by Mashiur | Jan 2, 2019 | আগুন
অগ্নি নির্বাপন ঝুঁকি সমূহ
অগ্নি নির্বাপন অস্বাস্থ্যকর ধোঁয়া প্রাথমিক অবস্থায় মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ (আগুনে পুড়ে নয় ধোঁয়া নিঃশ্বাসের সাথে গ্রহণের ফলে বেশিরভাগ মানুষ মারা যায়।) নিুে ধোঁয়ার আরও ঝুঁকি সমূহ নিচে উল্লেখ করা হলো ঃ
অগ্নিকান্ড ঘটার ফলে শ্বাসরোধকর অবস্থার সৃষ্টি হয় অথবা বাতাসে অক্সিজেনের অভাব হয়।
অগ্নিকান্ডের ফলে দূষিত গ্যাস উৎপন্ন হয়।
দীর্ঘক্ষণ উত্তপ্ত ধোঁয়া গ্রহণের ফলে ফুসফুসের ভিতর জ্বলন সৃষ্টি হয়।
উদাহরন ঃ একটি গাড়ীতে কাঁচ বন্ধ অবস্থায় সিগারেট খেলে আটকে পড়া ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং দমবন্ধ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
অগ্নি নির্বাপনে আরও যে সব ঝুঁকি থাকে তা হলো ঃ
অগ্নি নির্বাপন ধোঁয়ার ফলে দৃষ্টি অস্পষ্ট হয়ে যায়। বিল্ডিং এর ভেতরে থাকা ব্যক্তি কিছুই দেখতে পায় না। রাস্তা হারিয়ে ফেলে ধোঁয়া এবং আগুনের ফাঁদে পড়ে মৃত্যুবরণ করে।
বিল্ডিং ধ্বসে পড়তে পারে ভেতরের লোকের উপর।
বিজ্ঞান সম্মত নির্বাপন ব্যবস্থা ঃ
আগুনের মৌলিক উপাদান
আগুনের চারটি মৌলিক উপাদান আছে যা আগুন লাগাতে পারে অথবা অগ্নিশিখাকে উজ্জ্বীবিত করতে পারে। এই মৌলিক উপাদানগুলো শ্রেণীকৃতভাবে আগুনের চতুর্থ কারণ। আগুনের চতুর্থ কারণগুলো হল ঃ
ক) বশীভূত মাধ্যম (জ্বালানী)
খ) তাপ
গ) সক্রিয় রাসায়নিক পদার্থের প্রতিক্রিয়া
ঘ) অক্সিডাইজিং মাধ্যম (অক্সিজেন)
ক) বশীভূত মাধ্যম ঃ বশীভূত মাধ্যম অথবা জ্বালানী বৃহৎ আগুন লাগার প্রধান কারণ। বশীভূত মাধ্যম বা জ্বালানী আগুনের সংস্পর্শে আসলে খুব সহজেই আগুন জ্বালাতে সাহায্য করে এবং নিজে জ্বলে। সাধারণত সব ধরণের জ্বালানীই কার্বন ধারণ করে যাতে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন যুক্ত থাকে।
খ) তাপ ঃ তাপ আগুনের চতুর্থ কারণের শক্তির উপাদান। যখন তাপ জ্বালানীর সংস্পর্শে আসে তখন তাপ জ্বালানীকে জ্বলানোর জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি জোগান দেয়। ফলে খুব সহজেই জ্বালানী জ্বলতে সক্ষম হয়। তাপের সংস্পর্শে আসার কারণে তরল এবং কঠিন জ্বালানী খুব সহজেই আগুন ধারণ করতে পারে।
গ) সক্রিয় রাসায়নিক পদার্থের প্রতিক্রিয়া ঃ অগ্নিকান্ড ঘটার ফলে সক্রিয় রাসায়নিক পদার্থ আগুন বা তাপের সংস্পর্শে আসলে খুব সহজেই ্প্রজ্জ্বলিত হতে পারে।
ঘ) অক্সিডাইজিং মাধ্যম ঃ অগ্নিকান্ড বা আগুন লাগার পর অক্সিডাইজিং মাধ্যম আগুনের সংস্পর্শে এলে সহজেই অগ্নিশিখা উদ্দীপ্ত হতে পারে।
নির্বাপক ব্যবস্থা
কিভাবে আগুন নির্বাপন করতে হবে এই শাখাতে তাই নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বর্ণনা করা হয়েছে আগুন নির্বাপনের পদ্ধতি ঃ
পানির ব্যবহার ঃ
প্রথমত, পানি আগুনকে ঠান্ডা করার মাধ্যমে নির্বাপন করে। পানি আগুনের তাপকে ঠান্ডা করে আগুন নির্বাপন করে থাকে। তাপ ছাড়া আগুন বেশিক্ষণ তার ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে না ফলে আগুন নিভে যায়।
দ্বিতীয়ত, পানি আগুনের বশীভূত মাধ্যম বা জ্বালানীকে ভিজিয়ে তাপ ধরে রাখার ক্ষমতা হ্রাস করে এবং জ্বালানীর শক্তিকে হ্রাস করে ফলে আগুন স্থায়ী হতে পারে না।
তৃতীয়ত, পানি সক্রিয় রাসায়নিক পদার্থ (আগুন ধরাতে সক্ষম) কে ক্ষমতাহীণ করে সহজেই আগুন নেভাতে পারে।
খোলা বাতাসে আগুন ঃ
খোলা বাতাসে অগ্নিকান্ড হলে যেমন খুব দ্রুতই চারিদিকে ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এতে দ্রুত সম্পদের ক্ষতির পরিমাণ বেশী হতে পারে তেমনি খোলা বাতাসে আগুন দ্রুত নেভানো সম্ভব পর্যাপ্ত পানির পানির বষর্নের ব্যবস্থার মাধ্যমে।
বন্ধ স্তুপে আগুন ঃ
বন্ধ স্থানে বা স্তুপীকৃত আগুন নির্বাপন অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে কারণ দেয়ালের রং, বিভিন্ন বশীভূত মাধ্যম যেমন- কাঠ, তেল ইত্যাদির কারণে অগ্নি শিখা মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। তবে স্তুপীকৃত অগ্নিকান্ড স্থান পানি অথবা অন্যান্য অগ্নি নির্বাপক বস্তুর মাধ্যমে অগ্নি নির্বাপন সম্ভব।
শ্বাসরোধকর আগুন ঃ
আগুনের কারণে সৃষ্ট ধোঁয়ায় বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস উৎপন্ন হতে পারে। যা শ্বাস-কষ্ট এবং চোখে অন্ধকার দেখা এবং ঝাপসা দেখার কারণ। সৃষ্ট ধোঁয়ার ফাঁদে পড়ে শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে সাময়িকভাবে অচেতন হয়ে পড়ে অগ্নিকান্ড এরিয়া থেকে বের হতে পারে না ফলে আগুনে পুড়ে মারা যায়।
অবাধ বায়ু চলাচল কৌশল অথবা আগুন বিচ্ছিন্নকরণ ঃ
অবাধ বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকা অপরিহার্য্য। অবাধ বায়ু চলাচল করলে আগুন প্রবল আকারে জ্বলতে পারে না কারণ আগুন তার জ্বলন ক্ষমতা স্থায়ী করতে পারে না। তাছাড়া অবাধ বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকলে সহজেই আগুনকে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব হয়।
আগুনের শ্রেণীকরণ ঃ
অ্যালার্মের মাধ্যমে আগুনের শ্রেণীকরণ এবং বিপদের ঝুঁকি সনাক্তকরণ করা যেতে পারে। যেমন ঃ “এক অ্যালার্ম”, “দুই অ্যালার্ম”, “তিন অ্যালাম” (ভয়াবহ আগুন)।
by Mashiur | Jan 2, 2019 | আগুন
অগ্নি নির্বাপনকারী দায়িত্ব
অগ্নি নির্বাপনকারী দলের লক্ষ্য হল জীবন, সম্পদ ও পরিবেশকে রক্ষা করা। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং বহু জীবন বিপন্ন করে দেয়। তা স্বত্ত্বেও বর্তমান প্রযুক্তিগত আগুন নির্বাপক সবসময় আকস্মিক দুর্ঘটনা এড়িয়ে যেতে পারে না। শুরুতেই অগ্নি প্রতিরোধ করা অগ্নি নির্বাপককারী দলের দায়িত্ব। আগুন পরিদর্শকদেরকে প্রায়ই চরম সংকটপূর্ণ অবস্থায় জবাবদিহী করতে হয় জনসাধারণকে। অগ্নি নির্বাপককারীরা সমাজকে বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে থাকে ঃ
- জরুরী চিকিৎসা সুবিধা, জরুরী চিকিৎসক অথবা অনুমতি প্রাপ্ত চিকিৎসক, স্টাফিং, অ্যাম্বুলেন্স।
- ঝুঁকি উপশমকারী বস্তু।
- অনুসন্ধান এবং উদ্ধার।
- আকস্মিক দুর্ঘটনায় সাহায্য করা।
আরও বলা যায় যে, অগ্নি নির্বাপককারী দল বিভিন্ন স্থানেও সুবিধা প্রদান করে থাকে। যেমন ঃ
- আকাশযান / বিমান বন্দরে উদ্ধার কার্য।
- বনভূমির অগ্নি দমন।
- জাহাজে এবং সামরিক অগ্নিকান্ড দমন এবং উদ্ধার
- কৌশলগত চিকিৎসা সুবিধা
ইউ.এস.এ অগ্নি নির্বাপককারী দল ইউ.এস ফেডারেল ইমার্জেন্সী ম্যানেজমেন্ট এজেহ্নীর নগর অনুসন্ধান এবং উদ্ধার কার্যের সুবিধা প্রদান করে থাকে।
প্রাথমিক নিরীক্ষা এবং আগুন সম্পর্কে ব্যাখা ঃ
রুদ্ধ তাপের ফলে ঝুঁকি নিশ্চিত। এমনকি জ্বলন্ত শিখার স্পর্শ ছাড়াই সেখানে তুলনামূলক অধিকাংশ মানুষ প্রবল ঝুঁকির সম্মুখীন হয়। বিকীর্ণ তাপ থেকে আগুন জ্বলে। তপ্ত বস্তুর সংস্পর্শে গরম গ্যাস, ধোঁয়া এবং গরম এবং বিষাক্ত ধোঁয়া সৃষ্টি হয়। অগ্নি নির্বাপককারী দল তাপের প্রতিরক্ষা যন্ত্রপাতি দ্বারা সুসজ্জ্তি থাকে যা কিনা অগ্নি বাঁধাদায়ক কাপড় এবং মাথার বর্ম যা শরীরকে তাপ থেকে বাঁচায়। প্রবল চাপের ফলে গ্যাস সিলিন্ডার এবং ট্যাংকিতে বিস্ফোরণ ঘটে যাকে বলা হয় বি.এল.ভি.ই (ফুটন্ত তরলের বাস্প থেকে বিস্ফোরণ)। কিছু রাসায়নিক পদার্থ যেমন- অ্যামোনিয়াম, নাটট্রেট সার ইত্যাদিতে বিস্ফোরন ঘটে। বিস্ফোরনের কারণে শারীরিক ক্ষতি হয় অর্থাৎ শক্তিশালী বিস্ফোরণের মাধ্যমে গুরুতর আহত হয়। আগুন সংস্পর্শে মানুষের ত্বক, চামড়া বা মাংস জ্বালানীর মত জ্বলে। স্থির আগুনের ফলে সেকেন্ডের মধ্যেই ত্বকের উপরের স্তর জ্বলে যায় যা চরম ব্যাথা সম্পন্ন। দ্বিতীয় মাত্রায় জ্বলে ত্বকের ভিতরে এতে আকস্মিক শারিরীক বা মানসিক আঘাত লাগতে পারে। দেহে সংক্রমন হতে পারে এবং মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তৃতীয় মাত্রার জ্বলন নার্ভের টিস্যুর সাথে আপোস করে ফলে তাতে আর ব্যাথা থাকে না। প্রথম ও দ্বিতীয় মাত্রার কারণে তৃতীয় মাত্রা তীব্র ব্যাথা অনুভব হয়। তৃতীয় মাত্রায় মাংস এবং ভিতরে জৈব প্রকট করে পুরোপুরিভাবে ত্বককে ধ্বংস করে দেয়। এরপরেও যদি ব্যক্তিটি আঘাত পেয়ে বেঁচে থাকে তবে চিকিৎসা করা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
by Mashiur | Jan 2, 2019 | আগুন
অগ্নিকান্ড থেকে লোক অপসারণ পরিকল্পনা
সংজ্ঞাঃ অগ্নিকান্ড থেকে লোক অপসারণ পরিকল্পনা সমুহ কি কি – দুর্ঘটনায় আক্রাšত ভবন থেকে আটকে পড়া লোকজনকে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও পদ্ধতিগতভাবে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নাম ইভাকিউয়েশন বা লোক অপসারণ। কারখানা ভবনের প্রতিটি কক্ষে অন্যুন দু’টি করে বহির্গমন পথ থাকতে হবে এবং এগুলো এমনভাবে অবস্থিত থাকবে যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি তার কাজের স্থান থেকে বহির্গমন পথ পর্যন্ত যুক্তিসংগত বাধাহীনভাবে এবং স্বচ্ছন্দে পৌঁছাতে পারে। যে ক্ষেত্রে কারখানা ভবনটি বা কারখানা ভবনের অংশ বিশেষ একতলা এবং যেখানে কোন সময়ে অন্যূন ২০ জন লোক কাজ করেন, সে ক্ষেত্রে ভবনের ভিতরে বা বাইরে কমপক্ষে একটি স্থায়ীভাবে নির্মিত শক্ত সিঁড়ি রাখতে হবে এবং এটি নীচ তলা পর্যন্ত সরাসরি এবং বা বাধাহীন যাতায়াতের ব্যবস্থা সম্বলিত হবে। …
লোক অপসারণ পরিকল্পনা
আগুন লাগলে বের হয়ে যওয়ার জন্য ব্যবহৃতব্য কারখানার প্রত্যেকটি সিঁড়ির সঙ্গে মজবুত হ্যান্ড রেইল যুক্ত থাকবে এবং সিঁড়িটির একদিক খোলা থাকলে সেদিকে এবং সিঁড়ি দু’দিকে খোলা থাকলে উভয় দিকে হ্যান্ড রেইল থাকবে। বিপদে লোক অপসারণ করার জন্য অবশ্যই পূর্ব পরিকল্পনা থাকতে হবে এবং সে পরিকল্পনা অনুসারে লোক অপসারণ অনুশীলন ও মহড়া করতে হবে, যাতে বাস্তব ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ ফলপ্রসূ হয়। কারখানা হিসাবে নির্মিত ভবনে বা কারখানা হিসাবে ব্যবহার করার জন্য রূপান্তর করা হলে সে ভবনের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত অতিরিক্ত শর্তাবলী প্রযোজ্য হবে- নিচে আটকে পড়া লোকদের নিরাপদে বের করার ধারাবাহিক পদ্ধতির বিবরণ দেওয়া হলোঃ
- জরুরী অবস্থায় কেউ কাউকে ওভারটেক করা ঠিক হবে না, তাতে পড়ে গিয়ে পদদলিত হবার সম্ভাবনা থকে। এজন্য যে আগে আছে তাকে আগেই যেতে দিতে হবে।
- সিড়ি/ইমারজেন্সি এক্সিট দিয়ে নামার সময় শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে আস্তে আস্তে নামতে হবে।
- যেহেতু আগুন উর্ধমুখী, যে তলায় আগুন লেগেছে সে তলার লোক প্রথম নামবে। যেমন তিন তলায় আগুন লাগলে সেখানকার লোক প্রথম নামবে। তারপর তার উপর দিকের লোক নামবে যথা- চার, পাঁচ, ছয়তলা ইত্যাদি। এভাবে উপর তলার সব লোক নামার পর দোতালা ও একতালার লোক বের হবে সবশেষে।
- আগুনের সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে ফায়ার এলার্ম বাজাতে হবে। কর্তব্যরত নিরাপত্তা কর্মীদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট একজনকে এ দায়িত্ব দিতে হবে।
- আগুন থেকে আত্মরক্ষামূলক কোন সিঁড়ি সমতল থেকে ৪৫০ কোণের চেয়ে বেশী কোণে নির্মান করা যাবে না।বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ বন্ধ করতে হবে। এ কাজটি করার জন্যও একজন নির্ধারিত থাকবে।
- ফায়ার সার্ভিসকে ১৯৯ বা ৯৫৫৫৫৫৫ নাম্বারে আগুনের সংবাদ দিতে হবে। এ সংবাদ পৌঁছানোর জন্য পূর্ব থেকেই লোক নির্দিষ্ট করে রাখতে হবে।
- ফায়ার এক্সটিংগুইশার এর সাহায্যে আগুন নিভানোর চেষ্টা করতে হবে। এজন্য পূর্ব থেকেই ফায়ার এক্সটিংগুইশার এবং অগ্নি নির্বাপক দল মজুদ রাখতে হবে।
- পি এ সিস্টেমের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সকল শাখার শাখা প্রধানকে আগুনের সংবাদ পৌঁছাতে হবে। এ সংবাদ দেবার জন্য একটি কন্ট্রোর সেন্টার থাকতে হবে যেখানে পাবলিক এড্রেস সিস্টেম মজুদ থাকবে।
- ইমারজেন্সির সময় লিফ্ট ব্যবহার করা যাবে না।কমপক্ষে একটি সিঁড়ি অগ্নি প্রতিরোধক মাল মশলা দ্বারা নির্মিত হবে । সকলকে নিচের দিকে নামতে হবে।
- নামার সময় সাধারণ সিড়িসহ অবশ্যই ইমারজেন্সি এক্সিট ব্যবহার করতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠানে ইমারজেন্সি এক্সিটের সিড়ি মালামাল রেখে আবদ্ধ রাখা হয়, তাতে জরুরী অবস্থায় লোক অপসারনে সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য সব সময় ইমারজেন্সি এক্সিট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
- যে সিড়ির কাছাকাছি আগুন থাকবে তা ব্যবহার করা ঠিক হবে না, কারণ ধোঁয়া ও আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ হবার সম্ভাবনা থাকে।
- কারখানা ভবনের ভিতরের প্রতিটি হয়েষ্ট পথ লিফ্ট পথ অগ্নি প্রতিরোধক মাল-মশলা দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকবে এবং হয়েষ্ট বা লিফ্টে প্রবেশপথ অগ্নি প্রতিরোধক মাল-মশলা দ্বারা নির্মিত দরজা যুক্ত হবে। পর থেকে নিচে লাফ দেওয়া উচিত হবে না।
- জরুরী অবস্থায় নিরাপত্তা কর্মীদের অবশ্যই টর্চ বা ইমারজেন্সি লাইট ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, জরুরী অবস্থায় ভবনের ভিতর অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে।
লোক অপসারনে অগ্রাধিকারঃ
জরুরী অবস্থায় আটকে পড়া লোক অপসারণ করার সময় নিচে লেখা অগ্রাধিকার অনুসরণ করা উচিতঃ
- শিশু ও সšতান সম্ভবা মা
- বৃদ্ধ লোক
- মহিলা
- অফিস স্টাফ
- অফিসার
- শাখা প্রধান
- নিরাপত্তা কর্মী।
আহত ব্যক্তিদের অপসারণ পদ্ধতিঃ
কারখানা ভাগের কোন অংশ আগুন থেকে আত্মরক্ষামুলক সিঁড়ির ১৫০” (যাতায়াতের পথ সহ)-র বেশী দূরত্ব থাকবে না ।দুর্যোগের কারনে লোক আহত হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। যে সব লোক আহত হয়ে থাকে, তারা নিজে নিজে বিপদগ্রস্থ এলাকা থেকে নিরাপদ এলাকায় গমনের জন্য বের হতে পারে না। তাদের অপসারণ করার জন্য অবশ্যই জরুরী উদ্ধার পদ্ধতির মাধ্যমে অপসারণ করতে হবে।
জরুরী উদ্ধার পদ্ধতি সম্পর্কে পাঠ পরিকল্পনা-১০ এ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। জরুরী উদ্ধার পদ্ধতিসমূহ নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে, যাতে বিপদের সময় বাস্তবে প্রয়োগ করা যেতে পারে। সাধারণতঃ অজ্ঞান ব্যক্তিদের অপসারণ করার জন্য স্ট্রেচার ব্যবহার করা যেতে পারে। এ কাজগুলো প্রশিক্ষিত নিরাপত্তা কমীগণকেই করতে হবে।
স্ট্রেচার/ব্যাকবোর্ডঃ
বিপদগ্রস্থ স্থান থেকে নিরাপদ স্থানে আহতকে বহণ করার জন্য স্ট্রেচার এবং ব্যাকবোর্ড এর বিকল্প নেই। এ্যাম্বুল্যান্সে স্ট্রেচার একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রী। স্ট্রেচার ছাড়া রোগী পরিবহণ কল্পনাই করা যায় না।অনুরূপ কোন বহির্গমন পথ প্রস্থে ২’-৮” এবং উচ্চতায় ৬’-৬” এর কম হতে পারবে না। ব্যাকবোর্ড স্ট্রেচারের সর্বাধুনিক সংস্করণ। স্ট্রেচার কাঠ এবং লোহার ফ্রেমে তৈরি হয়ে থাকে। ব্যাকবোর্ড সাধারণতঃ স্পীন্ট রেজিস্ট্যান্ট কাঠ বা কৃত্রিম পদার্থ দ্বারা তৈরি হয়ে থাকে। ব্যাকবোর্ড আহতের শরীর থেকে ক্ষরিত রক্ত শোষণ করে না।
স্ট্রেচারের পরিমাপঃ
(১) দৈর্ঘ্য – ৭ ফুট ৯ ইঞ্চি,
(২) প্রস্থ – ২ ফুট,
(৩) ডি রিং এর উচ্চতা – ৪ ইঞ্চি,
ব্যাকবোর্ড এর পরিমাপঃ ব্যাকবোর্ড দু’ধরনের
(১) লং ব্যাকবোর্ড এর দৈর্ঘ্য ঃ ৬-৭ ফুট
(২) শর্ট ব্যাকবোর্ডঃ সাধারণত ঘাড় ও মেরুদন্ডে আঘাত প্রাপ্ত রোগীকে গাড়ির ভেতর থেকে নিরাপদে বের করার জন্য শর্ট ব্যাকবোর্ড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ ব্যাকবোর্ড ব্যবহার করার সময় অবশ্যই রোগীর ঘাড়ে সার্ভিক্যাল করার ব্যবহার করতে হব্।ে এর দৈর্ঘ্য ঃ ৩-৪ ফুট।
সারাংশ
অগ্নিকান্ড থেকে লোক অপসারণ পরিকল্পনা সমুহ – যে ক্ষেত্রে কোন কারখানা ভবনে বা কারখানা ভবনের কোন অংশে নীচতলার উপরে কোন সময় ২০ বা ততোধিক ব্যক্তি কাজ করেন অথবা যেখানে দাহ্য পদার্থ বা বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় বা জমা রাখা হয়, অথবা কারখানা ভবন বা এর অংশ ভূ-সমতলের নীচে অবস্থিত, সে ক্ষেত্রে পালানোর উপায়ে মধ্যে ভবনের ভিতরে বা বাইরে স্থায়ীভাবে কমপক্ষে দু’টো মজবুত এবং পৃথক সিঁড়ির ব্যবস্থা অন্তর্ভূক্ত থাকবে এগুলো একতলা পর্যন্ত সরাসরি এবং বাধাহীন যাতায়াতের ব্যবস্থা সম্বলিত হবে।
by Mashiur | Dec 30, 2018 | আগুন
অগ্নি নির্বাপন নীতি
প্রজ্জলন নীতি থেকে জানা যায় আগুনের উৎপত্তির জন্য ৩টি রাসায়নিক বিক্রিয়ার অবিচ্ছিন্ন যোগসুত্র অপরিহার্য। নির্বাপন নীতির মূল বিষয় হচ্ছে যে প্রক্রিয়ায় আগুনের উৎপত্তি হয়েছে সেই পক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করা অর্থাৎ সেই প্রক্রিয়া ঘটতে না দেওয়া, অর্থাৎ আগুনে ৩টি উপাদান এবং অবিচ্ছিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া এই ৪টির মধ্যে যদি কোন একটিকে বিচ্ছিন্ন করা যায় বা এদের যোগসূত্রের বিঘœ ঘটানো যায় তবে আগুন থাকবে না। আর এটাই হচ্ছে অগ্নি নির্বাপন নীতি। …
তবে সর্ব প্রকার আগুন নিরাপত্তা একই সূত্রে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব নয়। আগুনের কোন সূত্রকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে তা নির্ভর করে দাহ্য বস্তুর উপর।
প্রজ্ঝলন চতুর্ভুজের সূত্র বিচ্ছিন্নকারী মাধ্যমগুলির মধ্যে পানি একটি মাধ্যম। পানি দ্বারা তাপের সূত্রকে বিচ্ছিন্ন করা যায়। তবে কিছু কিছু দাহ্য বস্তু আছে যেখানে পানি ব্যবহার করা যায় না। যেমন- গ্যাস, বিদ্যুৎ বা তেল জাতীয় আগুনে পানি ব্যবহার করা যাবে না।
সুতরাং প্রজ্জলন চতুর্ভূজের ৪টি বাহু আছে। অগ্নি প্রযুক্তিতে ঐ ৪টি বাহু বিচ্ছিন্ন করার ৪টি পদ্ধতি আছে। যেমনঃ
১. স্মুদারিং বা অক্সিজেন সীমিত করণ পদ্ধতিঃ স্মুদারিং হচ্ছে অক্সিজেন সীমিত করে আগুন নির্বাপন করা। স্মুদারিং এজেন্ট হচ্ছে- ফোম, সিওটু ইত্যাদি।
২. কুলিং বা তাপ সীমিত করণ পদ্ধতিঃ এই পক্রিয়ায় আগুনে পানি নিক্ষেপ করা এই মূলনীতির অর্ন্তভূক্ত (কিন্তু সর্বপ্রকার দাহ্য বস্তুতে এই নীতি প্রযোজ্য নয়) কুলিং এজেন্ট হচ্ছে- পানি বা পানি টাইপ এক্সটিংগুইসার।
৩. স্টারভেশন বা দাহ্য বস্তুর সীমিত করণ পদ্ধতিঃ দাহ্য বস্তু সীমিত করার দুটি ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
- আগুনের নিকট থেকে দাহ্য বস্তু সরিয়ে নেওয়া অথবা
- আগুনকে দাহ্য বস্তুর নিকট থেকে সরিয়ে নেওয়া।
আগুনকে সরিয়ে যেমন- সিলিং হুকের সাহায্যে বা অন্য কিছুর সাহায্যে আগুনকে দুরে নিক্ষেপ করে দেওয়া যায়। এভাবে দাহ্য বস্তুকে সীমিত করার পদ্ধতি হচ্ছে স্টারভেশন।
৪. পয়জনিং দি ফ্লেম বা রাসায়নিক বিক্রিয়ার যোগসূত্র বিচ্ছিন্ন করণ পদ্ধতিঃ অগ্নি প্রজ্ঝলনের ৩টি উপাদানের সাথে যতক্ষন না প্রজ্জলনের অবিচ্ছিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটবে না ততক্ষন পর্যন্ত আগুন জ্বলবে না। সুতরাং অবিচ্ছিন্ন যোগ সূত্রকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারলেই আগুন থাকবে না। প্রজ্জলনের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করা হয় আগুনে পাউডার নিক্ষেপ করে ফলে অবিচ্ছিন্ন যোগসুত্র বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ইহাকেই সাধারনত পয়জনিং দি ফ্লেম বলে।
আগুন লাগলে আমাদের করণীয় কি ?
অগ্নিকান্ডের ক্ষতি ভয়াবহ ও অপূরণীয়। জান মালের হেফাজত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। অগ্নিকান্ড থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হলে আগুন লাগার কারণগুলো অবশ্যই প্রতিরোধ করতে হবে। আল্লাহ্ না করেন যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটেই যায় তাহলে আমাদের সকলকে সম্মিলিতভাবে নিম্নলিখিত বিষয় সমূহ সাহসের সঙ্গে তা নির্বাপন বা মোকাবেলা করতে হবে।
- আগুন লেগেছে নিশ্চিত হওয়ার পরই ফ্লোরে স্থাপিত ফায়ার এলার্ম বক্স এর গ্লাস সরিয়ে/ভেঙ্গে সুইচ টিপে এলার্ম বাজাবেন।এছাড়া ও ঝুলন্ত চেইন নাড়া দিয়ে অগ্নি ঘন্টা বাজাবেন।
- ফায়ার এলার্ম বা হুইসেল শোনামাত্র ফায়ার ফাইটার ব্যতিরেকে ফ্লোরের সমস্ত লোকজন যত দ্রুত সম্ভব মেশিনের সুইচ অফ করে অথবা হাতের কাজ ফেলে ইভাকুয়েশন প্লান অনুযায়ী সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাবেন। ইলেকট্রিশিয়ান বা ফায়ার ফাইটিং পার্টির দলনেতা দ্রুত ফ্লোরের বৈদ্যুতিক সাবষ্টেশন এবং মেইন সুইচ বোর্ড অফ করবেন।
- ফায়ার ফাইটাররা সিঁড়ির সামনে রক্ষিত ড্রামের পানি, বালি,অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র এবং ফায়ার হোস পাইপের সাহায্যে আগুন নিভাতে চেষ্টা করবেন।
- কাহারো গাঁয়ের কাপড়ে আগুন ধরে গেলে তৎক্ষনাৎ ফ্লোরে শুয়ে গড়াগড়ি দিতে হবে। কোন ক্রমেই দৌড়ানো যাবে না।
- ধোঁয়ায় আছন্ন হয়ে বাহির হওয়ার পথ দেখতে না পেলে দ্রুত বসে হামাগুড়ি দিয়ে বাহির হয়ে আসতে হবে। ধোঁয়া প্রশ্বাসের সংঙ্গে ভিতরে নেওয়া যাবে না। কাপড় অথবা ভেজা টাওয়াল দিয়ে মুখ ঢাকতে হবে।
- বাথরুম/টয়লেট,বিল্ডিং এর ছাঁদ বা অন্য কোন স্থানে কেহ আটকা পড়ল কিনা তা মহিলা বাথরুমে একজন মহিলা এবং পুরুষ বাথরুমে একজন পুরুষ চেক করবেন।
- কেহ ভয় পেয়ে জানালা দিয়ে নামতে চেষ্টা করলে বা লাফ দিতে চাইলে তাকে ফেরাতে হবে এবং সিঁড়ি দিয়ে নামতে সাহায্য করবেন।
- লোকজন সিঁড়ি দিয়ে নামার সময়ে কোন ভাবেই ধাক্কাধাক্কি, তাড়াহুড়া, হৈ-চৈ বা কান্নাকাটি, আতংক এবং বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করবেন না।
- ফ্যাক্টরী থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ী চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবেন না। সরাসরি নিজের বাসায় চলে যাবে।
- প্রথমে মানুষ এবং পরে মালামাল উদ্ধার করবে।