ্ধান্ত গ্রহণের সর্বোচ্চ স্তর মন্ত্রিপরিষদে, সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারার অধীনে উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক নারী নিয়োগ করা;

নারীর প্রশাসনিক ক্ষমতায়ন

  • প্রশাসনিক কাঠামোর উচ্চ পর্যায়ে নারীর জন্য সরকারী চাকুরীতে প্রবেশ সহজ করার লক্ষ্যে চুক্তিভিওিক এবং সরাসরি প্রবেশের (লেটারেল এনট্রি ) ব্যবস্থা করা;
  • বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে রাষ্টদূতসহ বিশ্ববিদ্যালয়সহ মঞ্জুরী কমিশন , পরিকল্পনা কমিশন , বিচার বিভাগের উচ্চ নারীদের নিয়োগ প্রদান করা ;
  • জাতিসংঘের বিভিন্ন শাখা ও অঙ্গ সংগঠনে এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠনে রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি বা প্রার্থী হিসেবে নারীকে নিয়োগ/মনোনয়ন দেয়া;
  • নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে প্রবেশ পর্যায়সহ সকল পর্যায়ে, গেজেটেড ও নন-গেজেটেড পদে কোটা বৃদ্ধি করা;
  • সকল ক্ষেত্রে নারীর জন্য নির্ধারিত কোটা পূরণ সাপেক্ষে কোটা পদ্ধতি চালু রাখা;
  • কোটার একই পদ্ধতি স্বায়ত্বশাসিত ও বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজ্য হবে এবং বেসরকারী ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানসমূহকেও এই নীতি অনুসরণের জন্য উৎসাহিত করা;
  • জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সুপারিশ অনুসারে সরকারের নীতি নির্ধারণী পদসহ সিদ্ধান্ত গ্রহণের সকল স্তরে নারীর সম ও পূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শতকরা ৩০ ভাগ পদে নারী নিয়োগের উদ্দেশ্যে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করা;

স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

  • নারীর জীবন চক্রের সকল পর্যায়ে যথা, শৈশব, কৈশোর, যৌবন, গর্ভকালীন সময় এবং বৃদ্ধ বয়সে পুষ্টি, সর্বোচ্চ মানের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য লাভের অধিকার নিশ্চিত করা;
  • নারীর জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা শক্তিশালী করা;
  • প্রসূতি ও শিশু মৃত্যুর হার কমানো;
  • এইডস রোগসহ সকল ঘাতকব্যাধি প্রতিরোধ করা বিশেষতঃ গর্ভকালীন স্বাস্থ্যসহ নারীর স্বাস্থ্য সম্পর্কীত গবেষণা করা এবং স্বাস্থ্য তথ্যের প্রচার ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা;
  • নারীর পুষ্টি বিষয়ক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা;
  • জনসংখ্যা পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নারীর জ্রজনন স্বাস্থ্য ও প্রজনন অধিকারের বিষয়টি বিবেচনায় খা;
  • বিশুদ্ধ নিরাপদ পানীয় জল ও পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থায় নারীর প্রয়োজনের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া;
  • উল্লেখিত সকল সেবার পরিকল্পনা, বিতরণ এবং সংরক্ষণে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা;
  • পরিবার পরিকল্পনা ও সন্তান গ্রহণের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করা;
  • নারীর স্বাস্থ্য, শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি, জন্ম-নিয়ন্ত্রণে সাহায্য, কর্মস্থলে মা’র কর্মক্ষমতা বাড়ানো ও মাতৃবান্ধব কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মায়ের বুকের দুধের উপকারিতার পক্ষে যথোপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা;
  • মায়ের দুধ শিশুর অধিকার, এই অধিকার (পাঁচমাস শুধুমাত্র বুকের দুধ) নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিশু প্রসবের সময় থেকে পরবর্তী ৪ মাস ছুটি ভোগের জন্য আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা এবং শিশুর জন্মের পূর্বে মা-কে মাতৃত্বজনিত প্রয়োজনীয় ছুটি দেয়া;

গৃহায়ন ও আশ্রয়

  • পল্লী ও শহর এলাকায় গৃহায়ন পরিকল্পনা ও আশ্রয় ব্যবস্থায় নারী প্রেক্ষিত অন্তর্ভুক্ত করা;
  • একক নারী, নারী প্রধান পরিবার, শ্রমজীবি ও পেশাজীবি নারী, শিক্ষানবিশ ও প্রশিক্ষাণার্থী নারীর জন্য পর্যাপ্ত নিরাপদ গৃহ ও আবাসন সুবিধা প্রদানের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া;
  • নারীর জন্য বিশেষ সুবিধা যেমন, হোষ্টেল, ডরমিটরী, বয়স্কদের হোম, স্বল্পকালীন আবাসস্থলের ব্যবস্থা করা এবং গৃহায়ন ও নগরায়ন পরিকল্পনায় দরিদ্র, দুঃস্থ ও শ্রমজীবি নারীর জন্য সংরক্ষিত ব্যবস্থা রাখা;
  • সরকারী বাসস্থান বরাদ্দের ক্ষেত্রে নিুবেতনভুকত নারী কর্মচারীসহ সকল স্তরের নারীর জন্যে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা।

নারী ও পরিবেশ

  • প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশের নিরাপত্তায় নারীর অবদান স্বীকার করে পরিবেশ সংরক্ষণের নীতি ও কর্মসূচীতে নারীর সমান অংশগ্রহণের সুযোগ ও নারী প্রেক্ষেত প্রতিফলিত করা;
  • পরিবেশব্যবস্থাপনা ও দূষণনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কর্মসূচী বাস্তবায়নে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা;
  • নদীভাঙ্গন ও প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত নারী ও শিশু পুনর্বাসন করা;
  • কৃষি, মৎস্য, গবাদি পশুপালন ও বনায়নে নারীকে উৎসাহিত ও সমান সুযোগ দেয়া;

নারী ও গণ মাধ্যম

  • গণমাধ্যমে নারীর সঠিক ভূমিকা প্রচার, প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং অংশগ্রহণে বৈষম্য দূর করা, গণমাধ্যমে নারী ও মেয়ে শিশুর অংশগ্রহন, মতামত প্রকাশ, সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি এবং নারী ও মেয়ে শিশুর ইতিবাচক প্রতিলফল ঘটানো;
  • নারীর প্রতি অবমাননাকর, নেতিবাচক, সনাতনী প্রতিফলন এবং নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধের লক্ষ্যে প্রচার ব্যবস্থা করা;
  • বিভিন্ন গণমাধ্যমের ব্যবস্থাপনা ও আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণে নারীর জন্য সমান সুযোগ রাখা;
  • প্রচার মাধ্যম নীতিমালায় জেন্ডার প্রেক্ষিত সমন্বিত করা;
  • উপরোক্ত বিষয়ের আলোকে আইন, প্রচারনীতি, নিয়ন্ত্রণবিধি ও আচরণবিধি প্রণয়ন করা;

বিশেষ দুর্দশাগ্রস্ত নারী

নারীর অবস্থানের বিভিন্নতা এবং বিশেষভাবে দুর্দশাগ্রস্ত নারীর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে তাদেরকে বিশেষ সুবিধা প্রদানের জন্য পদক্ষেপ ও কর্মসূচী গ্রহণ করা।